আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
236 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
edited by
আসসালমুআলাইকুম হুজুর , আমার পুরোনো জীবনে কিছু কথা নিয়ে আমি খুবই  ভীষণ পরিমাণে চিন্তিত রয়েছি। মানসিক দিক থেকে খুব চিন্তিত । Plz উত্তর দিয়ে চিন্তা মুক্ত করবেন।
১. হুজুর একটা মেয়ের সঙ্গে আমার ৩ বছর এর সম্পর্ক । আমরা একে অপরকে খুব ভালোবাসি। যখন আমরা সম্পর্কে ছিলাম তখন আমি মেয়েটার সঙ্গে ফোনে গল্পঃ করতাম। সেক্সচুয়াল কথা বলতাম।  হস্তমৈথুন করতাম।  হুজুর বিষয় হলো , সেক্স্যুয়াল কথা বলতে বলতে  তার মা কে নিয়ে  বিশাল ভাবে বাজে সেক্স্যুয়াল  কথা বার্তা বলতাম এবং কল্পনা করতাম।
দিয়ে হস্তমৈথুন করতাম।  তার পর  মেয়েটা কে বলতাম তুমি তোমার মা এর মত করে আমার সঙ্গে কথা বলো , বা তোমার মা সেজে আমার সঙ্গে সেক্সুয়ালি কথা বলো । এই সব নোংরামী করেছি হুজুর।  আর একদিন মোবাইল এ তার মায়ের একটা সাধারণ ছবি দেখে হস্তমৈথন করেছিলাম।  হুজুর বিষয় হলো তার মা কে আমি কখনো সামনে দেখিনি , যাকিছু হয়েছে  সব কল্পনায় । হুজুর ভুল বশত আমরা একদিন যেনা তে লিপ্ত হয়ে জাই , সেই সময় উত্তেজিত হয়ে তাকে এবং তার মা কে নিয়ে বিভিন্ন বাজে কথা বলি মন্তব্য করি এইগুলো কিন্তু মজা করে বলেছি সিরিয়াস ভাবে বলিনি আস্তাগফিরুল্লাহ।   একদিন আমার মনে হলো এইসব করা ঠিক হচ্ছে না দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি এই সব করা।
কিছু মাস পরে হটাৎ তার বাড়ি থেকে ও আমার বাড়ি থেকে বিয়ের কথা হয় এবং আমাদের বিয়ে দেই। আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। আলহামুলিল্লাহ। আখন আমরা খুব ভালো আছি।
১.১ হুজুর বিয়ের পূর্বে এইসব বাজে কথা বার্তা বলেছি এর জন্য কি আমাদের বৈবাহিক সম্পর্কে  কোন সমস্যা হবে ??
১.২ যা বাজে কিছু বলেছি সবই কল্পনায়  হয়েছে হুজুর , আমাদের বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে তো??
১.৩. এই মেয়ে কে বিয়ে করা আমার জায়েজ হয়েছে তো হুজুর?
 ২. হুজুর বিয়ের পর শশুর বাড়িতে যখন ছিলাম তখন আমার স্ত্রী কে বলতাম এমন ভাবে সেক্স করবো যেনো তোমার মা আব্বু বুঝতে পারে।  এমন ভাবে বলার জন্য বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে?
৩. হুজুর আমার স্ত্রী কে তার মা সবসময় পাক পবিত্র থাকতে বলে, মাঝে মাঝে আমর স্ত্রী কে  জিজ্ঞাসা করে সহবাস করেছিস কিনা , করলে ফরয গোসল করে নে। এই সব বলে উপদেশ দেই। এইগুলো আবার আমার স্ত্রী আমাকে বলে এর জন্য কি কোনো সমস্যা হবে?
৪. হুজুর বিয়ের পূর্বে যদি যদি কোনো মেয়ের শরীর নিয়ে তার মা বা তার খালার মেয়ের সঙ্গে তুলনা করা হয় বিয়ের পূর্বে তবে কি জিহার হয়?
৪.১ জিহার সম্পর্কে জানতাম না জানার পর আর কখনো কিছু বলিনি। না জেনে বুঝে যদি হয়ে থাকে মনে নেই।  তাহলে কি জীহার হবে? আল্লাহ কসম মনে নেই । ওয়াসওয়াসা র জন্য সন্দেহ হচ্ছে। কিন্তু সঠিক মনে নেই,।
৫.  আমি খুবই ওয়াসওয়াসা রুগী ভীষণই   ওয়াসওয়াসা রুগী । হুজুর এখন মনে করতে পারছিনা বিয়ের পর তার মা কে নিয়ে কোনো বাজে কথা বলেছি কিনা। স্ত্রী  সহবাসের সময় যদি তার মা কে নিয়ে বাজে কথা বলে থাকি সেটা মনে নেই। যদি বলে থাকি আমাদের বৈবাহিক জীবনে তার জন্য কি কোনো সমস্যা হবে?
আমি তৌবা করেছি হুজুর আর এসমস্ত কাজ থেকে নিজে সম্পূর্ণ  ভাবে বেরিয়ে এসেছি।
হুজুর আমাদের  বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক আছে তো ?

