আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
288 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)

আসসালামু আলাইকুম

প্রয়োজনের খাতিরে মাহরাম কারোর শরীরের স্পর্শ না করার মতো অংশ দেখা ও ধরা লাগলে সেক্ষেত্রে কি শরীয়তের কোনো বাধা বা নিষেধ আছে ?

আমার বড় বোন, বয়স ২৫ পার হয়েছে, আমার ২২। সমস্যা হচ্ছে ও মেন্টালি আনস্টেবল অনেকটা। একদম ছোট থেকেই, সমস্যাটা কখনো অনেক বাড়ে আবার কিছুটা নিয়ন্ত্রণেও যায়।

যেমন নিজের কাজ কাম করা, নিজেকে পরিছন্ন রাখা এইগুলো পারে তবে একা গোসল করতে গেলে তখন পানি নিয়ে খেলা শুরু করে দেয় এবং ১.৫-২ ঘন্টা ওভাবেই সময় কাটায়। এইটা প্রায় সবসময় ই। আর হটাৎ করে এমন হয় যে ড্রেস পরিবর্তন নিজে ঠিকভাবে করতে পারেনা, হেল্প লাগে। বিশেষ দিনগুলোতে যে স্যানিটারি ন্যাপকিন চেঞ্জ করতে হয় নিদৃষ্ট সময় পর পর সেটা বুঝে উঠতে পারেনা।

প্লেটে ভাত দেওয়া হলো, ওর খেতে ইচ্ছা না হলেও বলতে পারেনা বা বলেনা, তখন ভাতের প্লেট নিয়েই বসে থাকে আর নাড়াচাড়া করতে থাকে। এরকম বেশ কিছু সমস্যা হয়। যুবতী হলেও ওকে একটা বাচ্চার মতো ট্রিট করতে হয়। স্টাডি কমপ্লিট করেছে ডিগ্রি পর্যন্ত ।

এখন তো আম্মুর বয়স হয়ে গেছে অনেকটা, আগের মতো স্ট্রং নেই যে ওর সাথ দিতে পারবে সব সময়। এজন্য আমাকেও এখন অনেক কিছু করে দিতে হয়।

ছোট মানুষকে তো ধরে গোসল করানো যায় কিন্তু আম্মুর এই বয়সে ওকে গোসল করানো বেশ রিস্কের। স্লিপ করে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে ওকে সামলাতে গেলে, এজন্য এইটাও এখন আমি করিয়ে দেই। আব্বু শুক্র শনিবার করিয়ে দিতো আগে। কিন্তু ছোট বাচ্চা তো সামলানো যায়, এতো বড় বাচ্চা সামলানো তো কঠিন এজন্য শুধু আমার ই করিয়ে দেওয়া লাগে। নইলে এতো সময় পানি নিয়ে খেলা শরীরের ও স্কিনের জন্য ক্ষতির হতে পারে।

আর ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের গোসল করিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে শরীরের হাত না দেওয়ার মতো স্থানেও ময়লা যাতে না জমে এতটুকু পরিমান হাত ঠেকিয়ে ঘষা মজা করা লাগে।

যেহেতু আমরা এক গর্ভের তাই ধরে নিয়েছি যে সমস্যা নেই। আসলেই কি এই বিষয়ে কোনো সমস্যা নেই নাকি বাধা-নিষেধ আছে? বাড়িতে আর কোনো মেয়ে সদস্য নেই আম্মু ছাড়া।

1 Answer

+1 vote
by (566,220 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١] 

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক তথা নিজেদের (মুসলিম) মহিলাগন, অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩১}

