আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
143 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (12 points)

আসসালামু আলাইকুম। আমার দুটো প্রশ্ন আছে।

১) মুনাজাতে অনেক কিছু চাইতে ইচ্ছে করে কিন্তু  সব মনে থাকে না। অনেক সময় গুছিয়ে বলতে পারি না। মুনাজাতের পর মনে পড়ে এটা ওটা বলতে ভুলে গেছি। তাই হাত তুলে মুনাজাতের পুরোটা সময় দুরুদ (সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাললাম) পড়লে কি আমার সব কিছুর জন্য এটা যথেষ্ট হবে? এ সম্পর্কে একটা হাদিস পড়েছিলাম কোথাও।

২)  যতটুকু জানি সবসময় ইস্তেগফার করা বা দুরুদ  পড়া দুটোই শক্তিশালী আমল। দুটো তো একসাথে করা সম্ভব না। সেক্ষেত্রে দুটো আমলের কোনটা প্রায়োরিটি দিব? দুরুদ পড়লে মনে হয় আমি ইস্তেগফার ছেড়ে দিচ্ছি আবার ইস্তেগফার করলে মনে হয় আমার দুরুদ পড়া হচ্ছে না। আমি চাই আল্লাহ আমাকে সকল ভালো কাজে সাহায্য করবে এবং আমার সকল নেক প্রয়োজন পূরণ করবে। এখন আমি কোনটাকে প্রায়োরিটি দিব?

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
এ ধরনের কোনো হাদীস খুজে পাইনি।
আপনি মনের মধ্যে সমস্ত নেক আমলের আশা রেখে  নিম্নোক্ত দোয়াগুলি করতে পারেন,তাহলে ইনশাআল্লাহ সমস্ত নেক আশা পূরন হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيْزِ عَنْ أَنَسٍ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ (اللّٰهُمَّ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ)

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই বলে দু‘আ করতেনঃ اللهُمَّ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ‘‘হে আমাদের প্রভু! এ দুনিয়াতেও আমাদের কল্যাণ দান কর এবং আখিরাতেও কল্যাণ দান কর এবং দোজখের ‘আযাব থেকে আমাদের রক্ষা কর’’- (সূরাহ আল-বাকারাহ ২/২০১)। (বুখারী ৪৫২২.আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪১৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪১৬৫)

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ : كَانَ أَكثَرُ دُعَاءِ النَّبِيّ ﷺ اللَّهُمَّ آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ متفقٌ عَلَيْهِ زاد مسلم في روايتهِ قَالَ : وَكَانَ أَنَسٌ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَدْعُوَ بِدَعْوَةٍ دَعَا بِهَا فََإِذَا أَرَادَ أَنْ يَدْعُوَ بِدُعَاءٍ دَعَا بِهَا فِيهِ

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অধিকাংশ দু’আ এই হত, ’আল্লাহুম্মা আ-তিনা ফিদ্দুন্য়্যা হাসানাহ, অফিল আ-খিরাতে হাসানাহ, অক্বিনা আযাবান্নার।’ অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দাও এবং পরকালেও কল্যাণ দাও। আর জাহান্নামের আযাব থেকে আমাদেরকে বাঁচাও। (বুখারী ৬৩৮৯, মুসলিম ৭০১৬)

মুসলিমের অন্য বর্ণনায় বর্ধিত আকারে আছে, আনাস (রাঃ) যখন একটি দু’আ করার ইচ্ছা করতেন, তখন ঐ দু’আ করতেন। আবার যখন (বিভিন্ন) দু’আ করার ইচ্ছা করতেন, তখন তার মাঝেও ঐ দু’আ করতেন।

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «وُكِّلَ بِهِ سَبْعُونَ مَلَكًا» يَعْنِي الرُّكْنَ الْيَمَانِيَ فَمَنْ قَالَ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ قَالُوا: آمين .

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রুকনে ইয়ামানীর সাথে সত্তরজন মালাক (ফেরেশতা) নিয়োজিত রয়েছেন। যখন কোন ব্যক্তি বলে, হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের ক্ষমা ও কুশল প্রার্থনা করছি। হে রব! আমাদেরকে দুনিয়ায় কল্যাণ দান কর, আখিরাতেও কল্যাণ দান করো এবং জাহান্নামের ’আযাব হতে রক্ষা করো। তখন সেসব মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ) বলে ওঠেন, ’আমীন’ (আল্লাহ কবূল কর)।
(ইবনু মাজাহ ২৯৫৭,মিশকাত ২৫৯০)

حسبي الله لا إلـه إلا هو عليه توكلت وهو رب العرش العظيم 

‘আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তাঁরই ওপর নির্ভর করছি, আর তিনি হচ্ছেন মহান আরশের অধিপতি’।

(০২)
দুটোই পড়বেন।
তবে দরুদ শরীফ বেশি পাঠ করার পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম। 
আমি নিন্মোক্ত হাদিসের কথা বলছিলাম। এখানে "দোয়ার যতটুকু সময় বরাদ্দ রেখেছি" বলতে কি বুঝানো হয়েছে? মুনাজাতের সময় নাকি সর্বাবস্থায়? 

রাসূল (ছাঃ)-এর উপরে দরূদ পাঠের কারণে চিন্তা দূর হয় এবং পাপ মোচন হয়। উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কাছে গিয়ে আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার উপর অনেক বেশী দরূদ পাঠ করি। আপনি আমাকে বলে দিন, আমি (দো‘আর জন্য যতটুকু সময় বরাদ্দ করে রেখেছি তার) কতটুকু সময় আপনার উপর দরূদ প্রেরণের জন্য নির্দিষ্ট করব? উত্তরে নবী করীম (ছাঃ) বললেন, তোমার মন যা চায়। আমি আরয করলাম, যদি এক তৃতীয়াংশ করি? নবী করীম (ছাঃ) বললেন, তোমার মন যা চায়, যদি আরো বেশী কর তাহ’লে তা তোমার জন্য কল্যাণকর হবে। আমি আরয করলাম, যদি অর্ধেক সময় নির্ধারণ করি? নবী করীম (ছাঃ) বলেন, তোমার মন যা চায়। যদি বেশী নির্ধারণ কর তাহ’লে তা তোমার জন্যই ভাল। আমি বললাম, যদি দুই-তৃতীয়াংশ করি। নবী করীম (ছাঃ) বললেন, তোমার মন যা চায়। যদি আরো বেশী নির্ধারণ কর তা তোমার জন্যই কল্যাণকর হবে। আমি আরয করলাম, তাহ’লে আমি আমার (দো‘আর) সবটুকু সময়ই আপনার উপর দরূদ পাঠ করার জন্য নির্দিষ্ট করে দেব? নবী করীম (ছাঃ) বললেন,إِذًا تُكْفَى هَمَّكَ، وَيُغْفَرُ لَكَ ذَنْبُكَ، ‘তাহ’লে তোমার চিন্তা ও ক্লেশের জন্য তা যথেষ্ট হবে এবং তোমার গুনাহ মাফ করা হবে’।

তিরমিযী হা/২৪৫৭; ছহীহ আত-তারগীব হা/১৬৭০; মিশকাত হা/৯২৯।
by (559,140 points)
উক্ত হাদীসে মুনাজাতের সময় বুঝানো হয়েছে।

তবে এমনি সময়েও যদি কেহ আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠ হয়ে হাত না তুলেই মনে মনে বা উচ্চারণ করে দোয়া করে,সেক্ষেত্রেও এভাবে দরুদ পাটগ করা যাবে,ফজিলতও হাসিল হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...