৬. হুজুর আমাদের বাড়িতে একটা বিশাল বড় ক্যালেন্ডার ছিল নরমালি কোনো রুম এ আটকানো ছিল না , একটু বাইরে একটা জায়গাতে ছিল , জায়গাটা তে অনেক দিন ই ছিল , নোংরা পড়ত মাকড়সা তে বাসা করেছিলো , আমরা ওই দিক এ কিছু করতাম না থু থু ফেলেও ক্যালেন্ডার এ ফেলিনি, এখন আব্বু ফেলত ওইদিক এ কিন্তু ক্যালেন্ডার এ পরেছে কি না জানিনা পড়লেও পড়তে পারে। আজ কে আমার মন বললো ক্যালেন্ডার টাকে এই নোংরা জায়গাতে রাখবো না , বলে আমি ক্যালেন্ডার টাকে ভাঁজ করে রান্না ঘরের টালি তে গুঁজে রেখেছি । হুজুর আব্বু যদি রাত্রি বেলায় থু থু ফেলতে গিয়ে পড়ে গিয়েছে কি জানিনা , হয়ত পড়ে যেতো পারে। এর জন্য ঈমান চলে যেতে পারে সেটা আব্বু বা আমি জানিনা  জানার পর খুব খারাপ লাগছে , হুজুর থুতু ফেললে এমনি ফেলত ক্যালেন্ডার কে উদ্দেশ্য করে থুথু কেউ কোনো দিন ফেলবে না , এমনি থুথু ফেলতে গিয়ে পড়ে যেতে পারে , । হুজুর ক্যালেন্ডার টাকে সরিয়ে রেখেছি। হুজুর না জেনে না বুঝে অজ্ঞতা বশত হয়েছে , হুজুর আমার ও আমার আব্বুর ঈমান ঠিক থাকবে তো?

৭. আমি খুবই ওয়াসওয়াসা গ্রস্ত রুগী। কিছু ক্ষন আগে একটা প্রশ্নে দেখলাম , কাবা শরীফ, মসজিদ, কোনো মুজাহিদ, কোরআন শরীফ ইত্যাদি কে খারাপ জায়গাতে কল্পনা করলে ঈমান চলে যায়। হুজুর আমার এটা  দেখার পর শুধু খারাপ খারাপ ভাবনা চলে আসছে, বাথরুম এ গিয়ে খারাপ ভাবনা চলে আসছে , আমি না চাইতেও চলে আসছে । আবার আমার ভাবনা হয়েও যাচ্ছে । আস্তাগিরুল্লাহ হুজুর আমি তো মুখে উচ্চরণ করিনি। হুজুর আমার ঈমান ঠিক থাকবে তো?? আর এইসব নিয়ে খারাপ ভাবনা হলে কি ঈমান চলে যাবে? Plz একটু বলবেন। আমি তো মুখে উচ্চরণ করছিনা। মনে মনে ভাবনা হচ্ছে। কি করবো ? এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে? বার বার ভয় হচ্ছে ঈমান চলে যাবে বলে। ঈমান চলে গেলে শেষ হয়ে যাবো হুজুর।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


