আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
87 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আমি একটি ফাউন্ডেশন করতে চাচ্ছি যার মাধ্যমে আমি ধর্মীয় কাজ করতে চাই। যেমন: মসজিদে ইসলামিক স্টিকার প্রদান, দোকানে ইসলামিক লাইব্রেরি, ইসলামিক পোস্টার, ইসলামিক চিন্তানিদের মাধ্যমে  ইসলামিক ইবুক- লিখা, মোবাইল কম্পিউটার এর জন্য ওয়ালপেপার এবং এটি বড় হলে এই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মাদরাসা করার প্ল্যান ও আছে। এছাড়া, আরও বেশ কিছু কার্যক্রম করতে চাই। ফাউন্ডেশনটিতে আমি আমার পরিচিতজনদের কাছ থেকে আর্থিকভাবে সাহায্য গ্রহণ করবো। কিংবা যেকেউ এখানে দান করতে পারবে।

এখন আমার প্রশ্ন:-

১. এ করকম ফাউন্ডেশন করার ক্ষেত্রে কি ইসলামিক কিংবা সরকারি কোন নীতিমালা আছে?

২. আমাকে যদি কিছু ইসলামিক নাম পরামর্শ দিতেন যেই মানে ফাউন্ডেশন হবে। যেহেতু ফাউন্ডেশনটি আমি বড় করতে চাই তাই একটি ইউনিক নাম দিতে চাই।
২.১: আমাকে কিছু ইসলামিক নাম সাজেস্ট করলে খুবই ভাল হতো যা ফাউন্ডেশনের নাম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। যেমনঃ আমি মানুষের নাম থেকে দেখেছিলাম 'তাজিন' এক্ষেত্রে, তাজিন ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলে কেমন হয়? এটা কি মেয়েদের নাম?
২.২: এই রকম কিছু নাম জানালে খুবই ভাল হতো।

৩. বিভিন্ন ইসলামিক বাংলা সংগীত থেকে ১ টি বাক্য নিয়ে মোবাইল এবং ওয়ালপেপার বানিয়ে তা বিনামূল্যে প্রচার করলে কি উক্ত সংগীতের লেখক কিংবা শিল্পির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে? এক্ষেত্রে কি ওয়ালপেপারে তাদের ক্রেডিট উল্লেখ কর‍তে হবে?

নমুনা: https://ibb.co/vwYZZ7r
নমুনা ওয়ালপেপারে কোরআন মাজিদের আয়াত দেওয়া। এক্ষেত্রে, আমি আয়াত না দিয়ে ইসলামিক সঙ্গীত ব্যবহার করতে চাচ্ছি।
এখানে একটি ওয়ালপেপার এর নমুনা দিয়েছি, এই ধরনের ওয়ালপেপার বানাতে চাচ্ছি। লেখাগুলো বিভিন্ন ইসলামিক সংগীত থেকে নিতে চাচ্ছি।

৪. ইসলামিক বই পড়ায় যেন মানুষ আগ্রহী হয় সেক্ষেত্রে লাইব্রেরীর একটি অংশে কি মোটিভেশানাল বই রাখা উচিত হবে? যেমন: বিদ্যাকৌশল: লেখাপড়ায় সাফল্যের সহজ ফরমুলা, লেখা ভালো করার ১০টি উপায়, ওভারকামিং ডিপ্রেশন ইত্যাদি।

৫. উক্ত কাজে আপনার পরামর্শ চাই।

1 Answer

0 votes
by (677,120 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم 


আমাদের মহানবী সা. এমন একটি সময় আরব ভূমিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যখন আরব সমাজে চরম বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা বিরাজ করছিল।

এ সমাজে ছিল না কোনো নিয়মনীতি ও আইনের শাসন। গোত্রীয় কলহ, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, সামাজিক শ্রেণিভেদ, নারী নির্যাতন, ব্যভিচার, সুদ, ঘুষ, মদ, জুয়া প্রভৃতি সমাজকে মারাত্মকভাবে কলুষিত করেছিল। ঐতিহাসিকরা আরবের এই সময়কে ‘আইয়ামে জাহেলিয়া’ বা ‘অন্ধকার যুগ’ বলে অভিহিত করেছেন। জাহেলিয়া যুগের এই রক্তপাত, অন্যায় ও অনাচার বালক মুহাম্মদ সা.-এর মনে গভীর রেখাপাত করে। তিনি সমাজের সব অন্যায়, অবিচার ও নির্যাতন বন্ধের উপায় খুঁজে বের করার জন্য সর্বদা চিন্তায় মগ্ন থাকতেন। অবশেষে তাঁর মনে একটি অভিনব চিন্তার উদয় হলো। তিনি তাঁর সমবয়সী কতিপয় যুবককে নিয়ে ‘হিলফুল ফুজুল’ নামে একটি সংঘ গড়ে তুললেন। এ সংগঠন সমাজের সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াল। (আসলে নামটি হবে ‘হালফুল ফুজুল'( حلف الفضول )

