আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
54 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (17 points)

আসসালামু আলাইকুম। মিলভিক বাংলাদেশ নামক একটা সুইডিশ স্বাস্থ্যবীমা কোম্পানি ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশে তাদের সেবা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিভিন্ন প্যাকেজ আছে। যেমনঃ গোল্ড প্যাকেজে মাসিক ৪৭০ টাকা করে জমা দিলে তারা বাৎসরিক সর্বোচ্চ এক লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করবে। এই স্বাস্থ্যসেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে বাৎসরিক হাসপাতালের বেডভাড়া (৩০০০ টাকা প্রতি রাত*৩০ দিন=৯০ হাজার টাকা), ৪০০০ টাকার ডাক্তার ভিজিট, ৪০০০ টাকার ওষুধ ও ২০০০ টাকার মেডিকেল টেস্ট ডিস্কাউন্ট, ২৪ ঘন্টা টেলি্মেডিসিন সার্ভি্‌ এবং হেলথ টিপস। এই একলক্ষ টাকার বেশি কারো চিকিৎসা বাবদ খরচ হলেও বাকিটা তারা প্রদান করবে না, আবার তাত্ত্বিকভাবে যদি ধরেও নেওয়া হয় যে কারো সারাবছরে চিকিৎসাবাবদ কোনো খরচ হলো না, তাহলেও মাসিক ৪৭০*১২=৫৬৪০ টাকা তারা ফেরত দেবে না। অর্থাৎ, ব্যাপারটা অনেকটা এরকম যে কেউ ১০০ টাকায় ৫ জিবি ডাটা কিনল, এখন সে কোনো ডাটা খরচ না করলে এক মাস পর সব ডেটা নষ্ট হয়ে গেল, ৩ জিবি খরচ করলে ২ জিবি নষ্ট হলো, ৫ জিবি খুরচ করলে পুরোটাই কাজে লাগল। ৬ জিবি খরচ করা সম্ভব নয়, কারণ সে ৫ জিবির প্যাকেজ কিনেছে। আরো সহজ করে বলা যায়, কেউ ২০০ টাকা দিয়ে ১ কেজি আপেল কিনে পুরোটা  খেতেও পারে, অর্ধেক খেতেও পারে, আবার পচিয়ে নষ্ট করতেও পারে-বিক্রেতা এজন্য দায়ী হন না। তেমনি মিলভিক এই গোল্ড প্যাকেজে প্রতি বছরে মোট এক লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যসেবা বিক্রি করবে, কারো যদি পুরোটা লাগে পুরোটা নেবে, আংশিক লাগে আংশিক নেবে। এক বছর পর আবার নতুন করে সব কিছু নিতে হবে, পরের বছরের সাথে বকেয়া কিছু যোগ হবে না।  এই প্ল্যান যে কোনো মাসেই বাতিলও করা যাবে। আমার প্রশ্ন হলো এখানে গ্রাহক হওয়া কি জায়েজ হবে? ধরুন, যায়েদ ডাক্তার দেখাল, ৫০০ টাকা ভিজিট এলো, ৫০০ টাকা ওষুধ খরচ এলো। সে যদি এই ভিজিটের কাগজ এবং ওষুধের রশিদ এর ছবি মিলভিকের কাছে পাঠিয়ে দেয় তাহলে তারা এই টাকাটা বিকাশ করে পাঠিয়ে দেবে  ( উভয়ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত)। উল্লেখ্য যে, এখানে বছরে ৫৬৪০ টাকা খরচ করে ১ লক্ষ টাকার যে সেবা পাওয়া যাচ্ছে তার পুরোটাই টাকার-বিনিময়ে টাকা জাতীয় নয়, যেমন টেলিমেডিসিন সার্ভিসও এর সঙ্গে যুক্ত আছে। অর্থাৎ, পুরো প্যাকেজটা একটা কম্বাইন্ড প্যাকেজ, এর কোনো সার্ভিস নেব, কোনোটা নেব না এমন করে বাছাই করা সম্ভব নয়। কাজেই এই কথা সম্ভবত বলার সুযোগ নেই যে এখানে টাকার বিনিময়ে টাকা কেনাবেচা হচ্ছে বা ৫৬৪০ টাকা দিয়ে ১ লক্ষ টাকা কেনাবেচা হচ্ছে, ঠিক তো? এমতাবস্থায় এই ধরণের সেবা ক্রয় করা বা এর গ্রাহক হওয়া জায়েজ হবে কি? বিস্তারিত জানতে ভিজিট করা যেতে পারেঃ https://milvikbd.com/product-details

1 Answer

0 votes
by (712,400 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
বীমা নাজায়েয ও হারাম।কেননা কম্পানির পক্ষ্য থেকে মাসিক কিস্তিতে যে টাকা উসূল করা হয়, সেটা মূলত কম্পানির নিকট ঋণ হিসেবে থাকে। এবং পরবর্তীতে এ জমাকৃত টাকা তথা ঋণের বিপরিতে যে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করা হয়,সেটা সুদ। আর সুদ হারাম।

দ্বিতীয়ত বীমার বিষয়টা শর্ত তথা গ্রাহকের কোনো অঘটনের সাথে চুক্তিবদ্ধ। আর শর্তের সাথে কোনো ঋণের আদাণ-প্রদাণ জায়েয না বরং হারাম।

তৃতীয়ত,বীমার টাকা দেড়ীতে গ্রাহকের হস্তগত হওয়ার শর্ত থাকে।আর ঋণের মধ্যে শর্তের মাধ্যমে দেড়ীতে লেনদেনের সমাপ্তি বিশুদ্ধ নয়।
তাছাড়া বীমা কম্পানি গ্রাহকের নিকট থেকে কিস্তিতে টাকা তুলে সেই টাকা দিয়ে সুদি লেনদেনে জড়িয়ে থাকে।

সুতরাং এসমস্ত কারণ বিবেচনায় ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, জীবন বীমা করা এবং বীমা কম্পানিতে চাকুরী করা জায়েয হবে না।(আহসানুল ফাতাওয়া-৭/২৪) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1204

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সরকারি বাধ্যতামূলক বীমা ব্যতিত বাদবাকী সকল প্রকার বীমা নাজায়েয ও হারাম। সুতরাং হেলথ ইন্সুরেন্স ও হারাম। সুতরাং তাতে জয়েন হওয়া জায়েয হবে না। আপনি বলেছেন, মিলভিক বা এ জাতীয় কম্পানিতে টাকার বিনিময়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে, কাজেই এটা সুদ হবে না। কিন্তু অর্থগত ভাবে এখানে টাকার বিনিময়ে টাকাই দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া এখানে সেবাটি একটি অঘটনের সাথে সম্পর্কিত। এজন্য এটা জায়েয হবে না


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (712,400 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...