আসসালামু আলাইকুম,,
আমার স্বামী অল্প বয়সেই বিয়ে দেন আমার শশুর আলহামদুলিল্লাহ।।আমার শশুর শাশুড়ী,, দেবর(আমার স্বামীর ছোট ভাই) সবাই মিলে একসাথে থাকি।আমার শশুর শাশুড়ীর অনেক আগ থেকে ইচ্ছে তাদের ছেলেকে বিদেশে পাঠাবেন এবং উচ্চতর পড়াশোনা+চাকুরী ওখানে করবেন।এজন্য তারা তাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চান্স পাওয়ার পরও ভালো সাবজেক্ট এবং বিদেশ পাঠানোর আশায় তাকে অনেক টাকা খরচ করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ান।এছাড়াও তারা ইন্টারমিডিয়েট এর পর পরই তাকে পাঠাতে চেয়েছিলেন কিন্তু কিছু কারণবশত তখন আর যাওয়া হয়নি।
এরপর বর্তমানে আমার স্বামী দ্বীনের বুঝ পায়,,এরপর আমাকেও বিয়ে করেন।ওনার পড়াশোনা শেষ করেই ছোটখাটো একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে জব ডুকেন।এদিকে আমাদের দ্বীনের বুঝ হওয়ায় আমরা বিদেশ যেতে ইচ্ছুক নয়,,বিয়ের প্রথমদিকে এমন মনোভাব ই পোষণ করেছিলাম।।।আমার শশুড় শাশুড়ী এ বিষয়ে জানতে পেরে খুবই কষ্ট পান এবং অসন্তোষ প্রকাশ করেন।।এর পরে পরে সাংসারিক জীবনে নানা জটিলতা শুরু হয়।।।আমার একই বাসায় দেবরের সামনে পর্দা করা নিয়ে সমস্যা হয়।আগে আগে আমি পরিপূর্ণ পর্দা করলেও,,একদিন দুইদিন তার সামনে মুখ খোলা অবস্থায় হঠাৎ পড়ে যাই,,এরপর কিভাবে আস্তে আস্তে কেনো জানি এখন তার সামনে মুখ খোলা অবস্থায় যাওয়া হয়,তবে হিজাব পরা হয়।আমি বাহিরে হাত পা মুজা পড়লেও নিজের বাসায় ওভাবে পর্দা করা হচ্ছে না,এ নিয়ে অনেক ডিপ্রেশনে ভুগি।।এ নিয়ে স্বামীর সাথে মনমানিল্য হয়।কিন্তু তার এখনো সামর্থ্য হয়নি আলাদা বাসা নিয়ে থাকার।এছাড়াও আমার শাশুড়ীর বিভিন্ন আচরণে আমরা খুবই মর্মাহত,, উনি নিজে থেকে চান না আমরা একসাথে থাকি,উনি একটু রাগী স্বভাবের (বলে রাখা ভালো উনার মা শা আল্লাহ এখনো শক্তি সামর্থ্য ভালো এবং প্রচুর মর্ডান)।আমার শশুরকে প্রায় আমাদের পিছনে বলেন যে আমাদের সাথে থাকতে চাননা,উনার সাজানো সংসারে আরেকজন উড়ে এসে বসবে এটা উনি চাননা,এসব আমরা পাশ থেকে শুনি।এমনি আমাদের সামনে সবসময়ই ভালো,,কিন্তু পিছনে অনেক খুঁত ধরেন এবং খোচা মেরে কথা বলেন,,ডিরেক্ট কিছু বলেন না।।বাবার বাড়ি থেকে এটা ওটা আনি না দেখে খোঁচা মারেন।আমাদের বাচ্চা নেওয়ার ব্যাপারেও উনার কঠিন হুশিয়ারি,, বিদেশ যাওয়া ছাড়া কোনভাবে বাচ্চা নেওয়া যাবেনা,,উনি কোন সাপোর্ট ও দিতে পারবেন না এ-সময়,, আর অল্প বয়সে উনি দাদিও হতে চান না।আমি জেনারেল পড়াশোনা ছেড়ে আইওএম এ পড়ছি এটাও তাদের পছন্দ না।তাই ইসলামিক পড়াশোনায় তাদের তেমন কোন সাপোর্ট পাইনা।
শুরু থেকে আমি অনেক মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি,,,এখন মানসিকভাবে আর পারছিনা একসাথে মানিয়ে থাকতে,,যেখানে উনি চাচ্ছেন না।আমি প্রায় প্রতিদিনই উনার নানান কথায় কান্না করি।এরপর আমার শশুর আমাদের ডেকে বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে চাপ দেন এবং উনি এটাও চান না ঢাকায় আমরা আলাদা বাসা নিয়ে থাকি/উনি ভাবতে পারেন না এক পরিবারের পাঁচজন মানুষ একই জেলায় থেকে আলাদা বাসায় থাকবে,কারণ সামাজিক ভাবে উনি সম্মানিত,,এবং অন্যান্য পারিবারিক বিচার সালিশে উনি থাকেন।
আমাদের আলাদা বাসায় থাকা জরুরত হয়ে পড়েছে।আমার স্বামী হীনমন্যতায় ভুগেন আমাকে পর্দার ব্যবস্থা দিতে না পারায় এবং আলদা বাসায় থাকার সামর্থ্য নাই বলে।এমতাবস্থায় আমার স্বামী তার বাবা মায়ের কথা রাখা এবং এই ওসিলায় আলাদাও থাকা হবে ভেবে বিদেশ যাওয়ার ডিসিশন নেন।
আমাদের ইচ্ছে আমার স্বামী ওখানে পড়াশোনা শেষ করে,, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে দেশে ফিরে আসার,,ওখানে সেটেল্ড হওয়া আমাদের কারোরই ইচ্ছে নেই।।এছাড়া আমারা দাওয়াতি কাজে অংশগ্রহণ সহ নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে ইসলামিক পড়াশোনা করার ইচ্ছে। আমার প্রশ্ন:-
১.উক্ত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বিদেশ যাওয়া কি উচিত হবে??নন মুসলিম দেশে যাওয়া কি জায়েজ হবে??একজন মুসলিম নন মুসলিম বা পশ্চাৎ দেশে পার্মানেন্ট ভাবে থাকতে পারবে?
২.আমার স্বামী কম্পিউটার ইন্জিনিয়ার,,উনি যে কম্পানিতে চাকরি করেন দেখা গেছে এক এক সময় এক এক প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করা লাগে,,মাঝে মাঝে ব্যাংক রিলেটেড কাজ আসে,,অনিচ্ছা সত্যেও করা লাগে,,এতে কি তার রোজকার হালাল হবে??
৩.আমি যে দেবরের সামনে হিজাব পরে মুখ খোলা অবস্থায় যাই,,কিন্তু বাহিরে পরিপূর্ণ পর্দা করি নিকাব হাত পা মুজাসহ,,,তার সামনে এভাবে যাওয়ায় আমি কি গুনাহগার হবো??(সবসময় না কাজ করতে গেলে যাওয়া লাগেই,,তার সাথে কোন কথাবার্তা বলিনা)।
৪.উপরোক্ত কারণে বাচ্চা নিতে দেরী করাতে কি আমরা গুনাহগার হবো??(কোন জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করি না)