আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
104 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (37 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ

১.আমি শুনেছি ৩ সময়ে বাবা মার ঘরে প্রবেশ করতে হয় না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমি যদি ফজরের সময় বাবা মাকে ঘুম থেকে ডেকে না দি তাহলে তারা নামাজের জন্য উঠতে পারেনা। এজন্য আমাকে তাদের ঘরে গিয়ে ডাকতে হবে। এক্ষেত্রে কি আমার গুনাহ হবে? তারা জানে যে ফজর হলে তাদেরকে ডাকতে আসবো। এক্ষেত্রে আমি যদি দৃষ্টিকে হেফাজতে রেখে তাদের ঘরে যায় তাহলে কি সমস্যা? এখন তাদেরকে ঘুম থেকে ডাকতে হলে তাদের গায়ে হাত দিয়ে ধাক্কা দিতে হবে,,, না হলে তারা ওঠেনা। এজন্য তাদের দিকে তাকাতে হবে। অনেক সময় তাদের হাটুর উপরে কাপড় থাকতে পারে। এখন আমি যদি এমন পরিস্থিতিতে আমি যদি তাদের দিকে তাকানোর পরে দৃষ্টি নামিয়ে রাখি তাহলে কি গুনাহ হবে?? না  হলে তাদের নামাজ কাজা হয়ে যাবে? এক্ষেত্রে আমি কি করবো?

২.আমার একটা অদ্ভুত প্রশ্ন আছে। কোন ভুল হলে তো আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সবার সামনে তো তওবা করা যায় না। আবার কেনো করে ভুল হলে তো সাথে সাথে তওবা করব কিন্তু তখন তো আশেপাশে মানুষজন থাকে। সবার সামনে তো আর তওবা করতে পারিনা। আবার অনেক সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করা লাগে। অনেক দোয়া কবুলের সময় আছে যেমন; আজানের পর,,,  বৃষ্টির সময় এছাড়াও মাঝেমধ্যে আল্লাহর কাছে দোয়া করা লাগতে পারে। কিন্তু সবার সামনে কিভাবে দোয়া করব?? এইজন্য আমি যখনই তওবা করি অথবা দোয়া করি তখনই আমার একাডেমির বই সামনে নিয়ে পড়ার ভান করে দোয়া করি অথবা তওবা করি। এতে মনে হয় আমি পড়ছি কিন্তু আসলে তো আমি পড়ছি না। এতে কি  প্রতারণা হবে?? কিন্তু আমি যদি এভাবে না করি তাহলে তো আমি সাথে সাথে  দোয়া বা তওবা করতে পারবো না। আমাকে তো নির্দিষ্ট সময় যেমন নামাজের পর অথবা ঘুমানোর আগে যখন নিরিবিলি হই তখকার  তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু যদি এইভাবে অপেক্ষা করতে চাই তাহলে তো আর সাথে সাথে তওবা বা দোয়া করতে পারবো না। এক্ষেত্রে কি করনীয়??

৩.কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমি যিকির  করি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সবার সামনে কিভাবে জিকির  করবো? সবাই তো জিজ্ঞেস করবে তুমি কি করছো?যেমন আমি হয়তো কিছুক্ষণ পড়লাম পড়ার মাঝে মাঝে হয়তো এক দুই মিনিট করে জিকির করলাম।  এখনো এক দুই মিনিট যদি আমি বসে থাকি তাহলে তো আমাকে আম্মু জিজ্ঞেস করবে বা অন্যরা জিজ্ঞেস করবে আমি কি করছি?? তখন তো আমি বলতে পারব না। এজন্য আমি একাডেমিক বইয়ের দিকে তাকিয়ে জিকির করি। এটা দেখে মনে হয় দেখে মনে হয় আমি পড়ছি। এর থেকে প্রতারণা হবে?? মানে আমি হয়তো বিষয়টা বোঝাতে পারছি না। মানে আমি হয়তো পড়তে বসার আগে কয়েকবার দরুদ পড়লাম..এছাড়া আরো অনেক জিকির আছে যেগুলো পড়ার ফাঁকে ফাঁকে করি.।  দরুদ পড়ি। কিন্তু এগুলো কিভাবে পড়বো?? আমি এভাবে পড়ি। এক্ষেত্রে কি করনীয়??

৪.একইভাবে আমি সকাল সন্ধ্যায় জিকির ও সালাতের পরে যে সকল জিকির আছে এইগুলা একাডেমী বইয়ের নিচে রেখে পড়ি। এতে কি প্রতারণা করা হবে?? সবার সামনে পড়ার আমার কোন উপায় নেই। কিছু জিকির আমার মুখস্ত আছে আর কিছু জিকির নেই। যেগুলো মুখস্ত আছে সেগুলোও আমি এভাবেই পড়ি। আর যেগুলো নেই সেগুলো একাডেমিক বইয়ের নিচে ওই জিকিরের বই রেখে পড়ি। এটা কি ঠিক হবে?? আমার আম্মুকে বোঝানোর কোন উপায় নেই। আম্মুকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাতে হয়নি। এখন আমার সামনে দুইটা উপায় আছে। হয় এইভাবে  পড়তে হবে আর না হয় পড়া বন্ধ করে দিতে হবে। তবে আরেকটা বিষয়,,, যেগুলো আমার মুখস্ত আছে সেগুলো হয়তো আমি শুয়ে শুয়ে ল পড়তে পারি।  এতে আম্মু দেখে মনে করবে আমি শুয়ে রেস্ট নি এভাবে আমি পড়তে পারি। কিন্তু আমি সেইগুলো শুয়ে শুয়ে না পড়ে এভাবে পড়ার ভান করে লুকিয়ে লুকিয়ে পড়ি। এতে কি প্রতারণা হবে??

