আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
92 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
Assalamualaikum Wa rohmatullohi wa barokatuh ustad

১.আমার ভাইয়া আহলে হাদিস, আমি আইওমে পড়ার মাধ্যমে এখন হানাফি মাযহাব মানার চেষ্টা করছি, এখন আমি হানাফি মাযহাব অনুযায়ী মহিলাদের যেভাবে নামায পড়তে হয় সেভাবে পড়ার চেষ্টা করি কিন্তু আমার ভাইয়া আহলে হাদিস হওয়ায় একদিন আমাকে এভাবে নামায পড়তে দেখে মানা করেছিল এভাবে নামায পড়তে।আমি দরজা বন্ধ করে নামা্য পড়ি যাতে আম্মু ভাইয়া আমাকে এভাবে নামায পড়তে না দেখে এইটা কি শির্ক হবে? গাইরুল্লাহর প্রতি ভয় হবে?? আবার আজকে মাগরিব এর সালাত পড়ার সময় আমি সিজদা অবস্থায় ছিলাম ভেবেছি আমার ভাইয়া আসছে তাই আমি ভয় পেয়ে দুইবার সিজদার তাসবিহ বলে উঠে গিয়েছি এইটা করা কি ঠিক হয়েছে বা এইটা কি শির্ক? আমার খুব খারাপ লাগছে আমি মাফ চেয়েছি আল্লাহর কাছে। এখন আমার কি আমার হানাফি মাযহাব মানা উচিত?যেহেতু আমার ভাই আহলে হাদিস?মাঝে মাঝে এভাবে নামায পড়া কঠিন হয়ে যায়।

২.আজকে ইংরেজি এক্সামে আমি একটা প্রশ্নের উত্তর টা কোন নিয়মে লিখতে হবে তা একজনের খাতা থেকে দেখে ফেলেছিলাম আমার মনে হয়েছে এভাবে লিখলে সঠিক হবে আমি শুধু নিয়ম দেখেছি উত্তর নিজেই দিয়েছি।এর জন্য গুনাহ হবে? আমি আল্লাহর কাছে মাফ চেয়েছি।এইটা যদি গুনাহ হয় আমি যদি আল্লাহর কাছে দোয়া করি যে আল্লাহ আমি যাতে ইংরেজি তে ভালো মার্ক পাই এর জন্য গুনাহ হবে?

৩.আমার ফ্রেন্ড এর কান থেকে পুজ বের হয়ে চামড়ার মতো হয়ে গেছে এর জন্য কি ওর ওযু করতে গেলে সমস্যা হবে?ও এটা উঠাতে গেলে ব্যাথা পায়। পুজ কি অপবিত্র? এটা বের হলে ওযু ভাঙবে??

1 Answer

0 votes
by (682,440 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
আপনি দরজা বন্ধ করে নামায পড়েন, যাতে আপনার আম্মু ভাইয়া আপনাকে এভাবে নামায পড়তে না দেখে, এইটা শিরক নয়।

সেজদায়ে ২ বার তাসবিহ বলে উঠার দরুন সুন্নাত পূর্ণ আদায় হয়নি।
তবে এর দরুন নামাজের সমস্যা হবেনা।

হানাফি মাযহাব চালিয়ে যাওয়া উচিত,তবে পারিবারিক ভাবে আপনাকে শক্ত প্রেশার দিলে তাদের সামনে আহলে হাদীসদের নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে পারবেন। 

(০২)
এটা দেখে নেয়া ঠিক হয়নি।
বরং তার থেকে মৌখিক জেনে নিতে পারতেন।

তবে আপনি যেহেতু আল্লাহর কাছে মাফ চেয়েছেন,তওবা করেছেন ,তাই আর সমস্যা নেই।

এখন আপনি যদি আল্লাহর কাছে দোয়া করেন, "যে আল্লাহ আমি যাতে ইংরেজি তে ভালো মার্ক পাই" 

এর জন্য গুনাহ হবেনা।

(০৩)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ الْعَلَاءِ ، ثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شَوْكَرِ بْنِ رَافِعٍ الطُّوسِيُّ ، نَا أَبُو إِسْحَاقَ الضَّرِيرُ إِبْرَاهِيمُ بْنُ زَكَرِيَّا ، نَا ثَابِتُ بْنُ حَمَّادٍ ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ ، عَنْ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ ، قَالَ : أَتَى عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - وَأَنَا عَلَى بِئْرٍ أَدْلُو مَاءً فِي رِكْوَةٍ لِي ، فَقَالَ : يَا عَمَّارُ ، مَا تَصْنَعُ ؟ قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، بِأَبِي وَأُمِّي ، أَغْسِلُ ثَوْبِي مِنْ نُخَامَةٍ أَصَابَتْهُ . فَقَالَ " يَا عَمَّارُ ، إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ : مِنَ الْغَائِطِ ، وَالْبَوْلِ ، وَالْقَيْءِ ، وَالدَّمِ ، وَالْمَنِيِّ ، يَا عَمَّارُ ، مَا نُخَامَتُكَ وَدُمُوعُ عَيْنَيْكَ وَالْمَاءُ الَّذِي فِي رِكْوَتِكَ إِلَّا سَوَاءٌ "

