আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
3,537 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (38 points)
আসসালামু আলাইকুম।
(১) ফরজ নামাজে উচ্চ স্বরে রুকু থেকে উঠে রাব্বানা লাকাল হামদ , হামদান কাছিরান........মুবারাকান ফীহি ফরজ নামাজে উচ্চ স্বরে পড়া নবীজীর হাদিস বা সাহাবাদের আমল দ্বারা সাব্যস্ত কিনা জানতে চাই। মেহেরবানী করে দলিল সহ দিলে উপকৃত হবো।

(২)  এরকম আমল আমাদের দেশে কিছু আহলে হাদীস ( সব আহলে হাদিস ভাইরা নন)  ভাই  করে থাকেন ফরজ নামাজে। সেক্ষেত্রে এটা বিদাআত হবে কিনা জানতে চাই মুহতারাম।

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
এই ব্যপারে বিভিন্ন রকমের হাদীস আছে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عن أبي موسیٰ الأشعري وأبي ہریرۃ رضي اللّٰہ عنہما أنہ قال: إنما جعل الإمام إماماً لیؤتم بہ فلا تختلفوا علیہ…وإذا قال: ’’سمع اللّٰہ لمن حمدہ‘‘ فقولوا ربنا لک الحمد۔ (أخرجہ مالک في المؤطا، الصلاۃ / باب ما جاء في التأمین خلف الإمام ۱؍۸۸، مسند أحمد ۲؍۴۵۹، صحیح البخاري، الأذان / باب فضل اللّٰہم ربنا لک الحمد رقم: ۷۹۶، صحیح مسلم، الصلاۃ / باب التسمیع والتحمید رقم: ۴۰۹، سنن أبي داؤد، الصلاۃ / باب ما یقول إذا رفع رأسہ من الرکوع رقم: ۸۴۸، سنن الترمذي، الصلاۃ رقم: ۲۶۷)

সারমর্মঃ ইমাম যখন  
سمع اللّٰہ لمن حمدہ‘‘ বলবে,
তখন মুক্তাদীরা 
 ربنا لک الحمد۔ পড়বে।
۔
عن عائشۃ رضي اللّٰہ عنہا أنہا قالت: کان رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم إذا رفع رأسہ من الرکوع قال: ’’سمع اللّٰہ لمن حمدہ، ربنا لک الحمد‘‘۔ (صحیح البخاري، الأذان / باب ما یقول الإمام إذا رفع رأسہ من الرکوع رقم: ۷۹۵، صحیح مسلم رقم: ۳۹۲)

সারমর্মঃ 
রাসুলুল্লাহ সাঃ যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন,তখন   
سمع اللّٰہ لمن حمدہ، ربنا لک الحمد‘‘ বলতেন।
,
★এই হাদীস গুলোর উপর ভিত্তি করে হানাফি মাযহাবের স্কলারগন বলেন যে রুকু শেষে অতিরিক্ত আর কোনো দোয়া পড়বেনা।
হ্যাঁ যদি নফল নামাজ হয়,তাহলে উক্ত দোয়া পড়া যাবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ نُعَيْمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْمُجْمِرِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ يَحْيَى الزُّرَقِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ رِفَاعَةَ بْنِ رَافِعٍ الزُّرَقِيِّ، قَالَ كُنَّا يَوْمًا نُصَلِّي وَرَاءَ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم فَلَمَّا رَفَعَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ قَالَ " سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ " . قَالَ رَجُلٌ وَرَاءَ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم اللهُمَّ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ فَلَمَّا انْصَرَفَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنِ الْمُتَكَلِّمُ بِهَا آنِفًا " . فَقَالَ الرَّجُلُ أَنَا يَا رَسُولَ اللهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " لَقَدْ رَأَيْتُ بِضْعَةً وَثَلَاثِينَ مَلَكًا يَبْتَدِرُونَهَا أَيُّهُمْ يَكْتُبُهَا أَوَّلَ "