আরবি حلف শব্দের অর্থ শপথ, চুক্তি বা অঙ্গীকার। الفضول শব্দটির অর্থ কল্যাণ, শান্তি, মর্যাদা- সম্মান ইত্যাদি। অর্থাৎ হালফুল ফুযুল অর্থ কল্যাণের অঙ্গীকার বা শান্তিসংঘ ।) আরব সমাজের সব অন্যায় প্রতিরোধের লক্ষ্যে হিলফুল ফুযুল গঠিত হলেও একটি বিশেষ যুদ্ধের ভয়াবহতার পরিপ্রেক্ষিতে মহানবী সা. এ সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন বলে মনে করা হয়। এ যুদ্ধের নাম ‘হরবুল ফুজ্জার’ বা অন্যায় সমর।

সম্ভবত ৫৮৫ খ্রিস্টাব্দে ওকাজ মেলার (মক্কার ওকাজ নামক স্থানে প্রতিবছর এই মেলা বসত) ঘোড়দৌড়, জুয়াখেলা ও কাব্য প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে পবিত্র জিলকদ মাসে মক্কার কোরাইশ ও হাওয়াজিন গোত্রের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হয়। আরবে পবিত্র জিলকদ মাস ছিল শান্তির মাস। এ মাসে আরব দেশে সব ধরনের যুদ্ধবিগ্রহ নিষিদ্ধ ছিল। তাই জিলকদ মাসে শুরু হওয়া এ যুদ্ধকে ‘হরবুল ফুজ্জার’ (মতান্তরে ‘ফিজার’) বা অন্যায় সমর বলা হয়। দীর্ঘ পাঁচ বছর স্থায়ী এ যুদ্ধের ভয়াবহতা বালক মুহাম্মদ সা.-এর কোমল মনকে মারাত্মকভাবে ব্যথিত করে তোলে। এ যুদ্ধে অনেক লোক প্রাণ হারিয়েছিল। এ যুদ্ধের সময় তাঁর বয়স ১৪ কিংবা ১৫ বছর (সিরাতে ইবনে হিশাম)। যদিও তিনি অস্ত্র হাতে শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেননি; কিন্তু এই যুদ্ধের বীভৎসলীলা দেখে বালক মুহাম্মদ সা. অত্যন্ত বিচলিত হয়ে পড়েন এবং আরববাসীদের এরূপ ধ্বংসযজ্ঞের হাত থেকে পরিত্রাণের উপায় নিয়ে ভাবতে থাকেন। আরবে শান্তি বজায় রাখার জন্য তিনি একটি শান্তিসংঘ গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

৫৯৫ খ্রিস্টাব্দে সমমনা নিঃস্বার্থ কিছু উৎসাহী যুবক ও পিতৃব্য জুবাইরকে নিয়ে তিনি এ শান্তিসংঘ গঠন করেন। এ সংঘের চারজন বিশিষ্ট সদস্য ফজল, ফাজেল, ফজায়েল ও মোফাজ্জেলের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছিল ‘হিলফুল ফুজুল’।

আরো জানুনঃ- 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: شَهِدْتُ مَعَ عُمُومَتِي حِلْفَ الْمُطَيَّبِينَ، فَمَا أُحِبُّ أَنْ أَنْكُثَهُ، وَأَنَّ لِي حُمْرَ النَّعَمِ.

আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রাঃ) বলেন, আমি আমার চাচাদের সাথে মুতাইয়্যাবীনের চুক্তিতে (হিলফুল ফুযূল) শরীক ছিলাম। বহুমূল্য লাল উটের বিনিময়েও তা লংঘন করা আমার পছন্দনীয় নয় (আহমাদঃ ১৬৫৫ ও ১৬৭৬)।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
সরকারি নীতিমালা আছে বলে জানা নেই।
সংশ্লিষ্ট কাহারো থেকে জেনে নিতে পারেন।

শরীয়তের নীতিমালা হলো এক্ষেত্রে শরীয়াহ বিরোধী কোনো কাজ করা যাবেনা।

(০২)
হিলফুল ফুজুল ফাউন্ডেশন। 
আত- তাকওয়া ফাউন্ডেশন।
ইকরা ফাউন্ডেশন। 
আল হুদা ফাউন্ডেশন। 
মুসলিম ফাউন্ডেশন। 
ইসলামিক ফাউন্ডেশন। 
ইসলামিক জোন।
ইসলামিক প্লেস
ইসলামিক কর্নার
ইসলাম অল
হালাল কর্নার
দ্যা মুসলিম ওয়ে ফাউন্ডেশন। 
আল-জুম্মা ফাউন্ডেশন। 
আল-আরাফাহ ফাউন্ডেশন। 
দ্যা মুসলিম ফাউন্ডেশন। 

(০৩)
না,এক্ষেত্রে উক্ত সংগীতের লেখক কিংবা শিল্পির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবেনা।

(০৪)
সেক্ষেত্রে লাইব্রেরীর একটি অংশে মোটিভেশানাল বই রাখা যাবে।

তবে শরীয়াহ বিরোধী কোনো বই রাখা যাবেনা।

(০৫)
সমাজের সকল যুবকদের সাথে নেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন। 
সমাজের সকলকে নিয়ে ইখলাসের সহিত এগিয়ে চলার পরামর্শ থাকবে। 
,
ইনশাআল্লাহ যুবকদের এসব কার্যক্রম একদিন এই ঘুনেধরা সমাজকে উজ্জ্বলময় সমাজে পরিনত করতে সহায়তা করবে,ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...