জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ فِي نَفَرٍ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ فَجَاءَ بِعِيرٌ فَسَجَدَ لَهُ فَقَالَ أَصْحَابُهُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ تَسْجُدُ لَكَ الْبَهَائِمُ وَالشَّجَرُ فَنَحْنُ أَحَقُّ أَنْ نَسْجُدَ لَكَ. فَقَالَ: «اعْبُدُوا رَبَّكُمْ وَأَكْرِمُوا أَخَاكُمْ وَلَوْ كُنْتُ آمُرُ أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِأَحَدٍ لَأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا وَلَوْ أَمَرَهَا أَنْ تَنْقُلَ مِنْ جَبَلٍ أَصْفَرَ إِلَى جَبَلٍ أَسْوَدَ وَمِنْ جَبَلٍ أَسْوَدَ إِلَى جَبَلٍ أَبْيَضَ كَانَ يَنْبَغِي لَهَا أَن تَفْعَلهُ» .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহাজির ও আনসারগণের মাঝে উপস্থিত ছিলেন। তখন একটি উট এসে তাঁকে সিজদা করল। এটা দেখে সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনাকে জীব-জন্তু, গাছপালা সিজদা করে, সুতরাং আপনাকে সিজদা করা আমরা বেশী হকদার। এতে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা তোমাদের রবে্র ‘ইবাদাত (সিজদা) কর এবং তোমাদের ভাইকে (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যথাযোগ্য) সম্মান কর। আমি যদি (দুনিয়াতে) কারো প্রতি সিজদা করতে নির্দেশ দিতাম, তাহলে স্ত্রীকে তার স্বামীর প্রতি সিজদা করার অনুমতি দিতাম। স্বামী যদি স্ত্রীকে (ন্যায়সঙ্গত ও প্রয়োজনে) হলুদ বর্ণের পর্বত হতে কালো বর্ণের পর্বতে এবং কালো বর্ণের পর্বত হতে সাদা বর্ণের পর্বতে পাথর স্থানান্তরের নির্দেশ করে, তবে তার দায়িত্বনিষ্ঠার সাথে তা পালন করা।
(আহমাদ ২৪৯৭৫, ইবনু মাজাহ ১৮৫২.মিশকাত ৩৩৭০।)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
নাবী সাঃ এর পায়ে সেজদাহ করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত।
ইবাদত করতে হবে,একমাত্র আল্লাহর জন্য।
নবির জন্য নয়। সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির ইবাদত কবুল হবেনা।
নফল কুরবানী রাসুলুল্লাহ সাঃ এর পক্ষ থেকে দেয়া যায়,তবে আল্লাহর নামে কোনো কুরবানী দেয়া যায়না।
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি রিয়া তথা ছোট শিরক করেছে। তাকে তওবা করে ফিরে আসতে হবে।
(০২)
এ কথা সঠিক নয়।
শরীয়তে ঈমান আনার পর সবচেয়ে বড় ইবাদত হলো নামাজ।
আর কিয়ামতের ময়দানে আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রথম নামাজেরই হিসাব নিবেন।
(০৩)
এমন কোনো কথা কুরআন হাদীসে নেই।
(০৪)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
وَعَنْهُ فِيمَا أَعْلَمُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَبْعَثُ لِهَذِهِ الْأُمَّةِ عَلَى رَأْسِ كُلِّ مِائَةٍ سَنَةٍ مَنْ يُجَدِّدُ لَهَا دِينَهَا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অবগত হয়েছি যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা এ উম্মাতের (কল্যাণের) জন্য প্রত্যেক শতাব্দীর শেষে এমন এক ব্যক্তিকে পাঠাবেন যিনি তাদের দীনকে সংস্কার করবেন।
