আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
242 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (41 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম
প্রশ্ন ১: কেউ যদি ছয়, সাত বছর ধরে আল্লাহর অস্ত্বিত্ত্বের ব্যাপারে সন্দেহ করে, পাশাপাশি  অযু গোসল ইস্তেঞ্জা পাক- নাপাক ইত্যাদি বিষয়ে ওয়াসওয়াসা থাকে, আল্লাহর অস্তিত্বর ব্যাপারে সন্দেহ করলেও সে যদি মুখে কোনো কুফরি বাক্য না বলে ও কুফরি কাজ না করে, বরং  নামাজ পড়ে রোজা রাখে, দাড়ি রাখে,কুরআন পড়ে, হালাল হারাম মেনে চলার চেষ্টা করে তাহলে কি তার ঈমান থাকবে?

২. কারোও এ অবস্থা হলে অর্থাৎ   আল্লাহর প্রতি সন্দেহ  হলে কিভাবে তা দূর করবে?

৩.এরুপ অবস্থা হলে আল্লাহর প্রতি সন্দেহ দূর করার জন্য উপায় বের করার চিন্তা বের করা উচিত নাকি এসব সন্দেহের বিষয়কে পাত্তা না দিয়ে স্বাবাভিক জীবনজাপন করা উচিত এবং ইবাদাত করে যাওয়া উচিত?

৪. কোনো ছেলের ওপর গোসল ফরজ হলে ফরজ গোসল না করে বিয়ে করলে কি বিয়ে সহিহ হবে?

৫. কেউ যদি স্ত্রীকে তিন তালাকের নিয়তে শুধু তিন বলে তাহলে কি তিন তালাক হয়ে যাবে?

৬. কেউ যদি স্ত্রীকে তিন তালাকের নিয়ত  করে মুখে কিছু না বলে শুধু তিন আঙ্গুল দেখায় তাহলে কি তিন তালাক হয়ে যাবে?

৭.বিয়ের সময় ছেলেদের মুখে ইজাব কবুল না করে শুধু কাবিননামায় সাক্ষ্বর করলে বিবাহ সহিহ হবে কি?

৮.বিয়েতে ছেলে আগে কাবিননামায় স্বাক্ষর পরে মুখে ইজাব কবুল হলে বিবাহ সহিহ হবে কি?

৯.যদি কোনো পাত্রের  বিয়েতে মত না থাকায়  মন থেকে কবুল  না বলে   যদি অসন্তুষ্টচিত্তে  কবুল উচ্চারন করে তাহলে কি বিবাহ সহিহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (566,790 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে তার ঈমান চলে যাবেনা।

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

 يَأْتِي الشَّيْطَانُ أَحَدَكُمْ ، فَيَقُولَ : مَنْ خَلَقَ كَذَا وَكَذَا ؟ حَتَّى يَقُولَ لَهُ : مَنْ خَلَقَ رَبَّكَ ؟ فَإِذَا بَلَغَ ذَلِكَ ، فَلْيَسْتَعِذْ بِاللَّهِ وَلْيَنْتَهِ 
শয়তান তোমাদের কারো নিকট আসে এবং বলে, এটা কে সৃষ্টি করেছে, ওটা কে সৃষ্টি করেছে? পরিশেষে এ প্রশ্নও করে, তোমার রবকে কে সৃষ্টি করেছে? এ পর্যায়ে পৌঁছলে তোমরা আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর এবং এ ধরণের ভাবনা থেকে বিরত হও। ( বুখারী ৩২৭ )

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: جَاءَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَأَلُوهُ: إِنَّا نَجِدُ فِي أَنْفُسِنَا مَا يَتَعَاظَمُ أَحَدُنَا أَنْ يَتَكَلَّمَ بِهِ، قَالَ: وَقَدْ وَجَدْتُمُوهُ؟ قَالُوا: نَعَمْ، قَالَ: ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ.

