আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
192 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)

০১. দাখিলের, ফিকহ বইয়ে দেখলাম লেখা, কেও যদি তার স্ত্রী কে, "ওহে তালা* প্রাপ্তা" বলে সম্ভোধন করে বা বলে "তুৃমি তালা* প্রাপ্ত" তবে তালাক হয়ে যায় বিষয় কি সঠিক?

০২.আমার একটি ঘটনা মনে পরছে একদিন আমি হাটতে হাটতে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় কল্পনা করছিলাম আমার বউ কে আমার পরে যদি অন্য কেও বিয়ে করে কেমন হবে, ভাবতে ভাবতে কি জানি একটা কতা বলেছিলাম, হালকা উচ্চারণ হয়েছিলো মনে হচ্ছে,  কথাটা হয়তো এমন ছিলো যে, "তা*ক খেয়ে এসেছো/তা*ক খাইছো/ " এই রকম কথা একটা পরিষ্কার মনে নাই, তখন ও তালাকের মাসআলা জানতাম, তখন কাওকে এটা জিগ্যেস করিনি আমার মনে হয়েছিলো এটা সমস্যা না। তখন মনে মনে এটাও ভেবেছিলাম তা*ক হলে রজু করে নিলাম,এটাও মনে  মনে না মুখে বলেছিলাম মনে নাই। উল্লেখ্য আরো  ২/১ দিন এরম করেছিলাম বলে মনে পরছে (যে তা*ক মনে মনে রজু করলাম)।যে আজ হঠাৎ এই ঘটনাগুলো মনে পরায় টেনশন হচ্ছ সব পরিষ্কার মনে ও নাই কি হয়েছিলো যা আবছা মনে আছে বললাম। এতে আমার কি বিবাহে কোনো সমস্যা হবে?

০৩. কেও যদি এভাবে বলে কসম করলাম এটা করবো না বা শপথ করবো না, তবে আল্লাহর নাম নেয় নি, এতে কি ইলা বা শপথ হবে?

০৪. আমি কয়েকটা জায়গায় (২/৩ টা বা আরো বেশি হবে) (রেস্টুরেন্ট/হোটেল) এরুপ জায়গায়  আমার বউ এর সাথে অন্তরঙ্গ না হওয়ার জন্য বলি, বলার সময়, আল্লাহ সাক্ষী/ কসম/শপথ বলেছিলাম। মানে এই জায়গা গুলোতো অন্তরঙ্গ হবো না এমন বিষয়। যেমন একদিন একজায়গায় গিয়েছে ওইখানে তার ভালো লাগে না বলেছে পরে বলেছি।  (কসম /শপথ বলে থাকলে আল্লাহর নাম নেই নি এটাই ৯৯ ভাগ মনে পরছে, শুধু কসম বা শপথ বলেছি, আর সাক্ষী বললে আল্লাহ সাক্ষী বলেছি, এখন কোনটা যে বলেছি মনে পরছে না) এর ফলে কি ইলা হবে? আর ইলা না হলে কসমের কাফফারা দিতে হবে?

০৫.আমি ইদানিং একটু  দ্বীনের পথে আসার চেষ্টা করছি, যদর ফলে আমার কথা,কাজে সুরতে কিছু পরিবর্তন এসেছে, এবং আমি আমার বউকেও পর্দয় করতে  বলি। কিন্তু সে পূর্ণ পর্দা করতে চায় না, এই আলাপ তুললে একদিন বলে "তোমার এই পরিবর্তন আমি নিতে পারছিনা" এর ফলে কি সে কাফের হয়ে যাবে?

০৬.আমি আগে ধারনা রাখতাম যে আল্লাহ সত্ত্বাগত ভাবে আরশে আছেন,এবং জ্ঞানগত ভাবে সব জায়গায় বিরাজমান।  সত্ত্বাগত ভাবে কোনো স্থান আল্লাহর জন্য নির্ধারিত করা ইসলামী আকিদার খেলাফ হয়।এই জ্ঞান আমার ছিলো না। তখন এতো গভীর ভাবনা ও ভাবি নি,বিভিন্ন ইউটিউবের বক্তব্য শুনে এমন আকিদা তৈরী হয়েছিলো। একটা কথাও মনে মনে বলতাম যে, ছাগলের পা মানুষের পা এগুলো আলাদা,একটার সাথে আরেকটার মিল নাই, তাই আল্লাহরহাত পায়ের সাথে ও এসবের মিল নাই, তখন ভাবতাম আল্লাহর হাত পা আছে তবে এগুলো দেহ/অঙ্গ সাব্যস্থ করচি কি না এই ভাবনা তখন মাথায় এসেছিলো কি না বলতে পারছি না, আসলে ভালো করে মনে নেই। আর এই সব বিষয় নিয়ে গভীর ভাবে ভাবনা হয় নি শুনে শুনেই মনে রেখে দিয়েছিলাম,তাই অনেক ভুল বুঝতে পারি নাই।

এর ফলে কি কুফর হবে?

