জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
দৈনন্দিন জীবনে রাসুল সাঃ এর কিছু সুন্নাতঃ
,
সুবহে সাদিকের কিছুক্ষন আগে উঠা,মিসওয়াক করা,
বেশি বেশি মিসওয়াক করা
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যদি আমি আমার উম্মতের জন্য কষ্টকর মনে না করতাম, তবে প্রত্যেক নামাজেই মিসওনামাজের জন্য অপেক্ষা করা
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি কি তোমাদের বলব না, আল্লাহ তাআলা কী দিয়ে গুনাহ মুছে দেন এবং মর্যাদা বাড়িয়ে দেন? সাহাবারা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! হ্যাঁ (বলে দিন)। তিনি বললেন, কষ্ট থাকার পরও ভালোভাবে অজু করা, মসজিদের দিকে বেশি কদম ফেলে যাওয়া এবং এক নামাজ শেষ করে পরবর্তী নামাজের জন্য অপেক্ষা করা। আর এটাই হলো ‘রিবাত’ (প্রস্তুতি)।
(সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৫১)
★অযু করা।
অজুর পর কালেমা শাহাদাত পাঠ করা : ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন অজু করে সে যেন ভালোভাবে অজু করে।’
অতঃপর বলেন, ‘আশহাদু আল্লা-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া-আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া-রাসুলুহ’ (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) তাঁর বান্দা ও রাসুল)—তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং সে যেটা দিয়ে খুশি তাতে প্রবেশ করবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৫৩)
পানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়া : আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী (সা.) এক সা (৪ মুদ) থেকে পাঁচ মুদ পর্যন্ত পানি দিয়ে গোসল করতেন এবং অজু করতেন এক মুদ দিয়ে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২০১)
তাহাজ্জুদ পড়া।
তাহাজ্জুদ অনেক বেশি মর্যাদাপূর্ণ নামাজ। নবীজি (সা.)-কে তাহাজ্জুদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং আপনি রাতের কিছু অংশ তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ুন। তা আপনার জন্য এক অতিরিক্ত কর্তব্য। নিশ্চয়ই আপনার প্রভু আপনাকে মাকামে মাহমুদে (প্রশংসিত স্থানে) প্রতিষ্ঠিত করবেন।’ (সুরা : বনি ইসরাইল, আয়াত : ৭৯)।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَعَنْ أَبِي عَبْدِ اللهِ الأَغَرِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى سَمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الآخِرُ، فَيَقُولُ : مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ، مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ، مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমাদের মহা মহীয়ান রবব প্রতি রাতের এক তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে দুনিয়ার নিকটবর্তী আকাশে অবতরণ করে বলেন, আছে কেউ আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দিবো? আছে কেউ আমার কাছে চাইবে, আমি তাকে দান করবো? আছে কি কেউ আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি তাকে ক্ষমা করে দিবো।
(বুখারী (অধ্যায় : তাহাজ্জুদ, অনুঃ রাতের শেষ ভাগে ও সলাতে দু‘আ করা, হাঃ ১১৪৫), মুসলিম (অধ্যায় : মুসাফিরের সলাত, অনুঃ রাতের শেষাংশে দু‘আ যিকিরে উৎসাহ দান)
আযানের জবাব দেওয়া,আযানের শেষে দরুদ পড়া।
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি মহানবী (সা.)-কে বলতে শুনেছেন—‘তোমরা যখন মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে শুনবে, তার অনুরূপ বাক্য পাঠ করবে।...’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৮৪৯)
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি মহানবী (সা.)-কে বলতে শুনেছেন—‘তোমরা যখন মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে শুনবে, তার অনুরূপ বাক্য পাঠ করবে এবং আমার প্রতি দরুদ পাঠ করবে। কেননা যে আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তার প্রতি দশবার শান্তি বর্ষণ করেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৮৪৯)
দোয়া পড়া
জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আজান শুনে এই দোয়া পড়বে কিয়ামতের দিন সে আমার শাফায়াতের অধিকারী হবে।
: « ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺭَﺏَّ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﺪَّﻋْﻮَﺓِ ﺍﻟﺘَّﺎﻣَّﺔِ، ﻭَﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺍﻟْﻘَﺎﺋِﻤَﺔِ، ﺁﺕِ ﻣُﺤَﻤَّﺪﺍً ﺍﻟْﻮَﺳِﻴﻠَﺔَ ﻭَﺍﻟْﻔَﻀِﻴﻠَﺔَ، ﻭَﺍﺑْﻌَﺜْﻪُ ﻣَﻘَﺎﻣَﺎً ﻣَﺤﻤُﻮﺩﺍً ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻭَﻋَﺪْﺗَﻪُ، [ﺇِﻧَّﻚَ ﻟَﺎ ﺗُﺨْﻠِﻒُ ﺍﻟْﻤِﻴﻌَﺎﺩَ ]».
