আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
119 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
edited by
আসসালমুআলাইকুম হুজুর,

১. হুজুর আমি জানতাম না সেই ভাবে বুঝতাম না । বন্ধু দের সামনে মাঝে মাঝে গুনহা প্রকাশ করে ফেলেছি। তার জন্য আমি খুবই দুঃখিত। হুজুর আমি ভুল করে প্রকাশ করেছি। হুজুর আমি আল্লাহ র কাছে সত্যিই ভীষণ ভাবে অনুতপ্ত।এবং তাওবা করেছি ,  হুজুর আমি কি মাফ পাবো?
****আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার সকল উম্মাত ক্ষমাপ্রাপ্তদের মধ্যে আছে; কিন্তু যে ব্যক্তি নিজের অপরাধ প্রকাশকারী, সে ক্ষমাপ্রাপ্তদের মধ্যে নয়। এটা কতই না লজ্জাহীনতার কাজ যে, লোক রাতে খারাপ কাজ করে, আর আল্লাহ তা‘আলা তার কুকর্ম গোপন করে রাখেন। অতঃপর সকাল হতেই লোকেদেরকে বলে ফেলে, হে অমুক! আমি রাতে এরূপ কাজ করেছি। আল্লাহ তা‘আলা রাতে তার দোষ ঢেকে ছিলেন, কিন্তু সকাল হতেই সে আল্লাহ তা‘আলার পর্দা উন্মুক্ত করে দিলো।

(সহীহ : বুখারী ৬০৬৯, মুসলিম ৫২-(২৯৯০), সহীহুল জামি‘ ৪৫১২, আল মু‘জামুস্ সগীর ৬৩২, আল মু‘জামুল আওসাত্ব ৪৪৯৮, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়াহাক্বী ১৮০৫৪, শু‘আবুল ঈমান ৯৬৭৩।)

২. উপরুক্তো হাদীস দেখে আমার খুবই ভয় হয়ে যাচ্ছে । আমি তো গুনহা প্রকাশ করেছি , আমার খুবই ভুল হয়েছে, তাহলে কি আমি  আমার প্রিয় নবী সাঃ এর ক্ষমাপ্রাপ্ত উম্মাত দের মধ্যে থাকবো না ? হুজুর আমার খুবই চিন্তা হচ্ছে হুজুর , আমি কি ক্ষমাপ্রাপ্ত দের মধ্যে থাকবো??

৩.  তখন আমি বুঝতাম না নাম নেওয়ার জন্য হুজুর আমি বন্ধুদের কাছে গল্পঃ করতে করতে এমন এমন মিথ্যা কথা বলেছি , যে কাজ আমি কখনো করিনি। তাহলে কি সেই পাপ ও আমার হবে যে কাজ আমি করিনি????, বন্ধুদের সামনে এমনি বলেছি।
৪. হুজুর ifatwa তে  প্রশ্ন করতে গিয়ে নিজের অনেক কিছু বলছি বা পাপের কথা ও বলেছি। তাহলে কি আমার এই পাপের ক্ষমা হবে না ?

৫. স্ত্রীর সামনে পাপের কথা বলেছি , দিয়ে স্ত্রী কে বলেছি তুমি আল্লাহর কাছে আমার জন্য দুয়া করো। স্ত্রীর সামনে পাপের কথা বলেছি এর জন্য কি ক্ষমা পাবো না?
৬. হুজুর একটা বিষয় জানতে চাই,
লোক দেখানো এবাদত করা বা আমল করা কেই কি রিয়া বলে??
৭. হুজুর এই খানে যখন প্রশ্ন করছিলাম তখন মনে মনে এমন ভাবনা হলো আল্লাহ আমাকে ইনশাল্লাহ মাফ করবেন। এই রকম মনে হলো দিয়ে একটু মনে মনে আনন্দ হলো এর জন্য কি রিয়া হবে?

৮. হুজুর আমি যখন রিয়া সম্পর্কে জানতাম না, বুঝতাম না । তখন একবার আমি মনে মনে ভাবছিলাম নামাজ পড়লে সবাই ভালো বলবে এই রকম ভাবনা এসেছিল, বা লোক দেখিয়ে অজু করতাম । এই টা কি রিয়া হয়েছে,?
৮.১ হুজুর রিয়া যদি হয়ে থাকে তাহলে তওবা করে আল্লাহর কাছে , মাফ চেয়ে নিলে কি ক্ষমা হবে ??আমি তখন রিয়া সম্পর্কে জানতাম না ?
৮.২ হুজুর রিয়া হলে কি ঈমান চলে যায়? এই রিয়া টা আমার বিয়ের অনেক বছর আগের ঘটনা  হুজুর আমার  বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক আছে তো?
হুজুর রিয়া হলে কি বৈবাহিক সম্পর্ক ভেঙে জাই?
৯. মায়ের মুখের কোনো এটো খাবার ( মানে মায়ের খাওয়া কোনো খাবার এর অংশ)  খেলে কি হুরমত হবে?
১০.  হুজুর আমার যখন বয়স ১৩ কি ১৪ হবে , তখন স্কুল এর একটা  ছেলের সঙ্গে মনে হয় ঝগড়া হয়েছিল দিয়ে আমি শিক্ষকের সামনে ওই ছেলে কে মিথ্যা দোষ দিয়েছিলাম। দিয়ে তাই নিয়ে শিক্ষক এর সামনে তর্ক বিতর্ক হচ্ছিলো , দিয়ে হটাৎ সেই দোষ টা ও শিক্ষক এর সামনে সেই ছেলেটা স্বীকার করে নিয়েছে। দিয়ে শিক্ষক তাকে মেরেছে। হুজুর আমি এখন আল্লাহর কাছে মাফ চেয়েছি। তাওবা করেছি। অনেক বছর হয়েছে সেই ছেলে কে এখন খুঁজে পাবনা। ১৩ বছর হয়ে গেল। হুজুর আমি আল্লাহর কাছে মাফ পাবো তো? আমার খুব আফসোস হচ্ছে ছোটো ছিলাম অত বুদ্ধি ছিল না আমার এখন কি করবো? আমি আল্লাহর কাছে মাফ পাবো তো?

