পাঁচ ভরি স্বর্ণ আছে যাকাত ফরজ হয়েছে কিনা

Question

আসসালামু আলাইকুম
আমি মোহরানা এবং গিফট মিলে প্রায় পাঁচ ভরি (এর কমও হতে পারে)স্বর্ণ আমি পেয়েছিলাম।কিছু স্বর্ণ আমি ব্যবহারও করি।এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে,,,
১.আমার উপর যাকাত ফরজ হয়েছে কিনা??
২.আমি বিয়ের পর হাদিয়া হিসেবে কিছু টাকা পেয়েছিলাম, টাকার পরিমান প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। এ টাকা আমার স্বামী বা অন্য কেও প্রায় প্রতি মাসে ঋণ নিয়ে আবার শোধও করে দেয়।আমি আবার আমার প্রয়োজনীয় জিনিস কিনলে আবার স্বামীর থেকে টাকা নিয়ে ওই টাকা পূরণ করে রাখি।এছাড়া এই টাকা দিয়ে আমার মোবাইল কিনারই নিয়ত আছে,আরও কিছু টাকা জমিয়ে।

তো এই হলো আমার মোট সম্পদ,এছাড়া আমার আর কোন সম্পদ বা কিছু নেই।

*এখন কথা হচ্ছে সব মিলিয়ে আমার উপর কি যাকাত ফরজ হয়েছে?

Answer 1

জবাবঃ-

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 

بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী স্বর্ণের ক্ষেত্রে যাকাতের নিসাব হল বিশ মিসকাল। -সুনানে আবু দাউদ ১/২২১; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক  হাদীস ৭০৭৭, ৭০৮২

আধুনিক হিসাবে সাড়ে সাত ভরি।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ خَلَفٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى قَالَا حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسَى أَنْبَأَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ إِسْمَعِيلَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ وَاقِدٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْخُذُ مِنْ كُلِّ عِشْرِينَ دِينَارًا فَصَاعِدًا نِصْفَ دِينَارٍ وَمِنْ الْأَرْبَعِينَ دِينَارًا دِينَارًا

ইবনু ‘উমার ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)  থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি বিশ দিনার বা তার চেয়ে কিছু বেশি হলে অর্ধ দিনার এবং চল্লিশ দিনারে এক দিনার (যাকাত) গ্রহণ করতেন।

ইবনে মাজাহ ১৭৯১ ইরওয়াহ ৮১৩।

দারাকুতনী ১৮৭৯, ১৮৯২।

সাড়ে ৫২ ভরি রুপা হলে তার উপর যাকাত ফরজ। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عن أبي سعيد الْخُدْرِي رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : «ليس فيما دون خمس أَوَاقٍ صدقة، ولا فيما دون خمس ذَوْدٍ صدقة، ولا فيما دُونَ خمسة أَوْسُقٍ صدقة».  

[صحيح] - [متفق عليه]

আবূ সা‘ঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “পাঁচ উকিয়ার কম রৌপ্যমুদ্রায় যাকাত নেই এবং পাঁচটি উটের কমের ওপর যাকাত নেই। পাঁচ ওয়াসাক এর কম শষ্যের ওপর যাকাত নেই।”

(বুখারী,মুসলিম)

শরীয়তের বিধান হলো যদি কাহারো কাছে সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা কিংবা বাণিজ্য-দ্রব্য- এগুলোর কোনোটি পৃথকভাবে পূর্ণ  নিসাব পরিমাণ না থাকে, কিন্তু এসবের একাধিক সামগ্রী এ পরিমাণ রয়েছে, যা একত্র করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি হয় তাহলে এক্ষেত্রে সকল সম্পদ হিসাব করে যাকাত দিতে হবে।

(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৬৬,৭০৮১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৩৯৩)

আরো জানুনঃ  

https://www.ifatwa.info/17417/

https://ifatwa.info/5680/

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,

প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার মালিকানায় বর্তমানে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা ও প্রায় ৫ ভরি স্বর্ণ আছে।

সুতরাং আপনি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক।

,

এক্ষেত্রে বিয়ের পর হাদিয়া হিসেবে যে টাকা পেয়েছিলেন,এ টাকা কবে পেয়েছিলেন? এ টাকা পাওয়ার এক বছর পূর্ণ হলেই আপনার উপর যাকাত ফরজ।

এক্ষেত্রে যদি এই টাকা পাওয়ার পর কয়েক বছর অতিবাহিত হয়ে যায়,সেক্ষেত্রে এই কয়েক বছরেরও যাকাত আদায় করতে হবে। 

যাকাত প্রদান না করলে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عن عمرو بن شعيب عن أبيه عن جده أن امرأة أتت رسول الله صلى الله عليه و سلم ومعها ابنة لها وفي يد ابنتها مسكتان غليظتان من ذهب فقال لها ” أتعطين زكاة هذا ؟ ” قالت لا قال ” أيسرك أن يسورك الله بهما يوم القيامة سوارين من نار ؟ ” قال فخلعتهما فألقتهما إلى النبي صلى الله عليه و سلم وقالت هما لله عزوجل ولرسوله

অনুবাদ- আমর বিন শুয়াইব থেকে পর্যায়ক্রমে তাঁর পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিন [দাদা] বলেনঃ এক মহিলা তার কন্যাসহ রাসূল সাঃ এর খিদমতে উপস্থিত হন। তার কন্যার হাতে মোটা দুই গাছি স্বর্ণের চুড়ি [কাঁকন] ছিল। তিনি [রাসূল সাঃ] তাকে বললেনঃ তোমরা কি এটার যাকাত আদায় কর? মহিলা বলেনঃ না। রাসূল সাঃ বলেনঃ তুমি পছন্দ কর যে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা এর পরিবর্তে তোমাকে এক জোড়া আগুনের কাঁকন পরিধান করান? রাবী বলেনঃ একথা শুনে মেয়েটি তার হাত থেকে তা খুলে নবী করীম সাঃ এর সামনে রেখে দিয়ে বললঃ এ দু’টি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্য। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৫৬৩, সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৭৭৯৯, সুনানুল কুবরা লিননাসায়ী, হাদীস নং-২২৫৮, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২০০৫}

আরো জানুনঃ- 

https://ifatwa.info/43181/