(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৮৭)
★ধীরস্থিরতার সঙ্গে নামাজে যাওয়া
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন সালাত শুরু হয়, তখন দৌড়ে গিয়ে সালাতে যোগদান করবে না, বরং হেঁটে গিয়ে সালাতে যোগদান করবে। সালাতে ধীরস্থিরভাবে যাওয়া তোমাদের জন্য অপরিহার্য। কাজেই জামাতের সঙ্গে সালাত যতটুকুু পাবে আদায় করবে, আর যা ছুটে যায় পরে তা পূর্ণ করে নেবে।’
(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৯০৮)
★মসজিদে প্রবেশের সময় দোয়া পাঠ করা
আবু উসাইদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করে যেন এই দোয়া পড়ে—উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাফতাহ লি আবওয়াবা রহমাতিক, অর্থ : হে আল্লাহ! আমার জন্য আপনার রহমতের দ্বার উন্মুক্ত করুন।
(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৬৫২)
★মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় দোয়া পড়া
আবু উসাইদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আর (যখন কেউ) মসজিদ থেকে বের হয় সে যেন পাঠ করে—উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসয়ালুকা মিন ফাদলিক, অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি।
(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৬৫২)
,
★রাসূলুল্লাহ ﷺ-পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামাজের পূর্বে ও পরে বার রাকাত সুন্নত নামাজ নিয়মিত আদায় করতেন, বিশেষ কোন কারণ ছাড়া তা ত্যাগ করতেন না। এই জন্য এই বার রাকাত সুন্নতকে সুন্নাতে মুআক্কাদা বলা হয়।
এই বার রাকাত সুন্নত সালাতের অনেক বড় ফযীলত রয়েছে।
হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ ثَابَرَ عَلَى اثْنَتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً بَنَى اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ، أَرْبَعًا قَبْلَ الظُّهْرِ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الظُّهْرِ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعِشَاءِ، وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْفَجْرِ
আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি দিবা-রাত্র বার রাকাত (সুন্নাতে মুআক্কাদা) আদায়ে অভ্যস্ত হয়ে যায় আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর বানিয়ে রাখেন। চার রাকাত জোহরের ফরয নামাযের পূর্বে এবং দু’রাকাত জোহরের ফরয নামাজের পরে, দু’রাকাত মাগরিবের ফরয নামাজের পরে, দু’রাকআত ইশার ফরয নামাজের পরে এবং দু’রাকআত ফজরের ফরয নামাজের পূর্বে।
(সুনানে নাসায়ী ১৭৯৫)
সূর্যোদয় পর্যন্ত জায়নামাজে অপেক্ষা করা : জাবির ইবনে সামুরা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ফজরের নামাজ আদায় করার পর ভালোভাবে সূর্য ওঠা পর্যন্ত নামাজের স্থানে বসে থাকতেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৫২৬)
জুমার দিন গোসল করা : আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন পেলে তোমরা গোসল করো।’
(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৭৭)
জুমআর দিনের সুন্নাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ
,
গোসলের আগে অজু করা : আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী (সা.) ফরজ গোসল করার সময় প্রথমে দুই হাত ধুতেন। অতঃপর নামাজের অজুর মতো অজু করতেন। এরপর তাঁর আঙুলগুলো পানিতে ডুবিয়ে নিয়ে চুলের গোড়া খিলাল করতেন। এরপর তাঁর উভয় হাতের তিন আজলা পানি মাথায় ঢালতেন এবং তাঁর সারা শরীরে পানি ঢেলে দিতেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৪৮)
