আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
200 views
in পবিত্রতা (Purity) by (7 points)
edited by
আসসালামুয়ালাইকুম,
১/ আমাদের ফ্লোরে অনেক আগে নাপাকি  পড়েছিল যেগুলো পরিষ্কার করা হয়নি। আর আমি তারপর খেয়াল করলাম যে, আমাদের কাজের মহিলাটা একই বালতির পানি দিয়ে আর একটা কাপড় দিয়ে পূরা ঘর মুছে। সেটা প্রায় কয়েকমাস ধরে করে আসতেছে। যার ফলে নাপাকি সারা ঘরে ছড়িয়ে গেছে। আর আমার পরিবারের লোকজন ভিজা পায়ে এতদিন হাটাচলা করে সারাঘরে নাপাকি ছড়িয়ে দিয়েছে। এখন কি করব?

২/ এটা খেয়াল করার পর আমি মহিলাটাকে বলেছিলাম যে, যাতে কাপড়টা ধৌত করে আর ওই এককাপড় দিয়ে একবারেই পূরা একটা রুম মুছার জন্য। অর্থ্যাৎ একটা রুম একবার মুছার পর কাপড়টা ধৌত করে আবার আরেকটা রুম ওটা দিয়ে মুছে নিবে। এরকম করে সকল ঘর মুছার জন্য বলেছিলাম। এভাবে কি ফ্লোর পাক হয়েছে?

৩/ আমার সন্দেহ হচ্ছে এভাবে মুছল কিনা। আম্মুকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন হ্যা যেভাবে বলেছি সেভাবে মুছল। এখন এটা কি আমি বিশ্বাস করব?

৪/ এখন যদি উক্ত ফ্লোর নাপাক রয়ে যায়। তাহলে কি করব হুজুর? এমনিতে আমার ওয়াসওয়াসার কারনে বাড়ির সবাই পেরেশান। এগুলো নিয়ে ওদের সাথে বাড়াবাড়ি করতে মন চাই না। আমার জন্য একটু দোয়া করবেন।

৫/ হুজুর আমি কি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে এখন থেকে সবকিছু পাক ধরে নিব? নাকি আমার পবিত্র করতে হবে সব।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


হাদীস শরীফে   এসেছে-

يَا عَمَّارُ إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ: مِنَ الْغَائِطِ وَالْبَوْلِ وَالْقَيْءِ وَالدَّمِ وَالْمَنِيِّ

আম্মার বিন ইয়াসার রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-নিশ্চয় ৫টি কারণে কাপড় ধৌত করতে হয়, যথা-১-পায়খানা, ২-প্রশ্রাব, ৩-বমি, ৪-রক্ত, ৫-বীর্য। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৪৫৮}

https://ifatwa.info/17831/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ

টাইলস বিহীন ফ্লোরে যদি নাপাকি পড়ার পর তা পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে পরবর্তীতে তাতে ভেজা পা পড়লে সেক্ষেত্রে পা নাপাক হবে না। 

