আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
322 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১. কেউ হিদায়াতের পথে আসার পর সালাতের গুরুত্ব বুঝতে পেরে আগে সালাত কিছু ওয়াক্ত পড়তো, কিছু ওয়াক্ত ছেড়ে দিত এর জন্য অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার সময় মুনাজাতে যদি বলে "ওয়াল্লাহি, আমি আর জীবনে কখনো সালাত ছাড়তে চাই না। আমাকে সাহায্য করুন ইয়া রব।" তাহলে এটি কি তার কসম হিসেবে গণ্য হবে? যদি কসম হয়, তাহলে এর বিধান কি, কিভাবে মেনে চলতে হবে? কারণ নিজের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করার পরও কখনো যদি এক ওয়াক্ত সালাত কোনো কারণে কাযা পড়তে হয়, কিংবা গাড়িতে পড়তে হয়। সে তো ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানে না। তখন অনুতপ্ত হয়ে সালাতকে ভালোবেসে এমন বলেছিল। আর এখনো পর্যন্ত সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত সময়মত আদায় করতে।
২. দ্বিতীয়ত কেউ হিদায়াতের পথে আসার পর পূর্বজীবনের বেপর্দা চলাফেরার জন্য অনুতপ্ত হয়ে যদি মুনাজাতে বলে, "ওয়াল্লাহি, আমি জীবনে আর কখনো পর্দা ছাড়বো না।" কিংবা যদি বলে, "ওয়াল্লাহি, আমি জীবনে আর কখনো বেপর্দা হতে চাই না।" এই দুইটা কথাই কি কসম হিসেবে গণ্য হবে। পর্দা তো সে সবসময়ই করবে ইন শা আল্লাহ। কিন্তু বর্তমান সমাজের যে অবস্থা, অনেকসময় মা বাবা, কিংবা বিভিন্ন জায়গায় আল্লাহ না করুক জোর করে পর্দা ছিনিয়ে নেয়া হয়। পরিবারে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। সেগুলো পরের কথা। এমন কোনো পরিস্থিতি কখনো হলে (আল্লাহ না করুন) তার করণীয় কি হবে।
বিঃদ্রঃ দুই বিষয়ের কথাই মুনাজাতে ফিসফিসিয়ে বলা হয়েছে।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


আল্লাহর নাম বা জাত দ্বারা কোনো জিনিস করার বা না করার কসম করলে, কসম হয়ে যায়।যখন কেউ আল্লাহ নাম উচ্ছারণ করে কসম করে ফেলবে,তখন আল্লাহর নামের সম্মানার্থে সেই কসমকে পূর্ণ করা তার উপর ওয়াজিব হয়ে যায়।যদি সে কসম কে ভঙ্গ করে ফেলে,তাহলে তখন কসম ভঙ্গ করে আল্লাহর নামের বেহুরমতি করার শাস্তি স্বরূপ তাকে কাফফারা দিতে হবে।

কাফফারা আদায়ের পদ্ধতি সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
لاَ يُؤَاخِذُكُمُ اللّهُ بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ وَلَـكِن يُؤَاخِذُكُم بِمَا عَقَّدتُّمُ الأَيْمَانَ فَكَفَّارَتُهُ إِطْعَامُ عَشَرَةِ مَسَاكِينَ مِنْ أَوْسَطِ مَا تُطْعِمُونَ أَهْلِيكُمْ أَوْ كِسْوَتُهُمْ أَوْ تَحْرِيرُ رَقَبَةٍ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ ذَلِكَ كَفَّارَةُ أَيْمَانِكُمْ إِذَا حَلَفْتُمْ وَاحْفَظُواْ أَيْمَانَكُمْ كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ

আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অনর্থক শপথের জন্যে; কিন্তু পাকড়াও করেন ঐ শপথের জন্যে যা তোমরা মজবুত করে বাধ। অতএব, এর কাফফরা এই যে, (১) দশজন দরিদ্রকে খাদ্য প্রদান করবে; মধ্যম শ্রেনীর খাদ্য যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে দিয়ে থাক।(২)অথবা, তাদেরকে বস্তু প্রদান করবে অথবা, একজন ক্রীতদাস কিংবা দাসী মুক্ত করে দিবে।(৩) যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে না, সে তিন দিন রোযা রাখবে।.....এটা কাফফরা তোমাদের শপথের, যখন শপথ করবে। তোমরা স্বীয় শপথসমূহ রক্ষা কর এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় নির্দেশ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।
(সূরা মায়েদা-৮৯)

আরো জানুনঃ 
,
,
কসমের শব্দ ওয়াদা মূলক হতে হবে।
উদাহরণঃ 
فی الدر المختار وان فعلہ فعلیہ غضبہ أو سخطہ أو لعنۃ اللّٰہ أو ھو زان أو سارق أو شارب خمر أو اٰکل ربا لا یکون قسما وفی رد المحتار عن الولوالجیۃ ھو یستحل الدم أو لحم الخنزیر ان فعل کذا لا یکون یمینا ۔[شامی ،ج:۳،ص:۵۷]
যদি আমি এই কাজ করি,তাহলে আমার উপর আল্লাহর রাগ,অসন্তুষ্টি,আল্লাহর লা'নত। 
۔
ওয়াল্লাহি বলার দ্বারা কসম হয়ে যায়।
(আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল 
৪/৪১৪)

(০১) প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন, 
  "ওয়াল্লাহি, আমি আর জীবনে কখনো সালাত ছাড়তে চাই না। আমাকে সাহায্য করুন ইয়া রব।"
এটি একটি দোয়া।
এটি কসম নয়।
কসম হতে হলে কসমের শব্দ ওয়াদা মূলক হতে হবে।
যেমনঃ ওয়াল্লাহি আমি আর জীবনে কখনো সালাত ছাড়বোনা।
,
সুতরাং এই ছুরতে যেহেতু কসম হয়নি,তাই কাফফারার কোনো প্রশ্ন নেই।
,
(০২)
 "ওয়াল্লাহি, আমি জীবনে আর কখনো বেপর্দা হতে চাই না।" 
এটিও কসম নয়।
,
তবে , "ওয়াল্লাহি, আমি জীবনে আর কখনো পর্দা ছাড়বো না।" এটি কসম।
,
গায়রে মাহরাম কাহারো সামনে বেপর্দা হলে অবশ্যই কাফফারা আদায় করতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...