আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
408 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (63 points)
আমার স্বামী রাগের মাথায় ছেড়ে দিব বলেছিল নাকি ছেড়ে দিলাম বলেছিল আমাদের দুজনেরই মনে নেই। এরকম অবস্থায় কি আমরা স্বাভাবিক ভাবে আল্লহর কাছে পবিত্র হিসেবেই গন্য হবো নাকি আমরা তালাক হিসেবে ধরে নিবো।

যেহেতু ব্যাপারটা আমাদের ক্ষেত্রে পরিষ্কার না কি বলেছিল।আমাদের কারোরই মনে নেই। আমাদের কি করা উচিত।যদি তালাক হিসেবেও ধরে নেই তবে এটার সমাধান কি??   অনুরোধ আমাদের একটা সমাধান দিন। আমরা নিজেদের ওপর সন্তুষ্ট কিন্তু এটা একটা দূর্ঘটনা ঘটে গেছে। আমরা আল্লহকে সন্তুষ্ট করতে চাই।অনেক ভয় হচ্ছে।আল্লহ আমাদের ওপর সন্তুষ্ট থাকলেই আমরা খুশি।

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

যদি স্বামী ছেড়ে দিবো বলে,তাহলে তো এটি ওয়াদা মাত্র,তাই কোনো ভাবেই এই বাক্য বলার দ্বারা তালাক হবেনা।
,
আর যদি বলে যে তোমাকে ছেড়ে দিলাম,তাহলে এক তালাক পতিত হয়ে গেছে।

'তোমাকে ছেড়ে দিলাম' ‘তোমাকে মুক্ত করে দিলাম’ বা ‘স্বাধীন করে দিলাম’ শব্দগুলো প্রচলনে সারীহ বা স্পষ্ট তালাকের স্থলে ব্যবহার হয়ে থাকে। 
আর সারীহ তালাকের ক্ষেত্রে নিয়তের প্রয়োজন হয় না। বরং যদি কেউ স্ত্রীকে কেবল ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যেও এজাতীয় কথা বলে তাহলেও এর দ্বারা তালাক হয়ে যায়। (জামিউল ফাতাওয়া ১০/১২০ কিতাবুন নাওয়াযিল ৯/২৯৩, ২৯৬, ২৯৯, ৩০০)

সুতরাং যদি স্বামী উক্ত বাক্য একবার বলে থাকেন তাহলে স্ত্রী এক তালাক এবং দুই বার বললে দুই তালাক আর তিন বা ততোধিক বার বললে তিন তালাক হয়ে গিয়েছে।

বিধান হল, এক তালাক বা দুই তালাক দেয়ার পর স্বামীর অধিকার থাকে, স্ত্রীকে ইদ্দত তথা তিন হায়েজ অতিক্রান্ত হওয়ার আগে রাজআত করা তথা স্ত্রীকে স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে আনা। এতে কোন কিছুর প্রয়োজন নেই। 

কিন্তু যদি তিন হায়েজ অতিক্রান্ত হওয়ার আগে স্ত্রীকে ফিরিয়ে না আনা হয়, তাহলে স্ত্রীকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে নতুন করে মোহর ধার্য করে বিবাহ করা আবশ্যক। নতুবা স্বামী স্ত্রী হিসেবে উভয়ের বসবাস করা জায়েজ নয়। (ফাতওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ-৯/৪৪১,২৪৫)

আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَالْمُطَلَّقَاتُ يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ ثَلاَثَةَ قُرُوَءٍ وَلاَ يَحِلُّ لَهُنَّ أَن يَكْتُمْنَ مَا خَلَقَ اللّهُ فِي أَرْحَامِهِنَّ إِن كُنَّ يُؤْمِنَّ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَبُعُولَتُهُنَّ أَحَقُّ بِرَدِّهِنَّ فِي ذَلِكَ إِنْ أَرَادُواْ إِصْلاَحًا

আর তালাকপ্রাপ্তা নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েয পর্যন্ত। আর যদি সে আল্লাহর প্রতি এবং আখেরাত দিবসের উপর ঈমানদার হয়ে থাকে, তাহলে আল্লাহ যা তার জরায়ুতে সৃষ্টি করেছেন তা লুকিয়ে রাখা জায়েজ নয়। আর যদি সদ্ভাব রেখে চলতে চায়, তাহলে তাদেরকে ফিরিয়ে নেবার অধিকার তাদের স্বামীরা সংরক্ষণ করে। (সূরা বাকারা ২২৮)
,

★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি স্বামী স্ত্রী দুইজনেরই সন্দেহ হয়ে গেছে যে আসলে কি বলেছে,তারা কেহই একীন হতে পারছেনা যে আসলে কি বলেছে?

সাথে সাথে স্ত্রী বা অন্য কোনো সাক্ষীর  স্বীকারোক্তির মাধ্যমে এমন কথা বলার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই এ কারণে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে কোন প্রভাব পড়েনি। প্রশ্ন করার দ্বারাও কোন সমস্যা হয়নি।

তাই অহেতুক দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত হবার কোন প্রয়োজন নেই।

منها: الشك هل تطلق ام لا؟ لم يقع (الأشباه والنظائر-1/196
সারমর্মঃ সন্দেহের মাধ্যমে তালাক পতিত হয়না।  

عدم الشك من الزوج فى الطلاق وهو شرط الحكم بوقوع الطلاق حتى لو شك فيه لا يحكم بوقوعه (بدائع الصنائع، كتاب الطلاق، فصل فى الرسالة-3/199)
সারমর্মঃ তালাকের ক্ষেত্রে সন্দেহ পাওয়া গেলে তালাক হয়না।
,
★তবে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনারা সতর্কতামূলক এক তালাকে রজয়ী  হয়েছে বলে ধরে নিবেন।

এক্ষেত্রে স্বামীর অধিকার আছে যে, স্ত্রীকে ইদ্দত তথা তিন হায়েজ অতিক্রান্ত হওয়ার আগে রাজআত করা (মৌখিক ভাবে বা স্বামীসুলভ আচরনের মাধ্যমে) তথা স্ত্রীকে স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে আনা। এতে কোন কিছুর প্রয়োজন নেই। 
,
তাই আপনার যদি ইদ্দত কাল শেষ না হয়ে থাকে,তাহলে স্বামী এক্ষেত্রে আপনাকে ফিরিয়ে নিতে পারবে। 
,
কিন্তু যদি তিন হায়েজ অতিক্রান্ত হওয়ার আগে স্ত্রীকে ফিরিয়ে না আনা হয়, তাহলে স্ত্রীকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে নতুন করে মোহর ধার্য করে বিবাহ করা আবশ্যক। নতুবা স্বামী স্ত্রী হিসেবে উভয়ের বসবাস করা জায়েজ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (63 points)
 উস্তাজ,ঘটনাটা তো অনেকআগে ঘটে গেছে।যেহেতু বিষয়টা সম্পর্কে জানা ছিল না তাই তালাক হবে কিনা এটাও জানতাম না।তবে কথাটা বলার পরের দিন ই আমাদের সব ঠিক হয়ে যায়।এখন এই মুহূর্তে যেহেতু সমাধানপেলাম তাহলে কি আজ থেকে ইদ্দত ধরে নিবো? 
by (657,800 points)
আর ইদ্দত পালনের দরকার নেই।
আপনারা নিশ্চিন্ত ঘর সংসার করতে পারেন।
কোনো সমস্যা নেই।    

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...