আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
790 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
আমি কলেজ এবং কোচিং করে বাসায় আসতে আসতে বিকাল হয়ে যায়।এমতাবস্থায় প্রতিদিনের যোহরের সালাত টা আমি কলেজেই আদায় করি।অনেক মেয়েকেই দেখি তারা হিজাবের ওপর দিয়ে মাথা মাসহ করে।আমি জানতে চাচ্ছিলাম হিজাবের ওপরে কী মাথা মাসহ করা জায়েজ?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান মতে মাথার উপর মাসাহ করা ফরজ।
ইহরামের উপর মাসাহ করলে সেটি যথেষ্ট নয়।
 কিতাবুল ফাতওয়া ৪/২৩

আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “হে মুমিনগণ, যখন তোমরা সালাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাতগুলো কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও এবং তোমাদের মাথায় মাসেহ কর এবং পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে নাও।”[সূরা মায়েদা, আয়াত: ৬]
এখানে সরাসরি মাথার উপর মাসাহ করার কথা বলা হয়েছে।
,
★তাই হিজাবের উপর দিয়ে মাসাহ করা যথেষ্ট  হবেনা।
হ্যাঁ যদি হিজাব পানি দ্বারা ভিজে পানি ভিতরে চুলে চলে যায়,তাহলে এক চতুর্থাংশ মাথা ভিজে গেলে মাসাহ আদায় হয়ে যাবে।
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,  
,
 হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাগড়ীর উপর মাসেহ করেছেন। 

وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بَزِيعٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ، - يَعْنِي ابْنَ زُرَيْعٍ - حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ الطَّوِيلُ، حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْمُزَنِيُّ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ تَخَلَّفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَتَخَلَّفْتُ مَعَهُ فَلَمَّا قَضَى حَاجَتَهُ قَالَ " أَمَعَكَ مَاءٌ " . فَأَتَيْتُهُ بِمَطْهَرَةٍ فَغَسَلَ كَفَّيْهِ وَوَجْهَهُ ثُمَّ ذَهَبَ يَحْسِرُ عَنْ ذِرَاعَيْهِ فَضَاقَ كُمُّ الْجُبَّةِ فَأَخْرَجَ يَدَهُ مِنْ تَحْتِ الْجُبَّةِ وَأَلْقَى الْجُبَّةَ عَلَى مَنْكِبَيْهِ وَغَسَلَ ذِرَاعَيْهِ وَمَسَحَ بِنَاصِيَتِهِ وَعَلَى الْعِمَامَةِ وَعَلَى خُفَّيْهِ ثُمَّ رَكِبَ وَرَكِبْتُ فَانْتَهَيْنَا إِلَى الْقَوْمِ وَقَدْ قَامُوا فِي الصَّلاَةِ يُصَلِّي بِهِمْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ وَقَدْ رَكَعَ بِهِمْ رَكْعَةً فَلَمَّا أَحَسَّ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ذَهَبَ يَتَأَخَّرُ فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ فَصَلَّى بِهِمْ فَلَمَّا سَلَّمَ قَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَقُمْتُ فَرَكَعْنَا الرَّكْعَةَ الَّتِي سَبَقَتْنَا .

মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু বাযী (রহঃ) ... মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (এক সফরে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পিছনে রয়ে গেলেন। আমিও তাঁর সাথে পেছনে পড়লাম। তিনি হাজত পূরণ করে বললেন, তোমার সাথে কি পানি আছে? আমি একটি পানির পাত্র নিয়ে এলাম। তিনি উভয় হাতের কবজা পর্যন্ত এবং মুখমন্ডল ধূইলেন তারপর উভয় বাহু বের করতে চাইলেন; কিন্তু জোব্বার আস্তিনে আটকে গেল। এতে জোব্বার নিচ থেকে তিনি হাত বের করলেন এবং জোব্বাটি কাঁধের ওপর রেখে দিলেন। উভয় হাত ধুইলেন, মাথার সম্মুখভাগ এবং পাগড়ি ও উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন। তারপর তিনি সাওয়ার হলেন এবং আমিও সাওয়ার হলাম।

আমরা যখন আমাদের কাওমের কাছে পৌছলাম তখন তারা সালাত  আদায় করছিল। আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) তাদের সালাত এ ইমামতি করছিলেন। তিনি তাদেরকে নিয়ে এক রাকআত পড়ে ফেলেছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমন টের পেয়ে তিনি পিছিয়ে আসছিলেন। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (সেখানে থাকতে) ইশারা করলেন। এতে তিনি (আবদুর রহমান ইবনু আওফ) তাদেরকে নিয়ে সালাত  আদায় করলেন। তিনি যখন সালাম ফিরালেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন দাঁড়িয়ে গেলেন এবং আমিও দাঁড়িয়ে গেলাম। তারপর আমাদের থেকে যে রাক’আত ছুটে গিয়েছিল তা আদায় করলাম।
(মুসলিম ৫২৬)

এর উপর ভিত্তি করে ইবনে হাযম সহ কিছু আলেম, মহিলাদের মাথার হিজাব বা ওড়নার উপর মাসেহ করা বৈধ বলে ফতোয়া প্রদান করেছেন। কিন্তু সরাসরি এ ব্যাপারে দলীল পাওয়া যায় না।
,
★তাই কিছু ইসলামী স্কলারদের মত হলোঃ  
বিশেষ কোন ওজর থাকলে মহিলাদের মাথার ওড়ানা বা হিজাবের উপর মাসেহ করা জায়েয রয়েছে। যেমন, ঠাণ্ডা আবহাওয়া, মাথা খুলে মাসেহ করলে পর পুরুষ দেখার সম্ভাবনা, মাথায় মেহদী দিয়ে কাপড়ের মাধ্যমে চুল বাধা থাকলে বা খোলার পর পূণরায় বাধা কষ্টকর ইত্যাদি। অন্যথায় মাসেহ করা ঠিক নয়।
,
,
সুতরাং তাদের মতানুসারীগন এই মাসয়ালার উপর আমল করতে পারবেন।
কোনো সমস্যা নেই।   
,
তবে অধিকাংশ উলামায়ে কেরামগন বলেছেন যে হিজাবের উপর মাসাহ কোনো ভাবেই জায়েজ নেই।      


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...