১১.হুজুর এই ঘটনা টা বললাম এর জন্য এইটা আবার গুনহা প্রকাশ হয়ে গেলনা তো? আমি করণীয় কি তাই জানার জন্য প্রশ্ন করেছি।

১২. হুজুর ইচ্ছা করে মনে মনে তালাক বললে বা দিলে কি তালাক হবে?

১৩। হুজুর এইখানে তালাক কথাটা লিখতে হয়েছে এর জন্য কি কোনো তালাক হবে?

১৪. যখন তা*   এই কথা টা লিখছিলাম তখন শয়তানের ওয়াসওয়াসা তে মনে হচ্ছে সত্যি সত্যি লিখছি তাই মনে হচ্ছে সবই শয়তানের ওয়াসওয়াসা। এর জন্য কোনো তালাক হবে না তো? আমার বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক আছে তো হুজুর?

1 Answer

0 votes
by (676,960 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(১,২.৩.৪.৫)
আপনি নিজ গুনাহের কথা প্রকাশ করে মারাত্মক অন্যায় করেছেন।
এক্ষেত্রে আল্লাহর কাছে থেকেই মাফ চেয়ে নিতে হবে।

আপনি যদি উক্ত গুনাহ গুলি ছেড়ে দিয়ে লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে মাফ চান,আর ভবিষ্যতে আর এহেন গুনাহ করবেননা বলে আল্লাহর কাছে ওয়াদা করেন,সেক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা আপনাকে মাফ করবেন,ইনশাআল্লাহ। 

(০৬)
যদি শুধুমাত্র লোক দেখানো ইবাদত হয়,তাহলে এমন রিয়া ছোট শিরক।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، أَنَّهُ خَرَجَ يَوْمًا إِلَى مَسْجِدِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَوَجَدَ مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ قَاعِدًا عِنْدَ قَبْرِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَبْكِي فَقَالَ مَا يُبْكِيكَ قَالَ يُبْكِينِي شَىْءٌ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ " إِنَّ يَسِيرَ الرِّيَاءِ شِرْكٌ وَإِنَّ مَنْ عَادَى لِلَّهِ وَلِيًّا فَقَدْ بَارَزَ اللَّهَ بِالْمُحَارَبَةِ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الأَبْرَارَ الأَتْقِيَاءَ الأَخْفِيَاءَ الَّذِينَ إِذَا غَابُوا لَمْ يُفْتَقَدُوا وَإِنْ حَضَرُوا لَمْ يُدْعَوْا وَلَمْ يُعْرَفُوا قُلُوبُهُمْ مَصَابِيحُ الْهُدَى يَخْرُجُونَ مِنْ كُلِّ غَبْرَاءَ مُظْلِمَةٍ " .

উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক দিন তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মসজিদে গিয়ে মুআয ইবনে জাবাল (রাঃ) কে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কবরের পাশে উপবিষ্ট অবস্থায় কান্নারত দেখতে পান। তিনি জিজ্ঞেস করেন, তুমি কাঁদছো কেন? তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শ্রুত কিছু বিষয় আমাকে কাঁদাচ্ছে। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ সামান্যতম কপটতাও শিরক। যে ব্যক্তি আল্লাহর কোন বন্ধুর (ওলী) সাথে শত্রুতা করলো, সে যেন আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলো। নিশ্চয় আল্লাহ ভালোবাসেন সৎকর্মপরায়ণ আল্লাহভীরু আত্মগোপনকারী বান্দাদের, যারা দৃষ্টির অন্তরাল হলে কেউ তাদের খোঁজ করে না, সামনে উপস্থিত থাকলে কেউ তাদের আপ্যায়ন করে না এবং তাদের পরিচয়ও নেয় না। তাদের অন্তরসমূহ হেদায়াতের আলোকবর্তিকা। তারা সব ধরনের অন্ধকারাচ্ছন্ন কদর্যতা থেকে নিরাপদে বের হয়ে যাবে।
(ইবনে মাজাহ ৩৯৮৯)

(০৭)
এর জন্য রিয়া হবেনা।

(০৮)
এটা রিয়ার অন্তর্ভুক্ত। 

(৮.১)
এক্ষেত্রে তওবা করে আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে নিলে আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করবেন,ইনশাআল্লাহ। 

(৮.২)
আপনার বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক আছে।
রিয়া হলে বৈবাহিক সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়না।
এটি শিরকে আকবার নয়।

(০৯)
না,এক্ষেত্রে হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। 

(১০)
আপনি ঐ ছেলের কাছ থেকে মাফ চেয়ে নিবেন।
ঐ ছেলেকে কোনোভাবেই খুজে না পেলে তার জন্য মাগফিরাত এর দোয়া আল্লাহর কাছে করবেন।

(১১)
ফতোয়া জানার জন্য বলাতে সমস্যা হবেনা।

(১২)
না,এতে তালাক হবেনা। 

(১৩)
এর জন্য তালাক হবেনা। 

(১৪)
এর জন্য কোনো তালাক হবেনা।
আপনার বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক আছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...