আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
189 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।


মেহেরবানী করে এত বড় প্রশ্ন দেখে বিরক্ত হবেন না!


১)‌ তাবিজ ব্যবহার করা কি শিরক ?


২) আমাদের সমাজে যে জমি বন্ধক ব্যবস্তা আছে এটা কি সুদ ?


৩)কারো হক নষ্ট করার পর তাকে খুঁজে না পেলে বা তার কোনো ওয়ারিশকে খুঁজে না পেলে বা খুঁজে পাওয়ার কোন সম্ভাবনা না থাকলে সেই সম্পদ সওয়াবের নিয়্যত ছাড়া দান করে দিতে হয় ! এই মাসআলাটি কি ইজমা এর মাধ্যমে হয়েছে ?


৪)আমি যখন দ্বীনে ফিরে আসি তখন হৃদয়ে অনেক আনন্দ ছিল!কয়েকদিন পর থেকে সব ভালো কাজে আনন্দ পেতে শুরু করি!এবং এভাবেই অনেকদিন কাটিয়ে ফেলি!

কিন্তু গত ১৫ - ২০‌ দিন সময় ধরে একটা সমস্যায় ভুগছি!মুলত এই ১৫/২০‌ দিনের অনেক আগে থেকেই শয়তান আমার মনে টুকটাক ওয়াসওয়াসা দিত। যেমন: প্রত্যেকবার ওযু শেষে মনে হয় যেন প্রশাব ক্লিয়ার হয় নি।আবার করতে হবে!আবার কখনো কোথাও যদি বসতাম আর সেখানে কোন‌ কারনে ভিজে থাকতো তাহলে মন হয় এখানে বুঝি কেউ প্রশাব করে রাখছে ! হয়ত কোন প্রানী।বাড়ি গিয়ে কাপর চেইন্জ করতে হবে!

তবে গত ১০/১৫ দিন‌ পূর্বে একটা আর্টিকেলে পড়ি যে, যারা নাটক বা অশ্লীল কোন ভিডিও দেখে তখন তার মাধ্যমে সেই প্রতিষ্ঠান লাভবান হয়।আবার সেই অর্জিত লভ্যাংশ ব্যবহার করে নতুন ভিডিও বানাতে ! এভাবে তৈরি হয় পাপের সাম্রাজ্য!হেদায়াতের পূর্বে তো এসব দেখতাম! তাই কখনো কখনো মনে হয় যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাকে কোনদিন ক্ষমা করবেন না।আবার বান্দার হক আল্লাহ ক্ষমা করেন না! কিন্তু হেদায়াতের পূর্বে এমনও অনেক মানুষের হক মেরে খাইছি তাদের আমি চিনিই না।তাদের সাথে সাক্ষাতের কোনো সম্ভাবনাও নেই।কারণ সেটা ছিল অনলাইন মাধ্যমে!তো যাই হোক,আমার জানামতে এই পাপ ক্ষমা হওয়ার জন্য প্রথমে সেই পরিমাণ অর্থ আমাকে সওয়াবের নিয়্যত ছাড়া দান করে দিতে হবে এবং কিছু কিছু করে দেওয়ায় শুরু করেছি!তবে এই বিষয় নিয়ে অনেক সমস্যায় আছি! জানিনা এটা ওয়াসওয়সা কি না!


আমার এখন প্রায় সবসময়ই মনে যেহেতু তাদের হক মেরেছি তাই আর এতো ইবাদত করে লাভ কি?পরকালে তো সবই ওই ব্যক্তিরা নিয়ে নিবে!আমার তো কিছুই থাকবে না।আর নিজেকে জাহান্নামী মনে হয় ( নাঊজুবিল্লাহ )। আবার অন্যদিকে নাটক সিনেমা দেখার সেই ভয়াবহ পাপ তো আছেই।আমার মনে হচ্ছে এটা হয়ত শয়তানের ওয়াসওয়াসা।এই সমস্যর কারণে আমি প্রথমে নিয়মিত জিকর গূলো ছেড়ে দিয়েছি,এরপর সালাতে অমনোযোগীতা সৃষ্টি হয়েছে ,আর এখন সলাত আদায় করতেই অলসতা লাগে! এগুলো পিছনে আমি যে কারণটা পাচ্ছি সেটা হলো যখনোই এই সকল ইবাদত করতে যাই,তখনি মনে হয় আমার নামাজ পরে লাভ কি সবই তো অন্যের!এত ইবাদত করেও তো পরকালে ছাড় পাবো না!এর ফলে মনে হচ্ছে অন্তর টা শক্ত হয়ে গেছে!চোখ আর পানিও আসে না আল্লাহর ভয়ে ( নাঊজুবিল্লাহ )।এছাড়াও এখন এমন হচ্ছে যে,আমি হয়ত দ্বীন থেকে দূরে সরে যাচ্ছি!

সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হচ্ছে,আমি পাগলের মত অতি ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে চিন্তা করে সময় নষ্ট করি ঘন্টার পর ঘন্টা! যেমন: আমাদের বাড়ির পাশেই একটা চাতাল আছে!সেখানে ধান শুকনো হয়।তো কখনো কখনো সেই চাতাল দিয়ে হাঁটার সময় কয়েকটা ধান হাতে তুলে নিয়ে দাঁতে টুকিয়ে খেয়ে ফেলতাম!ধানের মালিকও এসময় দেখতো। কিন্তু আমি নিতাম তার মূল্য হয়ত ১০ পয়সাও হবে না! কিন্তু আজকাল মনে হয় এর মাধ্যমে আমি হয়ত তার হক নষ্ট করেছি,তার সম্পদ ভক্ষন করেছি । এরকম আরো একটা বিষয় হলো যে, আমি যদি কারো বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করি তারপর বের হয়ে আসি তখন মনে হয় , আমি তার বাসার ভিতর থেকে সেন্ডেলের মধ্যে লেগে থাকা ধুলা নিয়ে ফেরত হয়ে আসছি।অর্থ্যাৎ তার সম্পদ ভক্ষন করেছি!কখনো কখনো এসব বিষয় চিন্তা করে নিজেকেই নিজের কাছে কত যে বোকা মনে হয়!


কিন্তু আজকাল আমি কুরআন তিলাওয়াত করতে পারছি না।যখনি পড়তে বসি তখন খুব সামান্য সময়েই খুব ক্লান্ত লাগে,সালাতের ক্ষেত্রের এটি বিষয়!এই ক্লান্ততা শুধুমাত্র যখন ইবাদতে যাই তখনি লাগে!


উস্তাদ,আমি কি কোন কালো জাদুর সংস্পর্শে আছি ( যদিও কালো জাদু করার মত কোন শত্রু আমার নাই ) নাকি শয়তানের ওয়াসওয়াসা এর মাধ্যে আছি?আর এ থেকে কিভাবে মুক্তি পাব?

আমি এ বিষয়ে খুবই চিন্তিত। কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, এমন কোন সমস্যা নেই যার সমাধান ইসলাম দিতে পারবে না!


৫)আমাদের মসজিদ প্রথমে অনেক বড় ছিল ( অনেক দূরের এলাকা থেকেও লোকজন আসত)। কিন্তু পরবর্তীতে সেই সমাজের লোকজন বিভক্ত হয়ে আরেকটি মসজিদ নির্মাণ করেন।অর্থ্যাৎ পুরাতন‌ মসজিদের লোকজন দুইভাগে বিভক্ত হয়। কিন্তু নতুন মসজিদের লোকজন পুরোনো মসজিদের জমি জোরপূর্বক দখল করেছে।তাদের যুক্তি ছিল যে, যেহেতু আগে তারাও সেই মসজিদের সদস্য ছিল তাই এখন তারাও সেই মসজিদের জমি থেকে অর্ধেক / কিছু অংশ পাবে!

এছাড়া একটা গুঞ্জনও আছে যে, নতুন মসজিদের কাজের সময় হিন্দুদের দেয়া পাথর ব্যবহার করা হয়েছে ( সেই পাথর ক্রয় করা হয়নি,বরং দান হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে!)।
এখন সেই মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিন এর হাদিয়া দেয়া হয়‌ সেই জমির চাষাবাদের মাধ্যমে অর্জিত লভ্যাংশ থেকে(যদিও এর মধ্যে অন্যান্য টাকাও আছে )।

আমার বাসা থেকে নতুন মসজিদই সবচেয়ে কাছে!আর পুরাতন মসজিদে যেতে অনেক সময় লাগে!

