আসসালামু আলাইকুম হুজুর,
আমি ওয়াসওয়াসার রোগি কিনা জানিনা।
কারন আমি লজ্জার ভয়ে ডাক্তার দেখাই নি।
হুজুর আমার কথা গুলা কষ্ট করে পড়ে একটু বলবেন আমি ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত কিনা।
আমার আগে কখোনো ওয়াসওয়াসা ছিলো না। এই তালা** আর ইমানের ওয়াসওয়াসা ৬-৭ মাস আগে তৈরি হইছে এবং বর্তমানে খুবই দুশ্চিন্তায় থাকি আমি সারাক্ষণ। কারনে অকারনে ওয়াসওয়াসা।
আজকে থেকে প্রায় ৬-৭ মাস আগে আমি তালা*** ফতোয়া দেখে আমার ভিতরে সেদিন থেকে তিব্র ওয়াসওয়াসা শুরু হয় যে, অতিতে কিছু বলেছি নাকি। আমার সেইদিন থেকে যে ওয়াসওয়াসা শুরু হয়। আমি প্রায় খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিছিলাম। রাতে চিন্তায় প্রথম প্রথম ঘুম হইতো না। আমার কিছু সমস্যা আপনাকে লিখতেছি। আপনি পড়ে আমাকে একটু বলবেন আমি কি ওয়াসওয়াসাতে আক্রান্ত নাকি।
১। আমি সেদিন থেকে তালা*** কোন শব্দ শুনতেই পারি না। সেটা কেউ যদি মুখে ফতোয়া হিসেবে বলুক বা অন্য কোন কিছুতে। আমি সেখান থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করি। ইগনোর করার চেষ্টা করি।
২। মুভি বা সিনেমাতে ডিভোর্স এর কোন শব্দ শুনলে আমি ঐ মুভি আর সিনেমা অফ করে দেই। এবং চিন্তা করতে থাকি যে মনে মনে ওরকম শব্দ কখোনো বলেছিলাম নাকি।
৩। হুজুর আমার মনের মধ্যে সারাক্ষণ ডিভো*** এর শব্দ গুলা মনে আসতে থাকে। আমি চাই না মনে আসতে। তারপরও বার বার মনে চলে আসে। চেষ্টা করি রোজ যেনো কোনভাবে মনে না আসে, কিন্তু শয়তান বার বার মনের ভিতর শব্দ গুলা নিয়ে আসে।
৪। আমি স্ত্রীর সাথে কথা বলতে গেলে অনেক ভেবে চিন্তে কথা বলতে হয় কারন কথা বলতে গেলে ডিভো**** শব্দ গুলা মনের ভিতর চলে আসে। তখন চুপ হয়ে যাই ।
৫। কোন জায়গায় একা চুপ করে বসে থাকলে ডিভো*** শব্দ গুলা মনে হইতে থাকে। আমি তখন চিন্তা পড়ে যাই যে মনের কথা আবার উচ্চারণ হয়ে গেলো কিনা। আমি রেকর্ডার অন করে চেক করি যে আওয়াজ কি রেকর্ডে শুনা যায় নাকি। যদিও শুনা যায় না। তারপরও আমি এরকম করছি মোবাইলের রেকর্ডার দিয়ে। এ নিয়ে দুই তিনবার রেকর্ডার দিয়ে এরকম করেছি। কিন্তু কোন শব্দ শুনা যায় নি। মনের ভিতর সন্দেহ থেকে বার বার রেকর্ডার দিয়ে চেক করতে ইচ্ছে হয় রোজ, কিন্তু করি না। এ নিয়ে চন্তায় থাকি।
৬। আমি সবসময় সারাক্ষণ মনে মনে বলা কথা কানে শোনা যায় নাকি তার জন্য ঘরের ফ্যান অফ করে জিহ্বা ঠোট নেড়ে নেড়ে চেক করি যে কানে শোনার মতো বিন্দুমাত্র আওয়াজ গেছে নাকি।
