ইবনে কাসীর রহঃ আবু বকর ইবনে আবিদ দুনিয়া রহঃ এর কিতাব ‘কিতাবু আহকামিল কুবূর’ গ্রন্থের বরাতে এনেছেন যে,
وَقَدْ قَالَ أَبُو بَكْرٍ ابْنُ أَبِي الدُّنْيَا فِي كِتَابِ ” أَحْكَامِ الْقُبُورِ “: حَدَّثَنَا أَبُو بِلَالٍ مُحَمَّدُ بْنُ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بُرْدَةَ بْنِ أَبِي مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ حَدَّثَنَا أَبُو مُحَمَّدٍ الْقَاسِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِي الْأَشْعَثِ الْأَحْمَرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ دَانْيَالَ دَعَا رَبَّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَنْ تَدْفِنَهُ أُمَّةُ مُحَمَّدٍ فَلَمَّا افْتَتَحَ أَبُو مُوسَى الْأَشْعَرِيُّ تُسْتَرَ، وَجَدَهُ فِي تَابُوتٍ، تَضْرِبُ عُرُوقُهُ وَوَرِيدَهُ، وَقَدْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ دَلَّ عَلَى دَانْيَالَ فَبَشِّرُوهُ بِالْجَنَّةِ. فَكَانَ الَّذِي دَلَّ عَلَيْهِ رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ: حُرْقُوصٌ فَكَتَبَ أَبُو مُوسَى إِلَى عُمَرَ بِخَبَرِهِ فَكَتَبَ إِلَيْهِ عُمَرُ أَنِ ادْفِنْهُ، وَابْعَثْ إِلَى حُرْقُوصٍ ; فَإِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَشَّرَهُ بِالْجَنَّةِ» . وَهَذَا مُرْسَلٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ، وَفِي كَوْنِهِ مَحْفُوظًا نَظَرٌ
আবুল আশআস আলআহমারী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নবী দানিয়াল আল্লাহর নিকট দুআ করেছিলেন যে, তার দাফনকার্য যেন উম্মতে মুহাম্মদীর হাতে সুসম্পন্ন হয়। পরবর্তীকালে আবূ মূসা আশআরী রাঃ এর হাতে তুস্তর নগরী বিজিত হলে তাঁর লাশ একটি সিন্দুকের মধ্যে দেখতে পান। এ সময় তাঁর দেহের শিরা ও কাধেঁর মোটা রগ দু’টি নড়াচড়া করছিল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন ‘যে ব্যক্তি দানিয়ালের লাশ সনাক্ত করিয়ে দিবে, তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিবে’।
হারকূস নামক এক ব্যক্তি দানিয়াল আঃ এর লাশ সনাক্ত করেছিলেন। আবূ মূসা রাঃ হযরত উমর রাঃ কে এ বিষয়ে অবহিত করেন। তখন উমর রাঃ পত্র মারফত তাকে জানান যে, দানিয়ালকে ওখানে দাফন কর এবং হারকূসকে আমার নিকট পাঠিয়ে দাও। কেননা, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জান্নাতে সুসংবাদ দান করেছেন।
বর্ণিত সূত্রে হাদীসটি মুরসাল এবং এর বিশুদ্ধতার ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ আছে। [আল বিদায়া ওয়াননিহায়া, আরবী-২/২৭৭-২৭৮, বাংলা-৮৬-৮৭]
আবুল ‘আলিয়ার বর্ণনা অনুযায়ী, ওমর (রাঃ)-এর খেলাফতকালে (১৩-২৩ হিঃ) আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) কর্তৃক ইরাকের তুসতার নগরী বিজিত হ’লে সেখানকার শাসক হুরমুযানের বায়তুল মালে চৌকির উপরে একজন ব্যক্তির অক্ষত লাশ পাওয়া যায়। যার মাথার কাছে একটি মুছহাফ ছিল। মুছহাফটি ওমর (রাঃ)-এর নিকটে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি নওমুসলিম ইহূদী পন্ডিত কা‘ব আল-আহবারকে ডেকে আরবীতে তার মর্ম উদ্ধার করেন। যার মধ্যে মানুষের আচরণবিধি, আদেশ-নিষেধ ও ভবিষ্যদ্বাণীসমূহ লিপিবদ্ধ ছিল। অতঃপর খলীফার নির্দেশক্রমে সেখানে দিনের বেলা ১৩টি কবর খনন করা হয় এবং রাতের বেলায় এগুলির কোন একটিতে দাফন করে মাটি সমান করে দেওয়া হয়। যাতে লোকেরা তা খুঁজে না পায় এবং ফিৎনায় পতিত না হয়। কেননা ইতিপূর্বে খরার সময় লোকেরা চৌকিসহ লাশটি বের করত এবং তার অসীলায় বৃষ্টি প্রার্থনা করত। বর্ণনাকারীর ধারণা মতে এটি ৩০০ বছর পূর্বেকার লাশ। লাশটির মাথার পিছনের কয়েকটি চুল পাকা ব্যতীত দেহের কোন অংশে পরিবর্তন ঘটেনি। কারণ নবীদের লাশ মাটি ও পশুতে খায় না’। ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, আবুল ‘আলিয়া পর্যন্ত বর্ণনাটির সূত্র ছহীহ। তবে ৩০০ বছরের পূর্বেকার ধারণামূলক বক্তব্যটি যদি সঠিক হয়, তাহ’লে তিনি নবী ছিলেন না বরং একজন সৎ ব্যক্তি ছিলেন। কেননা ঈসা ও মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর মধ্যে কোন নবী ছিলেন না, যা ছহীহ বুখারীর হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত’ (আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ২/৪০; আলবানী, তাখরীজ ফাযায়েলুশ শাম ১/৫১, আছার ছহীহ)।
দানিয়াল সম্পর্কে কুরআন ও হাদীছে কিছু পাওয়া যায় না। অতএব তিনি যে নবী ছিলেন, এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে বলার কোন উপায় নেই।