আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
632 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (40 points)
edited by
এক বোনের জন্য-

# আমি রেসিন নিয়ে কাজ করি। রেসিন হলো এক ধরলের পদার্থ যেটা মুলগত ভাবে আঠালো হয়( সাদা ঘন আঠার মতই) কিন্তু যখন এটা দিয়ে কোন গহনা/ বুক মার্ক/ডায়েরি কভার / কুরআন হোল্ডার বা যেকন আইটেম বানানো হয় তখন সেটা অনেক শক্ত হয়ে যায় যেটা নরমালি অনেক বেশি চাপ না দিলে ভাঙ্গবেই না।

তো রেসিনের আংটি,কানের দুল,লকেট,চুরি এগুলো অনেক মেয়ের পছন্দের তালিকায় আছে। অনেক সময় আমাদের প্রিয়জনেরা আমাদের কিছু হাদিয়া দিলে সেটাকে স্মৃতিময় করে রাখা যায় রেসিনের একটি লকেট/ দুল/ চুরি বা কোন আইটেমে।ফুল শুকিয়ে হতে পারে,কিছুর খোসা হতে পারে। অনেকেই তাদের হাজবেন্ডের দেয়া প্রথম ফুল শুকিয়ে তা রেসিনের লকেটে সংরক্ষণ করেন সারাজীবনের জন্য।
যেহেতু রেসিন নিয়ে কাজ, তাই এক ধরনের লকেট অনেকেই করিয়ে নেন তা হলো - ১. নবজাতক বাচ্চার যে ফুল পড়ে যায় (ambical cord)  সেটা শুকিয়ে রেসিনের লকেট বানাতে পাঠান যেখানে ফুল ও গোল্ড ফ্লেক্স এর মাঝে ওটা একটু অদৃশ্য থাকে কিন্তু থাকে। এটা তারা স্মৃতিময় করতে করে থাকেন।
২. অনেক মায়েরা ব্রেস্ট মিল্ক পাঠান তা শুকিয়ে পাউডার ফর্ম করে লকেটে এড করতে।
৩. বাচ্চার মাথার প্রথম ন্যারা করা চুল তারা সংরক্ষণ করে লকেটের ভিতরে দিয়ে।
৪. জীবিত কোন মানুষের( নারী/পুরুষ)  চুল/ নখ দিয়ে স্মৃতি হিসেবে রাখেন যেন তাদের থেকে দূরে থাকলে তাদের কথা মনে পড়ে।
৫.প্রিয়জন (মা/বোন/স্ত্রী) মারা গেলে তার লেফট ওভার কিছু চুল রয়ে গেছে যেগুলো একসাথে মাটিতে পুতে ফেলার জন্য রাখা হয়েছিলো। কিন্তু সেখান থেকে কিছু তারা লকেট বানায় রাখেন তাদের কিছু একটা স্মৃতি হিসেবে তাদের কাছে আছে এই জন্য বা মনে পড়ে এই লকেট টা দেখলে। (এইক্ষেত্রে লকেটের ভিতরে চুল আছে সেটা ভিতরের ডিপ কালার এর জন্য বোঝাও যায়না)
এখন আমার প্রশ্ন হলো-

ক. এই পাঁচটা দৃশ্যপটের গহনা বানানো/কাছে রাখা কি জায়েজ?

খ. আমি অলরেডি এই কাজ করে ফেললে করণীয় কি?
গ. সন্তান যদি বিদেশে চলে যাবে বা দূরে থাকে তাই বাবা /মায়ের  চুল / নখ দিয়ে এমন কিছু বানিয়ে নিয়ে যায় সাথে রাখার জন্য তবে কি তা হারাম হবে?