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم    


আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন-

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لِیَسْتَاْذِنْكُمُ الَّذِیْنَ مَلَكَتْ اَیْمَانُكُمْ وَ الَّذِیْنَ لَمْ یَبْلُغُوا الْحُلُمَ مِنْكُمْ ثَلٰثَ مَرّٰتٍ  مِنْ قَبْلِ صَلٰوةِ الْفَجْرِ وَ حِیْنَ تَضَعُوْنَ ثِیَابَكُمْ مِّنَ الظَّهِیْرَةِ وَ مِنْۢ بَعْدِ صَلٰوةِ الْعِشَآءِ  ثَلٰثُ عَوْرٰتٍ لَّكُمْ  لَیْسَ عَلَیْكُمْ وَ لَا عَلَیْهِمْ جُنَاحٌۢ بَعْدَهُنَّ  طَوّٰفُوْنَ عَلَیْكُمْ بَعْضُكُمْ عَلٰی بَعْضٍ كَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللهُ لَكُمُ الْاٰیٰتِ   وَ اللهُ عَلِیْمٌ حَكِیْمٌ . وَ اِذَا بَلَغَ الْاَطْفَالُ مِنْكُمُ الْحُلُمَ فَلْیَسْتَاْذِنُوْا كَمَا اسْتَاْذَنَ الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ كَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللهُ لَكُمْ اٰیٰتِهٖ  وَ اللهُ عَلِیْمٌ حَكِیْمٌ.

হে মুমিনগণ! তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা এখনো সাবালকত্বে পৌঁছেনি সেই শিশুরা যেন তিনটি সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে- ফজরের নামাযের আগে, দুপুর বেলা যখন তোমরা পোশাক খুলে রাখ এবং এশার নামাযের পর। এ তিনটি তোমাদের গোপনীয়তা অবলম্বনের সময়।  এ তিন সময় ছাড়া অন্য সময়ে তোমাদের ও তাদের প্রতি কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তোমাদের পরস্পরের মধ্যে তো সার্বক্ষণিক যাতায়াত থাকেই। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের কাছে তার আয়াতসমূহ সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে  থাকেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। তোমাদের শিশুরা সাবালক হয়ে গেলে যেন অনুমতি গ্রহণ করে, যেমন তাদের আগের বয়ঃপ্রাপ্তরা অনুমতি গ্রহণ করে আসছে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। -(সূরা নূর (২৪) : ৫৮-৫৯)

★★রুম খোলা থাকুক বা খোলা না থাকুক, রুমে কেহ থাকলেই সেই ঘরে প্রবেশ করতে হলে সালাম বা গলা দিয়ে আওয়াজ করে হলেও একটু জানান দিতে হবে।উত্তম হল অকস্মাৎ ঢুকে না পড়া, বরং গলা খাঁকারি, পায়ের আওয়াজ অথবা অন্য কোনো উপায়ে অবগত করে প্রবেশ করা।

★যয়নব সাকাফী রা. (আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর স্ত্রী) বলেন, আবদুল্লাহ যখন কোনো প্রয়োজন সেরে দরজায় এসে পৌঁছতেন তখন গলা খাঁকারি দিতেন এবং থুথু ফেলতেন। যাতে অকস্মাৎ আমাদেরকে এমন কোনো অবস্থায় দেখে না ফেলেন যা তার খারাপ লাগবে। -তাফসীরে তাবারী ১৭/২৪৫; তাফসীরে ইবনে কাসীর ৬/৪১-৪২

বিস্তারিত  জানুনঃ 

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি আগে তাদেরকে বাহির থেকে জোড়ে আওয়াজে বারবার ডাকবেন।
,
আপনার আওয়াজ শুনে আশা করা যায় তাদের সতর অনাবৃত থাকলে তারা ঢেকে নিবেন।
তারপর ভিতরে প্রবেশ করবেন।

তবে বাহির থেকে জোড়ে আওয়াজে বারবার ডাকার পরেও তারা যদি সতর না ঢাকে,সেক্ষেত্রে এভাবে ঘরের ভিতরে গিয়ে ডাকা যাবেনা।

প্রয়োজনে তাদের সাথে পরামর্শ করে অন্য কোনো পদ্ধতি (মোবাইলে এলার্ম,বারবার ফোন ইত্যাদি) অবলম্বন করবেন।

(০২)
এতে প্রতারণা হবেনা।

এক্ষেত্রে দোয়া ও তওবার ক্ষেত্রে করনীয় হলো আপনাকে আওয়াজ করে দোয়া ও তওবা করতে হবেনা।
আপনি চক্ষু বন্ধ করে আল্লাহর দিকে মনোযোগী হয়ে মনে মনে দোয়া ও তওবা করতে পারবেন,সমস্যা নেই।

(০৩)
এক্ষেত্রেও প্রতারণা হবেনা।

সবার সামনে আপনি মনে মনে জিকির করতে পারেন।

বই খুলে বা কোনো কাজ করা অবস্থায় এভাবে যিকির করতে পারবেন।

(০৪)
এভাবে পড়া যাবে।

তবে আল্লাহর নাম বা কুরআনের আয়াত থাকলে তার যেনো অবমাননা না হয়,সেদিকে খেয়াল রাখবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...