إن حبسني حابس فمحلي حيث حبستني
অনুবাদঃ-
যদি আমাকে কোনো বাধা প্রদানকারী থামিয়ে দেয়,তখবই (বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার সময়) আমি ইহরাম খুলবো, (হালাল হয়ে যাবো)
যদি কেউ ওমরার ইহরাম বাধার সময় ইহরামের নিয়তের সাথে এই শর্ত যোগ করে
وإن حبسني حابس فمحلي حيث حبستني
এক্ষেত্রে তার শর্ত যোগ করা অনর্থক হবে আর ইহরাম শুদ্ধ হয়ে যাবে।
এক্ষেত্রে হাম্বলি মাযহাব মতে উক্ত নিয়ত গ্রহনযোগ্য।
এই নিয়ত কেউ করলে পরবর্তীতে বাধাপ্রাপ্ত হলে যদি ইহরাম খুলে ফেলে,সেক্ষেত্রে তাকে দম দিতে হবেনা।তবে হানাফি মাযহাব মতে এক্ষেত্রেও দম আবশ্যক হবে।
হাম্বলি মাযহাবের দলিলঃ
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَأَبُو أَيُّوبَ الْغَيْلاَنِيُّ وَأَحْمَدُ بْنُ خِرَاشٍ قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ، - وَهُوَ عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عَمْرٍو - حَدَّثَنَا رَبَاحٌ، - وَهُوَ ابْنُ أَبِي مَعْرُوفٍ - عَنْ عَطَاءٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، - رضى الله عنهما - أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِضُبَاعَةَ رضى الله عنها " حُجِّي وَاشْتَرِطِي أَنَّ مَحِلِّي حَيْثُ تَحْبِسُنِي " . وَفِي رِوَايَةِ إِسْحَاقَ أَمَرَ ضُبَاعَةَ .
ইসহাক ইবনু ইবরাহীম, আবূ আয়্যুব গায়লানী ও আহমদ ইবনু খিরাশ (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুবাআহ (রাঃ) কে বললেন, তুমি হাজ্জ (হজ্জ) কর এবং শর্ত রাখ যে, আল্লাহ! তুমি যেখানে আমাকে থামিয়ে দেবে, সেখানে আমি ইহরাম খুলব। ইসহাকের বর্ণনায় আছে, তিনি যুবাআহ (রাঃ) কে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন।
(মুসলিম ২৭৭৮ ইফাঃ)
হানাফি মাযহাবের দলিলঃ
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
عَنِ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ وَمَرْوَانَ بْنِ الْحَكَمِ قَالَا: خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْحُدَيْبِيَةِ فِي بِضْعَ عَشْرَةَ مِائَةً مِنْ أَصْحَابِهِ فَلَمَّا أَتَى ذَا الْحُلَيْفَةِ قَلَّدَ الْهَدْيَ وَأَشْعَرَ وَأَحْرَمَ مِنْهَا بِعُمْرَةٍ وَسَارَ حَتَّى إِذَا كَانَ بِالثَّنِيَّةِ الَّتِي يُهْبَطُ عَلَيْهِمْ مِنْهَا بَرَكَتْ بِهِ رَاحِلَتُهُ فَقَالَ النَّاسُ: حَلْ حَلْ خَلَأَتِ القَصْواءُ خلأت الْقَصْوَاء فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا خَلَأَتِ الْقَصْوَاءُ وَمَا ذَاكَ لَهَا بِخُلُقٍ وَلَكِنْ حَبَسَهَا حَابِسُ الْفِيلِ» ثُمَّ قَالَ: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا يَسْأَلُونِي خُطَّةً يُعَظِّمُونَ فِيهَا حُرُمَاتِ اللَّهِ إِلَّا أَعْطَيْتُهُمْ إِيَّاهَا» ثُمَّ زَجَرَهَا فَوَثَبَتْ فَعَدَلَ عَنْهُمْ حَتَّى نَزَلَ بِأَقْصَى الْحُدَيْبِيَةِ عَلَى ثَمَدٍ قَلِيلِ الْمَاءِ يَتَبَرَّضُهُ النَّاسُ تَبَرُّضًا فَلَمْ يَلْبَثْهُ النَّاسُ حَتَّى نَزَحُوهُ وَشُكِيَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْعَطَشَ فَانْتَزَعَ سَهْمًا مِنْ كِنَانَتِهِ ثُمَّ أَمَرَهُمْ أَنْ يَجْعَلُوهُ فِيهِ فو الله مَا زَالَ يَجِيشُ لَهُمْ بِالرِّيِّ حَتَّى صَدَرُوا عَنْهُ فَبَيْنَا هُمْ كَذَلِكَ إِذْ جَاءَ بُدَيْلُ بْنُ وَرْقَاءَ الخزاعيُّ فِي نفَرٍ منْ خُزَاعَةَ ثُمَّ أَتَاهُ عُرْوَةُ بْنُ مَسْعُودٍ وَسَاقَ الْحَدِيثَ إِلَى أَنْ قَالَ: إِذْ جَاءَ سُهَيْلُ بْنُ عَمْرٍو فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: اكْتُبْ: هَذَا مَا قَاضَى عَلَيْهِ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ . فَقَالَ سُهَيْلٌ: وَاللَّهِ لَوْ كُنَّا نَعْلَمُ أَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ مَا صَدَدْنَاكَ عَنِ الْبَيْتِ وَلَا قَاتَلْنَاكَ وَلَكِنِ اكْتُبْ: مُحَمَّدَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: وَاللَّهِ إِنِّي لَرَسُولُ اللَّهِ وَإِنْ كَذَّبْتُمُونِي اكْتُبْ: مُحَمَّدَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ فَقَالَ سُهَيْلٌ: وَعَلَى أَنْ لَا يَأْتِيَكَ مِنَّا رَجُلٌ وَإِنْ كانَ على دينِكَ إِلاَّ ردَدْتَه علينا فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ قَضِيَّةِ الْكِتَابِ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِأَصْحَابِهِ: «قُومُوا فَانْحَرُوا ثُمَّ احْلِقُوا» ثُمَّ جَاءَ نِسْوَةٌ مُؤْمِنَاتٌ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى: (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذا جاءكُم المؤمناتُ مهاجِراتٌ) الْآيَةَ. فَنَهَاهُمُ اللَّهُ تَعَالَى أَنْ يَرُدُّوهُنَّ وَأَمَرَهُمْ أَنْ يَرُدُّوا الصَّدَاقَ ثُمَّ رَجَعَ إِلَى الْمَدِينَةِ فَجَاءَهُ أَبُو بَصِيرٍ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ وَهُوَ مُسْلِمٌ فَأَرْسَلُوا فِي طَلَبِهِ رَجُلَيْنِ فَدَفَعَهُ إِلَى الرَّجُلَيْنِ فَخَرَجَا بِهِ حَتَّى إِذَا بَلَغَا ذَا الْحُلَيْفَةِ نَزَلُوا يَأْكُلُونَ مِنْ تَمْرٍ لَهُمْ فَقَالَ أَبُو بَصِيرٍ لِأَحَدِ الرَّجُلَيْنِ: وَاللَّهِ إِنِّي لَأَرَى سَيْفَكَ هَذَا يَا فُلَانُ جَيِّدًا أَرِنِي أَنْظُرْ إِلَيْهِ فَأَمْكَنَهُ مِنْهُ فَضَرَبَهُ حَتَّى بَرَدَ وَفَرَّ الْآخَرُ حَتَّى أَتَى الْمَدِينَةَ فَدَخَلَ الْمَسْجِدَ يَعْدُو فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَقَدْ رأى هَذَا ذُعراً» فَقَالَ: قُتِلَ واللَّهِ صَحَابِيّ وَإِنِّي لَمَقْتُولٌ فَجَاءَ أَبُو بَصِيرٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَيْلَ أُمِّهِ مِسْعَرَ حَرْبٍ لَوْ كَانَ لَهُ أَحَدٌ» فَلَمَّا سَمِعَ ذَلِكَ عَرَفَ أَنَّهُ سَيَرُدُّهُ إِلَيْهِمْ فَخَرَجَ حَتَّى أَتَى سِيفَ الْبَحْرِ قَالَ: وَانْفَلَتَ أَبُو جَنْدَلِ بْنُ سُهَيْلٍ فَلَحِقَ بِأَبِي بَصِيرٍ فَجَعَلَ لَا يَخْرُجُ مِنْ قُرَيْشٍ رَجُلٌ قَدْ أَسْلَمَ إِلَّا لَحِقَ بِأَبِي بَصِيرٍ حَتَّى اجْتَمَعَتْ مِنْهُمْ عِصَابَةٌ فو الله مَا يَسْمَعُونَ بِعِيرٍ خَرَجَتْ لِقُرَيْشٍ إِلَى الشَّامِ إِلَّا اعْتَرَضُوا لَهَا فَقَتَلُوهُمْ وَأَخَذُوا أَمْوَالَهُمْ فَأَرْسَلَتْ قُرَيْشٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُنَاشِدُهُ اللَّهَ وَالرَّحِمَ لَمَّا أَرْسَلَ إِلَيْهِمْ فَمَنْ أَتَاهُ فَهُوَ آمِنٌ فَأَرْسَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم إِلَيْهِم. رَوَاهُ البُخَارِيّ
মিস্ওয়ার ইবনু মাখরামাহ্ ও মারওয়ান ইবনুল হাকাম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাঁরা উভয়ে বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুদায়বিয়াহ্-এর বৎসর এক হাজারেরও অধিক সাহাবীসহ মদীনাহ্ হতে (মক্কাভিমুখে) রওয়ানা হলেন এবং যুল হুলায়ফাহ্ নামক স্থানে এসে কুরবানীর পশুর গলায় চামড়ার মালা পরালেন এবং পশুর গলার পাশে ধারালো অস্ত্র দ্বারা হালকা জখম করে উক্ত স্থানে রক্ত মেখে দিলেন আর সেখান হতে ‘উমরার ইহরাম বেঁধে অগ্রসর হলেন। পথিমধ্যে তাঁর উষ্ট্রী এক উপত্যকায় বসে পড়ল, যেখান দিয়ে মক্কায় যাতায়াত করে। তখন লোকেরা হাল-হাল বলে উষ্ট্রীকে উঠাতে চেষ্টা করল, কিন্তু উষ্ট্রীকে উঠাতে ব্যর্থ হলো। তারা বলতে লাগল, ‘কস্ওয়া’ (উষ্ট্রীর নাম) জিদ করেছে, ‘কস্ওয়া’ জিদ করেছে। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ‘কস্ওয়া’ জিদ করেনি এবং এটা তার স্বভাবজাতও নয়; বরং যিনি হাতিকে আটকিয়েছিলেন, তিনি একেও আটকিয়েছেন। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ সে সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন! আল্লাহর পবিত্র স্থানের মর্যাদা রক্ষার্থে তারা (কুরায়শরা) আমার নিকট সম্মানপ্রদর্শনের লক্ষ্যÿ্য যে কোনো শর্তারোপ করতে চাইবে, আমি তা গ্রহণ করে নিব।
অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উষ্ট্রীকে ধমকের স্বরে উঠতে বললে তা সঙ্গে সঙ্গেই উঠে দাঁড়াল (দ্রুত চলতে লাগল)। এবার তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মক্কার সরাসরি পথ হতে সরে ভিন্নপথে সম্মুখপানে অগ্রসর হতে লাগলেন। অবশেষে হুদায়বিয়ার প্রান্তে স্বল্প পানির কূপের নিকট এসে অবতরণ করলেন। লোকেরা তা হতে অল্প অল্প করে পানি তুলে নিলেও কিছুক্ষণ পরেই তা শেষ হয়ে গেল এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে পিপাসার অভিযোগ করল। এমতাবস্থায় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্বীয় থলি হতে একটি তীর বের করে বললেন, একে কূপটির মধ্যে ফেলে দাও। (বর্ণনাকারী বলেন) আল্লাহর কসম! তীর নিক্ষেপমাত্রই কূপের পানি পরিপূর্ণ হয়ে উপচে পড়তে লাগল। ফলে তারা সকলে উক্ত স্থান ত্যাগ করা পর্যন্ত তা হতে আত্মতৃপ্তির সাথে পানি পান করল। তারা যখন পানি পান করা ইত্যাদিতে মশগুল ঠিক তখন খুযা‘ঈ গোত্রপতি বুদায়ল ইবনু ওয়ারাকা স্বীয় খুযা‘আহ্ গোত্রের কতিপয় লোকজনসহ সেখানে উপস্থিত হলো। সে চলে গেলে ‘উরওয়াহ্ ইবনু মাস্‘ঊদ আসলো।
(পরবর্তী ঘটনা) ব্যাখ্যা করে বর্ণনাকারী বলেন, পরিশেষে সুহায়ল ইবনু ‘আমর এসে উপস্থিত হলো। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (‘আলী -কে) বললেনঃ ‘‘লিখো, এটা আল্লাহর রসূল, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষ থেকে সম্পাদিত সন্ধিপত্র।’’ এ কথা শুনে সুহায়ল বলে উঠল, আল্লাহর কসম! যদি আমরা আপনাকে আল্লাহর রসূল বলে জানতাম, তাহলে কক্ষনো আপনাকে বায়তুল্লাহ যিয়ারত করা হতে বাধা সৃষ্টি করতাম না এবং আপনার সাথে যুদ্ধও করতাম না, বরং আপনি এভাবে লিখুন ‘‘আবদুল্লাহ-এর পুত্র মুহাম্মাদণ্ডএর পক্ষ হতে’’। তার কথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি নিশ্চয় আল্লাহর রসূল, যদিও তোমরা আমাকে অস্বীকার করো। আচ্ছা! (হে ‘আলী!) মুহাম্মাদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ লিখো। সন্ধিপত্র লেখা হচ্ছিল, তখন সুহায়ল বলে উঠল, অন্যান্য শর্তাবলীর সাথে এটাও লেখা হোক যে, যদি আমাদের কোনো লোক (মক্কা হতে) আপনার নিকট যায় তাকে অবশ্যই মক্কায় ফেরত পাঠিয়ে দিতে হবে, যদিও সে আপনার দীনে (ধর্মে) বিশ্বাসী হয়।
বর্ণনাকারী বলেনঃ সন্ধিপত্র লেখা শেষ হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণের উদ্দেশে বললেনঃ উঠো, তোমরা তোমাদের সাথে নিয়ে আসা পশু কুরবানী করে দাও এবং তারপর মাথা মুড়িয়ে ফেলো (তথা ইহরাম হতে হালাল হয়ে যাও)। এরপর কতিপয় মু’মিনাহ্ মহিলা হিজরত করে তার নিকট আসলো, তখন আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াত নাযিল করলেন, অর্থাৎ- ‘‘হে মু’মিনগণ! কোনো মু’মিন মুসলিম নারী হিজরত করে তোমাদের নিকট আসলে তাদেরকে ভালোভাবে পরীক্ষা করে নাও।’’ এ আয়াত দ্বারা সে সকল মুসলিম রমণীদেরকে ফেরত পাঠাতে আল্লাহ নিষেধ করে নির্দেশ দিলেন যে, তাদের মোহর ফেরত দাও। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় ফিরে আসলেন। এ সময় আবূ বাসীর নামে কুরায়শের এক ব্যক্তি মুসলিম হয়ে (মক্কা হতে মদীনায়) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলো। অন্যদিকে কুরায়শরাও তার সন্ধানে মদীনায় দু’জন লোক পাঠাল। (সন্ধির শর্তানুযায়ী) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বাসীরকে তাদের কাছে সোপর্দ করলেন।