৭। মনে ডিভো*** এর শব্দ শয়তান বার বার মনের ভিতর কথা উঠায়। আমি তখন মুখ আর জিহ্বা আটকে রাখি যাতে উচ্চারিত না হয়ে যায়।
৮।বন্ধুদের সাথে কথা বলতে গেলে আমি এখন আগের মতো ফ্রিলি কথা বলতে পারি না। অনেক বুঝে শুনে কথা বলি যে কি না কি বলি।
৯। কারো সাথে কথা বলা শেষ হলে, আমি তার সাথে কি কি কথা বলেছি তা নিয়া ভাবতে থাকি যে সেখানে কোন কেনায়া বাক্য ছিলো নাকি। বা অন্য কোন শব্দ বলেছি নাকি।
১০। স্ত্রীকে বাসায় পৌছে দিলে । তারপর বাসে উঠাই দিলে যাওয়ার মতো শব্দ উচ্চারণ করা থেকে বিরত থাকি। স্ত্রীকে যদি বলি ঢাকা কোচিং করতে যাও। তখন তা নিয়া চিন্তা করতে থাকি যে কেনায়া বাক্য উচ্চারিত হলো নাকি।
১১।ইমানের ওয়াসওয়াসা এর জন্য আমি সবসময় ভেবে চিন্তে কথা বলি।
১২। ইমান যাতে নষ্ট না হয়ে যায় এ নিয়ে চিন্তায় থাকি।
১৩। কিছুদিন আগে হুরমাত নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছিলাম।
১৪। যিহার নিয়ে কয়েক মাস চিন্তায় ছিলাম।
১৫।যিহারের চিন্তায় স্ত্রীকে ভালো গুনের সাথে প্রশংসা করতে পারি না। প্রশংসা করলেও যিহার বিষয়ে চিন্তা করতে থাকি।
১৪। সারাক্ষণ হুজুর আমার মনের ভিতর উল্টো পাল্টা কথা হইতে থাকে। আমি চাই না মনে আসুক তারপরও মনে আসে। তারপর আমি চিন্তা করতে থাকি যে মনের ভিতর কথা মুখ দিয়ে বিন্দুমাত্র উচ্চারণ হয়ে কানে পৌছালো নাকি। এজন্য ওসব কথা মনে উঠলে দাত চেপে চুপচাপ হয়ে থাকি।
হুজুর, আমি তো খাই-দাই,পড়ি,সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ।শুধুমাত্র এই তালাকের ওয়াসওয়াসা আমাকে পাগল করে দিচ্ছে।অনেক সময় হুরমাত,যিহার, একেক সময় একেকটা নিয়া শুরু। একেকদিন একেকটা বিষয় নিয়া চিন্তা শুরু হয়। একদিন চিন্তা না থাকলে পড়ের দিন চিন্তা শুরু হয়।
আমিও কি তাহলে সেই ওয়াসওয়াসার রুগি যার বিবেক বুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে?
আমার জন্য কি শরীয়ত ছাড় দিয়েছে।???
শয়তান আমার মনের ভিতর সারাক্ষণ উল্টো পাল্টা ডিভো** শব্দ গুলা উঠায়। আমি কোন ভাবেই অনেক চেষ্টা করি যে মনের ভিতর ঐ সব কথা যেনো না আসে। তারপরও শয়তান মনে মনে সারাক্ষণ উঠায়।
শয়তানের ওয়াসওয়াসাতে যদি অনিচ্ছা বা আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে,
মনের কথা মুখে বিন্দুমাত্র উচ্চারণ হয়ে আমার কানে আসে তখন শরিয়ত কি আমাকে ছাড় দিবে???
যদিও আমি ডাক্তার দেখাইনি আমি জানিনা আমি ওয়াসওয়াসে আক্রান্ত নাকি !
হুজুর, উপরের সবগুলো কথা পড়ে আপনার কি মনে হয় আমি কি ওয়াসওয়াসাতে আক্রান্ত ?????