আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
142 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (35 points)
আসসালামু আলাইকুম,
একটি ইসলামিক ফাউন্ডেশন করতে চাচ্ছি, যেখানে ধর্মীয় ও সামাজিক কাজ করার পরিকল্পনা নিয়েছি। ফাউন্ডেশন এর বিষয় নিয়ে আগেও প্রশ্ন করেছিলাম। এক্ষেত্রে নাম একটি নাম পছন্দ করেছি:

নাম: মিসবাহ ফাউন্ডেশন
উদ্যেশ্য: আমি যতদূর জেনেছি মিসবাহ মানে আলো। আমি এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সমাজে ইসলামিক কাজের মাধ্যমে আলো ছড়ানোর চেষ্টা করবো - ইনশাআল্লাহ।
১. আমার উক্ত ধারণা কি সঠিক.

২. উপরের নামটি কি ভাল হবে? নাকি আরও অন্য নাম খুজবো?

৩. সেই নামে যদি বাংলাদেশে কিংবা অন্য দেশে ফাউন্ডেশন থেকে থাকে তাহলে কি এই নামে করা যাবে?

৪. একটি ফাউন্ডেশন দেখেছিলাম এই নামে ফেইসবুক পেইজ আছে বাংলাদেশেরই। এখন সম্ভবত তাদের কার্যক্রম স্থগিত। পেইজটিতে লাইক ছিল ৫০০ এর মত। এখন আমি যদি এই নামে ফাউন্ডেশন করি তাহলে কি তাদের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে? কিংবা এই নামে যত ফাউন্ডেশন আছে সবার কাছ থেকেই কি অনুমতি নিতে হবে?

৪. মিসবাহ গ্রুপ নামে কোন একটি প্রতিষ্ঠান থাকলে এই আমি কি মিসবাহ ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে পারবো?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


আমাদের মহানবী সা. এমন একটি সময় আরব ভূমিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যখন আরব সমাজে চরম বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা বিরাজ করছিল।

এ সমাজে ছিল না কোনো নিয়মনীতি ও আইনের শাসন। গোত্রীয় কলহ, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, সামাজিক শ্রেণিভেদ, নারী নির্যাতন, ব্যভিচার, সুদ, ঘুষ, মদ, জুয়া প্রভৃতি সমাজকে মারাত্মকভাবে কলুষিত করেছিল। ঐতিহাসিকরা আরবের এই সময়কে ‘আইয়ামে জাহেলিয়া’ বা ‘অন্ধকার যুগ’ বলে অভিহিত করেছেন। জাহেলিয়া যুগের এই রক্তপাত, অন্যায় ও অনাচার বালক মুহাম্মদ সা.-এর মনে গভীর রেখাপাত করে। তিনি সমাজের সব অন্যায়, অবিচার ও নির্যাতন বন্ধের উপায় খুঁজে বের করার জন্য সর্বদা চিন্তায় মগ্ন থাকতেন। অবশেষে তাঁর মনে একটি অভিনব চিন্তার উদয় হলো। তিনি তাঁর সমবয়সী কতিপয় যুবককে নিয়ে ‘হিলফুল ফুজুল’ নামে একটি সংঘ গড়ে তুললেন। এ সংগঠন সমাজের সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াল। (আসলে নামটি হবে ‘হালফুল ফুজুল'( حلف الفضول )

আরবি حلف শব্দের অর্থ শপথ, চুক্তি বা অঙ্গীকার। الفضول শব্দটির অর্থ কল্যাণ, শান্তি, মর্যাদা- সম্মান ইত্যাদি। অর্থাৎ হালফুল ফুযুল অর্থ কল্যাণের অঙ্গীকার বা শান্তিসংঘ ।) আরব সমাজের সব অন্যায় প্রতিরোধের লক্ষ্যে হিলফুল ফুযুল গঠিত হলেও একটি বিশেষ যুদ্ধের ভয়াবহতার পরিপ্রেক্ষিতে মহানবী সা. এ সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন বলে মনে করা হয়। এ যুদ্ধের নাম ‘হরবুল ফুজ্জার’ বা অন্যায় সমর।

সম্ভবত ৫৮৫ খ্রিস্টাব্দে ওকাজ মেলার (মক্কার ওকাজ নামক স্থানে প্রতিবছর এই মেলা বসত) ঘোড়দৌড়, জুয়াখেলা ও কাব্য প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে পবিত্র জিলকদ মাসে মক্কার কোরাইশ ও হাওয়াজিন গোত্রের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হয়। আরবে পবিত্র জিলকদ মাস ছিল শান্তির মাস। এ মাসে আরব দেশে সব ধরনের যুদ্ধবিগ্রহ নিষিদ্ধ ছিল। তাই জিলকদ মাসে শুরু হওয়া এ যুদ্ধকে ‘হরবুল ফুজ্জার’ (মতান্তরে ‘ফিজার’) বা অন্যায় সমর বলা হয়। দীর্ঘ পাঁচ বছর স্থায়ী এ যুদ্ধের ভয়াবহতা বালক মুহাম্মদ সা.-এর কোমল মনকে মারাত্মকভাবে ব্যথিত করে তোলে। এ যুদ্ধে অনেক লোক প্রাণ হারিয়েছিল। এ যুদ্ধের সময় তাঁর বয়স ১৪ কিংবা ১৫ বছর (সিরাতে ইবনে হিশাম)। যদিও তিনি অস্ত্র হাতে শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেননি; কিন্তু এই যুদ্ধের বীভৎসলীলা দেখে বালক মুহাম্মদ সা. অত্যন্ত বিচলিত হয়ে পড়েন এবং আরববাসীদের এরূপ ধ্বংসযজ্ঞের হাত থেকে পরিত্রাণের উপায় নিয়ে ভাবতে থাকেন। আরবে শান্তি বজায় রাখার জন্য তিনি একটি শান্তিসংঘ গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

৫৯৫ খ্রিস্টাব্দে সমমনা নিঃস্বার্থ কিছু উৎসাহী যুবক ও পিতৃব্য জুবাইরকে নিয়ে তিনি এ শান্তিসংঘ গঠন করেন। এ সংঘের চারজন বিশিষ্ট সদস্য ফজল, ফাজেল, ফজায়েল ও মোফাজ্জেলের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছিল ‘হিলফুল ফুজুল’।

আরো জানুনঃ- 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: شَهِدْتُ مَعَ عُمُومَتِي حِلْفَ الْمُطَيَّبِينَ، فَمَا أُحِبُّ أَنْ أَنْكُثَهُ، وَأَنَّ لِي حُمْرَ النَّعَمِ.

আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রাঃ) বলেন, আমি আমার চাচাদের সাথে মুতাইয়্যাবীনের চুক্তিতে (হিলফুল ফুযূল) শরীক ছিলাম। বহুমূল্য লাল উটের বিনিময়েও তা লংঘন করা আমার পছন্দনীয় নয় (আহমাদঃ ১৬৫৫ ও ১৬৭৬)।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
উক্ত ধারণা সঠিক.ল।

(০২)
উপরের নামটি ভাল হবে। আলহামদুলিল্লাহ 

(০৩)
সেই নামে যদি বাংলাদেশে কিংবা অন্য দেশে ফাউন্ডেশন থেকে থাকে তাহলেও এই নামে করা যাবে।

(০৪)
এখন আপনি যদি এই নামে ফাউন্ডেশন করেন, তাহলে প্রশ্নের বিবরন মতে তাদের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবেনা। কিংবা এই নামে যত ফাউন্ডেশন আছে সবার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবেনা।

(০৪)
হ্যাঁ, পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...