আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
188 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম,,

আমার স্বামী অল্প বয়সেই বিয়ে দেন আমার শশুর আলহামদুলিল্লাহ।।আমার শশুর শাশুড়ী,, দেবর(আমার স্বামীর ছোট ভাই) সবাই  মিলে একসাথে থাকি।আমার শশুর শাশুড়ীর অনেক আগ থেকে ইচ্ছে তাদের ছেলেকে বিদেশে পাঠাবেন এবং উচ্চতর পড়াশোনা+চাকুরী ওখানে করবেন।এজন্য তারা তাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়  চান্স পাওয়ার পরও ভালো সাবজেক্ট এবং বিদেশ পাঠানোর আশায় তাকে অনেক টাকা খরচ করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ান।এছাড়াও তারা ইন্টারমিডিয়েট এর পর পরই তাকে পাঠাতে চেয়েছিলেন কিন্তু কিছু কারণবশত তখন আর যাওয়া হয়নি।

এরপর বর্তমানে আমার স্বামী দ্বীনের বুঝ পায়,,এরপর আমাকেও বিয়ে করেন।ওনার পড়াশোনা শেষ করেই ছোটখাটো একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে জব ডুকেন।এদিকে আমাদের দ্বীনের বুঝ হওয়ায় আমরা বিদেশ যেতে ইচ্ছুক নয়,,বিয়ের প্রথমদিকে এমন মনোভাব ই পোষণ করেছিলাম।।।আমার শশুড় শাশুড়ী এ বিষয়ে জানতে পেরে খুবই কষ্ট পান এবং অসন্তোষ  প্রকাশ করেন।।এর পরে পরে সাংসারিক জীবনে নানা জটিলতা শুরু হয়।।।আমার একই বাসায় দেবরের সামনে পর্দা করা নিয়ে সমস্যা হয়।আগে আগে আমি পরিপূর্ণ পর্দা করলেও,,একদিন দুইদিন তার সামনে মুখ খোলা অবস্থায় হঠাৎ পড়ে যাই,,এরপর কিভাবে আস্তে আস্তে কেনো জানি এখন তার সামনে মুখ খোলা অবস্থায় যাওয়া হয়,তবে হিজাব পরা হয়।আমি বাহিরে হাত পা মুজা পড়লেও নিজের বাসায় ওভাবে পর্দা করা হচ্ছে না,এ নিয়ে অনেক ডিপ্রেশনে ভুগি।।এ নিয়ে স্বামীর সাথে মনমানিল্য হয়।কিন্তু তার এখনো সামর্থ্য হয়নি আলাদা বাসা নিয়ে থাকার।এছাড়াও আমার শাশুড়ীর বিভিন্ন আচরণে আমরা খুবই মর্মাহত,, উনি নিজে থেকে চান না আমরা একসাথে থাকি,উনি একটু রাগী স্বভাবের (বলে রাখা ভালো উনার মা শা আল্লাহ এখনো শক্তি সামর্থ্য ভালো এবং প্রচুর মর্ডান)।আমার শশুরকে প্রায় আমাদের পিছনে বলেন যে আমাদের সাথে থাকতে চাননা,উনার সাজানো সংসারে আরেকজন উড়ে এসে বসবে এটা উনি চাননা,এসব আমরা পাশ থেকে শুনি।এমনি আমাদের সামনে সবসময়ই ভালো,,কিন্তু পিছনে অনেক খুঁত ধরেন এবং খোচা মেরে কথা বলেন,,ডিরেক্ট কিছু বলেন না।।বাবার বাড়ি থেকে এটা ওটা আনি না দেখে খোঁচা মারেন।আমাদের বাচ্চা নেওয়ার ব্যাপারেও উনার কঠিন হুশিয়ারি,, বিদেশ যাওয়া ছাড়া কোনভাবে বাচ্চা নেওয়া যাবেনা,,উনি কোন সাপোর্ট ও দিতে পারবেন না এ-সময়,, আর অল্প বয়সে উনি দাদিও হতে চান না।আমি জেনারেল পড়াশোনা ছেড়ে আইওএম এ পড়ছি এটাও তাদের পছন্দ না।তাই ইসলামিক পড়াশোনায় তাদের তেমন কোন সাপোর্ট পাইনা।

শুরু থেকে আমি অনেক মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি,,,এখন মানসিকভাবে আর পারছিনা একসাথে মানিয়ে থাকতে,,যেখানে উনি চাচ্ছেন না।আমি প্রায় প্রতিদিনই উনার নানান কথায় কান্না করি।এরপর আমার শশুর আমাদের ডেকে বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে চাপ দেন এবং উনি এটাও চান না ঢাকায়  আমরা আলাদা বাসা নিয়ে থাকি/উনি ভাবতে পারেন না এক পরিবারের পাঁচজন মানুষ একই জেলায় থেকে আলাদা বাসায় থাকবে,কারণ সামাজিক ভাবে উনি সম্মানিত,,এবং অন্যান্য  পারিবারিক বিচার সালিশে উনি থাকেন।