(সহীহ : আবূ দাঊদ ৪২৯১, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ৫৯৯,মিশকাত ২৪৭. এ হাদীসটি হাকিম মুসতাদরাকে বর্ণনা করেছেন এবং সহীহ বলেছেন। সহীহ বলার ব্যাপারে ইমাম যাহাবীও একমত হয়েছেন।)
হাদীসটির ব্যাখ্যা: প্রত্যেক হিজরী শতাব্দীর শেষ লগ্নে আল্লাহ এমন ব্যক্তি পাঠাবেন যিনি কিতাব এবং সুন্নাহ এর ‘আমল ও এগুলোর দাবী অনুপাতে যে সমস্ত নির্দেশ রয়েছে তা বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার পর সেগুলো জীবিত করবে; নতুন আবিষ্কৃত জিনিসগুলোর মূলোৎপাটন করে। বক্তব্য লিখনী পাঠদান বা অন্যান্য পদ্ধতিতে বিদ্‘আতকারীদেরকে প্রতিহত করবে। তবে এ মুজাদ্দিদ ব্যক্তিকে তাঁর সমসাময়িক যুগের ‘আলিমগণ তার বিভিন্ন অবস্থা ও তার ‘ইলম কর্তৃক মানুষের উপকৃত হওয়ার পরিমাণ দেখে কেবল ব্যাপক ধারণার ভিত্তিতে জানতে পারবে। কেননা মুজাদ্দিদ ব্যক্তির প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য দীনে শারী‘আহ্ সম্পর্কে জ্ঞানবান হওয়া আবশ্যক এবং সুন্নাতের সাহায্যকারী, বিদ্‘আতের মূলোৎপাটনকারী, তার ‘ইলম তার যুগের লোকেদের মাঝে ব্যাপকতা লাভ করা আবশ্যক। আর দীনের সংস্কার কেবল প্রত্যেক শতাব্দীর শেষে হবে। সে সময় সুন্নাতের বিলুপ্তি ঘটবে, বিদ্‘আত প্রকাশ পাবে। ফলে তখন দীনের সংস্কারের প্রয়োজনে আল্লাহ তাঁর সৃষ্টি হতে পরবর্তী প্রজন্ম হতে এক বা একাধিক মুজাদ্দিদ নিয়ে আসবেন। কারণ দীনের সংস্কারের জন্য বিভিন্ন গুণাবলীর ‘আলিম লাগবে।
(০৫)
উক্ত দোয়া পড়া যাবে।
দোয়াটি হাদীসে আযানের একটি বাক্যের জবাব হিসেবে আছে।
وَعَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَقَّاصٍ قَالَ: (إِنِّي لَعِنْدَ مُعَاوِيَةَ إِذْ أَذَّنَ مُؤَذِّنُهُ فَقَالَ مُعَاوِيَةُ كَمَا قَالَ مُؤَذِّنُهُ حَتَّى إِذَا قَالَ: حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ: قَالَ: لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ فَلَمَّا قَالَ: حَيَّ عَلَى الْفَلَاحِ قَالَ: لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ الْعَلِيِّ الْعَظِيمِ وَقَالَ بَعْدَ ذَلِكَ مَا قَالَ الْمُؤَذِّنُ ثُمَّ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم قَالَ ذَلِك.
’আলক্বামাহ্ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি মু’আবিয়াহ্ (রাঃ)-এর নিকট ছিলাম। তাঁর মুয়াযযিন আযান দিচ্ছিলেন। মুয়াযযিন যেভাবে (আযানের বাক্যগুলো) বলছিলেন, মু’আবিয়াহ্ (রাঃ)-ও ঠিক সেভাবে বাক্যগুলো বলতে থাকেন। মুয়াযযিন ’’হাইয়্যা ’আলাসসলা-হ্’’ বললে মু’আবিয়াহ্ (রাঃ)বললেন, ’’লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লাহ’’। মুয়াযযিন ’’হাইয়্যা ’আলাল ফালা-হ’’ বললে মু’আবিয়াহ্ (রাঃ)বললেন, ’’লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হিল ’আলিয়্যিল ’আযীম’’। এরপর আর বাকীগুলো তিনি তা-ই বললেন যা মুয়াযযিন বললেন। এরপর তিনি বললেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে (আযানের উত্তরে) এভাবে বলতে শুনেছি।
(মিশকাত ৬৭৫)
তবে প্রশ্নে আমলের কথা এভাবে হাদীসে নেই।
এটি কোনো বুযুর্গানে দ্বীনের আমল হতে পারে।
তাই দ্বীনের অংশ বা আবশ্যকীয় মনে না করে এই আমলটি করা যাবে।