আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
287 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (67 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারআকাতুহু।

১। https://www.ifatwa.info/47375/ এই ফতোয়াতে বলা হয়েছিল যে ছাত্রকে সংশোধনের নিয়তে করলে গীবত হবে না। এখন সেই কথাটা ছাত্রের সংশোধনের নিয়তে বলা হয়নি, এমনি একটা আশংকা থেকে শিক্ষক নিজের মাকে(ছাত্রের মা নয়) বলেছিলেন। এমতাবস্থায় এটা কি গীবতের পর্যায়ে পড়বে? আর যদি পড়ে আর ছাত্রের কাছে মাফ চাওয়ার সুযোগ না হয় বা ফিতনায় পড়ার অবস্থা হয় (যেমন লুকিয়ে রাখা গীবত সম্পর্কে জেনে যায় ছাত্র) তবে কি ছাত্রের নাম করে কিছু সাদাকাহ করে দেওয়া যাবে?

২। সেদিন ডিপার্টমেন্টের এক জুনিয়র মেয়ে আমাকে বলছিল স্যারেরা তার সাথে কি কি অন্যায় করেছে (পরীক্ষায় ইচ্ছা করে কম নাম্বার দেওয়া এরকম টাইপ কিছু ছিল)। কোন কোন স্যার এরকম করেছে তাদের নামও বলল। আমার প্রথমে মনে হচ্ছিল যে এসব শুনলে গীবত হয়ে যাবে না তো। পরে মনে হল মেয়েটা ওর কষ্টের কথা বলে একটু হালকা হচ্ছে বলুক না। আমি জানতাম যে অন্যায়ের বিবরণ দিলে গীবত হয় না, এটাও মনে হচ্ছিল তাই আর ওকে থামাইনি। এখন আমার এই কাজটা কি গীবত শোনার পর্যায়ে চলে গেছে? আমি যদি কারো দুঃখের কথা শুনতে যেয়ে সে যাতে তার মন হালকা করতে পারে এই নিয়তে অন্যের দোষ শুনি তবে কি গীবত হবে? আর উপরোক্ত পরিস্থিতিতে গীবত হয়ে গেলে স্যারদের নাম করে কিছু সাদাকাহ করে দিলে হবে কিনা?

৩। আমি ছোটবেলা থেকেই মেয়ে হয়েও মেয়েদের সাথে মিশতে পারি না সেভাবে(ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে)। কারণ আমার আশেপাশের বেশিরভাগ মেয়েরই কথা বলার টপিক হল সাজগোজ, জামা কাপড়, নায়ক নায়িকাদের আলাপ ইত্যাদি (ব্যতিক্রম আছে এটা আগেই বলেছি)। আমি সবসময়ই চেয়েছি ইতিহাস, রাজনীতি, সমাজব্যবস্থা, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার, দেশ-বিদেশ, ভ্রমণসহ বিভিন্ন জীবনমুখী আলাপ করতে যেটা বেশিরভাগ সময়ই পারি নি। স্কুল কলেজে মিশতে পারার মত যেসব বান্ধবী ছিল তাদের সাথে প্রাত্যহিক যোগাযোগ না থাকায় সবরকম আলাপ করা যায়ও না, ফোন দিলে শুধু কুশল বিনিময়ের পর আর কিছু বলার থাকে না।
ভার্সিটিতে আমাদের ডিপার্টমেন্টে আমাদের ব্যাচে মাত্র ৭ জন মেয়ে। ওদের সাথেও আমি মিশতে পারি নি মন মানসিকতা না মেলার কারণে। দ্বীনের বুঝ আসার পর দ্বীন নিয়ে আলাপ করা যায় এরকম মানুষ না থাকলে আমি কারো সাথেই মিশতে পারি না। এখন আমাদের বাকি ৬ জনের মধ্যে আরেক বান্ধবীর দ্বীনের বুঝ আসার পর তার সাথে একটু টুকটাক কথা হয় সেটা সীরাহ নিয়ে, ইসলামি ইতিহাসের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে। কিন্তু আমার এই বান্ধবীর বাস্তবতা সম্পর্কে সেরকম আইডিয়া নাই, একেবারে ইনোসেন্ট বাচ্চা টাইপের। জীবনের বিভিন্ন সমস্যায় দ্বীন ইসলামের প্রেক্ষাপটে  সমাধান দিতে পারার মত নয় ও। (জানি আমার ঐ বান্ধবী আইফতোয়াতে আছে, আমিই এনেছি ওকে। আমি সেই বান্ধবীকেই বলছি যে তুমি যদি এই প্রশ্ন দেখে ফেল, ক্ষমা করে দিও প্লিজ)

অন্য বান্ধবীদের বাস্তবতার বুঝ থাকলেও তারা দ্বীন ইসলামের ব্যাপারে এতটা গভীর ধারণা রাখে না যে ইসলামের আলোকে সমাধান দিতে পারবে। আর ওদের সাথে মিশতে না পারায় দাওয়াহও দিতে পারি নি। তাই কোন ব্যাপারে সমাধানের দরকার পড়লে ক্লাসের যেসব ছেলের দ্বীনের বুঝ আছে তাদেরকে ফোন দিয়ে জানতে হয়। এছাড়া মেয়েদের সাথে যেহেতু জীবনমুখী আলাপগুলো করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না তাই পূর্বেকার অভ্যাসমত ছেলেদের সাথে এসব ব্যাপারেও আলাপ করতে হয় (জীবনমুখী আলাপ কিন্তু, প্রেমালাপ নয়)। আমার উপরোক্ত পরিস্থিতি বিবেচনা করে বলবেন কি আমার এই কর্মকাণ্ড জায়েজ আছে কিনা?

