জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
তাহাজ্জুদের শেষ সময় আর ঈশার শেষ সময় একই।
তাই ঈশার ওয়াক্ত শেষ হলে আর তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যাবেনা।
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ফরজ সালাতের ১ঘণ্টা পূর্বে ঈশার ওয়াক্ত ছিলো নাকি ফজরের ওয়াক্ত ছিলো, এটি নির্ণয় করতে হবে।
যদি ঈশার এয়াক্তই হয়,তাহলে তো কোনো সমস্যা নেই।
আর যদি ফজরের ওয়াক্ত চলে আসে,তাহলে তাহাজ্জুদ পড়া যাবেনা।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عُبَيْدِ بْنِ جُرَيْجٍ , أَنَّهُ قَالَ لِأَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: مَا إِفْرَاطُ صَلَاةِ الْعِشَاءِ؟ قَالَ: «طُلُوعُ الْفَجْرِ»
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ কে জিজ্ঞাসা করা হল, ইশার নামাযের সময় কখন শেষ হয়? তখন তিনি বলেন, ফজরের সময় হলে। {তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-৯৫৯, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৭৬২}
পশ্চিমাকাশে লম্বা সাদা আভা দেখা দেয়া হল সুবহে কাযিব। এর কিছুক্ষণ আড়াআড়িভাবে বড় আকারে সাদা আভা প্রকাশিত হওয়া হল সুবহে সাদিক। যার পর ধীরে ধীরে আলো ফুটতে থাকে।
সুবহে সাদিক, সুবহে কাযিব নির্ণয় করার ক্ষমতা সবার নেই।
তাই নামাজের ওয়াক্তের ক্ষেত্রে আবহাওয়াবীদদের গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের উপর আমাদের নির্ভর করতে হয়। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত গবেষকগণ এ বিষয়ে গবেষণা করে প্রতি বছরই পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের টাইম নির্দিষ্ট করে থাকেন। সেই সাথে সুবহে সাদিক তথা কখন ফজর শুরু হয়, কখন সূর্য উঠে এবং সূর্য অস্ত যায়, তা নির্ণিত করে থাকেন।
,
(০২)
ফজরের নামাজের ওয়াক্ত আরম্ভ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাহাজ্জুদের ওয়াক্ত। সাহরির সময় শেষ হলে তথা ফজরের ওয়াক্ত শুরু হলে তাহাজ্জুদের ওয়াক্ত শেষ হয়।
তাই শেষ সময় পর্যন্ত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যাবে।
(০৩)
কাহারো যদি শেষ রাত্রিতে জাগ্রত হওয়ার সম্ভাবনা না থাকার দরুন ইশার নামাজের পড়েই তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে নেয়,তবে সেও ছওয়াব পাবে।
তবে শেষ রাতেই তাহাজ্জুদ পড়া উত্তম।
,
তাহাজ্জুদের মূল ওয়াক্ত হল, রাতের শেষ প্রহর। শেষ প্রহর বলতে রাতের শেষ তৃতীয়াংশ থেকে ফজর নামাযের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্তকে বোঝানো হয়েছে। হ্যাঁ, ঘুম থেকে না জাগার সম্ভাবনা থাকলে ইশার নামাযের পর দু রাকআত সুন্নত ও বিতরের আগে তাহাজ্জুদ পড়ে নেয়া জায়েয আছে। তবে পরিপূর্ণ তাহাজ্জুদের মর্যাদা পেতে হলে রাতের শেষ প্রহরে উঠে এই নামায আদায় করতে হবে।
আব্দুল্লাহ ইবন ওমর রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, اجْعَلُوا آخِرَ صَلاَتِكُمْ بِاللَّيْلِ وِتْرًا বিতরকে তোমাদের রাতের শেষ নামায করবে। (বুখারি ৯৯৮ মুসলিম ৭৫১)
জাবির রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَنْ خَافَ أَنْ لَا يَقُومَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ فَلْيُوتِرْ أَوَّلَهُ ، وَمَنْ طَمِعَ أَنْ يَقُومَ آخِرَهُ فَلْيُوتِرْ آخِرَ اللَّيْلِ ، فَإِنَّ صَلَاةَ آخِرِ اللَّيْلِ مَشْهُودَةٌ ، وَذَلِكَ أَفْضَلُ
যে ব্যক্তি শেষ রাতে উঠতে না পারার আশংকা করবে, সে যেন শুরু রাতেই বিতির পড়ে নেয়। আর যে ব্যক্তি রাতের শেষ ভাগে উঠে (ইবাদত) করার লালসা রাখে, সে যেন রাতের শেষ ভাগেই বিতির সমাধা করে। কারণ, রাতের শেষ ভাগের নামাযে ফেরেশতারা হাজির হন এবং এটিই উত্তম আমল। (মুসলিম ৭৫৫)
আরো জানুনঃ
عن أیاس بن معاویة المزني رضي اللّٰہ عنہ أن رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ تعالیٰ علیہ وسلم قال: لا بد من صلاة اللیل، ولو حلب شاة، وما کان بعد صلاة العشاء فہو من اللیل(رواہ الطبراني في الکبیر، کذا في الترغیب والترہیب، کتاب النوافل / الترغیب في قیام اللیل رقم: ۹۳۳)،وروی الطبراني مرفوعاً: لابد من صلاة بلیل ولو حلب شاة، وما کان بعد صلاة العشاء فہو من اللیل، وہٰذا یفید أن ہٰذہ السنة تحصل بالتنفل بعد صلاة العشاء قبل النوم(رد المحتار۲:۴۶۷، ط: مکتبة زکریا دیوبند، تبیین الحقائق ۱:۲۶۲، ط: مکتبة زکریا دیوبند)
সারমর্মঃ রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন যে রাতের (নফল) নামাজ খুবই জরুরি।
যদিও বকরির দুধ দহনের সময় হোক। ঈশার নামাজের পরে নামাজ পড়া এটা রাত্রিতেই নামাজ পড়ার হুকুমে।
এখান থেকে ঘুমানোর পূর্বে ঈশার পর নফল পড়ার বিধান হাসিল হয়।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
ঘুম থেকে না জাগার সম্ভাবনা থাকলে নিয়মিত ইশার সালাতের পরে তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করা হয় তবে কোনো সমস্যা নেই।