1 Answer

0 votes
by (566,790 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


https://ifatwa.info/39750/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

মহান আল্লাহ মানুষকে সম্মানিত করে সৃষ্টি করেছেন, তাদের অঙ্গগুলোও সম্মানিত। তাই তাদের অঙ্গের সঙ্গেও এমন ব্যবহার করা যাবে না, যা তাদের সম্মান হানি করে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আর আমি মানব সন্তানকে সম্মানিত করেছি...।’ (সুরা ইসরা, আয়াত : ৭০)

হজরত মিল বিনতে মিশরাহ আল আশআরি থেকে বর্ণিত, তিনি তাঁর পিতা মিশরাহ [যিনি রাসুল (সা.)-এর সাহাবি ছিলেন]-কে দেখেছেন যে তিনি নখ কাটার পর তা দাফন করে ফেলতেন। তিনি বলতেন, তিনি রাসুল (সা.)-কে এমন করতে দেখেছেন। [আত তারিখুল কুবরা (ইমাম বুখারি) : ৮/৪৫]

ইমাম আহমদ (রহ.)-কে এক ব্যক্তি কর্তিত চুল ও নখের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘এগুলো কি দাফন করব নাকি ফেলে দেব?’ তিনি বলেন, ‘দাফন করে ফেলো।’ লোকটি বলল, ‘আপনি এ ব্যাপারে কিছু পেয়েছেন?’ তিনি বলেন, ‘ইবনে ওমর (রা.) এগুলো দাফন করে ফেলতেন।’ (আল মুগনি, ইবনে কুদামা : ১/১১০)

ফাতাওয়ায়ে শামিতে এসেছেঃ

قال العلامة الحصکفي رحمه الله تعالی: "و کل عضو لا یجوز النظر إلیه قبل الانفصال، لا یجوز بعده و لا بعد الموت، کشعر عانة و شعر رأسها". ( الشامیة ٦ / ٣٧١ )

সারমর্মঃ
শরীর থেকে পৃথক হওয়ার পূর্বে যে সমস্ত অঙ্গের দিকে নজর দেওয়া জায়েজ নেই, সে সমস্ত অঙ্গ শরীর থেকে পৃথক হওয়ার পর,মারা যাওয়ার পরেও তার দিকে নজর দেওয়া জায়েজ নেই।
যেমন মাথার চুল,নাভির তলদেশের চুল।

★মহিলাদের চুল এর ক্ষেত্রে এভাবে রাখা হলে যেহেতু গায়রে মাহরামের দেখার আশংকা আছে,এবং এতে যেহেতু কোনো এক সময় সেই মানুষের অঙ্গের অসম্মানীরও সম্ভাবনা রয়েছে,  তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতটি জায়েজ নেই।    

https://ifatwa.info/15516/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ 
মাথা আঁচড়ানোর পর যে চুল পাওয়া যায় সেটা পর্দার বিধানের অন্তর্ভুক্ত নয়। 
মাথা আঁচড়ানোর পর যে চুল পাওয়া যায় সেটা মাটিতে পুঁতে ফেলা ওয়াজিব। কেননা এটা একজন মানুষের অংশ যা সম্মানি। সুতরাং সেটাকে দাফন করতে হবেই। 

তবে অনেক ইসলামী স্কলারগন এই চুলকেও পর্দার বিধানের অন্তর্ভুক্ত মনে করেন,তাই সতর্কতামূলক পর্দার বিধানের অন্তর্ভুক্ত ধরে নিয়ে তাহা দাফন করা উচিত।

আরো জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ক,
এই পাঁচটা দৃশ্যপটের গহনা বানানো/কাছে রাখা জায়েজ হবেনা।
কোনো একসময় মানবের শরীরের উক্ত অংশের অসম্মানিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় এর বৈধতা নেই।  

মহিলাদের চুল এর ক্ষেত্রে এভাবে রাখা হলে  গায়রে মাহরামের দেখার আশংকা থাকে।

তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মানুষের শরীরের অংশ এভাবে সংরক্ষণ জায়েজ নেই। 

খ,
তওবা করতে হবে,ভবিষ্যতে আর এহেন কাজ করা যাবেনা।
নিজের কাছে এহেন কিছু থাকলে মাটিতে দাফন করে দিতে হবে।

গ,
শরীয়তে এর অনুমোদন নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
শায়েখ, 
কেও যদি এভাবে বলে কসম করলাম এটা করবো না বা শপথ করবো না, তবে আল্লাহর নাম নেয় নি, এতে কি ইলা বা শপথ হবে?
by (566,790 points)
এতে ঈলা বা শপথ হবেনা।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...