৪। পাকিস্তানের এক বিখ্যাত দাঈ একবার বলেছিলেন যে তিনি একবার সিনেমার নায়ককে দাওয়াহ দিতে মনস্থ করেন। তখন তিনি ও নায়ক দুজনেই হজ্ব/ওমরার সফরে ছিলেন। তিনি বললেন যে তিনি সেই নায়কের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে গিয়ে সিনেমার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ করতে লাগলেন। তো তিনি শ্রোতাদের বলতে চাইছিলেন যে তারা যেন যাকে দাওয়াহ দেবে তার হৃদয়ের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করে। এরই উদাহরণ হিসেবে উক্ত ঘটনা পেশ করলেন। এখন আমার প্রশ্ন হল দাওয়াহ দেওয়ার উদ্দেশ্যে কি এভাবে নাজায়েজ বা অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে কথা বলা যাবে?

৫। একজন দ্বীনের পথে ফিরে এসেছে এবং সিনেমা দেখা, গান শুনা এসব ছেড়ে দিয়েছে। এখন যদি কেউ তাকে জিজ্ঞাসা করে যে অমুক সিনেমা দেখেছে কিনা বা অমুক গান শুনেছে কিনা(যেটা সে দেখেছে বা শুনেছে জাহেলি জীবনে), তখন কি নিজের যে অন্যায় আল্লাহ লুকিয়ে রেখেছেন তার মর্যাদা রাখতে বলা যাবে যে না ঐ সিনেমা বা ঐ গান সে দেখেনি বা শুনেনি? এখানে মিথ্যা বলা কি জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১) 
ইবনুল মুফলিহ রাহ বলেন,
"قال صاحب" المختار " من الحنفية : ولا غيبة إلا لمعلوم ، ولا غيبة لأهل قرية.
মুখতার কিতাবের মুসান্নিফ হানাফি ফকিহ বলেন,অপরিচিত কারো মন্দ উচ্ছারণ গিবত হয় না।এবং এক পূর্ণ এক এলাকাবাসীর মন্দ উচ্ছারণ গিবত হয় না।(আল-আদাবুশ-শারইয়্যাহ-১/২৫৪)

"(ولا غيبة إلا لمعلوم ، فاغتياب أهل قرية ليس بغيبة ) "
অপরিচিত কারো মন্দ উচ্ছারণ গিবত হয় না।এবং এক পূর্ণ এক এলাকাবাসীর মন্দ উচ্ছারণ গিবত হয় না।(মাজমা'উল আনহুর-২/৫৫৩) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/6922


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার ঐ ছাত্রকে যদি আপনার 'মা' না চিনেন, তাহলে এটা গীবত হবে না। তাছাড়া 
"যার গীবত করা হয়েছে সে যদি জানতে না পারে যে তার নামে গীবত করা হয়েছে তাহলে তার কাছ থেকে ক্ষমা চাওয়াটা জরুরী নয়, শুধু আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা চাইলেই হবে।"

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/54510

(২) যদি স্যারেরা হরহামেশাই এরকম কিছু করে থাকেন, তাহলে তাদের এমন কর্মকান্ড প্রকাশ করার রুখসত থাকবে।গীবত হবে না।
হযরত মু'আবিয়া ইবনে হাইদাহ রাযি থেকে বর্ণিত,
معاوية بن حيدة رضي الله عنه ، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ( أَتَرعُونَ عَنْ ذِكْرِ الْفَاجِرِ ! اذْكُرُوهُ بِمَا فِيهِ كَي يَعْرِفَهُ النَّاسُ وَيَحْذَرَهُ النَّاسُ ). 
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,তোমরা কি ফাসিকের সমালোচনা থেকে বিরত থাকবে?বরং তোমরা ফাসিকের কৃত অপরাধ নিয়ে সমালোচনা করো,যাতেকরে লোকজন সেই অপরাধ থেকে বিরত থাকে।আস-(সুনানুল কুবরা-বায়হাক্বী-১০/২১০)

(৩) যেখানে মেয়ে ক্লাসমেটের দ্বারা সহযেগিতা গ্রহণের বিশদ সুযোগ রয়েছে, সেখানে পুরুষ ক্লাসমেটের সাথে আলাপ আলোচনা জায়েয হবে না। আপনি ঐ প্রয়োজনটা মেয়ে ক্লাসের সাথে শেয়ার করবেন, পরামর্শ গ্রহণ করবেন।

(৪)
ব্যক্তিকেন্দ্রিক কোনো প্রশ্ন থাকলে, সেটা আমাদের জুম ক্লাসে করবেন।প্রতি মাসের ১৫ এবং ৩০ তারিখ রাত ৯ টায় হয়। আমাদের ফেইসবুক পেইজে চোখ রাখবেন।

(৫) নিজের অতীতের গোনাহকে প্রকাশ করা যাবে না।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/906


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
ইলম গ্রহণের জন্য সফর ফায়দাজনক। সুতরাং কাছাকাছি কোনো দারুল ইফতায় যদি যোগাযোগ করেন, তাহলে সেটা আপনার জন্য আরো ফায়দাজনক হবে।
by (597,330 points)
জবাব দেয়া হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...