আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
158 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (40 points)
আসসালামু আলাইকুম।

সম্প্রতি আমার পরিবার থেকে আমার খরচের জন্য কিছু টাকা পাঠানো হয়।নিজের বিকাশ একাউন্ট বন্ধ থাকায়,আমার বন্ধুর একাউন্টেই টাকাটা পাঠাতে বলি।এবং আমার বন্ধুকে জানালে সেও রাজি হয়।।বিকাশে টাকাগুলো আসার কিছুক্ষণ পর আমার বন্ধুর কাছে একজন লোক ফোন দিয়ে জানায় যে তার একাউন্টে ভুলে তার টাকা চলে আসে।অথচ আমার ওই টাকা ব্যতীত অন্য কোনো টাকা আসে নি।এবং নম্বরও ঠিক ছিলো।এরপর লোকটা বলে যে বিকাশ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করবে।এরপর তার মোবাইলে একটা মেসেজ আসে যেখানে উল্লেখ করা ছিলো যে তার একাউন্টটা লক করে দেওয়া হয়েছে।এরপর তার ফোনে একটা কল আসে,যেখানে লোকটা নিজেকে বিকাশ কাস্টমার সার্ভিসের একজন বলে পরিচয় দেয়। এরপর আমার বন্ধু আমাকে জানায় যে তার একাউন্টটা লক করে দেওয়া হয়েছে।যেহেতু একাউন্ট তার,তাই তার দাবি স্বাভাবিকভাবেই আমি বিশ্বাস করি।এরপর লোকটা একাউন্ট ঠিক করে দেওয়ার কথা বলে,ওর কাছ থেকে OTP,PIN এগুলো নিয়ে নেয়।তবে এখানে উল্লেখ্য যে আমি নিজেও আংশিকভাবে এই কোডগুলো শেয়ারে সাহায্য ছিলাম।যেমন,সে এগুলো বলার সময় নাম্বারগুলো গুলিয়ে ফেলেছিল, তাই আমি সঠিকভাবে জানিয়ে দেই,এছাড়া বাদবাকি কথা তার সাথেই হয়েছিলো।কিন্তু আমি খেয়ালই করিনি যে ওটা OTP ছিলো,তবে আমি যাওয়ার আগেও ওই প্রতারকের সাথে তার ফোনে কথা হয়েছিলো,সম্ভবত তখনও কিছু ইনফরমেশন শেয়ার করেছিল।এরপর একাউন্ট দখলে নিয়ে ওই প্রতারক টাকাগুলো নিয়ে নেয়।এরপর সে বুঝতে পারে যে আসলে তার একাউন্ট লকই হয়নি।এখানে উল্লেখ্য যে,তার একাউন্ট আসলেই লক গেছে বলে সে আমাকে জানায়। যার কারণে আমি তাকে বিশ্বাস করি,এবং তাকে ওই কাজে সাহায্য করি।

এখানে আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে তার ওই নম্বরে নগদ একাউন্টও ছিলো।প্রতারক ঐটাও নিয়ন্ত্রণে নেয়।কিন্তু আমি বিকাশ নাকি নগদের OTP শেয়ারে সাহায্য করেছিলাম সেটা স্পষ্ট মনে পড়ছে না।তবে প্রথমবার নয় দ্বিতীয়বারের সময় সাহায্য করেছিলাম।এতটুকু মনে আছে।(সে মেসেজগুলো ডিলিট করে দিয়েছে।তাই আর যাচাই করার সুযোগ নেই।)

এখন সে এই টাকা নিজ থেকে আমাকে দেওয়ার ব্যাপারে রাজি আছে।কিন্তু এই ব্যাপারে শরীয়তের বিধান সম্পর্কে আমি অজ্ঞ।

আমার প্রশ্ন হচ্ছে,যেহেতু টাকাটা আমার বন্ধুর কাছে আমানত হিসেবে ছিলো,এবং একাউন্টের মালিকানা তার ছিলো,একাউন্ট লক হয়েছিল কিনা সেটা যাচাই করার সুযোগ যেহেতু কেবল তারই ছিলো এবং পিন নাম্বার শুধু ওর জানা ছিলো,তাই আমি কি আমার আমানতের টাকাটা(পূর্ন কিংবা আংশিক) আদায় করতে পারবো?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَالَّذِينَ هُمْ لِأَمَانَاتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رَاعُونَ
(মুসলমান তারা) যারা আমানতের হেফাজত করে, অঙ্গীকারসমূহ রক্ষা করে। সূরা মুমিনূন ২৩/৮

