আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
225 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (3 points)
edited by
আসসালমুআলাইকুম হুজুর,
আমি একজন মারাক্তক ওয়াসওয়াসা গ্রস্ত রুগী। মনে নানা রকমের প্রশ্ন হতে থাকে।
১. হুজুর আমি ভারত থেকে বলছি, হুজুর আমি যখন নবম বা দশম ক্লাস এ পড়তাম তখন শিক্ষক রা বলত সকল ধর্ম কে সমান চোখে দেখবে। আমি তখন ভাবতাম এক আল্লাহ ই সব। হিন্দুরা ভগবান বলে আর অন্য ধর্মের যে জাই বলুক সব এক আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই। সব বিভিন্ন ভাবে আল্লাহ কে ডাকে তাই। শিক্ষক রা বলত সকল ধর্ম সমান । আমরা শিক্ষক এর কথা শুনতাম ভাবতাম সকল ধর্ম সমান। কিন্তু অন্তর থেকে কখনো মানিনি। আর আমি ভাবতাম আমার ধর্ম  শ্রেষ্ট ধর্ম তাই আমার ধর্ম কে কারো সাতে তুলনা করতাম না।  অন্য ধর্ম গুলো কে সমান এমনি সমান চোখে দেখতাম , মানে অন্য ধর্ম কে অসম্মান করতাম না। কিন্তু  অন্তরে তো নিজের ধর্মের প্রতি একটা আলাদা টান থাকবেই ,  আমার ধর্ম ইসলাম কে সর্ব শ্রেষ্ট মনে করতাম ও মনে করি। যেদিন থেকে দ্বীনের বুদ্ধি হয়েছে তখন আর এইসব ভাবতাম না বা মাথায় আসত  দেইনি।   আমি ভাবতাম অন্য ধর্ম কে অসম্মান করা যাবে না। হুজুর তখন তো দ্বীনের অত বুদ্ধি ছিল না ৯ বছর হয়ে গেল। হয়তো অনেক কথা মনে ও পড়ছে না অনেক দিন হয়ে গেল।   । তবে এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে?

১.১ আমার বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক আছে তো হুজুর??

২. মনে মনে বিভিন্ন কুফরী কথা ভাবনা হয়ে জাই সেই নিয়ে ভাবতে ভাবতে হয়ত ইচ্ছাকৃত কিছু ভাবনা হয়ে জাই কিন্তু মুখে উচ্চরণ করিনি কখনো এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে?
৩. কেউ যদি বলে ওই লোকটার খুব অহংকার এবং অহংকার এর সঙ্গে নামাজ পরে এটা বললে কি ঈমান চলে যাবে?  এখানে নামাজ কে কোনো কুটুক্তি করা হয়নি।
৪. যদি বলি রোজাদার বাক্তি দের কে নবী সাঃ  কিয়ামত এর দিন হাউজে কাউসার এর পানি পান করবেন। এটা বলা ঠিক হয়েছে? যদি ভুল হয় তাহলে কি ঈমান এর কোনো সমস্যা হবে?
৫. আমার শাশুড়ি বসে আছে হটাৎ তার পা এর দিক লক্ষ করি। কিন্তু কোনো ভাবেই গোপন অঙ্গ দেখিনি আর  আমার উত্তেজনা ও ছিল না । ভয় হতে থাকলো হুরমত হবে বলে। আমি কোনোকিছু দেখিনি এর জন্য কি হুরমত হবে?
৬. ফাসেক কাকে বলে সেই বিষয় এ দেখছিলাম , দিয়ে দেখলাম যারা ফরয বিধান কে অমান্য করে। হুজুর আমি মাঝে মধ্যে নামাজ পড়িনা। আরো দুএকটি বিষয় দেখলাম । দিয়ে মনে হতে থাকলো আমি ফাসেক মনে মনে হতে থাকলো এমন ভাবনা তাহলে কি ঈমান চলে যাবে?

৭. হুজুর ইসলাম ধর্মে প্রেম করা যাবে না। কিন্তু হুজুর আমি একটা মেয়ের সঙ্গে প্রেম করেছি, ও আমার অভিভাবক তার বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দেই ও তার বাড়ি থেকে ও প্রস্তাব আসে , দুই পরিবার মিলে ইসলামিক শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে করেছি বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে হুজুর??

