আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
192 views
in পবিত্রতা (Purity) by (23 points)
আসসালামু 'আলাইকুম,,,

আমি যে বাসায় থাকি সেই বাসার ফ্লোরগুলো টাইলস করা,,,,সেগুলো সাধারণ অবস্থায় পানি শোষণ করে না,,,,ছোট শিশু থাকার কারণে ফ্লোরে পেশাব করে দিত,,,কিন্তু পরিবারের সদস্যরা সবসময় সেগুলো ভালোভাবে মুছত না,,,অনেকসময় অন্য নাপাক জিনিস দিয়েই মুছত,,,আবার অনেক সময় নাপাকি শুকিয়ে দিত,,,এর কারণে তা তো নাপাকই থেকে যাচ্ছে,,,তারপর সেই জায়গাসহ  পুরো ঘর কাজের লোক মুছত,,,,,একারণে তো পুরো ঘরের টাইলসই নাপাক হয়ে গেলো,,,,ঘর মোছার সময় সেই ঘর মোছার কাপড় এবং কাজের লোকের হাত অনেক আসবাবপত্রে লাগে,,,ফলে যেসব জায়গায় হাত লেগেছে বা পানি লেগেছে তাও তো নাপাক,,,,,,এভাবে নাপাকি তো অনেক জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে,,,,, আবার পরিবারের সদস্যরা গোসল করে বা পা ধুয়ে সেই ফ্লোর পারাচ্ছে এবং গামছা বা অন্য কিছু দিয়ে হাত -পা মুছছে,,,,ফলে গামছাও তো নাপাক হয়ে গেছে,,,তাদের একটি গামছা দিয়ে আমি ভুলবশত মুছে ফেলি,,, ফলে আমার হাত -পা -মুখও তো নাপাক হয়ে গিয়েছিল,,,তারপর আগে হাত মুখ কান(কান কোনোরকম ধুই) আবার ওযু করি এবং নামায পড়ি,,,,,কিন্তু সেই গামছা তো শরিরের অন্য জায়গায়ও লেগেছিল,,,,,, সর্বোপরি নাপাকি  থেকে বাচা অসম্ভব হয়ে গেছে,,,আবার তাদের শরীর ভেজা থকলে তাদের স্পর্শ থেকে সতর্ক থাকি,,,, তাদের টাচ করা বা স্পর্শ করা করা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে চেষ্টা করি,,,কিন্তু খাবার তো তাদের হাতেই বা কাজের লোকের হাতেই রান্না হয়,,,,,তাই তাদের রান্না করা খাবার খেতেই হয়,,,আবার ওযু বা গোসলের পর সেন্ডেল পরে হাটলেও অনেক সময় বিভিন্ন জায়গায় পা লাগে,,, যার দরুন নাপাকি নিয়ে সন্দেহ হয় এবং পা ধৌত করি,,, আবার গোসলের সময়ও সেন্ডেল পড়ে গোসল করি,,, কিন্তু নিচ থেকে পা ধোয়ার সময় বা অন্য কোন সময় পানি ছিটে আসে,,,, যার কারণে আবার পা ধৌত করি অনেকক্ষণ ধরে,,,যা আমার জন্য অনেক কষ্টের,,,এখন জন্য আমার ক্ষেত্রে শরিয়তের হুকুম কি?যদি আমার বাসার সবকিছু নাপাক হয় তাহলে তো এখান থেকে আরো অনে জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে বা পড়বে!!!!!

অনুগ্রহ করে আমাকে সহজ একটি সমাধান দিন,,,,,

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


শরীয়তে শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে কোনো পাক জিনিসকে নাপাক বলার সুযোগ নেই।
যাহা নিম্নোক্ত হাদীস থেকে প্রমানিত হয়।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، قَالَا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَعَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: شُكِيَ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم الرَّجُلُ يَجِدُ الشَّىْءَ فِي الصَّلَاةِ حَتَّى يُخَيَّلَ إِلَيْهِ فَقَالَ " لَا يَنْفَتِلُ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا " . - صحيح : 

‘আব্বাদ ইবনু তামীম হতে তাঁর চাচার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করল যে, কখনো সলাতের মধ্যে কিছু একটা সন্দেহ হয় যে, তার অযু হয়ত নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বললেন, (বায়ু নির্গত হওয়ার) শব্দ না শুনা কিংবা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত ছাড়বে না।

বুখারী (অধ্যায়ঃ উযু, অনুঃ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহ বশতঃ উযু করতে হবে না, হাঃ ১৩৭), মুসলিম ৩৬২ (অধ্যায়ঃ হায়িয, অনুঃ পবিত্রতার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর উযু নষ্ট হওয়ার সন্দেহ হলেও ঐ অবস্থায় সালাত আদায় করা জায়িয,মিশকাতুল মাসাবিহ ৩০৬)

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেনঃ

ব্যাখ্যা: قَوْلُهٗ (حَتّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَو يَجِدَ رِيْحًا) (যতক্ষণ না সে বায়ু বের হওয়ার শব্দ বা নির্গত বায়ুর গন্ধ পাবে ততক্ষণ নামাজ ছেড়ে আসবে না)। এর অর্থ হলো যতক্ষণ না সে শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়া বা অন্য যে কোন পন্থায় তার বায়ু নির্গত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয় ততক্ষণ নামাজ পরিত্যাগ করবে না বা ছেড়ে আসবে না। তবে এতে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য শুধুমাত্র শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়াটিই শর্ত নয়।

