আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
330 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (7 points)
আমি সহশিক্ষায়।এটা নিয়ে অনেকের কাছেই জিজ্ঞেস করেছি।আমার পরিবার আমাকে চাপ দেয় না।কিন্তু আমি বের হচ্ছিনা কারণ আব্বু আম্মা মনে মনে উনারা কষ্ট পাবেন।সামনে কিছু বলবেন না হয়তো।কেনো যেনো সাহস করতে পারছিনা।উনারা তেমন জোর খাটাবেন না।।আমার নিজের কাছেই খারাপ লাগে এটা ভেবে আমি সুযোগ পেয়েও ছাড়ছি না।উনাদের একটু খারাপ লাগার জন্য আমি ছাড়ছি না।তেমন কথা শুনাবেন না।হয়তো একটু আধটু শুনাবেন।উনারা চান HSC টা অন্তত যেনো দিয়ে দেই। আমি ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি এখন।HSC পেছাতে পেছাতে August এ নিছে।কলেজে যাই না।
১)পরীক্ষার জন্য যেতে হয়।আমি কি করবো?আমার ভয় হচ্ছে যে আমি একটু সাহস করতে পারছিনা হারাম সহশিক্ষা ছাড়ার জন্য আমি লড়াই করছি না চেষ্টা করছিনা এতে কি আমার গুনাহ হবে?অনেকেই কত সংগ্রাম করে সহশিক্ষা ছাড়ার জন্য।আর আমার HSC শুরু হওয়ারও আর বেশি দিন নেই।August এ হওয়ার সম্ভাবনা এখন আমার মা বাবা কেমন রিয়েক্ট করবেন এটা নিয়ে ভয়ে আছি আমাকে চাপ দিবেন না কিন্তু HSC কম্পলিট করতে বলবেন।জোর খাটাবেন না কিন্তু মনমালিন্য হবে এতে আমি ভয় পেয়ে যাইএ।ইদিকে আমি পড়াশোনা করিনা। রেজাল্ট খারাপ হলেও উনাদের খারাপ লাগবে।উনাদের এই খারাপ লাগার কথা ভেবে আমি ছেড়ে দিবো এটা জোর গলায় বলতে পারছিনা।আর আমি এক্সাম ছাড়া অথবা প্রয়োজনীয় কিছু না হলে কলেজ যাই না।আমার গুনাহ হবে?আমি কি HSC পর্যন্ত থাকবো?

২)HSC দেয়ার পর ছেড়ে দিবো সেটা শিউর ইনশাআল্লাহ কিন্তু এখন কি করবো?
আমার আম্মা বলেন ভর্তি না হলে আগেই বলে দিতা তাহলে এত হয়রান হয়ে কলেজের কাপড় আরো যত কষ্ট করেছি সেগুলো করতাম না।
কিন্তু তখন আমি এতকিছু বুঝিনি।আরো আগে চেষ্টা করিনি তাই মনে হচ্ছে আমার গুনাহ হবে। সহশিক্ষা
সম্পর্কে শুনেও আমি তেমন একটা আগাই নি।এখন
এইচএসসি সামনে।কি করবো?HSC পরীক্ষার আগে টেস্ট পরীক্ষার জন্য কলেজে যেতে হবে,ছেলেদের পাশে সিট পড়তে পারে।আর প্রেক্টিকেল জমা দেয়ার জন্য যেতে হবে অন্যথায় ক্লাস করার জন্য যেতে হবেনা হয়তো কারণ আমি ক্লাস করতে যাইনা।কি করবো দ্বীধায় আছি।

৩)সহশিক্ষায় HSC যদি দেই তাহলে আমি যদি পরীক্ষার রেজাল্ট ভালো করার জন্য পড়াশোনা করি তবে কি গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


দ্বীনি শিক্ষা হোক,বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক,ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক। 

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء

মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী…। (সূরা আলি ইমরান ১৪)

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ

আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি।(বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,

 فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك

সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া।  (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)

★ একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات     জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)

তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়।

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন  কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

২/চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।
ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১;

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এ শর্তাবলি পুরোপুরি ভাবে মেনে সহ শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া জায়েজ হবে। 
,
সহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
(১.২)
উপরে উল্লেখিত শর্তাবলী মেনে পরামর্শ থাকবে  HSC পর্যন্ত থাকার।
সমস্যা মনে করলে শুধু টেস্ট ও ফাইনাল পরীক্ষার সময় যাবেন।

(০৩)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যদি পরীক্ষার রেজাল্ট ভালো করার জন্য পড়াশোনা করেন,তবে গুনাহ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
কলেজে গেলে ফিতনা থেকে বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে যায়।HSC পরীক্ষার আর আছে প্রায় ৩ মাস।পরিবারকে যদি রাজি করাতে পারি তাহলে আমি কি সহশিক্ষা ছেড়ে দিবো?
by (574,260 points)
এক্ষেত্রে শুধু পরীক্ষা দিবেন।

শুধু পরীক্ষা দিতে গেলেও ফিতনাহ থেকে বাঁচতে না পারলে সেক্ষেত্রে আপনি যদি পরিবারকে রাজি করাতে পারেন, তাহলে আপনি সহশিক্ষা ছেড়ে দিতে পারেন।
by (7 points)
আমার পরিবার আলহামদুলিল্লাহ রাজি।উনাদেরকে যখন বললাম উনাদের গুনাহ হবে আরো কথাবার্তা বলার পর উনারা বলে দিয়েছেন উনাদের এতে আর কোনো হাত নেই।আমার ইচ্ছা।ছাড়লেও কিছু বলবেন না আমার উপরে ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু এখন আমার মাঝে হীনমন্যতা আসতেছে যে পরীক্ষার আর মাত্র কয়দিন আছে দিয়ে দিবো কি না!আমার পরিবার বলতেছে কোনোকিছুর জন্য কখনো উনাদের যেনো দায়ী না করি।কারণ আমার উপর ছেড়ে দিয়েছেন।সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সহশিক্ষা না ছেড়ে শুধু এইচএসসি পর্যন্ত যদি লেখাপড়া চালিয়ে যাই এতে কি গুনাহ হবে?ভয় হচ্ছে এইচএসসির আগে যদি মারা যাই এতে কি আমি হারাম সহশিক্ষায় থাকা অবস্থায় মারা গেছি তাই আমার গুনাহ হবে?আমার এখন টেস্ট এক্সাম চলছে।আগস্ট মাসে এইচএসসি।
by (574,260 points)
আপনি যদি উপরোক্ত শর্তাবলী পূর্ণ ভাবে মেনে পরীক্ষা দিতে পারেন,সেক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হবেনা।
by
সুবহানাল্লাহ্! এত ভালো আপনার মা বাবা! এখন কিসে পড়ছেন আপু?বিয়ে হয়ে গেছে আপনার?পরীক্ষা দিয়েছেন শেষ পযর্ন্ত?আমার মনে হল Hsc আর মাত্র কয়েকটা দিনের জন্য দিয়ে ফেলাটাই যুক্তিযুক্ত যেহেতু এতদিন নিজেকে ফিতনা থেকে বাচিয়ে রাখতে পেরেছেন মা শা আল্লাহ্।তাছাড়া রেজাল্ট খারাপ হলেও তো আপনার মা বাবা সমস্যা করবেনা। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...