আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
467 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (28 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ

উস্তাদ,

১) নফল রোযা রেখে ঠোঁটে লিপজেল অথবা তেল জাতীয় কিছু দেয়া যাবে কিনা, কেননা ঠোঁট ফেটে যায় যেটা কষ্টকর।

২) কখনো ফজরের সুন্নাত নামাজ অনিচ্ছবশত আগে না পড়তে পারলে, পরে পড়বে বলে ভুলে গেলে, এমন কি যোহরের ওয়াক্ত ও হয়ে গেলে করণীয় কী?

৩) ঘুমের কারণে হঠাৎ  ফজর এর ওয়াক্ত চলে গেলে কী করণীয়? কাযা ই করতে হবে নাকি অন্য কিছু

৪) কারো কথার জবাব ইশারায় দেয়া আদবের মধ্যে পড়ে কিনা

৫) সূর্যোস্ত, সূর্যোদয় এবং দ্বি-প্রহরের  সময় সাহু সিজদাহ এবং তিলাওয়াতের সিজদাহ দেয়া যাবে কিনা

৬) এমনিতেই যেকোনো সময় সিজদায় গিয়ে দোয়া করা যাবে কিনা

৭) কারও সাহু সেজদাহ ওয়াজিব হওয়া সত্ত্বেও সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করে কারও সাথে কথা বলার পূর্বেই মনে পড়লে করনীয় কি? কীভাবে সাহু সিজদাহটি শুরু করবে বসে নাকি দাঁড়ানো অবস্থা থেকে?

৮) বান্দা মাসজিদ এ গেলে তার গুনাহের বোঝা কি মাসজিদে সাথে যায় নাকি বাহিরেই ফেরেশতারা বহন করে যতক্ষণ না বের হয়?
৯) দা'মাত বারাকাতুহুম, হাফিজাহুল্লাহ, রহিমাহুল্লাহ এর অর্থ কী?
১০) মুখে নামাজের নিয়ত করা সুন্নাত কিনা, ইখতেলাফ আছে কিনা এ বিষয়ে জানালে ভাল হয়।

জাযাকাল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
শীতকালে অনেক সময় ঠোঁট ফেটে যায় যেটা কষ্টকর।
তাই নফল রোযা রেখে ঠোঁটে লিপজেল অথবা তেল জাতীয় কিছু লাগানো যাবে।
তবে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে,যাতে করে মুখের ভিতর গিয়ে গলার ভিতর  চলে না যায়।    
যদি কোনো সময় মুখের ভিতর চলে যায়,তাহলে থুথু ফেলে দিবে।
যাতে গলার ভিতর চলে না যায়।    

(০২)
ফজরের সুন্নাত কাযা হয়ে গেলে সূর্য উদিত হওয়ার পর থেকে নিয়ে জোহরের ওয়াক্তের আগ পর্যন্ত (নিষিদ্ধ ওয়াক্ত ব্যাতিত) পড়া যাবে।  

এর পরও যদি পড়া না হয়,তাহলে আর সেটার কাযা আদায় করার সুযোগ নেই।
(ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী ১/১১২)

হাদীস শরীফে এসেছে    

وفى جامع الترمذى- عن أبي هريرة قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من لم يصل ركعتي الفجرفليصلهمابعد ما تطلع الشمس (جامع الترمذى-أبواب الصلاةعن رسول الله صلى الله عليه وسلم، باب ماجاءفي إعادتهمابعدطلوع الشمس،رقم-423)

অনুবাদ-হযরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত যে, নবীজি সা: বলেন-যে ফজরের দুই রাকআত সুন্নত (সময়মতো) পড়ল না সে যেন সূর্যোদয়ের পর তা আদায় করে। ( জামে তিরমিজী-১/৯৬)

 ولم تقض سنة الفجر إلا بفوتہا مع الفرض إلی الزوال (حاشیة الطحطاوي علی المراقي: ۴۵۳)
সারমর্মঃ-
ফজরের সুন্নাতের কাজা আদায় করতে হবেনা,কিন্তু ফজরের ফরজের সাথেই যদি তাহা ছুটে যায়,সেক্ষেত্রে সূর্য ঢলে যাওয়ার আগেই তার কাজা আদায় করা যাবে।

আরো জানুনঃ

,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যোহরের ওয়াক্তের সময় আর ফজরের সুন্নাতের কাজা আদায় করবেননা।
,
(০৩)
ঘুমের কারণে হঠাৎ  ফজর এর ওয়াক্ত চলে গেলে সেটার কাজা আদায় করতে হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « إِذَا رَقَدَ أَحَدُكُمْ عَنِ الصَّلاَةِ أَوْ غَفَلَ عَنْهَا فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ يَقُولُ أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِى

অনুবাদ-যখন তোমাদের কেউ নামায ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়ে, বা নামায থেকে গাফেল হয়ে যায়, তাহলে তার যখন বোধোদয় হবে তখন সে যেন তা আদায় করে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-আমাকে স্মরণ হলে নামায আদায় কর।

(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬০১
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১২৯৩২
সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪১৮২)

★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ফজর নামাজ কাযা হয়ে গেলে জোহরের ওয়াক্তের আগে নিষিদ্ধ ওয়াক্ত ব্যাতিত যেকোনো সময় আদায় করতে হবে ।

আরো জানুনঃ 
,
(০৪)
যদি সেটি সেই ব্যাক্তির প্রতি বেয়াদবি না বুঝায়,বা সে এটাকে বেয়াদবি না মনে করে,তাহলে কোনো সমস্যা নেই।
,
(০৫)
উক্ত সময়ে সাহু সেজদাহ নাজায়েজ।  
,
আর সেজদায়ে তেলাওয়াতের মাসয়ালা হলোঃ 
যদি নিষিদ্ধ সময়েই সেজদাহ এর আয়াত তেলাওয়াত  করা হয়,তাহলে উক্ত সময়ে সেজদাহ করা জায়েজ তবে মাকরুহে তানযিহি। 
,
আর যদি অন্য সময়ে আয়াত তেলাওয়াত এর পর উক্ত নিষিদ্ধ সময়ে সেজদাহ আদায় করা হয়,তাহলে সেটি মাকরুহে তাহরিমি । 
জায়েজ নেই।
,
الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (1/ 370، 374):
"(وكره) تحريماً، وكل ما لايجوز مكروه (صلاة) مطلقاً (ولو) قضاءً أو واجبةً أو نفلاً أو (على جنازة وسجدة تلاوة وسهو) لا شكر قنية (مع شروق) ... (وسجدة تلاوة، وصلاة جنازة تليت) الآية (في كامل وحضرت) الجنازة (قبل) لوجوبه كاملا فلا يتأدى ناقصا، فلو وجبتا فيها لم يكره فعلهما: أي تحريما. وفي التحفة: الأفضل أن لاتؤخر الجنازة.
(قوله: فلو وجبتا فيها) أي بأن تليت الآية في تلك الأوقات أو حضرت فيها الجنازة.
(قوله: أو تحريماً) أفاد ثبوت الكراهة التنزيهية.
(قوله: وفي التحفة إلخ) هو كالاستدراك على مفهوم قوله أي تحريما، فإنه إذا كان الأفضل عدم التأخير في الجنازة فلا كراهة أصلا، وما في التحفة أقره في البحر والنهر والفتح والمعراج حضرت " وقال في شرح المنية: والفرق بينها وبين سجدة التلاوة ظاهر؛ لأن تعجيل فيها مطلوب مطلقا إلا لمانع، وحضورها في وقت مباح مانع من الصلاة عليها في وقت مكروه، بخلاف حضورها في وقت مكروه وبخلاف سجدة التلاوة؛ لأن التعجيل لا يستحب فيها مطلقا اهـ أي بل يستحب في وقت مباح فقط فثبتت كراهة التنزيه في سجدة التلاوة دون صلاة الجنازة".
সারমর্মঃ  যদি অন্য সময়ে আয়াত তেলাওয়াত এর পর উক্ত নিষিদ্ধ সময়ে সেজদাহ আদায় করা হয়,তাহলে সেটি মাকরুহে তাহরিমি হবে। 

(৬) এমনিতেই যেকোনো সময় সিজদায় গিয়ে দোয়া করা যাবে।
,
(০৭)
নামাজ ভঙ্গের কোনো কারন না পাওয়া গেলে বসে গিয়ে সেজদায়ে সাহু আদায় করবে।
তারপর তাশাহুদ,দরুদ শরীফ,দোয়ায়ে মাছুরা পড়ে নামাজ শেষ করবে।
,
(০৮) গুনাহের বোঝা বান্দাই বহন করে।
,
(০৯)
দা'মাত বারাকাতুহুম, 
অর্থঃ তার কল্যাণসমূহ স্থায়ী হোক।  

হাফিজাহুল্লাহ, 
অর্থ- আল্লাহ তার হেফাজত করুক।

রহিমাহুল্লাহ এর অর্থ 
তার ওপর আল্লাহর রহম করুন।
,
(১০)
নামাজে মুখে নিয়ত সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...