আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
140 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (45 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
১. সুন্নাতে মুওয়াক্কাদাহ আর তারাবীহ সালাত আদায় না করলে কি ব্যক্তি গুনাহগার হবে? যদি হয় তাহলে ওয়াজিব আর সুন্নাতের ভিতর পার্থক্য কি?
২. জামাতে সালাত আর মসজিদে গমন উভয়ই কি সুন্নাহ? কেউ যদি মসজিদে যায় কিন্তু জামাত না পায় কিংবা অন্য কোথাও জামাতে পড়ে কিন্তু মসজিদে না যায় তাহলে কি গুনাহ হবে?

৩. মুস্তাহাব আর সুন্নাহর ভিতর পার্থ্যক্য কি?

৪. রমজানের শেষ দশ রাত জেগে ইবাদাত করার হুকুম কি?  কেউ ইচ্ছা করেই না জাগলে কি গুনাহ হবে?

৫. তাহাজ্জুদের নামাজের হুকুম কি?  এর সময় কখন থেকে? কেউ ইচ্ছা করে না পড়লে কি গুনাহ হবে?

৬. অতীত জীবনের ফরজ নামাজ বাকি থাকা অবস্থায় সুন্নাতে মুওয়াক্কাদাহ আর নফল  ঠিকমতো না আদায় করে যদি কাজা ফরজগুলো আদায় করা হয় তাহলে কি জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنكُمْ ۖ [٤:٥٩]

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যকার বিজ্ঞ ব্যক্তি [মুজতাহিদ, ফক্বীহ] গণের। {সূরা নিসা-৫৯}

ওয়াজিব কাকে বলে?
যা করার আদেশটি জন্নী দলীল তথা ফরজের তুলনায় দুর্বল দলীল দ্বারা প্রমাণিত।

واجب: وهو ما ثبت بدليل فيه شبهة، (قمر الأقمار حاشية نور الأنوار-166)
সারমর্মঃ-
ওয়াজিব এমন দলিল দ্বারা সাব্যস্ত, যার মধ্যে সন্দেহ রয়েছে।

وأما الحنفية فيقولون……. والواجب، فهو ما ثبت بدليل ظنى فيه شبهة، (أصول الفقه الإسلامى-1/47)

সারমর্মঃ-
ওয়াজিব এমন দলিলে জন্নি দ্বারা সাব্যস্ত, যার মধ্যে সন্দেহ রয়েছে।

ওয়াজিব অস্বিকারকারী গোমরাহ এবং ফাসিক হয়। কাফের হয় না।
,
সুন্নত কাকে বলে?
সুন্নতে মুআক্কাদা বলা হয়, যে আমলকে রাসূল সাঃ ইবাদত হিসেবে পাবন্দীর সাথে করেছেন। কখনো ওজর ছাড়া ছেড়ে দিয়েছেন বা নিজেতো ছাড়েননি কিন্তু যে ছেড়ে দিয়েছে তাকে ভর্ৎসনা করেননি। এরকম আমলকে সুন্নতে মুআক্কাদা বলা হয়। {আততাআরিফাতুল ফিক্বহিয়্যাহ-৩২৮, আলমুজিজ ফি উসুলিল ফিক্বহ-৪৩৯-৪০}

সুন্নতে মুআক্কাদা ওয়াজিবের মতই। অর্থাৎ ওয়াজিবের ব্যাপারে যেমন জবাবদিহী করতে হবে, তেমনি সুন্নতে মুআক্কাদার ক্ষেত্রে জবাবদিহী করতে হবে। তবে ওয়াজিব তরককারীর জন্য সুনিশ্চিত শাস্তি পেতে হবে, আর সুন্নতে মুআক্কাদা ছেড়ে দিলে কখনো মাফ পেয়েও যেতে পারে। তবে শাস্তিও পেতে পারে।

وحكمها كالواجب—- إلا أن تارك الواجب يعاقب وتاركها لا يعاقب- (التعريفات للجرجانى-138
অনুবাদঃ-
সুন্নতে মুআক্কাদা ওয়াজিবের মতই। 
তবে ওয়াজিব তরককারীকে শাস্তি দেয়া হবে, আর সুন্নত তরককারীকে শাস্তি দেয়া হবেনা।

(০২)
জামাতে সালাত আর মসজিদে গমন উভয়ই সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।
কেউ যদি মসজিদে যায় কিন্তু জামাত না পায়,সেক্ষেত্রে তার চেষ্টার কারনে তার গুনাহ হবেনা। 

তবে অন্য কোথাও জামাতে পড়ে কিন্তু মসজিদে না যায়, সেক্ষেত্রে ওযর বশত হলে গুনাহ হবেনা।
তবে কাছেই মসজিদ থাকলে কঠিন ওযর ছাড়া নিয়মিত এমনটি করা যাবেনা।

(০৩)
মুস্তাহাব এমন আমল যা পালন না করলে কোনো শাস্তি পেতে হবে না। কিন্তু পালন করা ইসলামের দৃষ্টিতে উত্তম। মুস্তাহাব কাজ করলে সওয়াব ও আল্লাহর দরবারে পুরস্কার আছে। যেমন: প্রতি আরবি মাসের প্রথম ও শেষ বৃহস্পতিবার রোজা রাখা মুস্তাহাব। 

আর সুন্নাতের সংজ্ঞা উপরে উল্লেখ রয়েছে।

(০৪)
রমজানের শেষ দশ রাত জেগে ইবাদাত করা নফল। 

কেউ ইচ্ছা করেই না জাগলে গুনাহ হবেনা।
কেননা এটি নফল।
যাহা অতিরিক্ত। 

(০৫)
তাহাজ্জুদের নামাজের নফল।
কেউ ইচ্ছা করে না পড়লে গুনাহ হবেনা।

তাহাজ্জুদের মূল ওয়াক্ত হল, রাতের শেষ প্রহর। শেষ প্রহর বলতে রাতের শেষ তৃতীয়াংশ থেকে ফজর নামাযের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্তকে বোঝানো হয়েছে। হ্যাঁ, ঘুম থেকে না জাগার সম্ভাবনা থাকলে ইশার নামাযের পর দু রাকআত সুন্নত ও বিতরের আগে তাহাজ্জুদ পড়ে নেয়া জায়েয আছে। তবে পরিপূর্ণ তাহাজ্জুদের মর্যাদা পেতে হলে রাতের শেষ প্রহরে উঠে এই নামায আদায় করতে হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৬)
জায়েজ হবে,তবে এক্ষেত্রে নফল না পড়লেও সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে দেয়া ঠিক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...