আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
336 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম। আমার এক কাছের বান্ধবী প্রায় ৪/৫ বছর  ধরে  হিস্টেরিয়া নামক এক ধরনের  মানসিক রোগে  আক্রান্ত। কিন্তু  বিয়ের সময় তার স্বামী তার এই রোগের কথা জানতেন না এবং আমার বান্ধবী কে তালাক ই তাফইজ  এর অধিকার দেওয়া ছিল। *(এখানে বলে রাখা ভালো  যে,আমার বান্ধবী  এই রোগের জন্য মাঝে মাঝে অজ্ঞান  হয়ে যেতেন, জিনিস পত্র ছুড়ে ফেলতেন, ছুরি  দিয়ে নিজের কাপড় কাটতেন, দেয়ালে নিজের মাথা বারি দিতেন,চিল্লাচিল্লি  করতেন।মোটকথা সে তার কষ্ট, রাগ এবং  আবেগ  নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন  না।)
কিন্তু কিছুদিন আগে সে তার স্বামীকে তালাক দেন।।।
আমার প্রশ্ন হলো ----
১.এমন অবস্থায় তার তালাক কি পতিত হবে?
২.একজন রোগী ঠিক কতটুকু মানসিক  অসুস্থ থাকলে সে তালাক  দিতে পারবে না??

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
ইসলামের মূল থিউরী হল স্বামী স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ না হোক। তারা মিলেমিশে থাকুক। সমস্যা হলে উভয়ে বসে তা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত। তাতে সমস্যার সমাধান না হলে পারিবারিক মুরুব্বীদের পরামর্শের আলোকে সমাধান করা উচিত। তারপরও যদি সমাধান না আসে। তাহলে নিরূপায় অবস্থায় ইসলাম তালাক দেবার অধিকার দিয়েছে স্বামীকে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন 

قال اللّٰہ تعالیٰ: {وَاللّٰاتِیْ تَخَافُوْنَ نُشُوْزَہُنَّ فَعِظُوْہُنَّ وَاہْجُرُوْہُنَّ فِیْ الْمَضَاجِعِ} [النساء، جزء آیت:۳۴]

হাদীস শরীফে এসেছে   
عن ابن عمر رضي اللّٰہ عنہما أن رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم قال: أبغض الحلال إلی اللّٰہ عزوجل الطلاق۔ (سنن أبي داؤد ۱؍۳۰۳، المستدرک للحاکم ۲؍۲۱۸ رقم: ۲۸۰۹، السنن الکبریٰ ۷؍۳۱۶)

রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন যে সবচেয়ে নিকৃষ্টতম হালাল হলো তালাক প্রদান করা।
,
★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত  স্ত্রী যদি স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে স্ত্রী লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

এখানে স্ত্রী যে কয় তালাক নিজ নফসের দিবে,সেই কয় তালাকই পতিত হবে।  

আরো জানুনঃ 

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
 এটা নিশ্চিত যে উক্ত মহিলা যদি সত্যিই উক্ত রোগ অবস্থায় তালাক দিয়ে থাকে,তাহলে সে কোনোভাবেই এটা বলেনি যে আমি স্বামী প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নিজ নফসের উপর তালাক প্রদান করিলাম।
কারন এটা তো সুস্থ মানুষই বলেনা,বা জানেনা।
উনি অসুস্থ হওয়ার পর আমরা নিশ্চিত যে তিনি কোনোভাবেই এটা বলেননি।
,
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনো তালাক পতিত হয়নি।
,   

(০২)
প্রথমে শরীয়তের কিছু মাসয়ালা জেনে নেইঃ 
মদ বা নেশাদ্রব্য সেবনের কারণে বেহুঁশ বা মাতাল হয়ে কোনো ব্যক্তি স্বীয় স্ত্রীকে তালাক দিলেও তা কার্যকর হয়ে যায়। 
(বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৫৮; আলবাহরুর রায়েক ৩/২৪৭; ফাতহুল কাদীর ৩/৩৪৫)

প্রখ্যাত তাবেয়ী সায়ীদ ইবনে মুসাইয়িব রাহ. ও সুলাইমান ইবনে ইয়াসার রাহ.কে মাতাল ব্যক্তির(তালাক প্রদান) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা উভয়ে জবাবে বলেছেন, মাতাল ব্যক্তির তালাকপতিত হয়ে যাবে।-মুয়াত্তা ইমাম মালেক ২১৬

لمافی السنن الترمذی (۲۲۶/۱): عن أبی ھریرۃ ؓ قال قال رسول الله ﷺ کل طلاق جائز إلاطلاق المعتوہ المغلوب علی عقلہ۔
সারমর্মঃ বেহুশ ব্যাক্তির তালাক পতিত হয়না। 

و فی الدرالمختار(۲۴۴/۳):( لا يقع طلاق المولى على امرأة عبده ) ۔۔۔ ( والمجنون ) ۔۔۔ (والصبي ) ۔۔۔ ( والمعتوه ) ۔۔۔ ( والمبرسم ) ۔۔۔ ( والمغمى عليه ) ۔۔۔ ( والمدهوش ) فتح ۔
وفی الرد تحتہ :والذي يظهر لي أن كلا من المدهوش والغضبان لا يلزم فيه أن يكون بحيث لا يعلم ما يقول بل يكتفى فيه بغلبة الهذيان واختلاط الجد بالهزل كما هو المفتى به في السكران ۔الخ
সারমর্মঃ পাগল,বেহুশ,শিশু বাচ্চা ইত্যাদিদের তালাক পতিত হয়না।
,
★সুতরাং "একজন রোগী ঠিক কতটুকু মানসিক  অসুস্থ থাকলে সে তালাক দিলে তালাক হবেনা""
এক্ষেত্রে মাসয়ালা হলো যদি কোনো মুসলিম  অভিজ্ঞ ডাক্তার তাকে মানসিক রোগি বলে সার্টিফিকেট (লিখিত ডকুমেন্ট) দেয়।
এবং বলে  যে সে আসলেই উক্ত রোগ অবস্থায় কি বলে সেটি নিজ থেকে বলেনা,বা উক্ত তাহার উপর কোনো শক্তি থাকেনা,সেন্স ঠিক থাকেনা,ঐ সময়ে কি বলেছে এই কথা পরে বলতেও পারেনা,মাথা ঠিক থাকেনা।
,
তাহলে উক্ত রোগ জাগা অবস্থায় যদি সে তালাক দেয়,তাহলে তালাক হবেনা।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...