 আমাদের আলাদা বাসায় থাকা জরুরত হয়ে পড়েছে।আমার স্বামী হীনমন্যতায় ভুগেন আমাকে পর্দার ব্যবস্থা দিতে না পারায় এবং আলদা বাসায় থাকার সামর্থ্য নাই বলে।এমতাবস্থায় আমার স্বামী তার বাবা  মায়ের কথা রাখা এবং এই ওসিলায় আলাদাও থাকা হবে ভেবে বিদেশ যাওয়ার ডিসিশন নেন।

আমাদের ইচ্ছে আমার স্বামী ওখানে পড়াশোনা শেষ করে,, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে দেশে ফিরে আসার,,ওখানে সেটেল্ড হওয়া আমাদের কারোরই ইচ্ছে নেই।।এছাড়া আমারা দাওয়াতি কাজে অংশগ্রহণ সহ নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে ইসলামিক পড়াশোনা করার ইচ্ছে। আমার প্রশ্ন:-

১.উক্ত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বিদেশ যাওয়া কি উচিত হবে??নন মুসলিম দেশে যাওয়া কি জায়েজ হবে??একজন মুসলিম নন মুসলিম বা পশ্চাৎ দেশে পার্মানেন্ট ভাবে থাকতে পারবে?

২.আমার স্বামী কম্পিউটার ইন্জিনিয়ার,,উনি যে কম্পানিতে চাকরি করেন দেখা গেছে এক এক সময় এক এক প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করা লাগে,,মাঝে মাঝে ব্যাংক রিলেটেড কাজ আসে,,অনিচ্ছা সত্যেও করা লাগে,,এতে কি তার রোজকার হালাল হবে??

৩.আমি যে দেবরের সামনে হিজাব পরে মুখ খোলা অবস্থায় যাই,,কিন্তু বাহিরে পরিপূর্ণ পর্দা করি নিকাব হাত পা মুজাসহ,,,তার সামনে এভাবে যাওয়ায় আমি কি গুনাহগার হবো??(সবসময় না কাজ করতে গেলে যাওয়া লাগেই,,তার সাথে কোন কথাবার্তা বলিনা)।

৪.উপরোক্ত কারণে বাচ্চা নিতে দেরী করাতে কি আমরা গুনাহগার হবো??(কোন জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করি না)

1 Answer

0 votes
by (589,260 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
কোনো ব্যক্তি যদি মুসলিম দেশে হন্যে হয়ে খোঁজাখোঁজি করা সত্ত্বেও জীবিকা উপার্জনের কোন সোর্স ব্যবস্থা করতে না পারে, এমনকি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যাপারে অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে যায়, এমন পরিস্থিতিতে যদি কোনো অমুসলিম দেশে জায়েয কোনো চাকরি পেয়ে যায়,তাহলে দু’টি শর্ত সাপেক্ষে তার জন্য সেখানে যাওয়া এবং বসবাস করা জায়েয হবে।
যথাঃ- 
এক. সেখানে আমলী জিন্দিগী তথা, ইসলামী বিধি-বিধান পরিপালনে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকতে হবে। দুই. সেখানকার প্রচলিত অশ্লীলতা, বেহায়াপনা-বেলেল্লাপনা থেকে নিজেকে সংযত রাখতে হবে।

কেননা, হালাল জীবিকা অন্বেষণ করাও ফরজ ইবাদতসমূহের পর একটি অন্যতম ফরজ কাজ। আর জীবিকা উপার্জনের জন্য ইসলাম কোনো জায়গাকে নির্দিষ্ট করে দেয়নি। বরং জীবিকা উপার্জনের ব্যাপারে ইসলামের ব্যাপক অনুমতি রয়েছে যে, যেখান থেকে ইচ্ছা করবে সেখান থেকে জীবিকা উপার্জন করতে পারবে। 
যেমন কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে :
ﻫﻮ ﺍﻟﺬﻱ ﺟﻌﻞ ﻟﻜﻢ ﺍﻻﺭﺽ ﺫﻟﻮﻻ ﻓﺎﻣﺸﻮﺍ ﻓﻲ ﻣﻨﺎﻛﺒﻬﺎ ﻭﻛﻠﻮﺍ ﻣﻦ ﺭﺯﻗﻪ ﻭﺍﻟﻴﻪ ﺍﻟﻨﺸﻮﺭ-
“আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য পৃথিবীকে করেছেন সুগম, সুতরাং তোমরা তাতে ভ্রমণ কর এবং তার দেয়া জীবিকা থেকে আহার কর, তোমাদেরকে তার দিকেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে”। (সূরা মুল্ক ঃ আয়াত, ১৫)

তবে বিনা প্রয়োজনে সেখানে চাকরী এবং বসবাসের কোনো অনুমিত শরীয়তে নেই।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/3447


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার সমস্ত বিবরণ পড়ে আমাদের জন্য এটা বলাই উচিৎ মনে হচ্ছে যে, আপনি দাওয়াহ এর নিয়ত অন্তরে পাকাপোক্ত রেখে বিদেশে চলে যাবেন।মুসলিম কোনো দেশে যাওয়া সম্ভব না হলে অমুসলিম দেশে যাবেন। কেননা সেখানে অন্ততপক্ষে ঘরের ভিতর নিজের সুবিধামত পর্দা পুশিদা রক্ষা করতে পারবেন। এবং যথাসম্ভব অতিদ্রুত বাচ্ছা নেয়ার ব্যবস্থা করেন।আল্লাহ আপনার সহায় হোক।আমীন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,260 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...