প্রত্যেক অজুর পর দুই রাকাত নামাজ আদায় করা : উসমান ইবনে আফফান (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার মতো এই রকম অজু করবে, অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে, যাতে দুনিয়ার কোনো খেয়াল করবে না, তার আগের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৫৯)
সব সময় আল্লাহর জিকির করা : আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) সর্বাবস্থায় আল্লাহর জিকির বা স্মরণ করতেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৮২৬)
হাঁচির উত্তর দেওয়া : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ হাঁচি দেয় সে যেন বলে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ (সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য) আর তার সাথিরা বলবে, ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ (আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করুন), হাঁচিদাতা বলবে, ‘ইয়াহদিকুমুল্লাহ ওয়া ইয়ুসলিহ বালাকুম’ (আল্লাহ তোমাকে সুপথ দিন এবং তোমার কল্যাণ করুন)। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬২২৪)
রোগীর জন্য দোয়া করা : আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) একজন রোগীকে দেখার জন্য যান এবং বলেন, কোনো ক্ষতি নেই, ইনশাআল্লাহ! তুমি গুনাহ থেকে পবিত্রতা অর্জন করবে। ...’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৬৬২)
★ঘরের কাজে সহযোগিতা করা : আসওয়াদ (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, মহানবী (সা.) ঘরে কী করতেন? তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) ঘরের মানুষদের সহযোগিতা করতেন এবং নামাজের সময় হলে নামাজের জন্য যেতেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৭৬)
★বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা : আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা কোরআন তিলাওয়াত করো। কেননা তা কিয়ামতের দিন তার সঙ্গীর জন্য সুপারিশকারী হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৮৭৪)
★দুপুরে খানা খেয়ে কিছুক্ষন কায়লুলা করা।
তবু এক্ষেত্রে ঘুমানো সুন্নাত নয়।
,
ইহা ছাড়া দিনের বেলা তিনি রাষ্ট্র প্রধান হওয়ার কারনে দেশের বিচার, খেলাফতের যাবতীয় কাজ আঞ্জাম দিতেন।
,
★রাতে অজু করে ঘুমানো : বারা ইবনে আজেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন তুমি বিছানায় যাবে তখন তুমি অজু করবে—নামাজের সময় যেমন করো। অতঃপর ডান পাশে ফিরে শয্যা গ্রহণ করবে। ...’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৩১১)
ঘুমের আগে তিন তাসবিহ পাঠ করা : আলী ইবনে আবি তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত, ফাতেমা (রা.) যখন মহানবী (সা.)-এর কাছে একজন সেবক চেয়েছিলেন, তখন রাসুল (সা.) বলেন, “আমি কি তোমাদের এমন কিছু সম্পর্কে জানাব না, যা তোমাদের জন্য একজন সেবকের চেয়ে উত্তম হবে? তোমরা যখন বিছানায় যাও তখন ৩৪ বার ‘আল্লাহু আকবার’, ৩৩ বার ‘সুবহানাল্লাহ’, ৩৩ বার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ পাঠ করো। এটা তোমাদের জন্য একজন সেবকের চেয়ে উত্তম হবে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৩১৮)
