জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
শরীয়তের বিধান হলো পাথর নিক্ষেপ, কুরবানী,মাথা মুন্ডন এর ক্ষেত্রে ক্রমধারা রক্ষা করা ওয়াজিব।
নতুবা দম আবশ্যক হবে।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
وَ لَا تَحۡلِقُوۡا رُءُوۡسَکُمۡ حَتّٰی یَبۡلُغَ الۡہَدۡیُ مَحِلَّہٗ ؕ
আর তোমরা মাথা মুন্ডন করো না যে পর্যন্ত হাদঈ তার স্থানে না পৌছে।
(সুরা বাকারা ১৯৬)
غنیۃ الناسک:
"لو حلق المفرد أو غیره قبل الرمي أو القارن أو المتمتع قبل الذبح أو ذبحًا قبل الرمي فعلیه دم عند أبي حنیفة بترك الترتیب."
(279، 280، باب الجنایات، ط: ادارۃ القرآن )
সারমর্মঃ-
যদি হজ্বে ইফরাদ আদায়কারী কেহ পাথর নিক্ষেপের আগে বা জবাইয়ের আগে মাথা মুন্ডন করে,সেক্ষেত্রে দম আবশ্যক হবে।
فتاوی شامی
"( و الترتيب الآتي) بيانه: (بين الرمي و الحلق و الذبح يوم النحر) و أما الترتيب بين الطواف و بين الرمي والحلق فسنة، فلو طاف قبل الرمي والحلق لا شيء عليه و يكره. لباب".
(2/470، کتاب الحج ، ط: سعید)
সারমর্মঃ-
পাথর নিক্ষেপ, কুরবানী,মাথা মুন্ডন এর ক্ষেত্রে ক্রমধারা রক্ষা করা ওয়াজিব।
আর তওয়াফ,পাথর নিক্ষেপ,মাথা মুন্ডন এর ক্ষেত্রে ক্রমধারা রক্ষা করা সুন্নাত।
কেহ যদি পাথর নিক্ষেপ,মাথা মুন্ডন এর আগেই তওয়াফ করে,সেক্ষেত্রে তার উপর কোনো কিছু আবশ্যক হবেনা। তবে এটি মাকরুহ হবে।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
"কংকর নিক্ষেপের পরে তাওয়াফ করে পরে কুরবানি আর মাথা মুন্ডন করলেও হবে"
এ কথাটা ঠিক আছে,তবে এটি সুন্নাতের খেলাফ।
তাই বিনা ওযরে এমনটি না করার পরামর্শ থাকবে।
(০২)
১০ ই জিলহজ্জ সুবহে সাদিক থেকে নিয়ে শুরু করে ১২ ই জিলহজ্জ সূর্য ডুবে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তওয়াফে যিয়ারাত করা যায়।
★সুতরাং খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়ার কারণে অথবা ভিড় এড়ানোর জন্য অথবা 'বিনা কারণে' ১০ই জিলহজ্জে তাওয়াফে ইফাদা না করে ১১ই জিলহজ্জে আদায় করলে তা সহীহ হবে।
(০৩)
সুন্নাতের খেলাফ হওয়ার তার একাজটি মাকরুহ হবে।
তবে হজ্ব হয়ে যাবে।
(০৪)
কাহারো উপর দম ওয়াজিব হয়ে গেলে তিনি দেশে ফিরে আসার পরে কোন উকিলের দ্বারা হারামের সীমানার মধ্যে দম আদায় করতে পারবেন।
যদি ওকিল দমের পশুর অর্থ আত্মসাৎ করে হাজ্জীকে জানায় যে সে তার পক্ষ থেকে দম দিয়ে দিয়েছে,এক্ষেত্রে হাজ্বী সাহেব সত্য জানতে পারলে হাজ্বী সাহেবের উপরে পুনরায় দম আবশ্যক হবে।
(০৫)
উক্ত টাকা হারামের মধ্যেই কাউকে দিতে হবে,এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
নিজ দেশে ফিরে এসে এলাকার গরিব মিসকিনকে দিলেও তাহা আদায় হবে।
এটি গরিব কেই দিতে হবে,মাসজিদুল হারামের ক্লিনারদের কেউ যদি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক হয়,সেক্ষেত্রে তাকে দেয়া যাবেনা।
۔ ویجوز لہ التصدق في غیر الحرم․ (غنیة الناسک، جدید، ص: ۲۶۶)
সারমর্মঃ-
হারামের এলাকা ব্যাতিত অন্য এলাকাতেও সদকা দেয়া জায়েজ আছে।
(০৬)
যদি মিনায় রওয়ানা হওয়ার পূর্বে মক্কা মুকাররমায় ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি দিন থাকে,সেক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সে আরাফার ময়দানে পূর্ণ নামাজই আদায় করবে।
আর যদি মিনায় রওয়ানা হওয়ার পূর্বে মক্কা মুকাররমায় ১৫ দিনের কম থাকে,সেক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সে আরাফার ময়দানে কসরের নামাজই আদায় করবে।
হ্যাঁ যদি মুকিম ইমামের পিছনে নামাজ আদায় করে,সেক্ষেত্রে তাকে পূর্ণ নামাজ আদায় করতে হবে।
★আরাফার ময়দানে ইমামের পিছনে জোহর আছর একসাথে আদায় করা যাবে।
তবে ইমামের পিছনে আদায় না করে একাকী আদায় করলে সেক্ষেত্রে জোহর আছর একসাথে এক ওয়াক্তে আদায় করা যাবেনা।
আলাদা আযান ও আলাদা ইকামতে নিজ নিজ ওয়াক্তে জোহর আসর আদায় করতে হবে।
(০৭)
ক,
হজ্জে তামাত্তুর ক্ষেত্রে যদি মক্কায় ৭ দিন থেকে উমরাহ করার পরে মাদীনায় গিয়ে ৮-১০ দিন অবস্থান করে মক্কায় ফিরে আসা হয়, তবে মক্কায় প্রবেশের পরে উমরাহ করতেই হবেনা।
এক্ষেত্রে উমরাহ না করলে কোন সমস্যা নেই।
তবে প্রথমে মক্কায় থাকার সময় ওমরাহ না করে মদিনায় গেলে এক্ষেত্রে মক্কায় এসে হজ্বের দিন গুলু আসার আগে উকরাহ করতেই হবে।
নতুবা এটি হজ্জে তামাত্তু' হবেনা।
খ,
এক্ষেত্রে মাদীনাহ থেকে ফিরে আসার পরের দিনগুলোর উপরে মুকীম - মুসাফিরি হালত নির্ধারন হবে।