তারা আবূ বাসীরকে সঙ্গে নিয়ে রওয়ানা হলো। ‘‘যুলহুলায়ফাহ্’’ নামক স্থানে পৌঁছে নিজেদের খাদ্য (খেজুর) খাওয়ার জন্য সওয়ারীর হতে নামলো, তখন আবূ বাসীর তাদের একজনকে বললঃ হে অমুক! আল্লাহর কসম! তোমার তরবারি তো দেখছি খুবই আকর্ষণীয় এবং মূল্যবান? আমাকে একটু দাও দেখি, ভালো করে দেখে নেই? লোকটি তরবারিটি আবূ বাসীর-এর হাতে দিলো, সে তাকে ভালোভাবে ধরে তা দ্বারা তাকে এমনভাবে আঘাত করল যে, সে সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যুবরণ করল। আর অপর লোকটি পালিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে মদীনায় এসে মসজিদে নববীতে আশ্রয় নিলো। তাকে দেখেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ লোকটি দেখে মনে হচ্ছে ভীত-সন্ত্রস্ত।
সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গিয়ে বললঃ আল্লাহর কসম! আমার সঙ্গীকে হত্যা করা হয়েছে, সুযোগ পেলে হয়ত আমাকেও হত্যা করত। এখন আমাকে বাঁচান! লোকটির পিছনে আবূ বাসীরও এসে সমুপস্থিত হলো। তাকে দেখে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আক্ষেপের সাথে বললেনঃ ‘‘তার মায়ের প্রতি আক্ষেপ! সে তো যুদ্ধের আগুন জ্বালিয়ে দিতে চায়। যদি তার সাথে আরও লোকজন থাকতো। যখন সে এ কথা শুনলো, তখন আবূ বাসীর বুঝতে পারল যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে পুনরায় কাফিরদের নিকট ফেরত পাঠিয়ে দেবেন। এটা বুঝে সে নীরবে সেখান হতে বের হয়ে সোজা সাগরের উপকূলের দিকে চলে গেল এবং সেখানে আশ্রয় গ্রহণ করল।
বর্ণনাকারী বলেনঃ ইতোমধ্যে সুহায়ল-এর পুত্র আবূ জান্দাল বন্দীমুক্ত হয়ে আবূ বাসীর-এর সাথে মিলিত হলেন। এভাবে মক্কার কুরায়শদের নিকট হতে কোনো মুসলিম পালিয়ে আসতে সক্ষম হলে সেও সরাসরি গিয়ে আবূ বাসীর ও তার সঙ্গীদের সাথে একত্রিত হত। এভাবে ক্রমাগত সেখানে একটি গেরিলা বাহিনী গড়ে উঠল। আল্লাহর কসম, যখনই তারা শুনতে পেত যে, কুরায়শদের কোনো তেজারতি কাফিলা সিরিয়ার অভিমুখে রওয়ানা হয়েছে, তখনই তারা উক্ত কাফিলার ওপর অতর্কিত হামলা চালাত এবং তাদেরকে হত্যা করে তাদের মাল-সম্পদ সবকিছু ছিনিয়ে নিয়ে যেত। এমতাবস্থায় অতিষ্ঠ হয়ে কুরায়শগণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এ প্রস্তাব পাঠাল যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যেন আত্মীয়তার সহানুভূতি ও আল্লাহর ওয়াস্তে আবূ বাসীর ও তার সঙ্গীদেরকে লুটতরাজ হতে বিরত রাখেন এবং সত্বর আবূ বাসীর-কে সেখান হতে ফিরিয়ে আনেন। সাথে সাথে এটাও জানিয়ে দিলো যে, এখন হতে মক্কার কোনো মুসলিম মদীনায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলে তাকে আর ফেরত দিতে হবে না। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বাসীর ও তার সাথীদেরকে আনতে লোক পাঠালেন (তখন তারা সবাই মদীনায় প্রত্যাবর্তন করলেন)।
(বুখারী ১৬৯৪.মিশকাত ৪০৪২)