★ঘুমানোর আগে সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস তিলাওয়াত করা : আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘প্রতি রাতে নবী (সা.) বিছানায় যাওয়ার আগে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস পাঠ করে দুই হাত একত্র করে তাতে ফুঁক দিতেন এবং যতদূর সম্ভব সমস্ত শরীরে হাত বোলাতেন। মাথা ও মুখ থেকে আরম্ভ করে তাঁর দেহের সম্মুখভাগের ওপর হাত বোলাতেন। তিনি এভাবে তিনবার করতেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫০১৭)
★মহানবী (সা.) রাতকে ইবাদতের মুখ্য সময় মনে করতেন। রাতের প্রথম ভাগে নিদ্রা যেতেন। অবশিষ্ট রাত ইবাদতে অতিবাহিত করতেন। তাহাজ্জুদের নামাজ তাঁর ওপর ফরজ ছিল। ফলে শেষ রাতে ঘুম থেকে ওঠা বাদ যায়নি। রাতে তিনি কত রাকাত নামাজ পড়তেন এ ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা রয়েছে। জায়েদ ইবনে খালেদ আল জুহানি (রা.) বলেন, আমি একবার মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম যে আজ রাতে রাসুল (সা.)-এর রাতের নামাজের প্রতি লক্ষ রাখব। অতঃপর আমি দেখলাম যে তিনি ঘুম থেকে উঠে মিসওয়াক ও অজু করে সংক্ষিপ্ত দুই রাকাত নামাজ পড়েন। তারপর দীর্ঘায়িত করে দুই রাকাত নামাজ পড়েন। তারপর আরো দুই রাকাত নামাজ পড়েন, এ দুই রাকাত আগের দুই রাকাতের চেয়ে কিছুটা সংক্ষিপ্ত করেন। অতঃপর আরো দুই রাকাত নামাজ পড়েন,
এ দুই রাকাত আগের দুই রাকাতের চেয়ে কিছুটা সংক্ষিপ্ত করেন। অতঃপর আরো দুই রাকাত নামাজ পড়েন, এ দুই রাকাত ছিল আগের দুই রাকাতের চেয়েও সংক্ষিপ্ত। তারপর আরো দুই রাকাত নামাজ পড়েন, তা ছিল আগের দুই রাকাতের চেয়ে সংক্ষিপ্ত। অতঃপর বিতর নামাজ পড়েন। সর্বমোট নামাজ পড়েছেন ১৩ রাকাত।
(মুসলিম, মুয়াত্তা ও আবু দাউদ)
,
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) রাতের নামাজ কখনো ৯ রাকাত পড়তেন, কখনো ১১ রাকাত, কখনো ১৩ রাকাত পড়তেন, তন্মধ্যে বিতর নামাজও থাকত। তিনি মাঝেমধ্যে রাতে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তেন। আবার মাঝেমধ্যে দীর্ঘ সময় বসেও নামাজ পড়তেন। তিনি যখন দাঁড়িয়ে কিরাত পাঠ করতেন, তখন রুকু-সিজদাও বসে করতেন। আর যখন ঊষার আবির্ভাব হতো তখন তিনি ফজরের দুই রাকাত সুন্নত পড়তেন। অতঃপর মসজিদের উদ্দেশে বের হতেন এবং লোকদের ফজরের নামাজ পড়াতেন। (মুসলিম)
★ইবনে আব্বাস রা: বলেন : ‘রাসূলুল্লাহ সা: সফর ও মুকিম অবস্থায় কখনো আইয়ামে বিজ (প্রতি আরবী মাসের ১৩.১৪.১৫ তারিখের রোযা) এর রোজা ভঙ্গ করতেন না’ (নাসায়ী)।
,
প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা যেতে পারে।
★রাসূল সাঃ নিজে বৃহস্পতি ও সোমবার রোজা রাখতেন। তাই এদিন রোজা রাখা রাসূল সাঃ এর সুন্নত। হাদীসে এসেছে-
عن أبى قتادة الأنصارى رضى الله عنه أن رسول الله -صلى الله عليه وسلم- سئل عن صوم الاثنين فقال « فيه ولدت وفيه أنزل على
হযরত আবু কাতাদা আনসারী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ কে সোমবার দিনে রোযা রাখার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ এ দিন আমি জন্ম নিয়েছি, আর এদিনই আমার উপর [কুরআন] নাজিল হয়েছে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৮০৭, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-২১১৭, মুসনাদে আবী আওয়ানা, হাদীস নং-২৯২৬, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২৫৫০, সুনানে আবী দাউদ, হাদীস নং-২৪২৮}
★ইস্তেখারার নামাজ পড়া : জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে বিভিন্ন কাজের ব্যাপারে ইস্তেখারা করতে শিখিয়েছেন, যেমন তিনি আমাদের কোরআনের সুরা শেখাতেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৬২)
★দৈনন্দিন আমলের বিস্তারিত রুটিন জানুনঃ
.
আরো জানার জন্য রাসুল সাঃ এর সুন্নাত সংক্রান্ত কিতাব সমুহ পড়তে পারেন।