আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
219 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (55 points)
edited by
১.কোনো স্বামী যদি তার স্ত্রীকে রাগ করে  তুমি হারাম বললে কি নিয়ত ছাড়াই তালাক হবে?

২.কোনো স্বামী যদি তার স্ত্রীকে রাগ করে বলে তুই হারামজাদা একথা বললে কি তালাক হবে কোনো?

৩.তালাকের অধিকার প্রাপ্ত কোনো মহিলা যার মাথায় তালাকের চিন্তা ঘোরে প্রায়ই।স্বাভাবিক কথা বলতে গেলেও তালাকের কথা স্মরন হয়।ঐ মহিলা ফোনে ডিভোর্সের কোনো ভিডিও সামনে আসলে ঐ মহিলার নিজের উপর তালাকের চিন্তা চলে আসে কিন্তু সে মুখে তালাক নিলাম এটা বলছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ হয়।আবার ঐ মহিলার নামাজে সালাম ফিরানোর সময় আসসালামু আলাইকুম না বলে তালাক নিলাম এটা বলছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ হয়।এরকম প্রতিনিয়ত ঐ মহিলার নিজের উপর  তালাকের নেয়ার কথা মনে আসার সাথে  মুকে বলে ফেলছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ হওয়ার কারনে কি তার নিজের উপর কোনো তালাক হবে?
৪.কেনায়া তালাকের কিছু শব্দ যেমন: চলে যাওয়া, একা,আলাদা এগুলো স্বাভাবিক কথা বার্তায় ও ব্যবহার হয় কিন্তু এগুলোও বলার সময় তালাকের চিন্তা ঐ মহিলার মাথায় আসে যেমন সে বললো আমি একা একা যেতে পারবো,আমি একা খেয়ে শেষ করতে পারবো এরকমটা বলার ক্ষেত্রে যখনই সে  আমি একা এটা বলে হটাৎ করেই তালাকের কথা স্মরন হয়।এমতাবস্থায় কি কোনো তালাক হবে?

৫.কোনো কেনায়া তালাকের শব্দ বলার ক্ষেত্রে কখন যে তালাকের কথা স্মরন হয়েছে তা নিয়ে যদি সন্দেহ হয় অর্থাৎ আগে পরে নাকি শব্দটা বলার মধ্যে এমতাবস্থায় কি কোনো তালাক হবে?

৬.৫ নং প্রশ্নে "কোনো কেনায়া তালাকের শব্দ বলার ক্ষেত্রে কখন যে তালাকের কথা স্মরন হয়েছে" এতটুকু লেখার সময় যদি নিজের তালাকের কথা স্মরন হয় তাহলে কি তালাক হবে?আর এ বাক্যটা কি তালাকের মিথ্যা স্বীকারোক্তি বলে গন্য হবে?

৭.৫ও৬ নং প্রশ্ন করার কারনে কি আমার নিজের কোনো সমস্যা হবে তালাক সংক্রান্ত?

৮.কোনো লোক বা তালাকের অধিকার প্রাপ্ত কোন মহিলা যদি শুধু এতটুকু বলে "কোনো কেনায়া তালাকের শব্দ বলার ক্ষেত্রে কখন যে তালাকের কথা স্মরন হয়েছে" এটা কি তার জন্য তালাকের মিথ্যা স্বীকারোক্তি বলে গন্য হবে?

1 Answer

0 votes
by (567,120 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ شِهَابٍ يَقُولُ فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ بَرِئْتِ مِنِّي وَبَرِئْتُ مِنْكِ إِنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ بِمَنْزِلَةِ الْبَتَّةِ قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ أَنْتِ خَلِيَّةٌ أَوْ بَرِيَّةٌ أَوْ بَائِنَةٌ إِنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ لِلْمَرْأَةِ الَّتِي قَدْ دَخَلَ بِهَا وَيُدَيَّنُ فِي الَّتِي لَمْ يَدْخُلْ بِهَا أَوَاحِدَةً أَرَادَ أَمْ ثَلَاثًا فَإِنْ قَالَ وَاحِدَةً أُحْلِفَ عَلَى ذَلِكَ وَكَانَ خَاطِبًا مِنْ الْخُطَّابِ لِأَنَّهُ لَا يُخْلِي الْمَرْأَةَ الَّتِي قَدْ دَخَلَ بِهَا زَوْجُهَا وَلَا يُبِينُهَا وَلَا يُبْرِيهَا إِلَّا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ وَالَّتِي لَمْ يَدْخُلْ بِهَا تُخْلِيهَا وَتُبْرِيهَا وَتُبِينُهَا الْوَاحِدَةُ قَالَ مَالِك وَهَذَا أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي ذَلِكَ

মালিক (রহঃ) বলেনঃ তিনি ইবন শিহাব (রহঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছেন, যে ব্যক্তি তাহার স্ত্রীকে বলিলঃ “আমার তোমা হইতে দায়িত্বমুক্ত হইয়াছি। তুমিও আমা হইতে দায়িত্বমুক্ত।” ইহা দ্বারা তালাকাই আল-বাত্তা-এর মতো তিন তালাক প্রযোজ্য হইবে।

যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীকে বলিলঃ (أَنْتِ خَلِيَّةٌ أَوْ بَرِيَّةٌ) “তুমি দায়মুক্ত” (أَنْتِ بَائِنَةٌ) “তুমি আমা হইতে পৃথক।” মালিক (রহঃ) বলেনঃ সে স্ত্রী যাহার সঙ্গে সহবাস করা হইয়াছে এইরূপ হইলে তবে তাহার স্বামীর উপরিউক্ত বাক্যগুলির দ্বারা তাহার উপর তিন তালাক বর্তাইবে। আর যদি সেই স্ত্রী এমন হয় যাহার সহিত সহবাস করা হয়নি, তবে ধর্মত স্বামীকে বিশ্বাস করা হইবে এবং তাহার নিকট জিজ্ঞাসা করা হইবে-সে উপরিউক্ত বাক্যগুলি দ্বারা এক তালাক উদ্দেশ্য করিয়াছে, না তিন তালাক। যদি সে এক তালাক উদ্দেশ্য করিয়াছে বলিয়া প্রকাশ করে তাহা হইলে এই বিষয়ে সেই ব্যক্তিকে হলফ দেওয়া হইবে। (যেহেতু স্বামীর উক্তির দ্বারা স্ত্রীর প্রতি এক তালাক বায়েন প্রযোজ্য হইয়াছে, তাই পুনর্বিবাহ ছাড়া স্বামী সেই স্ত্রীকে গ্রহণ করিতে পারবে না) তাই সে বিবাহের প্রস্তাবকারী হিসাবে অন্য লোকদের মতো একজন বলিয়া পণ্য হইবে। ইহার কারণ এই যে, যে স্ত্রীর সহিত সঙ্গম করা হইয়াছে সেই স্ত্রী তিন তালাক ছাড়া দায়িত্বমুক্ত বা স্বামী হইতে পৃথক হইবে না। আর যাহার সহিত সঙ্গম হয় নাই সেই স্ত্রী এক তালাক দ্বারা দায়িত্বমুক্ত ও পৃথক হইয়া যায়।

মালিক (রহঃ) বলিয়াছেনঃ এ বিষয়ে যাহা আমি শুনিয়াছি তন্মধ্যে ইহাই আমার নিকট উত্তম।
(মুয়াত্তা মালিক ১১৬৫)

ফাতওয়ার কিতাবে আছেঃ-

أنت على حرام، والفتاوى أنه يقع به البائن، وإن لم ينو لغلبة الاستعمال فى هذه البلاد (تاتارخانية-4\448، رقم: 6637)
সারমর্মঃ-
কেহ যদি স্ত্রীকে বলে,তুমি আমার উপর হারাম,তাহলে ফতোয়া হলো এর দ্বারা বায়েন তালাক পতিত হবে।  যদিও তালাকের নিয়ত না করুক। আমাদের দেশে এর অধিক ব্যবহার থাকার দরুন।

لو قال لها: أنت على حرام، والحرام عنده طلاق وقع إن لم ينو (البحر الرائق، زكريا-3\523، كويته-3\300)
সারমর্মঃ-
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি আমার উপর হারাম,আর হারাম তার নিকটে তালাক,তাহলে এর দ্বারা তালাক পতিত হবে।  যদিও তালাকের নিয়ত না করুক।

أفتى المتأخرون فى “انت على حرام” بأنه طلاق بائن للعرف بلا نية (رد المحتار، زكريا-4\466، كرتاشى-3\253)
সারমর্মঃ-
মুতায়াখখিরিনে উলামায়ে কেরামগন ফতোয়া দিয়েছেন যে কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি আমার উপর হারাম,তাহলে উরফ তথা সামাজিক প্রচলনের কারনে এর দ্বারা তালাক পতিত হবে।  যদিও তালাকের নিয়ত না করুক।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এক তালাকে বায়েন পতিত হবে।

(০২)
এ কথা বলার দরুন তালাক হবেনা।
কেননা এটি একটি গালি,এটি তালাকের কোনো বাক্য নয়।

(০৩)
সন্দেহ হওয়ার কারনে তার নিজের উপর কোনো তালাক হবেনা।

(০৪)
এমতাবস্থায় কোনো তালাক হবেনা।

(০৫)
এমতাবস্থায় কোনো তালাক হবেনা।

(০৬)
এতটুকু লেখার সময় যদি নিজের তালাকের কথা স্মরন হয়, তাহলে তালাক হবেনা।
আর এ বাক্যটা তালাকের মিথ্যা স্বীকারোক্তি বলে গন্য হবেনা।

(০৭)
না,উক্ত প্রশ্নগুলি করার দরুন তালাক সংক্রান্ত  আপনার নিজের কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৮)
এটা তার জন্য তালাকের মিথ্যা স্বীকারোক্তি বলে গন্য হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (55 points)
তালাকের অধিকার প্রাপ্ত কোনো মহিলা যদি "হারাম" এই শব্দটা শুধু বলে তাহলে কি তার নিজের উপর তালাক পতিত হবে? 
by (567,120 points)
এক্ষেত্রে তালাক হবেনা। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...