০৭. অপারেশন করিয়েছি, একজন বললো  সাত দিন আরেকজন বললেন চোখে তিন দিন পানি লাগাবো না বলেছে,
 কিভাবে নামাজ ওযু বা ফরজ গোসল করলে তা আদায় হবে? আর কয়দিন লাগাবো না তিন না কি সাত?

জাজাকাল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (564,750 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
উক্ত মাসয়ালা সঠিক।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

ফাতওয়ার কিতাবে আছেঃ-
البحر الرائق شرح كنز الدقائق - (9 / 94)

"فلم يتوقف على النية في طلقتك و أنت مطلقة بالتشديد و توقف عليها في أطلقتك و مطلقة بالتخفيف."
সারমর্মঃ-
"আমি তোমাকে তালাক দিলাম,এবং হে তালাক প্রাপ্তা" এই দুই বাক্য বলার দ্বারা তালাক হবে,এটি নিয়তের উপর মওকুফ হবেনা।

البحر الرائق شرح كنز الدقائق - (9 / 160):
"و منه يا طالق أو يا مطلقة بالتشديد ولو قال أردت الشتم لا يصدق قضاء ويدين كذا في الخلاصة ولو كان لها زوج طلقها قبل فقال أردت ذلك الطلاق صدق ديانة باتفاق الروايات وقضاء في رواية أبي سليمان و هو حسن، كما في فتح القدير."
সারমর্মঃ-
হে তালাক প্রাপ্তা বলার দ্বারা তালাক হবে,যদি স্বামী বলে যে আমি গালি উদ্দেশ্য নিয়েছি,তাহলে তাহা কাজায়ান সত্যায়ন করা হবেনা।

الجوهرة النيرة - (4 / 114):
"و لو قال: يا مطلقة بالتشديد وقع عليها الطلاق ؛ لأنه وصفها بذلك فإن نوى ثلاثًا كان ثلاثًا."
সারমর্মঃ-
যদি স্বামী তা স্ত্রীকে বলে,হে তালাক প্রাপ্তা,তাহলে এর দ্বারা তালাক হবে।
এর দ্বারা তিন তালাকের নিয়ত করলে ৩ তালাক পতিত হবে।

الدر المختار شرح تنوير الأبصار في فقه مذهب الإمام أبي حنيفة - (3 / 255):
"و لو قال لها: كوني طالقا أو اطلقي أو يا مطلقة بالتشديد وقع."
সারমর্মঃ-
যদি স্বামী তা স্ত্রীকে বলে,তুমি তালাক প্রাপ্তা হয়ে যাও,অথবা আমি তোমাকে তালাক দিলাম,অথবা হে তালাক প্রাপ্তা,তাহলে এর দ্বারা তালাক হবে।

شرح فتح القدير - (4 / 7):

" فروع لو قال لها: يا مطلقة بالتشديد أو يا طالق و قع و لو قال: أردت الشتم لم يصدق لأنّ النداء استحضار بالوصف الذي تضمنه اللفظ إذا كان يمكنه إثباته بذلك اللفظ بخلاف قوله يا ابني لعبده ولو كان لها زوج طلقها قبل فقال أردت ذلك الطلاق صدق ديانة باتفاق الروايات وقضاء في رواية أبي سليمان وهو حسن."
সারমর্মঃ-
হে তালাক প্রাপ্তা বলার দ্বারা তালাক হবে,যদি স্বামী বলে যে আমি গালি উদ্দেশ্য নিয়েছি,তাহলে তাহা সত্যায়ন করা হবেনা।

(০২)
এতে আপনার বিবাহে কোনো সমস্যা হবেনা। 

(০৩)
এতে ইলা বা শপথ হবেনা।

(০৪)
এর ফলে ঈলা হবেনা।

(০৫)
এর ফলে সে কাফের হয়ে যাবেনা। 

(০৬)
এর ফলে কুফর হবেনা।

(০৭)
অযুর বাকি অন্যান্য অঙ্গ গুলি ধুয়ে চোখের ব্যান্ডেজ এর উপর শুধু মাসাহ করবেন।

গোসলের ক্ষেত্রে পুরো শরীর ধুয়ে ফেলে চোখের ব্যান্ডেজ এর উপর শুধু মাসাহ করবেন।

৩ দিন না ৭ দিন,সেটি জানার জন্য বিশেষজ্ঞ মুসলিম ডাক্তারের মত অনুসরণ করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...