নবীজী তার অধিকাংশ ভাষণে বলতেন,
لَا إِيمَانَ لِمَنْ لَا أَمَانَةَ لَهُ، وَلَا دِينَ لِمَنْ لَا عَهْدَ لَهُ
শুনে রাখো! যার ভিতর আমানতদারিতার গুণ নেই, তার ভিতর যেন ঈমানও নেই, যার ভিতর ওয়াদা রক্ষার বালাই নেই, তার ভিতর ধর্মের কোনো বৈশিষ্ট্যই নেই! মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ১২৩৮৩

অন্য একটি হাদীসে নবীজী এরশাদ করেন,
آيَةُ المُنَافِقِ ثَلاَثٌ: إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ، وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ، وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ
মোনাফেকের আলামত তিনটি, মিথ্যা বলা, আমানতের খেয়ানত করা ও ওয়াদা করে খেলাপ করা। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৩

★শরীয়তের বিধান হলো, কাহারো কাছে কোনো কিছু আমানত রাখার পর তাহা যদি চুরি/ছিনতাই হয়ে যায়,তাহলে এক্ষেত্রে ঐ ব্যাক্তির অসতর্কতা,গাফলতির কারনে এই চুরি হয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে এর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

হ্যাঁ যদি তার পক্ষ হতে কোনো অসতর্কতা,গাফলতির প্রমান পাওয়া না যায়,বরং সে সতর্কতার সহিত আমানত রক্ষায় নিয়োজিত ছিলো,তাহা সত্ত্বেও চুরি হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে তার উপর ক্ষতিপূরণ দেয়া আবশ্যক হবেনা।

ومن استجار رجلا على خياطة ثوبه أو على قصارة ثوبه فقبضه فتلف فى يده بغير فعله وبغير تعد منه فلا ضمان عله (الفتاوى الهنيدة-4/501، بزازية على هامش الهندية-5/88
সারমর্মঃ-
কেউ কোনো ব্যাক্তিকে কাপড় সেলাইয়ের জন্য দিলো,তারপর তার হাতে তার কোনো ভুল ছাড়াই নষ্ট হয়ে গেলে তার যেমান দিতে হবেনা।

شرح المجلہ لسلیم رستم باز :
"الوديعة أمانة في يد المودَع، فإذا هلكت بلا تعد منه و بدون صنعه و تقصيره في الحفظ لايضمن، ولكن إذا كان الإيداع بأجرة فهلكت أو ضاعت بسبب يمكن التحرز عنه لزم المستودع ضمانها".
( أحكام الوديعة، رقم المادة:777، ج:1، ص:342، ط:مكتبه رشيديه)
সারমর্মঃ-
ওদিয়ত মুদি'য়ের হাতে আমানত স্বরুপ।
যদি তার অসতর্কতা ছাড়াই ধ্বংস হয়ে যায়,সেক্ষেত্রে যেমান দিতে হবেনা,,,।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার সেই বন্ধুর উপর ক্ষতিপূরণ আবশ্যক হবে।
তবে এক্ষেত্রে এহেন ভুল কাজে যেহেতু আপনিও কিছুটা জড়িত ছিলেন,তাই সেদিক বিবেচনা করে তার থেকে পুরো ক্ষতিপূরণ না নেয়াই বাঞ্চনীয় হবে।
উভয়ের সন্তুষ্টিতে আপনারা ক্ষতিপূরণ এর একটি এমাউন্ট নির্দিষ্ট করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (40 points)
সে নিজ থেকে পুরোটা দিতে প্রস্তুত।এখন আমি কি চাইলে নিজ থেকে নির্দিষ্ট এমাউন্ট কমাতে পারি?
by (565,890 points)
আপনি এমাউন্ট কমানোর পরামর্শ তার সাথে করবেন।

তিনি কমাতে রাজি না হলে আপনি নিজে কমাতে পারেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 143 views
...