হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .
সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-
تجب السكني لها عليه في بيت خال
মর্থার্থ: স্ত্রীর জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা স্বামীর উপর আবশ্যক। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৬০৪)
ইসলামের দিক-নিদের্শনা হচ্ছে বিবাহের পরে স্বামীর প্রথম কতর্ব্য হলো স্ত্রীর জন্য এমন একটি বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যেখানে স্ত্রী মানুষের দৃষ্টি থেকে নিরাপদ থাকবে। কেননা পর্দা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। আর এই বিধান পালন করার জন্য স্বামীর কতর্ব্য স্ত্রীকে সাহায্য করা। সেই সাথে অন্যান্য সকল কষ্ট থেকে স্ত্রীর আরামের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে স্ত্রীকে শ্বশুর ও শাশুড়ির সাথেই থাকতে হবে এমন বাধ্যও করা যাবে না। কেননা এমন কোন অধিকার স্বামীর নেই। তবে এই ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী উভয়কে সামাজিক অবস্থার উপর বিবেচনা করেও কিছু কাজ করতে হবে।
যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে স্বামীর পরিবারের সাথে অথবা অন্য আত্মীয়ের সাথে থাকার কথা বলে কিন্তু স্ত্রী কারো সাথে থাকার কথা রাজি না হয় তাহলে স্ত্রীকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা স্বামীর কতর্ব্য। কেননা স্ত্রীর সকল কিছু রক্ষা করা ও নিরাপদে বসবাস করার দায়িত্ব স্বামীর।
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছেঃ-
"উনার বাচ্চাদের দেখতে হয় বলে আমার শ্বাশুড়ি আমার বাচ্চাকে নিতে পারেনা, এদিকে আমি আমার কাজ করতে পারিনা। মাঝেমধ্যে ননসের বাচ্চাকেও আমাকে রাখতে দেয়"
★লক্ষনীয় বিষয় হলো,ননসের বাচ্চাকে আপনার কাছে রাখা এটি আপনার উপর আবশ্যক নয়।
আপনি না রাখলে তাতে শরীয়াহ দৃষ্টিকোন থেকে কোনো সমস্যা নেই।
তাই আপনার যেহেতু বাচ্চা রয়েয় তাই ননসের বাচ্চাকে রাখবেননা।
আপনার বাচ্চাকে নেয়া (দেখাশোনা করা) আপনার শাশুড়ীর উপর আবশ্যক নয়। এটি আপনার ও আপনার স্বামীর উপরেই দায়িত্ব। প্রয়োজনে এর জন্য অন্য কাউকে বেতন দিয়ে হলেও রেখে দিতে পারেন।
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্বামীর আলাদা বাসস্থান নিয়ে থাকার সামর্থ থাকলে আলাদা থাকারই পরামর্শ থাকবে।
আর কারন বশত আলাদা থাকা সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে আপনার সন্তান আপনার শাশুড়ীকে দেখতে বলবেননা।
এটি আপনার ও আপনার স্বামীর উপরেই দায়িত্ব। প্রয়োজনে আপনার সন্তানকে নেয়ার জন্য অন্য কাউকে বেতন দিয়ে হলেও রেখে দিতে পারেন।