জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
আবূ হারূন আল-আবদী (রহঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنْ أَبِي هَارُونَ الْعَبْدِيِّ، قَالَ كُنَّا إِذَا أَتَيْنَا أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ قَالَ مَرْحَبًا بِوَصِيَّةِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ . إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ لَنَا " إِنَّ النَّاسَ لَكُمْ تَبَعٌ وَإِنَّهُمْ سَيَأْتُونَكُمْ مِنْ أَقْطَارِ الأَرْضِ يَتَفَقَّهُونَ فِي الدِّينِ فَإِذَا جَاءُوكُمْ فَاسْتَوْصُوا بِهِمْ خَيْرًا "
তিনি বলেন, আমরা আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) -এর কাছে এলেই তিনি বলতেনঃ তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওসিয়ত অনুযায়ী স্বাগতম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলতেনঃ লোকেরা অবশ্যই তোমাদের অনুগামী। অচিরেই পৃথিবীর দিকদিগন্ত থেকে লোকেরা তোমাদের নিকট দ্বীনি ইলম অর্জনের জন্য আসবে। তারা যখন তোমাদের নিকট আসবে,তখন তোমরা তাদেরকে ভালো ও উত্তম উপদেশ দিবে।(সুনানু তিরমিযি-২৪৯,তিরমিযী ২৬৫০-৫১, মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৪৭।)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
অতীব জরুরী ও সাধারণ মাস'আলা মাসাঈল আয়ত্বে না থাকার কারণে দৈনন্দিন জীবনে দ্বীন-ইসলাম পালন করতে, যে সমস্ত দ্বীনি ভাই-বোন থমকে দাড়ান,এবং যাদের দ্বীনি ইলম অর্জনের কাছাকাছি কোনো নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নেই, মূলত তাদেরকে দিকনির্দেশনা দিতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস .....
মুহতারাম/মুহতারামাহ!
দ্বীনের পরিধি অনেক ব্যাপক, সকল বিষয়ে আলোচনা করা বা দিকনির্দেশনা দেওয়া স্বল্প পরিসরের এই ভার্চুয়ালি মাধ্যম দ্বারা আমাদের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে। চেষ্টা করলেও প্রশ্নকারীর পিপাসা মিটানো সম্ভব হবে না। প্রত্যেক বিষয়ে আমরা শুধুমাত্র সামান্য আলোকপাত করে থাকি।
উপরোক্ত প্রশ্নটির ব্যাপারে উলামায় কেরামের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। মতবিরোধপূর্ন প্রশ্নগুলো উত্তর দেওয়ার জন্য স্থান, কাল, পাত্র অনেক কিছুই জানার প্রয়োজন হয়। যেটা অনলাইনে জানা সম্ভব হয় না।
তাই এই প্রশ্নগুলোর উত্তরের জন্য আপনার এলাকার সংশ্লিষ্ট উলামায় কেরামের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা আপনার জন্য কল্যাণকর হবে বলেই আমাদের ধারণা।
তাছাড়া ইলম অর্জনের জন্য সফর করা অত্যান্ত জরুরী। এবং কষ্ট করে ইলম অর্জন করাই আমাদের আকাবির আসলাফদের রীতি ও নীতি। এদিকেই কুরআনের এই আয়াত ইঙ্গিত দিচ্ছে,
ۚفَلَوْلَا نَفَرَ مِن كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَائِفَةٌ لِّيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ
তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হলো না, যাতে দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ দান করে স্ব-জাতিকে, যখন তারা তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, যেন তারা বাঁচতে পারে।(সূরা তাওবাহ-১২২)
সুতরাং আপনাকে বলবো, আপনি বিস্তারিত জানতে স্ব-শরীরে কোনো দারুল ইফতায় যোগাযোগ করবেন।
প্রশ্ন করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।আল্লাহ তা'আলা আপনার ইলম অর্জনের স্পৃহাকে আরোও বাড়িয়ে দিক, আমীন!!
প্রত্যেকটা বিষয়ের সাথে নিম্নের হাদীসকে লক্ষ্য রাখবেন।
হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।
ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি।তিনি বলেন,সন্দেহ যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো।(সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)
(০২)
সব মুসলমানদের কবরে আযাব হবেনা।
হযরত সা'দ বিন মুয়াজ রাঃ এর কবরে আযাব হয়নি।
বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিতঃ-
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
أَخْبَرَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مُحَمَّدٍ الْعَنْقَزِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " هَذَا الَّذِي تَحَرَّكَ لَهُ الْعَرْشُ وَفُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَشَهِدَهُ سَبْعُونَ أَلْفًا مِنَ الْمَلاَئِكَةِ لَقَدْ ضُمَّ ضَمَّةً ثُمَّ فُرِّجَ عَنْهُ " .
ইসহাক ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) ... ইবনে উমর (রাযিঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সেই ব্যক্তি যার জন্য আরশ কেঁপে উঠেছিল এবং যার জন্য আকাশের দ্বারসমুহ খূলে গিয়েছিল এবং যার জানাযার সত্তর হাজার ফেরেশতা উপস্থিত হয়েছিল তার কবরও সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। অতঃপর তা প্রশস্ত হয়ে গিয়েছিল। (হাদিস নং - ২০৫৯ সুনানে নাসায়ী)
কবরের ভয়াবহতা একটি অনস্বীকার্য বিষয়। এবং কবর কারো সাথেই দয়াদ্র আচরণ করবে না বরং মাইয়্যেতের সাথে তার প্রথম আচরণের বহিঃপ্রকাশ হলো, তার সাথে সংকীর্ণতা পয়দা করবে কিন্ত যখন তার ঈমান আমল ভালো পাবে তখন এটার কারণে তার জন্য আরামদায়ক ও প্রশস্ত হয়ে যাবে।
এ বিষয়টিই আল্লাহর রাসুল সাহাবীদের বুঝিয়েছেন যে, সাদ এতো ফযীলতের অধিকারী হওয়া সত্তেও কবর তার প্রতি দয়াদ্র হয়নি, কবর প্রথমে তার সাথে স্বাভাবিক আচরণ করে তার জন্য সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছিল কিন্ত তার ঈমান আমল ও ফযীলতের কারণে তা প্রশস্ত ও আরামদায়ক হয়ে গিয়েছে।
কবরের সংকীর্ণ হয়ে যাওয়া এটা আযাবের আলামত মোটেই নয়, এটা মুমিন-কাফির নির্বিশেষে সকলের সাথে কবরের প্রাথমিক আচরণ।
তবে কাফেরদের কবরে তাহা স্থায়ী হবে,তবে মুমিনদের কবরে নয়।
(কিছু তথ্য সংগৃহীত)
أخرَج ابنُ حِبَّانَ وغيرُه أنَّ النبيَّ صلَّى الله عليه وسلَّم قال: "للقَبرِ ضَغْطةٌ لو نَجا منها أحدٌ لنَجا منها سَعدُ بنُ مُعاذٍ"؛
সারমর্মঃ-
রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,কবরের ফেতনা (প্রশ্নোত্তর) রয়েছে,যদি তাহা হতে কেহ নাজাত পেতো,তাহলে সা'দ বিন মুয়াজ রাঃ নাজাত পেতেন।
فهي للصَّالحِ والطَّالحِ، ولكِنِ الفرقُ دوامُها للكافرِ، وما مِن أحَدٍ إلَّا وقد أَلَمَّ بذَنْبٍ ما، فتُدرِكُه هذه الضَّغطةُ جزاءً له، ثمَّ تُدرِكُ الرَّحمةُ مَن شاءَ اللهُ تعالى مِن عِبادِه المُؤمنِينَ.
কবরের ফিতনা নেককার/বদকার সকলের জন্যই।
কিন্তু পার্থক্য হলো কাফেরদের জন্য তাহা স্থায়ী হবে।
★তবে কিছু ইসলামী স্কলার গন "অনেক মুমিনের কবর সংকীর্ণ হবেনা" এ মত পোষন করে থাকেন।
তারা দলিল দেন,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
من قرأ (قل هو الله أحد) في مرضه الذي يموت فيه، لم يفتن في قبره، وأمن من ضغطة القبر، وحملته الملائكة يوم القيامة بأكفها حتى تجيزه من الصراط إلى الجنة
যে ব্যাক্তি কুল-হু-আল্লাহু আহাদ আর সেই রোগের মধ্যে পাঠ করবে যাতে তার মৃত্যু হবে, তার কবরে তাঁকে ফেতনায় (প্রশ্নত্তরে) পড়তে হবে না। সে কবরের চাপ খাওয়া হতে নিরাপদ থাকবে এবং ফেরেশতারা কিয়ামতের দিবসে তাঁকে (হাতের) তালু দ্বারা বহন করে পুলসিরাত অতিক্রম করিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।
এটি তাবারানী “মুজামুল আওসাত” গ্রন্থে (২/৫৪/২/৫৯১৩) ও আবু নু’য়াইম (২/২১৩) আবূ হারিস নাসর ইবনু হাম্মাদ আল-বালখী সূত্রে মালেক ইবনু আবদিল্লাহ আযদী হতে ... বর্ণনা করেছেন।