৮. হুজুর আমি প্রস্রাব করছিলাম , দিয়ে মুখ দিয়ে হটাৎ বেরিয়ে জাই "আমি" । তার পর আমি বলি " আমি যে কে তোমার " এই গানের লাইন টা করছিলাম হঠাৎ মনে হলো কেনিয়া বাক্য হয়ে গেলো নাকি , হুজুর আমার কেনিয়ার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। এমনি বলেছি গান । হুজুর এটা কি কেনিয়া বাক্য " আমি যে কে তোমার"  এই গানের লাইন টা কি কেনিয়া বাক্য??

৯. মাগরিব এর নামাজ পড়ছিলাম, নামাজ পড়তে পড়তে একটা হুজুর এর কথা মনে পড়ে, দিয়ে মনে হতে লাগলো হুজুর কে সেজদা দিচ্ছি নাকি( আস্তাগিরুল্লাহ)। হুজুর  ওয়াসওয়াসা তে এমন মনে হয়েছে নাওজবিল্লা। হুজুর এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে ? ওয়াসওয়াসা তে এমন হয়েছে। মনে মনে এমন হচ্ছিলো সঙ্গে সঙ্গে মন কে ঠিক করার চেষ্টা করি। এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে?

১০. রমজান মাসে শয়তান বাঁধা থাকে এমন কিছু বললে কি ঈমান চলে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (574,080 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে অজ্ঞতা বশত এমন ভাবার দরুন এর জন্য আপনার ঈমান চলে যাবেনা। 

১.১
আপনার বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক আছে।

(০২)
এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা।

(০৩)
এটা বললে ঈমান চলে যাবেনা।
এখানে নামাজ কুটুক্তি করা হয়নি।

(০৪)
এমনটি হাদীসে পাইনি।
তবে হাদীসে রোযাদার দের পানি পান করানোর ব্যপারে উক্ত ফজিলত এসেছে।

এক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ঈমান এর কোনো সমস্যা হবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَن سلمَان قَالَ: خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي آخِرِ يَوْمٍ مِنْ شَعْبَانَ فَقَالَ: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ أَظَلَّكُمْ شَهْرٌ عَظِيمٌ مُبَارَكٌ شَهْرٌ فِيهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مَنْ أَلْفِ شهر جعل الله تَعَالَى صِيَامَهُ فَرِيضَةً وَقِيَامَ لَيْلِهِ تَطَوُّعًا مَنْ تَقَرَّبَ فِيهِ بخصلة من الْخَيْرِ كَانَ كَمَنْ أَدَّى فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ وَمَنْ أَدَّى فَرِيضَةً فِيهِ كَانَ كَمَنْ أَدَّى سَبْعِينَ فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ وَهُوَ شَهْرُ الصَّبْرِ وَالصَّبْر ثَوَابه الْجنَّة وَشهر الْمُوَاسَاة وَشهر يزْدَاد فِيهِ رِزْقُ الْمُؤْمِنِ مَنْ فَطَّرَ فِيهِ صَائِمًا كَانَ لَهُ مَغْفِرَةً لِذُنُوبِهِ وَعِتْقَ رَقَبَتِهِ مِنَ النَّارِ وَكَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أَجْرِهِ شَيْءٌ» قُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ لَيْسَ كلنا يجد مَا نُفَطِّرُ بِهِ الصَّائِمَ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يُعْطِي اللَّهُ هَذَا الثَّوَابَ مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا عَلَى مَذْقَةِ لَبَنٍ أَوْ تَمْرَةٍ أَوْ شَرْبَةٍ مِنْ مَاءٍ وَمَنْ أَشْبَعَ صَائِمًا سَقَاهُ اللَّهُ مِنْ حَوْضِي شَرْبَةً لَا يَظْمَأُ حَتَّى يَدْخُلَ الْجَنَّةَ وَهُوَ شَهْرٌ أَوَّلُهُ رَحْمَةٌ وَأَوْسَطُهُ مَغْفِرَةٌ وَآخِرُهُ عِتْقٌ مِنَ النَّارِ وَمَنْ خَفَّفَ عَنْ مَمْلُوكِهِ فِيهِ غَفَرَ الله لَهُ وَأعْتقهُ من النَّار» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ

সালমান আল ফারিসী হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, শা‘বান মাসের শেষ দিনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে ভাষণ দিলেন। তিনি বললেন, হে লোক সকল! একটি মহিমান্বিত মাস তোমাদেরকে ছায়া হয়ে ঘিরে ধরেছে। এ মাস একটি বারাকাতময় মাস। এটি এমন এক মাস, যার মধ্যে একটি রাত রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। আল্লাহ এ মাসের সিয়াম ফরয করেছেন আর নফল করে দিয়েছেন এ মাসে রাতের কিয়ামকে। যে ব্যক্তি এ মাসে একটি নফল কাজ করবে, সে যেন অন্য মাসের একটি ফরয আদায় করল। আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরয আদায় করেন, সে যেন অন্য মাসের সত্তরটি ফরয সম্পাদন করল। এ মাস সবরের (ধৈর্যের) মাস; সবরের সাওয়াব জান্নাত। এ মাস সহমর্মিতার। এ এমন এক মাস যাতে মু’মিনের রিযক বৃদ্ধি করা হয়। যে ব্যক্তি এ মাসে কোন সায়িমকে ইফতার করাবে, এ ইফতার তার গুনাহ মাফের কারণ হবে, হবে জাহান্নামের অগ্নিমুক্তির উপায়। তার সাওয়াব হবে সায়িমের অনুরূপ। অথচ সায়িমের সাওয়াব একটুও কমানো হবে না।

আমরা বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের সকলে তো সায়িমের ইফতারীর আয়োজন করতে সমর্থ নয়। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সাওয়াব আল্লাহ তা‘আলা ঐ ইফতার পরিবেশনকারীকেও প্রদান করেন, যে একজন সায়িমকে এক চুমুক দুধ, একটি খেজুর অথবা এক চুমুক পানি দিয়ে ইফতার করায়। আর যে ব্যক্তি একজন সায়িমকে পেট ভরে খাইয়ে পরিতৃপ্ত করল, আল্লাহ তা‘আলা তাকে আমার হাওযে কাওসার থেকে এভাবে পানি খাইয়ে পরিতৃপ্ত করবেন, যার পর সে জান্নাতে (প্রবেশ করার পূর্বে) আর পিপাসার্ত হবে না। এমনকি সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এটা এমন এক মাস যার প্রথম অংশে রহমত। মধ্য অংশে মাগফিরাত, শেষাংশে জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাত। যে ব্যক্তি এ মাসে তার অধিনস্তদের ভার-বোঝা সহজ করে দেবে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন। তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দেবেন।
(ইবনু খুযায়মাহ্ ১৮৮৭, বাইহাকি শু‘আবূল ঈমান ৩৩৩৬,মিশকাতুল মাসাবিহ ১৯৬৫)

(০৫)
এর জন্য হুরমত হবেনা।

(০৬)
তাহলে ঈমান চলে যাবেনা।

(০৭)
বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে। 

(০৮)
এই গানের লাইন কেনায়া বাক্য নয়।

(০৯)
এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা।

(১০)
এমন কিছু বললে ঈমান চলে যাওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। 
এটি স্পষ্ট হাদীসের বাক্য।

রমজান মাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এ মাসে অভিশপ্ত শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «إِذا دخل شهر رَمَضَانُ فُتِحَتْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ» . وَفِي رِوَايَةٍ: «فُتِّحَتْ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ جَهَنَّمَ وَسُلْسِلَتِ الشَّيَاطِينُ» . وَفِي رِوَايَةٍ: «فُتِحَتْ أَبْوَابُ الرَّحْمَةِ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মাহে রমাযান (রমজান) শুরু হলে আকাশের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। অন্য এক বর্ণনায় আছে, জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। শয়তানকে শিকলবন্দী করা হয়। অন্য এক বর্ণনায় আছে, ’রহমতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়’। 

(সহীহ : বুখারী ১৮৯৯, ৩২৭৭, মুসলিম ১০৭৯, নাসায়ী ২০৯৯, ২০৯৭, ২১০২, আহমাদ ৭৭৮০, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক ৭৩৮৪, ৭৭৮১, ৯২০৪, শু‘আবূল ঈমান ৩৩২৬, সহীহ ইবনু হিববান ৩৪৩১।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...