সারমর্মঃ
একবার সাহাবায়ে কেরমের একদল রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা আমাদের অন্তরে কখনো কখনো এমন বিষয় অনুভব করি, যা মুখ দিয়ে উচ্চারণ করা আমাদের কাছে খুব কঠিন মনে হয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, সত্যিই কি তোমরা এরকম পেয়ে থাক? তাঁরা বললেন হ্যাঁ, আমরা এরকম অনুভব করে থাকি। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ এটি তোমাদের ঈমানের স্পষ্ট প্রমাণ। (মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, অনুচ্ছেদ: অন্তরের ওয়াসওয়াসা)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
কাহারো মনে যে আল্লাহকে নিয়ে উল্টা পাল্টা কথা চলে আসে,প্রশ্নে উল্লেখিত যাবতীয় সব বিষয় শয়তানের ওয়াসওয়াসা। 

সুতরাং তিনি আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হবেন না। 

পরামর্শঃ-
নিজ কাজে মগ্ন হয়ে যান। এদিকে বেশি মনোযোগ দিবেন না। কেননা, এইসব অবাঞ্ছিত চিন্তাকে গুরুত্ব দিয়ে কীভাবে তা দূর করা যায় এ চিন্তায় পড়ে গেলে আপনি এখানেই আটকা পড়ে যাবেন। সামনে অগ্রসর হওয়া আর সম্ভব হবে না। এভাবে শয়তানের উদ্দেশ্য পূরণ হয়ে যাবে।
,
যে কোনো ওয়াসওয়াসার প্রধান চিকিৎসা এটাই যে, একে গুরুত্ব না দেয়া। কী চিন্তা আসল, কী চিন্তা গেল-তা না ভেবে নিজের কাজে মশগুল থাকুন। কেননা, এটা মূলত শয়তানের কাজ। 

আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّمَا النَّجْوَىٰ مِنَ الشَّيْطَانِ لِيَحْزُنَ الَّذِينَ آمَنُوا وَلَيْسَ بِضَارِّهِمْ شَيْئًا إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۚ وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ

এই ওয়াসওয়াসা তো শয়তানের কাজ; মুমিনদেরকে দুঃখ দেয়ার দেয়ার জন্যে। তবে (এই ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করে) সে মুমিনদেরকে চুল পরিমাণ ক্ষতি করতে পারে না, আল্লাহর হুকুম ছাড়া। মুমিনদের উচিত আল্লাহর উপর ভরসা করা। (সূরা মুজাদালাহ ১০)

আপনি آمنت بالله ورسوله পড়ে নিবেন।
বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবেন। 

এহেন চিন্তা মাথায় আসলেই অন্য মনস্ক হয়ে যাওয়া।
কোনো কাজ শুরু করে দেয়া।
মাথায় এগুলো আসতেই দিবেননা।
বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবেন। 

ঈমান,আল্লাহর অস্তিত্ব ইত্যাদি সংক্রান্ত কোনো মাসয়ালা কাহারো সাথে কোনো কিছু আলোচনা করবেননা।
এ সংক্রান্ত মাসয়ালা পড়া হতে বিরত থাকার পরামর্শ থাকবে।

(০৩)
এসব সন্দেহের বিষয়কে পাত্তা না দিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা উচিত এবং ইবাদাত করে যাওয়া উচিত।

(০৪)
হ্যাঁ, উক্ত বিবাহ সহীহ হবে।

(০৫)
এক্ষেত্রে তিন তালাক পতিত হয়ে যাবে।

رجل قال لامرأته"ترايكى وتراسه"أو قال "تويكى وتوسه"قال ابو القاسم الصفار:لا يقع شيء وقال الصدر الشهيد:يقع إذا نوى قال وبه يفتى،قال القاضي وينبغي أن يكون الجواب على التفصيل إن كان ذلك في حال مذاكرة الطلاق أو في حال الغضب يقع الطلاق،وإن لم يكن لايقع إلا بالنية،كماقال في العربية أنت واحدة۔(خلاصة الفتاى، كتاب الطلاق، الفصل الثاني في الكنايات، ج:2، ص:98)
সারমর্মঃ-
তোমাকে এক, তোমাকে তিন বললে,
সদরুস শহীদ রহঃ বলেন,এক্ষেত্রে তালাকের নিয়ত থাকলে তালাক হয়ে যাবে,এর উপরেই ফতোয়া।

(০৬)
এতে তালাক হবেনা।

(০৭)
শুধু কাবিননামায় স্বাক্ষর করলে বিবাহ সহিহ হবেনা।

(০৮)
হ্যাঁ, বিবাহ সহীহ হবে।

(০৯)
হ্যাঁ, উক্ত বিবাহ সহীহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
edited
হুজুর  কেউ যদি স্ত্রীকে তালাকের নিয়তে "তোমাকে তিন" না বলে শুধু স্ত্রীকে তিন  তালাকের নিয়তে শুধু "তিন" বলে বা  খাতায় শুধু "তিন" লিখে তাহলে কি তিন তালাক হয়ে যাবে?
by (566,790 points)
 তালাকের নিয়তে এটি বললে তালাক হয়ে যাবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...