এ হাদীস আরও প্রমাণ করে যে, শারী‘আতের কোন বিষয়ে সন্দেহের মাধ্যমে সুনিশ্চিত বিষয় বাতিল হয়ে যাবে না। অতএব যার সন্দেহ হবে বায়ু নির্গত হয়েছে কিনা তবে সে তার অজু ভঙ্গ না হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত থাকবে। নিশ্চিত না হাওয়া পর্যন্ত এ সন্দেহ তার কোন ক্ষতি করবে না। আর এটি অন্যান্য বিষয়েও সমভাবে প্রযোজ্য।

আল্লামা ইবনে নুজাইম রাহ,লিখেন,

اﻟْﻘَﺎﻋِﺪَﺓُ اﻟﺜَّﺎﻟِﺜَﺔُ: اﻟْﻴَﻘِﻴﻦُ ﻻَ ﻳَﺰُﻭﻝُ ﺑِﺎﻟﺸَّﻚِّ
ﻭَﺩَﻟِﻴﻠُﻬَﺎ ﻣَﺎ ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻣَﺮْﻓُﻮﻋًﺎ {ﺇﺫَا ﻭَﺟَﺪَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺑَﻄْﻨِﻪِ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻓَﺄَﺷْﻜَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﺧَﺮَﺝَ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْءٌ ﺃَﻡْ ﻻَ ﻓَﻼَ ﻳَﺨْﺮُﺟَﻦَّ ﻣِﻦْ اﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺣَﺘَّﻰ
ﻳَﺴْﻤَﻊَ ﺻَﻮْﺗًﺎ، ﺃَﻭْ ﻳَﺠِﺪَ ﺭِﻳﺤًﺎ} 

ভাবার্থঃতৃতীয় উসূল,ঈয়াক্বিন(দৃঢ় বিশ্বাস)সন্দের দ্বারা খতম হয় না।[তথা কারো কোনো বিষয় সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে, সে বিষয় সম্পর্কে বিপরিত কোনো সন্দেহের উদ্রেক হলে পূর্ব বিশ্বাসের কোনো ক্ষতি হবে না।অর্থাৎ নতুন করে জন্ম নেয়া সন্দেহ অগ্রহণযোগ্য ]
মুসলিম শরীফের সনদে বর্ণিত হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত হাদীস তার  উজ্জল দৃষ্টান্ত।
হাদীসটি এই, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কারো তার পায়ুপথে কিছু বের হওয়ার সন্দেহ হয়।এবং উক্ত বের হওয়া না হওয়া নিয়ে সে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায়।তাহলে সে যেন মসজিদ থেকে (অজু করার নিমিত্তে) বের না হয়,যতক্ষণ না সে বায়ুর আওয়াজ শুনছে বা এর দুর্গন্ধ তার নাকে আসছে।(আল-আশবাহ ওয়ান-নাযাইর;১/৪৭)............ এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/293

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে সব জিনিসকে নাপাক বলার সুযোগ নেই।
আপনি যদি কোনো স্থানে নাপাকি লাগা দেখে থাকেন,বা নাপাকি লাগা সম্পর্কে নিশ্চিত হোন,বা নাপাকির কোনো গন্ধ/চিন্হ পান,সেক্ষেত্রে এসব জিনিসকে নাপাক বলা হবে।

নতুবা শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে এসব জিনিসকে নাপাক বলার সুযোগ নেই।

★এখন আপনার জন্য পরামর্শ থাকবে,ঘরের রান্নাকৃত খাবারকে পাক হিসেবে ধরবেন।
গোসল খানা থেকে আসার সময় পা ধুয়ে আসবেন।
নিজের কাপড় নিজে ধৌত করার চেষ্টা করবেন,অন্য কেউ যেনো সেই কাপড়ে হাত না দেয়,সে ব্যাপারে সজাগ থাকবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (23 points)
edited by
১/টয়লেটেও শান্তিমতো যেতে পারি না,,,কল,, হাত,পা,বদনা(বদনায় অনেকক্ষণ ধরে পানি ছেড়ে রাখি এবং কিছুটা ধুই) অনেকক্ষণ ভরে ধুতে হয়,,, 
আবার বসার চেয়ারেও ঠিকমতো বসতে পারি না নাপাকির কারণে,,,,কারণে বসলে যদি নিচে ঘেমে ওঠে তাহলে তো নাপাক হয়ে যাবে পান্ট,,,
এক্ষেত্রে কি করব?
২/পা ধোয়ার সময় যদি নিচে পানি পরে পানি ছিটে আসে বা অন্য পা ধোয়ার সময় অন্য পায়ে পানি ছিটে আসে তখন কি করব?
৩/আমাকে কি অন্যদের হাত -পা ভেজা থাকলে তাদের থেকে দূরে সরে থাকতে হবে?
৪/তাদের স্পর্শ করা কোন খাবার খাওয়া যাবে কি?
৫/ আর পুরো বাসার ফ্লোর কি নাপাক?
৬/ বাসার সব ফার্ণিচার কি নাপাক?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...