আহমাদ ইবনে আলী ইবনুল 'আলা (রহঃ) ... আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এলেন, তখন আমি একটি কূপ থেকে বালতি দিয়ে পানি তুলে আমার একটি পানির পাত্রে ভর্তি করছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আম্মার! তুমি কি করছো? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কোরবান হোক। আমি আমার পরিধেয় বস্ত্রে লেগে যাওয়া শ্লেষ্মা পরিষ্কার করছি। তিনি বলেনঃ হে আম্মার! পাঁচটি জিনিস থেকে কাপড় ধৌত করা প্রয়োজনঃ বিষ্ঠা, পেশাব, বমি, রক্ত ও বীর্য। হে আম্মার! তোমার নাকের শ্লেষ্মা, তোমার উভয় চোখের অশ্রু এবং তোমার এই পানির পাত্রের পানি একই সমান (পাক-নাপাকীর হুকুমের ক্ষেত্রে)।
(সুনানে দারা কুতনি ৪৫০)

https://www.ifatwa.info/16182 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে, 
কান দিয়ে যদি দুর্গন্ধ যুক্ত পানি নির্গত হয়, তাহলে তা নাপাক। এবং এদ্ধারা অজু নষ্ট হয়ে যাবে। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৫/৬৬)

তবে যদি কান দিয়ে দুর্গন্ধযুক্ত কোনো পানি বের না হয়, তাহলে তা নাপাক নয়, এবং এদ্ধারা অজুও নষ্ট হবে না। 
 لَا يَنْقُضُ (لَوْ خَرَجَ مِنْ أُذُنِهِ) وَنَحْوِهَا كَعَيْنِهِ وَثَدْيِهِ (قَيْحٌ) وَنَحْوُهُ كَصَدِيدٍ وَمَاءِ سُرَّةٍ وَعَيْنٍ (لَا بِوَجَعٍ) وَإِنْ خَرَجَ (بِهِ) أَيْ بِوَجَعٍ (نَقَضَ) لِأَنَّهُ دَلِيلُ الْجُرْحِ
«حاشية ابن عابدين = رد المحتار ط الحلبي» (1/ 147)
وفي ردالمحتار تحت(قَوْلُهُ: وَصَدِيدٍ) فِي الْمُغْرِبِ: صَدِيدُ الْجُرْحِ مَاؤُهُ الرَّقِيقُ الْمُخْتَلِطُ بِالدَّمِ (قَوْلُهُ: وَعَيْنٍ) أَيْ وَمَاءِ عَيْنٍ: وَهُوَ الدَّمْعُ وَقْتَ الرَّمَدِ. وَفِي بَعْضِ النُّسَخِ وَغَيْرِهِ بَدَلُ وَعَيْنٍ: أَيْ غَيْرِ مَاءِ السُّرَّةِ كَمَاءِ نَفِطَةٍ وَجُرْحٍ (قَوْلُهُ: لَا بِوَجَعٍ) تَقْيِيدٌ لِعَدَمِ النَّقْضِ بِخُرُوجِ ذَلِكَ، وَعَدَمِ النَّقْضِ هُوَ مَا مَشَى عَلَيْهِ الدُّرَرُ وَالْجَوْهَرَةُ وَالزَّيْلَعِيُّ مَعْزِيًّا لِلْحَلْوَانِيِّ.
قَالَ فِي الْبَحْرِ: وَفِيهِ نَظَرٌ، بَلْ الظَّاهِرُ إذَا كَانَ الْخَارِجُ قَيْحًا أَوْ صَدِيدًا لَنَقَضَ، سَوَاءٌ كَانَ مَعَ وَجَعٍ أَوْ بِدُونِهِ لِأَنَّهُمَا لَا يَخْرُجَانِ إلَّا عَنْ عِلَّةٍ، نَعَمْ هَذَا التَّفْصِيلُ حَسَنٌ فِيمَا إذَا كَانَ الْخَارِجُ مَاءً لَيْسَ غَيْرُ. اهـ. وَأَقَرَّهُ فِي الشُّرُنْبُلَالِيَّةِ، وَأَيَّدَهُ بِعِبَارَةِ الْفَتْحِ الْجُرْحُ وَالنَّفِطَةُ وَمَاءُ الثَّدْيِ وَالسُّرَّةِ وَالْأُذُنِ إذَا كَانَ لِعِلَّةٍ سَوَاءٌ عَلَى الْأَصَحِّ اهـ
সারমর্মঃ-
যদি কান থেকে,অনুরুপ ভাবে চোখ থেকে,স্তন থেকে পানি বের হয়,তাহা যদি ব্যাথার কারনে না হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে সেটির দ্বারা অযু ভঙ্গ হবেনা।
ব্যাথার কারনে হলে অযু ভেঙ্গে যাবে।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
পুজ অপবিত্র। 

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে, যদি ব্যথার মাধ্যমে কান থেকে উক্ত পানি বের হয়, এবং দুর্গন্ধ যুক্ত হয়, তাহলে তা নাপাক।
সেক্ষেত্রে অযুর আগে কান ধুয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে। 

আর যদি ব্যথার মাধ্যমে কান থেকে কিছু বের না হয়,এমনিতেই কান চুলকানো ও ময়লা খুচিয়ে বের করার কারনে যদি সেই পানি বের হয়,সেক্ষেত্রে তাহা নাপাক নয়।
সেক্ষেত্রে অযুর আগে কান ধুয়ে নিতে হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 174 views
...