আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
166 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (8 points)
আমার কিছু পুরুষ শিক্ষকগণ আমিসহ আমাদের ক্লাসের কয়েকজন মেয়েকে বাজে ইঙ্গিত দিয়ে কথা বলেছে এবং একজন শিক্ষক আমাকে মেসেঞ্জারে পর্ণ ভিডিও সেন্ড করে।এখন আমি আমার বাবা মা এবং আমার কিছু সহপাঠী বান্ধবী কে সতর্ক করে দেয়ার জন্য ওনাদের নামে গীবত করে ফেলেছি।এখন কী জায়েজ নাকি নাজায়েজ আমি বুঝতে পারছি না।

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

ফ্রি-মিক্সিং পরিবেশে অর্থাৎ বর্তমান সহশিক্ষা কিছু শর্ত সাপেক্ষে উলামায়ে কেরামগন জায়েজ বলেছন।
তার মধ্যে অন্যতম একটি  শর্ত হলো  ফেতনার আশংকা না থাকা।
প্রশ্নে উল্লেখিত শিক্ষকদের কর্মকান্ড হিসেবে উক্ত প্রতিষ্ঠানে আপনাদের (মুসলিম মহিলাদের) লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া  শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে নাজায়েজ। 
,
তাই দ্রুত উক্ত প্রতিষ্ঠান, ক্লাশ চেঞ্জ করতে হবে।

সহ শিক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ 

শরীয়তের বিধান মতে গীবতের গুনাহ খুবই মারাত্মক।   
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,তবে প্রশ্নে উল্লেখিত শিক্ষকদের এহেনে কর্মকান্ড অন্যান্য শিক্ষার্থীদের  কাছে বলা  জায়েজ আছে।
বরং এটি ঈমানী দাবীও বটে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
 ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺳﻌﻴﺪٍ ﺍﻟﺨُﺪْﺭِﻱِّ - ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻋﻨﻪُ - ﻗﺎﻝَ : ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳﻘُﻮﻝ" : ﻣَﻦْ ﺭَﺃَﻯ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻣُﻨْﻜَﺮًﺍ ﻓَﻠْﻴُﻐَﻴِّﺮْﻩُ ﺑِﻴَﺪِﻩِ ، ﻓَﺈِﻥْ ﻟَﻢْ ﻓَﺒِﻠِﺴَﺎﻧِﻪِ ، ﻓَﺈِﻥْ ﻟَﻢْ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻊْ ﻓَﺒِﻘَﻠْﺒِﻪِ ، ﻭَﺫَﻟِﻚَ ﺃَﺿْﻌَﻒُ ﺍﻹِﻳﻤَﺎﻥِ 

তরজমাঃ হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত,নবীজী সাঃ বলেনঃ তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যদি কোনো অন্যায় কাজ দেখে,তাহলে সে যেন তা হাত দিয়ে ,না পারলে মুখ দিয়ে এবং না পারলে সে যেন তা অন্তর দিয়ে ঘৃণা করে। এবং এটাই তার ঈমানের সর্বনিম্ন স্তর।(সহীহ মুসলিম শরীফ-৭৩) 
,
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী যেই ছয়টি কারনে গিবত করা জায়েজ আছে,তারমধ্যে অন্যতম  একটি হলোঃ    সাধারণ মুসলমানদের দ্বীনী ও দুনিয়াবী ধোঁকা ও খারাবী থেকে বাঁচাতে গীবত করা জায়েজ। যেমন সাক্ষ্য সম্পর্কে, হাদীস, আসার ও ইতিহাস বর্ণনাকারী সম্পর্কে, লেখক, বক্তা,শিক্ষক, শিক্ষিকা,  ইত্যাদি সম্পর্কে দোষ জনসম্মুখে বলে দেয়া, যেন তার ধোঁকা ও মিথ্যাচার থেকে মানুষ বাঁচতে পারে। 

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত কারণে উল্লেখিত শিক্ষকগন যদি সত্যিই এমন কথা বলে থাকে,,এমন কাজ করে থাকে,তাহলে তার এই বিষয়টা বলা জায়েজ হবে।  

