জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান মতে মাথার উপর মাসাহ করা ফরজ।
ইহরামের উপর মাসাহ করলে সেটি যথেষ্ট নয়।
কিতাবুল ফাতওয়া ৪/২৩
আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “হে মুমিনগণ, যখন তোমরা সালাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাতগুলো কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও এবং তোমাদের মাথায় মাসেহ কর এবং পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে নাও।”[সূরা মায়েদা, আয়াত: ৬]
এখানে সরাসরি মাথার উপর মাসাহ করার কথা বলা হয়েছে।
,
★তাই হিজাবের উপর দিয়ে মাসাহ করা যথেষ্ট হবেনা।
হ্যাঁ যদি হিজাব পানি দ্বারা ভিজে পানি ভিতরে চুলে চলে যায়,তাহলে এক চতুর্থাংশ মাথা ভিজে গেলে মাসাহ আদায় হয়ে যাবে।
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
,
হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাগড়ীর উপর মাসেহ করেছেন।
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بَزِيعٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ، - يَعْنِي ابْنَ زُرَيْعٍ - حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ الطَّوِيلُ، حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْمُزَنِيُّ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ تَخَلَّفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَتَخَلَّفْتُ مَعَهُ فَلَمَّا قَضَى حَاجَتَهُ قَالَ " أَمَعَكَ مَاءٌ " . فَأَتَيْتُهُ بِمَطْهَرَةٍ فَغَسَلَ كَفَّيْهِ وَوَجْهَهُ ثُمَّ ذَهَبَ يَحْسِرُ عَنْ ذِرَاعَيْهِ فَضَاقَ كُمُّ الْجُبَّةِ فَأَخْرَجَ يَدَهُ مِنْ تَحْتِ الْجُبَّةِ وَأَلْقَى الْجُبَّةَ عَلَى مَنْكِبَيْهِ وَغَسَلَ ذِرَاعَيْهِ وَمَسَحَ بِنَاصِيَتِهِ وَعَلَى الْعِمَامَةِ وَعَلَى خُفَّيْهِ ثُمَّ رَكِبَ وَرَكِبْتُ فَانْتَهَيْنَا إِلَى الْقَوْمِ وَقَدْ قَامُوا فِي الصَّلاَةِ يُصَلِّي بِهِمْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ وَقَدْ رَكَعَ بِهِمْ رَكْعَةً فَلَمَّا أَحَسَّ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ذَهَبَ يَتَأَخَّرُ فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ فَصَلَّى بِهِمْ فَلَمَّا سَلَّمَ قَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَقُمْتُ فَرَكَعْنَا الرَّكْعَةَ الَّتِي سَبَقَتْنَا .
মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু বাযী (রহঃ) ... মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (এক সফরে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পিছনে রয়ে গেলেন। আমিও তাঁর সাথে পেছনে পড়লাম। তিনি হাজত পূরণ করে বললেন, তোমার সাথে কি পানি আছে? আমি একটি পানির পাত্র নিয়ে এলাম। তিনি উভয় হাতের কবজা পর্যন্ত এবং মুখমন্ডল ধূইলেন তারপর উভয় বাহু বের করতে চাইলেন; কিন্তু জোব্বার আস্তিনে আটকে গেল। এতে জোব্বার নিচ থেকে তিনি হাত বের করলেন এবং জোব্বাটি কাঁধের ওপর রেখে দিলেন। উভয় হাত ধুইলেন, মাথার সম্মুখভাগ এবং পাগড়ি ও উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন। তারপর তিনি সাওয়ার হলেন এবং আমিও সাওয়ার হলাম।
আমরা যখন আমাদের কাওমের কাছে পৌছলাম তখন তারা সালাত আদায় করছিল। আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) তাদের সালাত এ ইমামতি করছিলেন। তিনি তাদেরকে নিয়ে এক রাকআত পড়ে ফেলেছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমন টের পেয়ে তিনি পিছিয়ে আসছিলেন। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (সেখানে থাকতে) ইশারা করলেন। এতে তিনি (আবদুর রহমান ইবনু আওফ) তাদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন। তিনি যখন সালাম ফিরালেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন দাঁড়িয়ে গেলেন এবং আমিও দাঁড়িয়ে গেলাম। তারপর আমাদের থেকে যে রাক’আত ছুটে গিয়েছিল তা আদায় করলাম।
(মুসলিম ৫২৬)
এর উপর ভিত্তি করে ইবনে হাযম সহ কিছু আলেম, মহিলাদের মাথার হিজাব বা ওড়নার উপর মাসেহ করা বৈধ বলে ফতোয়া প্রদান করেছেন। কিন্তু সরাসরি এ ব্যাপারে দলীল পাওয়া যায় না।
,
★তাই কিছু ইসলামী স্কলারদের মত হলোঃ
বিশেষ কোন ওজর থাকলে মহিলাদের মাথার ওড়ানা বা হিজাবের উপর মাসেহ করা জায়েয রয়েছে। যেমন, ঠাণ্ডা আবহাওয়া, মাথা খুলে মাসেহ করলে পর পুরুষ দেখার সম্ভাবনা, মাথায় মেহদী দিয়ে কাপড়ের মাধ্যমে চুল বাধা থাকলে বা খোলার পর পূণরায় বাধা কষ্টকর ইত্যাদি। অন্যথায় মাসেহ করা ঠিক নয়।
,
,
সুতরাং তাদের মতানুসারীগন এই মাসয়ালার উপর আমল করতে পারবেন।
কোনো সমস্যা নেই।
,
তবে অধিকাংশ উলামায়ে কেরামগন বলেছেন যে হিজাবের উপর মাসাহ কোনো ভাবেই জায়েজ নেই।