জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান মতে একাধিক স্ত্রীর মাঝে যদি ইনছাফ করতে পারে,তাহলে প্রয়োজনের স্বার্থে একাধিক বিবাহ করতে পারবে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন
فانكحوا ما طاب لكم من النساء مثنى وثلاث ورباع
তোমরা বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমার ভালো লাগে—দুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশঙ্কা করো যে সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে (বিয়ে করো)।(সুরা : নিসা, আয়াত-৩)
দ্বিতীয় বিয়ে করার ইসলামী শর্ত বেশ কঠিন অনেক কড়া। আগের স্ত্রীর সব ধরনের হক আদায়ের পর নতুন বিয়ের পরেও সমান তালে সব অধিকার পালন করার আত্মবিশ্বাস থাকলেই কেবল যৌক্তিক কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করা যায়।
قال اللہ تعالی:فإن خفتم ألا تعدلوا فواحدة الآیة (سورہ نسا، آیت:۳)
আল্লাহতায়ালা বলেন, একাধিক বিয়ের সুবিধা যাদের আছে, তারা যদি সম অধিকার বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভীত হও, তাহলে এক বিয়ে পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাক।
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ : «إِذَا كَانَتْ عِنْدَ الرَّجُلِ امْرَأَتَانِ فَلَمْ يَعْدِلْ بَيْنَهُمَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّه سَاقِطٌ». رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُوْ دَاودَ وَالنَّسَائِىُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোনো পুরুষের দু’জন সহধর্মিণী থাকে আর সে তাদের মধ্যে যদি ন্যায়বিচার না করে, তবে সে কিয়ামতের দিন একপাশ ভঙ্গ (অঙ্গহীন) অবস্থায় উঠবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/6683
একাধিক স্ত্রীর মাঝে দুই বিষয়ে সমতা রক্ষা করা অতীব প্রয়োজন। স্ত্রীদের সঙ্গে রাতযাপন ও ভরণ-পোষণ।
এ দুই অধিকার সব স্ত্রীর ক্ষেত্রে সমানভাবে স্বামীকে পালন করে যেতে হবে। কোন স্ত্রী সুন্দর বা অসুন্দর, আর কোনটি কুমারী বা বিধবা তা পার্থক্য করা যাবে না।
কিন্তু কোনো স্ত্রীর প্রতি মনের ভালোবাসা বেশি হওয়া, আবার অন্য স্ত্রীর প্রতি কম হওয়া তা সমতার অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা, এটি মনের বিষয়, আর মনের ওপর কারও কোনো অধিকার নেই। একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে শুধু রাতযাপন ও খরচাপাতি এ দুই বিষয়ে সমতা ধর্তব্য। এটাই হলো একাধিক স্ত্রীর মধ্যে সমতা রক্ষার ইসলামি শরিয়তের বিধান।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনি যেহেতু স্পষ্ট ভাবে তার সমস্ত বেইনসাফি মেনে নেয়ার উপর সন্তুষ্টি চিত্তে রাজী,আপনি নিজেই চাচ্ছেন যে ইনসাফ না করার জন্য আপনার স্বামীর যেনো কোনো গুনাহ না হয়, তার মানে আপনি নিজেই তাকে এসবের ব্যপারে মন থেকে মাফ করে দিয়েছেন,এবং ভবিষ্যতেও মাফ করে দেয়ার নিমিত্তেই সংসার চালিয়ে যেতে চাচ্ছেন, সুতরাং এক্ষেত্রে আপনার স্বামী আপনাকে তালাক না দিয়ে এভাবে তার আরেক স্ত্রী নিয়ে সংসার করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনাকে তালাক দেয়া কোনোভাবেই জায়েজ হবেনা।
এভাবে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তিনি যদি আপনাকে তালাক দেন,তাহলে শরীয়ত সম্মত কারন ব্যাতিত তালাক দেয়ায় আপনার স্বামীর মারাত্মক গুনাহ হবে।
এমতাবস্থায় আপনি যদি গুনাহ থেকে মুক্ত থেকে ধৈর্য্য ধরে সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখতে পারেন,আপনার পক্ষ থেকে যদি কোনো সমস্যা না হয়,ঈমান আমল সহকারে ভালোভাবে চলতে পারেন, সেক্ষেত্রে প্রশ্নের বিবরন মতে সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখা ভালো হবে।
মূল কথা হলো,আপনি যেনো গুনাহে জড়িয়ে না পড়েন।
আর যদি এভাবে সংসার চালিয়ে গুনাহে লিপ্ত হওয়ার প্রবল আশংকা হয়,সেক্ষেত্রে তার কথামত বিচ্ছেদ করে ফেলে অন্যত্রে বিবাহ ভালো হবে।