শরীয়তের পরিভাষায় যিহার’বলা হয় নিজের স্ত্রীর কোনো অঙ্গ কে ‘মা’ অথবা ‘স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম’ এমন কোন মহিলার এমন কোনো অঙ্গ যেটা দেখা হারাম,এমন অঙ্গের সমতুল্য বলে আখ্যায়িত করে  (যেমনঃপৃষ্ঠদেশের সমতুল্যবলে আখ্যায়িত করে) তাহাকে আরবীতে ‘যিহার’ বলা হয়।
এতে তার নিয়ত যাই থাকুক না কেনো,
যিহার হয়ে যাবে।
উদাহরণঃ স্বামী স্ত্রীকে বলবে, তুমি আমার নিকট আমার মায়ের পিঠের সমতুল্য। আমার বোন যেমন আমার জন্য হারাম তুমিও তেমনি আমার জন্য হারাম। তোমার শরীরের এক চতুর্থ অংশ আমার জন্য আমার ধাত্রীমায়ের মত হারাম ইত্যাদি। 

আর যদি স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম’ এমন মহিলার কোনো অঙ্গের সাথে তুলনা না করে এই ভাবে বলে যে তুমি আমার তার (মা বা অন্য কেউ) মতো,তাহলে তার নিয়ত দেখতে হবে।
যদি সে  মায়ের মত বলতে মায়ের মত গুণবতী, যত্নশীল বা মায়ের মত ভালবাসে  উদ্দেশ্য নেয়,তাহলে কোনো কিছুই হবেনা।
এক্ষেত্রে যিহার তখনই হবে যখন নিয়ত থাকবে যে মা-বোন যে দিক থেকে হারাম সে দিক থেকে স্ত্রীকে হারাম বানালে।
(নাজমুল ফাতওয়া ৬/৩১৭)
,
আর যিহার করলে কাফফারা আদায় ব্যতীত স্বামীর জন্য স্ত্রীকে স্পর্শ করা বা তার সঙ্গে একত্রে সংসার করা হারাম।

যিহার করলে কাফ্ফারা আদায় করতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَالَّذِيْنَ يُظٰهِرُوْنَ مِن نِّسَائِهِمْ ثُمَّ يَعُوْدُوْنَ لِمَا قَالُوْا فَتَحْرِيْرُ رَقَبَةٍ مِّنْ قَبْلِ أَن يَّتَمَاسَّا ذٰلِكُمْ تُوْعَظُوْنَ بِهِ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرٌ"(سورۃ المجادلۃ:۲،۳،۴)

“যারা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে যিহার করে, তারপর তারা তাদের উক্তি ফিরিয়ে নেয়, তাদের জন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একজন দাস মুক্তির বিধান দেয়া হলো। এটা তোমাদের জন্য নির্দেশ। আর তোমরা যা কিছুই করনা কেন,
সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সবই জানেন। এ ছাড়া যে ব্যক্তি গোলাম অর্থাৎ দাস আজাদ করার ক্ষমতা রাখে না তারজন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটানা ২মাস রোযা রাখতে হবে। আর যে ব্যক্তি এটারও সামর্থ্য রাখে না,
তাহ’লে তাকে ৬০জন মিসকিন অর্থাৎ গরীব মানুষকে খানা খাওয়াতে হবে। এই বিধান এ জন্য যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপরে তোমরা ঈমান রাখ।
এটা আল্লাহর সীমারেখা। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (আল- মুজাদালাহ,৩-৪)।

আরো জানুনঃ  

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
(০১)
এক্ষেত্রে এসব কর্মকান্ডের দরুন আপনাদের মারাত্মক গুনাহ হয়েছে।
খালেস দিলে তওবা করতে হবে।


১.১
এতে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্কে  কোন সমস্যা হবেনা।
১.২ 
আপনাদের বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে।
১.৩. 
এই মেয়ে কে বিয়ে করা আপনার জায়েজ হয়েছে।

(০২)
এমন ভাবে বলার জন্য বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবেনা।

(০৩)
এর জন্য কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৪)
এক্ষেত্রে যিহার হবেনা।

৪.১
প্রশ্নের বিবরণ মতে যিহার হবেনা।

(০৫)
এক্ষেত্রে বৈবাহিক জীবনে তার জন্য কোনো সমস্যা হবেনা।
আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক আছে।

(০৬)
আপনার ও আপনার বাবার ঈমান ঠিক আছে।

(০৭)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা। 
তবে তওবা করতে হবে।

এহেন চিন্তা যেনো আর না আসে,এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

এক্ষেত্রে করনীয় সম্পর্কে জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...