মাহরাম মহিলাদের দিকে দৃষ্টি দেয়া কতটুকু জায়েয এ সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বলা হয়,
وأما نظره إلى ذوات محارمه فنقول: يباح له أن ينظر منها إلى موضع زينتها الظاهرة والباطنة وهي الرأس والشعر والعنق والصدر والأذن والعضد والساعد والكف والساق والرجل والوجه،
যৌন উত্তেজিত হওয়ার আশংকা না থাকলে  
পুরুষ তার মাহরামে আবদিয়্যাহ মহিলার প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সৌন্দর্যময় স্থানের দিকে দৃষ্টি দিতে পারবে।সে স্থানগুলো হল,মাথা, চুল,গর্দান,বুকের উপরি অংশ,কান,বাহু,হাতের কবজি,পায়ের গোড়ালি,পা ও চেহারা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীন ভাই,
মাহরাম মহিলার যেই অঙ্গ দেখা জায়েজ,ফিতনার আশংকা ও উত্তেজনা না আসার শর্তে সেসব অঙ্গ স্পর্শ করাও জায়েজ আছে।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি উপরোক্ত শর্তের ভিত্তিতে আপনার বোনের মাথা, চুল,গর্দান,বুকের উপরি অংশ,কান,বাহু,হাতের কবজি,পায়ের গোড়ালি,পা ও চেহারা স্পর্শ করতে পারবেন।
(বাদাইয়ুস সানায়ে' ৬;৩৮৯. বাহরুর রায়েক ৩৫৬.৩৫৫৮)

কিন্তু প্রশ্নে যতগুলি কাজের কথা উল্লেখ রয়েছে,সবগুলি কাজ আপনার জন্য জায়েজ হবেনা।

এক্ষেত্রে আপনার বোনকে বিবাহ দিতে হবে,তার স্বামী তার খেদমত করবে,অথবা কোনো মহিলাকে তার এসব দায়িত্ব পালনের জন্য রাখতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (1 point)
জি, বিবাহ দেওয়ার চেষ্টায় আছি। ওর মেন্টাল কন্ডিশন মেনে নিয়ে বিয়ে করবে এমন কাউকে পেলে দিয়ে দিবো।

আর ওর উচ্চতা প্রায় ৫ ফিট ৭ এর উপরে, স্বাস্থবান মোটামুটি। এজন্য গোসলখানায় দুষ্টামি করে লাফঝাঁপ দিয়ে ফেললে ওকে আম্মু সামলাতে পারেনা। যেহেতু আমি ওর থেকে লম্বা আর ওর থেকে একটু হলেও বেশি স্ট্রং তাই সামলিয়ে নিতে পারি।
ওকে একা গোসল করতে দিলে যদি শ্যাম্পু নেয় সেদিন তো ফেনা দিয়ে খেলতে খেলতে ঠান্ডা বাধিয়ে ফেলবে।

আগে আম্মুই সব করে দিতো, কিন্তু এখন বয়সের কারণে আগের মতো একটিভ নেই। আম্মুর কারণেই কাউকে রাখা হয়নি। বলে যে নিজেদের মতো সহ্য করে ওকে সবকিছু বাইরের কেউ করিয়ে দিতে পারবেনা, করলেও একটা বিরক্ত মন নিয়ে করবে।
by (566,220 points)
+1
তার শরীরের যেসব অঙ্গ দেখা আপনার জন্য জায়েজ,সেসব অঙ্গ যৌন উত্তেজিত হওয়ার আশংকা না থাকলে স্পর্শ করতে পারবেন।
তবে একাকিত্ব না হয়ে সেখানে আপনার বাবা/মা বা আপনার বোনের অন্য কোনো মাহরামের উপস্থিতি কাম্য। তাহলে ফিতনার আশংকা থাকবেনা।

তার শরীরের যেসব অঙ্গ দেখা আপনার জন্য জায়েজ নেই,সেসব অঙ্গ আপনি সেখানে মা/বাবার উপস্থিতিতেও স্পর্শ করতে পারবেননা।
সুতরাং গোসলের সময়েও সেসব অঙ্গ স্পর্শ করতে পারবেননা।

এক্ষেত্রে উক্ত কাজ আপনার মা করবে।

সুতরাং স্যানিটারি ন্যাপকিন আপনি চেঞ্জ করে দিতে পারবেননা।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...