আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
139 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (43 points)
এমন অনেকের বাসায়ই মাঝে মাঝে থাকা প্রয়োজন পড়ে, যারা পাক - নাপাক একেবারেই বুঝে না।
যেমন -
কাপড় পাক করে ধুতে পারে না।  বালতির পানিতে চুবিয়ে চিপে নেয় প্রস্রাবের কাপড়।  তারপর সেটা টেপের উপর রেখে দেয়।  তাহলে টেপটাও নাপাক হয়ে গেল। কাপড় টা যে দড়িতে নাড়ল সেটাও নাপাক।  তার হাত ও নাপাক।  যত জায়গায় ধরবে সব ই নাপাক হয়ে গেল।  কাপড় ধোয়ার সময় পায়েও নাপাক পানির ছিটা লাগে।  সেই পা না ধুয়েই বাথরুম থেকে বের হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে বাথরুমের সামনের পাপোশ ও নাপাক এবং ফ্লোর ও নাপাক।
অযু করে ভেজা পায়ে সেই পাপোশ পাড়িয়ে জায়নামাজ এ উঠলে সেই জায়নামাজ ও নাপাক ।
বাচ্চাকে বোলের পানিতে বসিয়ে গোসল করিয়ে তুলে ফেলে।  বাচ্চার পুরো শরীর ও নাপাক থাকে,  বাচ্চাকে যে গামছা দিয়ে মোছায় সেটাও নাপাক হয়ে গেল,  যে বাচ্চাকে কোলে নিল তার কাপড় ও নাপাক হয়ে গেল।  গামছা যেখানে নেড়ে দিল সেই জায়গাও নাপাক।
তখন,  বাচ্চা গরমের কারণে ঘামলে বা বাচ্চার গায়ে কোনো ভেজা থাকলে কোলেও নিতে পারি না৷  বা কখনও স্বস্তির সাথে কোলে নিতে পারি না নাপাকির ভয়ে৷  এক্ষেত্রে কি করা যাবে?
আবার,  বাচ্চা প্রস্রাব করলে প্রস্রাবের কাঁথা ধরে আর হাত ধুয়ে নেয় না।  প্রস্রাবসহ এই নাপাক হাতেই রান্নাসহ যাবতীয় কাজ চলতে থাকে।
আর আমি বাধ্য হই অনেক কিছু একইরকম করতে যেহেতু তাদের একেবারে সাথেই থাকতে হয়।

বাচ্চা যেই ওয়েলক্লথে প্রস্রাব করে সেটা শুকিয়ে গেলেই হয়তো পাক মনে করে।  সেই ওয়েলক্লথে ইচ্ছামতো ভেজা হাতে ধরে আবার ভেজা প্লেট বাটি রেখে খেতেও বসে যায় যেহেতু পুরো বিছানায় ওয়েলক্লথ বিছানো।  সেক্ষেত্রে সেই প্লেট বাটিও নাপাক এবং পরবর্তীতে রান্নাঘরে বা টেবিলে যেখানেই ভেজাসহ এই প্লেটবাটি রাখল সেই জায়গাও নাপাক হয়ে গেল।
নাপাক ডিম সিংকে অনেক বাসন পত্রের উপর ধুয়ে নেয়৷ সব বাসন কোসন ও নাপাক হয় আবার ধোয়ার সময় যত জায়গায় ছিটে সব ই নাপাক হয়।
নিজের চোখের সামনে এই সবকিছুই দেখে,  স্বাভাবিকভাবে চলা কিভাবে সম্ভব আমি জানতে চাই। কারণ,  যেটা দেখি না সেটা হয়তো সন্দেহ থাকলেও পাক ধরা যায়।  কিন্তু,  দেখছি যে সবখানেই নাপাক হাত বা কাপড় বা থালা বাসন দ্বারা নাপাকি ছড়িয়ে যাচ্ছে সেখানে কিভাবে কি করব?
স্বাভাবিক থাকার উপায় কি? বেশিরভাগ মানুষ ই তো পাক নাপাক বুঝে না। আর সব মানুষকে সারাক্ষণ এটা নাপাক ওটা নাপাক  বলাটাও তো অসম্ভব।
কোনো সহজ মাসআলা কি শরীয়তে আছে কি না? এখানের প্রতিটা বিষয়ে আলাদাভাবে  বুঝিয়ে দিলে ভালো হয়।

আমি কিভাবে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করব?
তাদের নামাজ কালাম কিভাবে শুদ্ধ হবে এইসব বিষয় আমি জানতে চাই

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ  ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."

তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম।রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন,তুমি কি নেকীর কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ?আমি বললাম জ্বী হ্যা, ইয়া রাসূলাল্লাহ!
তখন তিনি আমাকে বললেন,তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো।নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে,এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত থাকে।আর গোনাহ হল সেটা,যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয়,এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে।যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন।(মুসনাদে আহমদ-১৭৫৪৫)

হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।

ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ 

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি।তিনি বলেন,সন্দেহ যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো।(সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি বাথরুমে গিয়ে ট্যাপ,ঝর্না ইত্যাদি স্পর্শ করার আগেই সেটি পানি দিয়ে ধুয়ে নিবেন। 
নিজের জামা নিজে পাক করবেন।
পাক জায়নামাজে নামাজ পড়বেন, এভাবেই চলাফেরা করবেন।
আপনার নামাজ শুদ্ধ হবে।

আর তাদের বিষয় নিশ্চিত ভাবে বিস্তারিত ভাবে তাদের থেকে জেনে কমেন্ট বক্সে বললে ভালো হতো।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
উস্তাদ,  আমি তো বুঝতে পারি না কোথায় কোথায় নাপাকি ছড়াইল। 
আবার,  নিজের মনে খুতখুত তৈরি হবে বলে আমি তাদের সব কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ ও করি না। এখন,  যেই বিষয়ে দেখি নি সেটা কি পাক ধরতে পারব? 
তারা যে দড়িতে কাপড় নাড়ে সেটাতে কাপড় নাড়ব না? সেক্ষেত্রে তো অন্য অপশন বের করা কঠিন।  
আর,  খাবারের ব্যাপারে কি করব উস্তায? 
আমার কাছে যে সবকিছু অনেক বেশি কঠিন লাগছে। মনে হচ্ছে আমি কারো সাথেই চলতে পারব না। কারণ প্রত্যেকেই এভাবেই চলাফেরা করে।  আমি নিজে তো নিজের নামাজ টা সাবধানেই পড়ি।  কিন্তু বাকি বিষয়গুলো? 

by
আর তাদের বিষয়টা উস্তায উপরে আমি যা উল্লেখ করলাম এমনটাই আমি দেখি।  
নাপাক তোষকে বা ওয়েলক্লথে ভেজা বাসন বা হাত রাখা এবং নাপাক হাতেই সবকিছু ধরা এইটাই সবচেয়ে কঠিন লাগে আমার কাছে।  
বাচ্চাকে বোলে বসানোর আগে একটু হালকাভাবে কোমর থেকে ধুয়ে নেয়।  তাতে কি নাপাকি চলে যায়? আবার বোলের পানিতে যদি প্রস্রাব করে দেয় সেক্ষেত্রে?  
বাচ্চাটাকেও আমি স্বস্তির সাথে কোলে নিয়ে আদর করতে পারি না৷ তারা আমার শশুরবাড়ির মানুষ।  
আমার ভয় হয়, এভাবে যদি আমার সাথে তাদের সম্পর্কের সমস্যা হয়? 
নাপাকিকে নাপাকি বললেও অনেকেই বলে আমি ওয়াসওয়াসার রোগী।
আরেকটা বিষয় উস্তায,  আমি প্রথম যখন বিয়ের পর গিয়েছি তখন কোনো বাছ বিচার না করে তাদের মতই চলাফেরা আর নামাজ পড়তাম। কারণ,  আমি ভাবতাম যে আমি তো জানিনা নাপাক কি না তাই নাপাক ধরব না।  
আমার নামাজ কি দোহরাতে হবে?  
by (678,880 points)
আপনি তাদের রান্নাকৃত খাবার খেতে পারবেন।
আলাদা দড়িতে আপনার কাপড় নেড়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন।

বাচ্চার শরীর/কাপড় ভেজা থাকা অবস্থায় বা আপনার শরীর/কাপড় তাকে কোলে নিবেননা।

হ্যাঁ শুকনো অবস্থায় কোলে নিবেন।

অগত্যা ভেজা অবস্থায় বাচ্চাকে কোলে নিতে হলে আলাদা কাপড় তার শরীরে রেখে কোলে নিবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...