(قَوْلُهُ: إلَّا حَجَرًا خَشِنًا إلَخْ) فِي الْخَانِيَّةِ مَا نَصُّهُ: الْحَجَرُ إذَا أَصَابَتْهُ النَّجَاسَةُ، إنْ كَانَ حَجَرًا يَتَشَرَّبُ النَّجَاسَةَ كَحَجَرِ الرَّحَى يَكُونُ يُبْسُهُ طَهَارَةً، وَإِنْ كَانَ لَا يَتَشَرَّبُ لَا يَطْهُرُ إلَّا بِالْغَسْلِ. اهـ. وَمِثْلُهُ فِي الْبَحْرِ.
وَبَحَثَ فِيهِ فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ فَقَالَ هَذَا بِنَاءً عَلَى أَنَّ النَّصَّ الْوَارِدَ فِي الْأَرْضِ مَعْقُولُ الْمَعْنَى؛ لِأَنَّ الْأَرْضَ تَجْذِبُ النَّجَاسَةَ وَالْهَوَاءَ يُجَفِّفُهَا فَيُقَاسُ عَلَيْهِ مَا يُوجَدُ فِيهِ ذَلِكَ الْمَعْنَى الَّذِي هُوَ الِاجْتِذَابُ، وَلَكِنْ يَلْزَمُ مِنْهُ أَنْ يَطْهُرَ اللَّبِنُ وَالْآجُرُّ بِالْجَفَافِ وَذَهَابِ الْأَثَرِ وَإِنْ كَانَ مُنْفَصِلًا عَنْ الْأَرْضِ لِوُجُودِ التَّشَرُّبِ وَالِاجْتِذَابِ. اهـ. وَعَلَى هَذَا اسْتَظْهَرَ فِي الْحِلْيَةِ حَمْلَ مَا فِي الْخَانِيَّةِ عَلَى الْحَجَرِ الْمَفْرُوشِ دُونَ الْمَوْضُوعِ، وَهَذَا هُوَ الْمُتَبَادِرُ مِنْ عِبَارَةِ الشُّرُنْبُلَالِيَّةِ، لَكِنْ يَرُدُّ عَلَيْهِ أَنَّهُ لَا يَظْهَرُ فَرْقٌ حِينَئِذٍ بَيْنَ الْخَشِنِ وَغَيْرِهِ، فَالْأَوْلَى حَمْلُهُ عَلَى الْمُنْفَصِلِ كَمَا هُوَ الْمَفْهُومُ الْمُتَبَادِرُ مِنْ عِبَارَةِ الْخَانِيَّةِ وَالْبَحْرِ.
وَيُجَابُ عَمَّا بَحَثَهُ فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ بِأَنَّ اللَّبِنَ وَالْآجُرَّ قَدْ خَرَجَا بِالطَّبْخِ وَالصَّنْعَةِ عَنْ مَاهِيَّتِهمَا الْأَصْلِيَّةِ بِخِلَافِ الْحَجَرِ فَإِنَّهُ عَلَى أَصْلِ خِلْقَتِهِ فَأَشْبَهَ الْأَرْضَ بِأَصْلِهِ، وَأَشْبَهَ غَيْرَهَا بِانْفِصَالِهِ عَنْهَا، فَقُلْنَا إذَا كَانَ خَشِنًا فَهُوَ فِي حُكْمِ الْأَرْضِ؛ لِأَنَّهُ لَا يَتَشَرَّبُ النَّجَاسَةَ، وَإِنْ كَانَ أَمْلَسَ فَهُوَ فِي حُكْمِ غَيْرِهَا؛ لِأَنَّهُ لَا يَتَشَرَّبُ النَّجَاسَةَ - وَاَللَّهُ أَعْلَمُ -
«حاشية ابن عابدين = رد المحتار ط الحلبي» (1/ 312)
মর্মার্থ-
ফ্লোর যদি টাইলসবিহীন হয়, তাহলে নাপাকির ওপর পানি ঢেলে দিলে তা পবিত্র হয়ে যাবে। তবে পানি ঢালার পূর্বেই যদি শুকিয়ে যায়, তাহলেও পবিত্র হয়ে যাবে। কেননা তা মাটির হুকুমে। আর যদি ফ্লোর টাইলসবিশিষ্ট হয় এবং টাইলসগুলো আয়নার মতো সমান হয় এবং পানি চোষার ক্ষমতা না রাখে, তাহলে তা আয়নার হুকুমে। অর্থাৎ কোন কাপড় জাতীয় বস্তু দ্বারা মুছে ফেললে পবিত্র হয়ে যাবে। কিন্তু টাইলসে যদি মাটির মতো শোষণ ক্ষমতা থাকে, তাহলে তা মাটির হুকুমে। অর্থাৎ শুকানোর দ্বারা পবিত্র হয়ে যাবে। আর যদি শোষণ ক্ষমতা না থাকে এবং আয়নার মতো সমানও না হয়, তাহলে নাপাকি দূর হওয়া পর্যন্ত পানি দিয়ে তা ভালো ভাবে ধুতে হবে। (আরো জানতে দেখুন- ই’লাউস সুনান: ১/৩৯২, হিদায়া: ১/৫৬, ফতহুল কদীর: ১/১৭৪, মাবসুতে সারখসী: ১/২০৬)
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উক্ত ফ্লোর যদি মাটির হয়, বা তাতে চুষে নেয়ার ক্ষমতা থাকে, তাহলে তা শুকিয়ে গেলে এমনিতেই পাক পবিত্র হয়ে যাবে। তবে চুষে নেয়ার ক্ষমতা না থাকলে, কোনো কিছু দ্বারা প্রথমে প্রস্রাবকে তুলে নিয়ে কাপড় ইত্যাদি দ্বারা ধৌত করতে হবে। অথবা বেশীকরে পানি ঢেলে  সমস্ত ফ্লোরকে ধৌত করে পানি অন্যত্র ফেলে দিতে হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

এক্ষেত্রে পানি দ্বারা ধৌত না করে মুছে দিলে সেক্ষেত্রে ফ্লোর ১ বার মুছে পুরোপুরি না শুকিয়ে ৩-৪ মিনিট শুকিয়ে এভাবে ২য় বার করে পুরোপুরি না শুকিয়ে ৩-৪ মিনিট শুকিয়ে সবশেষে ৩য় বার মুছে ভালো করে শুকালে ফ্লোর পবিত্র হবে।প্রতিবার ভালভাবে শুকাতে হবে না।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(১.২.৩,৪)
উক্ত ফ্লোর টাইলস বিশিষ্ট হলে বা এমন ফ্লোর, যাতে নাপাকি চুষে নেয়ার ক্ষমতা নেই,সেক্ষেত্রে প্রশ্নের বিবরন মতে উক্ত ফ্লোর পাক হয়নি।

এক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত পদ্ধতি অবলম্বন করেই পাক করতে হবে। 

আর যদি এমন ফ্লোর হয়, যাতে নাপাকি চুষে নেয়ার ক্ষমতা আছে,সেক্ষেত্রে সেটি পাক হয়ে গিয়েছে।

(০৫)
আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলেই কোনো নাপাক বস্তু পাক হয়ে যাবেনা।

বরং এক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (7 points)
edited by
হুজুর আমি তিনবার ঘর কাজের বোয়া দিয়ে মুছিয়ে নিলাম। একটা জিনিস খেয়াল করলাম সে ঘর মোছার সময় বিভিন্ন জায়গাই স্পর্শ করে এগুলোও কি নাপাক হবে? আর বিভিন্ন জায়গাই যে স্যান্ডেল বা অন্যান্য কিছু নাপাক হয়েছে মনে হচ্ছে সেগুলো কি করব? ধৌত করতে হলে তো সবকিছুই ধৌত করতে হবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...