আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
231 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (60 points)
আসসালামু আলাইকুম। রমাদানের এই অতি পবিত্র মুহূর্তেও অত্যন্ত নিরুপায় ও অসহায় হয়ে লিখছি।কারন সমস্যাটা অত্যন্ত ভয়াবহ আকার ধারন করেছে।
আমি এর আগেও সমাধান চেয়ে প্রশ্ন করেছিলাম।উপকার হয়নি। আমি ছদ্ম নামে লিখছি কারন বিষয়টি অত্যন্ত লজ্জাজনক।
আমার বয়স প্রায় পয়ত্রিশ। আমি প্রায় চার ছুই ছুই একজন মেয়ে বাবুর মা। অত্যন্ত লজ্জার সাথে স্বীকার করছি আমি প্রায়শই মেয়েটা কথা না শুনলে ওকে ধরে মাইর দেই। অকথ্য ভাষায় গালি দেই। মেজাজ একদম কন্ট্রোলে রাখতে পারিনা।ওর সাথে অত্যন্ত অমানবিক আচরণ করে ফেলি।ইভেন এই রমাদানেও আমার এই জঘন্য স্বভাব থেকে বের হতে পারিনি।
আমি ওর উপর অত্যাচার করি এর পর আবার হুশ ফিরে এলে মাফ চাই ওর কাছে,  অনুতপ্ত হই। কিছুদিন ভাল থাকি এরপর আবার অন্যায় করে ফেলি।
হাদিসে বলা হয়েছে যে রমাদানে নিজেকে মাফ করিয়ে নিতে পারল না সে হতভাগা। হাদিসে এটাও বলা হয়েছে যার হাত ও মুখ হতে অন্য মুসলিম নিরাপদে থাকল না সে মুসলমানদের মধ্যে পড়ে না।
আমি বুঝতেছি এই দুই হাদিসের সতর্কবার্তা আমার জন্যই। বাচ্চাটার সাথে যখন রাগারাগি করি আমি বুঝতে পারি আল্লাহ এই অন্যায় দেখছেন তারপরেও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনা। আমার নফসে আম্মারা শয়তানের চেয়েও খারাপ হয়ে গেছে।
আমি যথেষ্ট ভাবে ইবাদাত করার চেষ্টা করি।এই রমাদানে দুয়া কবুলের সব সময়ে আমি আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়েছি যাতে আমি মেয়েটার সাথে খারাপ ব্যবহার না করি। তারপরেও কালকে দুইবার প্রচন্ড বকা গালিগালাজ করেছি, মাইর দিয়েছি।
নিজেকে নিজে মাফ করতে পারছিনা।
কি করলে আমি আর ওর সাথে খারাপ ব্যবহার করব না?  কি করলে আমার অন্তর পাখির পালকের মত নরম হবে। আমি একটা ইয়াতিম বাচ্চার খরচ ও চালাই যাতে করে হাদিস অনুসারে অন্তর নরম হয়।  সেই চেষ্টাও করেছি কিন্তু অন্তর নরম হচ্ছে না।
আশেপাশে কোথাও গিয়ে তাব্লিগের মাহফিলে যাওয়া সম্ভব না। অনলাইনে প্রচুর ওয়াজ শুনি আত্মশুদ্ধির। কিছুতেই কিছু লাভ হচ্ছে না।মেয়েটার সাথে অকথ্য খারাপ ব্যবহার করে ফেলছি৷ নিজেকে ডাইনী মা মনে হয়। আমার মত মা কোন বাচ্চা যেন না পায়।এত দুয়া করছি যাতে আমি ভাল হই লাভ হচ্ছে না
কি করব আমি?

1 Answer

0 votes
by (564,060 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
এক্ষেত্রে আপনার সন্তানের উপর স্পষ্ট জুলুম হচ্ছে 
যাহা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
আপনি সন্তানের উপর এভাবে জুলুম অবাহত রাখলে  সেক্ষেত্রে রাগ উঠার সময় রাগ কন্ট্রোল করতে না পারলে সন্তানকে তার নানি বা দাদি বা অন্য কাহারো কাছে রাখতে পারেন।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
এক্ষেত্রে আপনার প্রতি রাগ দমন করার পরামর্শ থাকবে।

রাগ সম্পর্কে মুসলিম শরীফের এক হাদিসে আছে, 
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে রাগের সময় নিজেকে সামলে নিতে পারে, সেই প্রকৃত বাহাদুর। আরেক হাদিসে বলা হয়েছে, রাগ দেখানোর সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও যে তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, আল্লাহতায়ালা তাকে কিয়ামতের দিন পুরস্কৃত করবেন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  এ থেকে বাঁচার পথ বাতলে দিয়েছেন- 
إِذَا غَضِبَ أَحَدُكُمْ فَلْيَسْكُتْ.
কেউ যখন রেগে যায় সে যেন চুপ হয়ে যায়। (যাতে গালিগালাজ, মন্দ কথা থেকে বাঁচতে পারে।) -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২১৩৬

,
এক হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যখন তোমাদের কারও রাগ আসে, তখন সে দাঁড়িয়ে থাকলে যেন বসে পড়ে। তাতে যদি রাগ দমে না যায়, তাহলে সে যেন শোয়ে পড়ে। ’ -তিরমিজি

আবু দাউদ শরীফের একটি হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রাগ আসে শয়তানের কাছ থেকে। শয়তান আগুনের তৈরি। আর আগুন নেভাতে লাগে পানি। তাই যখন তোমরা রেগে যাবে, তখন অজু করে নেবে। ’
,
★সুতরাং রাগ উঠলে রাসুল সাঃ এর নির্দেশ মানতে হবে।
আর আল্লাহ তায়ালার রাগ কমানোর জন্য দোয়া করতে হবে,ধৈর্য ধারনের চেষ্টা করতে হবে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...