রিফা‘আহ ইবনু রাফি‘ আয-যুরাকী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পিছনে সলাত আদায় করছিলাম। সে সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকু‘ হতে মাথা উঠিয়ে সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ্ বললে এক ব্যক্তি বলে উঠেন- ‘‘আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ, হামদান কাসীরান ত্বাইয়্যিবান মুবারাকান ফীহ’’। সলাত শেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এই দু‘আ পাঠকারী কে? লোকটি বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি দেখলাম, তিরিশেরও অধিক মালায়িকাহ্ (ফিরিশতা) তা সর্বাগ্রে লিপিবদ্ধ করার জন্য প্রতিযোগিতা করছে।

বুখারী (অধ্যায়ঃ আযান, অনুঃ কুনূত, হাঃ ৭৯৯), বায়হাক্বী (অধ্যায়ঃ সালাত, অনুঃ রুকু‘ থেকে মাথা উঠানোর সময় দু‘আ ২/৯৫), ইবনু খুযাইমাহ (৬১৪)।
,
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، أَخْبَرَنَا حَمَّادٌ، عَنْ قَتَادَةَ، وَثَابِتٍ، وَحُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَجُلاً، جَاءَ إِلَى الصَّلاَةِ وَقَدْ حَفَزَهُ النَّفَسُ فَقَالَ اللَّهُ أَكْبَرُ الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ فَلَمَّا قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلاَتَهُ قَالَ " أَيُّكُمُ الْمُتَكَلِّمُ بِالْكَلِمَاتِ فَإِنَّهُ لَمْ يَقُلْ بَأْسًا " . فَقَالَ الرَّجُلُ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ جِئْتُ وَقَدْ حَفَزَنِي النَّفَسُ فَقُلْتُهَا . فَقَالَ " لَقَدْ رَأَيْتُ اثْنَىْ عَشَرَ مَلَكًا يَبْتَدِرُونَهَا أَيُّهُمْ يَرْفَعُهَا " . وَزَادَ حُمَيْدٌ فِيهِ " وَإِذَا جَاءَ أَحَدُكُمْ فَلْيَمْشِ نَحْوَ مَا كَانَ يَمْشِي فَلْيُصَلِّ مَا أَدْرَكَهُ وَلْيَقْضِ مَا سَبَقَهُ " .

মূসা ইবনু ইসমাঈল ........... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি দ্রুত গতিতে মসজিদে আগমনের ফলে খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়ে সে বলল, “আল্লাহু আক্বার আলহামদু লিল্লাহি হামদান কাছীরান তাইয়েবান মুবারাকান ফীহ্। নামায শেষে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করেনঃ তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি এই দু’আ পাঠ করেছে? ঐ ব্যক্তি খারাপ কিছু বলে নাই। তখন ঐ ব্যক্তি বলে, ইয়া রাসূলুল্লাহ! মসজিদে আগমনের পর ক্লান্ত হয়ে আমি এই দু’আ পাঠ করি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি দেখতে পাই যে, বারজন, ফেরেশতা প্রতিযোগীতামূলকভাবে উক্ত দু’আ সর্বাগ্রে অল্লাহ তা’আলার নিকটে নেওয়ার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়েছে। রাবী হুমায়েদের বর্ণানায় আরও আছে যে! মসজিদে জামাআতে নামায আদায়ের সময় প্রত্যেক মুসল্লীর জন্য স্বাভাবিক পদক্ষেপে আগমন করা উচিত। অতঃপর সে ব্যক্তি ইমামের সাথে নামাযের যে অংশ প্রাপ্ত হয় তা আদায়ের পর যদি নামাযের কিছু অংশ ছুটে গিয়ে থাকে- তা ইমামের সালাম ফিরানোর পর একাকী আদায় করবে।
(আবু দাউদ ৭৬৩)
,
★এই হাদীস গুলোর উপর ভিত্তি করে কিছু ইসলামী স্কলারগন বলেছেন যে রুকু শেষে উক্ত দোয়া পড়তে হবে।
এই মতটিও ছহীহ আছে। 
সুতরাং তাদের অনুসারী এই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন। 
কোনো সমস্যা নেই। 
,
★হানাফি মাযহাব মতে এটি নফল নামাজে পড়া যাবে,ফরজ নামাজে নয়।               
তারপরেও সময় সুযোগ পেলে কেউ চাইলে ফরজ নামাজেও এটি পড়তে পারেন।
নাজায়েজ নয়। 
,
(০২)
উল্লেখিত আমল বিদআত নয়।
বরং তাহা হাদীস দ্বারা প্রমানীত।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...