এখন আমার প্রশ্ন হলো :

ক) জোরপূর্বক জমি নেয়া কি জায়েজ ?

খ)সেই ইমাম বা মুয়াজ্জিন এর পিছনে সালাত আদায় করা যাবে?

গ) মসজিদে হিন্দুদের টাকা / দান নেয়া যাবে?

ঘ) আমি কি এখন নতুন মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারব ( আমি আমার পরিবারের পুরুষদের নিয়ে বাড়িতেই জামাত করে পরতে পারি ! প্রায় ৪/৫ জন পুরুষ আছেন) ? নাকি বাড়িতে পড়াটাই উত্তম হবে ?

জাযাকাল্লাহু খ্বাইরান ❤️❤️

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
তাবিজ ব্যবহার সম্পর্কে উলামাদের মতবিরোধ রয়েছে। আকিদা বিশুদ্ধ রেখে কুরআন সুন্নাহ দ্বারা তাবিজ ব্যবহার করলে,এবং আল্লাহকে শে'ফা দানকনকারী মনে করলে, সেটা রুখসতযোগ্য। 

(২)
বর্তমান সমাজে জমি বন্ধকের প্রচলন রয়েছে।অহরহ জমি বন্ধক দেওয়া হচ্ছে বা নেওয়া হচ্ছে।কিন্তু জমি বন্ধকের ইসলামী নিয়মনীতি কি এ সম্পর্কে অনেকেরই কোনো ধারণা নেই।

ইসলাম এ প্রচলিত পদ্ধতি সম্পর্কে কি বলে?
আসুন কিছুটা সময় ব্যয় করে এ সম্পর্কে কিছু শরয়ী বিধি-বিধান জেনে নেই।যাতে ইহকাল ও পরকালের সঠিক রাস্তা অর্জন করতে সহায়ক হয়।

বন্ধকের সংজ্ঞা বর্ণনা করতে যেয়ে আল্লামা হাসক্বফী রাহ বলেনঃ
(هُوَ) لُغَةً: حَبْسُ الشَّيْءِ. 
وَشَرْعًا (حَبْسُ شَيْءٍ مَالِيٍّ) أَيْ جَعْلُهُ مَحْبُوسًا لِأَنَّ الْحَابِسَ هُوَ الْمُرْتَهِن(ُبِحَقٍّ يُمْكِنُ اسْتِيفَاؤُهُ)
তরজমাঃরেহেন(বন্ধক)এর শাব্দিক অর্থ কোনো কিছুকে বন্ধী করে রাখা।পারিভাষায় রেহেন বলা হয়,কোনো জিনিষকে হক্ব বা কোনো প্রাপ্তধনের মুকাবেলায় বন্ধী করে রাখা।যাতে পরিবর্তীতে তা দিয়ে নিজ প্রাপ্যকে উসূল করা যায়। (আদ-দুর্রুল মুখতার-৬/৪৭৭) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 


(৩)
এই মাস'আলাকে কুরআন ও হাদীসের অসংখ্য নস থেকে ইজতেহাদের মাধ্যমে নির্গত করা হয়েছে।

(৪)
এগুলো মনের ওয়াসওয়াসা। এই ওয়াসওয়াসাকে কোনো স্থান দিবেন না। যখন নিশ্চিত হবেন যে, প্রস্রাব বের হয়েছে বা কাপড়ে লেগেছে, তখনই কেবল আপনি অযু ভঙ্গ হয়েছে বলে ধরে নিবেন।

(৫)
(ক) মসজিদ ওয়াকফ সম্পত্তি।আর ওয়াকফ সম্পত্তির মালিক আল্লাহ। ওয়াকফ করার পর সেই জমিকে আর ফিরিয়ে নেয়া যায়।সুতরাং পুরাতন মসজিদে দানকৃত জমিকে জোরপূর্বক কেউ নিতে পারবে না।নতুন মসজিদের জন্য নেওয়াও জায়েয হবে না।

(খ) নতুন পুরাতন যেকোনো মসজিদের ইমাম বা মুয়াজ্জিন এর পিছনে সালাত আদায় করা যাবে।

(গ) মসজিদে হিন্দুদের দান গ্রহণ করা যাবে যদি সেটা বৈধভাবে তাদের উপার্জিত সম্পদ হয়।

(ঘ) আপনি যেকোনো মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (590,550 points)
উত্তর দেয়া হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...