জবাবঃ-
(মিসওয়াক)
মিসওয়াক করা সুন্নত।পাঁচ সময়ে মিসওয়াক করা সুন্নত।(১)ঘুমানোর পূর্বে(২)ঘুম থেকে উঠে(৩)অজুর সময়(৪)নামাযের পূর্বে(৫)খাওয়ার পরে।
মিসওয়াকের মুস্তাহাব হল,
কনিষ্ঠ আঙ্গুলির সমপরিমাণ পৌঢ় হওয়া এবং এক বিগত পরিমাণ দৈর্ঘ হওয়া।তবে বর্ণিত এ পরিমাণ মিসওয়াকের জন্য ওয়াজিব বা জরুরী নয়।সুতরাং দৈর্ঘ্য বা পৌঢ় হিসেবে কমবেশ হয়, তাহলে সেটা দ্বারাও মিসওয়াক করা যাবে এবং মিসওয়াক করার সুন্নত আদায় হবে।এমনকি কেউ যদি নিজ অঙ্গুলি দ্বারাও মিসওয়াক করে নেয়,তাহলেও তখন মিসওয়াকের সুন্নত আদায় হয়ে যাবে।(বিস্তারিত দরসে তিরমিযি,মুফতী তাকী উসমানি দাঃবাঃ)
(আতর)
পুরুষদের জন্য খোশবু ব্যবহার করা। ঘরের ভিতর এবং বাহিরে খোশবু ব্যবহার করা পুরুষদের জন্য মুস্তাহাব।বিশেষ করে জুমুআহ এবং ঈদের দিনে এবং লোক সমাগম স্থলে।তবে নারীদের জন্য ঘরের বাহিরে খুশবু ব্যবহার করে যাওয়া নাজায়েয।
রাসূলুল্লাহ সাঃ খোশবু কে পছন্দ করতেন,এবং ব্যবহারও করেছেন।রাসূলুল্লাহ বলেন,
(حُبِّبَ إِلَيَّ النِّسَاءُ وَالطِّيبُ وَجُعِلَتْ قُرَّةُ عَيْنِي فِي الصَّلَاةِ)
আমার নিকট প্রিয় হল,মহিলা ও খোশবু এবং নামাযকে আমার চোখের প্রশান্তি করা হয়েছে।(মসনদে আহমদ-১১৮৮৫,সুনানু নাসাঈ-৩৯৪০)
খোশবু ব্যবহারের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের পার্থক্যর কারণ হল,মহিলার জন্য শরীয়তের বিধান হলো,তারা ঘরে অবস্থান করবে।এবং ঘরে বসেই তারা সুগন্ধি ব্যবহার করবে।যাতেকরে ফিতনা সৃষ্টির কোনো অবকাশ সৃষ্টি না হয়।অন্যদিকে পুরুষ ঘর থেকে বের হবে,এবং কাজে যাবে ও সফর করবে।মানুষের সাথে উঠাবসা করবে বিভিন্ন অনুষ্টানে ও বাজারে যাবে।সে কারণে মহিলার জন্য ঘরের বাহিরে খোশবু ব্যবহার নিষিদ্ধ, কিন্তু পরুষের জন্য মুস্তাহাব।
(পাগড়ী)
জাবির রা. বলেন,
عن جابر بن عبد الله الأنصاري، " أن رسول الله صلى الله عليه وسلم دخل مكة - وقال قتيبة: دخل يوم فتح مكة - وعليه عمامة سوداء بغير إحرام "،
মক্কা বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মক্কায়) প্রবেশ করলেন। তখন তাঁর মাথায় কালো পাগড়ি ছিল।(সহীহ মুসলিম-১৩৫৮)
পাগড়ী পরিধান করা সুন্নাতে যায়েদা যা মুস্তাহাব হিসেবে পরিগণিত। তা জরুরী নয় বরং পাগড়ী পরিধান আহলে আরবদের আদত বা অভ্যাগত ছিল অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাঃ পাগড়ীকে এবাদত হিসেবে পরিধান করেননি।কেউ যদি আল্লাহর রাসুল সাঃ এর অনুসরণের নিয়তে পরিধান করে তাহলে নিঃসন্দেহে এটি একটি ভাল কাজ।(জামেউল ফাতাওয়া ৩/১৬২)
মুগীরা ইবনে শুবা রা. বলেন,
একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওযু করলেন এবং মাথার অগ্রভাগ ও পাগড়ির উপর মাসাহ করলেন।(সহীহ মুসলিম-৮১)
সাহাবা, তাবেয়ীগণও নামাযে এবং নামাযের বাইরে বিভিন্ন সময় ব্যাপকভাবে পাগড়ি ব্যবহার করতেন। দ্রষ্টব্য : সহীহ বুখারী ১/৫৬
পাগড়ি বাঁধার বিভিন্ন পদ্ধতি আছে। সেগুলো হলো-
ক. পূর্ণ পাগড়ি মাথার ওপর বাঁধা এবং এর কোনো লেজ বা ঝুল না রাখা।
খ. পূর্ণ পাগড়ি মাথার ওপর বাঁধা এবং লেজ বা ঝুল পেছনে ঝুলিয়ে রাখা।
নবী করিম (সা.) থেকে উভয় পন্থার পাগড়ি বাঁধার কথা প্রমাণিত। তবে তিনি সাধারণতঃ দু’কাঁধের মাঝামাঝি স্থানে পেছন দিকে পাগড়ির লেজ ঝুলিয়ে রাখতেন।
ইমাম নববি (রহ.) বলেন, রাসূলুল্লাহর (সা.) পাগড়ি দুই ধরণের ছিল। ছোট পাগড়ি ছিল আনুমানিক তিন গজ কাপড়ের, আর বড় পাগড়ি ছিল সাত গজ কাপড়ের। -আপকি মাসায়েল আওর উনকা হল
পাগড়ি টুপির ওপর এবং টুপি ছাড়া উভয়ভাবে ব্যবহার করা যায়। তবে ভিন্ন ধর্মাবলম্বিদের সঙ্গে সাদৃশ্য হতে পারে বিধায় পাগড়ি টুপির ওপর বাঁধা উত্তম।
বসে বা দাড়িয়ে পাগড়ী বাঁধার সু-নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম,কোনো হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।স্পষ্টকরে কোনো হাদীসে এরকম কোনো ত্বরিকার কথা আসেনি।আমরা অনেক খুঁজাখুঁজি করে হাদীসের কোনো কিতাবে পাইনি।তাই সময় সুযোগ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী যে কেনো ভাবে পাগড়ী বাধা যাবে।
নিজের সুবিধা মত বসে বসে বা দাড়িয়ে দাড়িয়ে যে কোনো ত্বরিকায় পাগড়ী বাঁধা যাবে।