وقد تجب الغيبة لغرض صحيح شرعي لا يتوصل إليه إلا بها وتنحصر في ستة أسباب الأول : التظلم فلمن ظلم أن يشكو لمن يظن له قدرة على إزالة ظلمه أو تخفيفه . الثاني : الاستعانة على تغيير المنكر بذكره لمن يظن قدرته على إزالته . الثالث : الاستفتاء فيجوز للمستفتي أن يقول للمفتي : ظلمني فلان بكذا فهل يجوز له أو ما طريق تحصيل حقي أو نحو ذلك؛ والأفضل أن يبهمه .الرابع : تحذير المسلمين من الشر كجرح الشهود والرواة والمصنفين والمتصدين لإفتاء أو إقراء مع عدم أهلية فتجوز إجماعاً بل تحب ، وكأن يشير وإن لم يستشر على مريد تزوج أو مخالطة لغيره في أمر ديني أو دنيوي ويقتصر على ما يكفي فإن كفى نحو لا يصلح لك فذاك وإن احتاج إلى ذكر عيب ذكره أو عيبين فكذلك وهكذا ولا يجوز الزيادة على ما يكفي ، ومن ذلك أن يعلم من ذي ولاية قادحاً فيها كفسق أو تغفل فيجب ذكر ذلك لمن له قدرة على عزله وتولية غيره الخالي من ذلك أو على نصحه وحثه للاستقامة ، والخامس : أن يتجاهر بفسقه كالمكاسين وشربة الخمر ظاهراً فيجوز ذكرهم بما تجاهروا فيه دون غيره إلا أن يكون له سبب آخر مما مر . السادس : للتعريف بنحو لقب كالأعور . والأعمش . فيجوز وإن أمكن تعريفه بغيره (روح المعاني في تفسير القرآن العظيم والسبع المثاني، سورة حجرات- 12)

ছয়টি কারণে গীবত করা জায়েজ আছে। যথা-

১- জুলুম থেকে নিচে বাঁচতে, অন্যকে বাঁচাতে। এমন ব্যক্তির কাছে গীবত করতে পারবে, যে একে প্রতিহত করতে পারবে।

২- খারাপ কাজ বন্ধ করার জন্য সাহায্য চাইতে এমন ব্যক্তির কাছে গীবত করতে পারবে যে তা বন্ধ করার ক্ষমতা রাখে।

৩- বিষয়টি সম্পর্কে শরয়ী সমাধান জানতে গীবত করে মূল বিষয় উপস্থাপন করা জায়েজ আছে। যেমন বলা যে, আমাকে অমুক ব্যক্তি আমার উপর জুলুম করেছে, তাই আমারও কি তাকে আঘাত করা জায়েজ আছে? ইত্যাদি

৪- সাধারণ মুসলমানদের দ্বীনী ও দুনিয়াবী ধোঁকা ও খারাবী থেকে বাঁচাতে গীবত করা জায়েজ। যেমন সাক্ষ্য সম্পর্কে, হাদীস, আসার ও ইতিহাস বর্ণনাকারী সম্পর্কে, লেখক, বক্তা ইত্যাদি সম্পর্কে দোষ জনসম্মুখে বলে দেয়া, যেন তার ধোঁকা ও মিথ্যাচার থেকে মানুষ বাঁচতে পারে। 

৫- প্রাকাশ্যে যদি কেউ শরীয়তগর্হিত করে, তাহলে তার খারাবী বর্ণনা করা এমন ব্যক্তির কাছে যারা এর দ্বারা বিভ্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচতে পারে। যেমন কেউ প্রকাশ্যে মদ খায়, তাহলে মানুষের সামনে তার সরাসরি বদনাম করা জায়েজ আছে। যেন এমন খারাপ কাজ করতে ভবিষ্যতে কেউ সাহস না করে।

৬- কারো পরিচয় প্রকাশ করতে। যেমন কেউ কানা। তার পরিচয় দেয়া দরকার। কিন্তু নাম কেউ চিনতেছে না। কিন্তু কানা বলতেই সবাই চিনে ফেলে। তখন কানা বলা বাহ্যিক দৃষ্টিতে গীবত হলেও এটা বলা জায়েজ আছে। এতে গীবতের গোনাহ হবে না। {তাফসীরে রুহুল মাআনী- ১৪/২৪২, সূরা হুজরাত-১২}

আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...