আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
169 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আমার স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্যর জের ধরে আমি তিনদিন ভিন্ন রুমে থাকি। পরিস্থিতি নিম্নরূপ -

আমার স্ত্রী সার্টিফিকেট খোজার নাম করে বাবার বাড়ি যেতে চায়। এজন্য সে আমাকে পীড়াপীড়ি করে। আমি তাকে বুঝিয়ে বলি, আমার তারাবি আছে। ১০ রমজানে খতম। এরপরে নিয়ে যাব। কিন্তু আমার স্ত্রী শোনেনা এবং বারবার একই আবদার করতে থাকে। যদিও আদরের সহিত। আমার এই পীড়াপীড়ি পছন্দ না। তাই আমি ভিন্ন রূমে থেকে তার সাথে তিনদিন কথা বলিনি। এরপর আবারো সে পীড়াপীড়ি করে আমার মার কাছে। তখন মার মারফত জানাই, একা যেতে পারবেনা। তোমার বাবা এসে কাবিননামা দিয়ে তোমাকে নিয়ে যাবে। আমার কাবিননামা তোলার জন্য তার বাবাকে জানানো হয়েছিল ১০ দিন আগে। তিনি টালবাহানা করছিলেন। উনার এলাকায় বিয়ে হয়েছিল এবং আমার কাছে রশিদ ছিল না।
যেদিন তার বাবা তাকে নিয়ে গেছে সেদিন ই তার কাছে যাবার নিয়ত করেছিলাম। আর বিছানা আলাদা করার উদ্দেশ্য হল, তার পীড়াপীড়ি থেকে মুক্ত থেকে তারাবি পড়া।
এরপর আমার স্ত্রী আমাকে না জানিয়েই তার বাবাকে ফোন করে আসতে বলে। ফোন করার পরেও সরাসরি আমাকে জানায়নি। আমি জুমার নামাজ পড়ে এসে দেখি তার বাবা বাসায়।

তার বাবার কাছে আমি তার ব্যাপারে অভিযোগ করি। এবং এমনটা  বলি, আল্লাহ তায়ালা স্ত্রীদের নিজ গৃহে অবস্থান করেছেন এবং রাসুল (সা.) অনুমতি থাকলে আল্লাহ ব্যতীতস্বামী কে সিজদা করতে বলতেন,  স্বামীর আনুগত্য ফরজ। আমি অনুমতি দিতে পারছিনা।
আমার অনুমতি না দেবার কারণ, স্ত্রী আমার অবাধ্য। স্ত্রী কথায় কথায় বাবার বাড়ি চলে যায় এবং আমার হক পরিপূর্ণ ভাবে আদায় করতে পারেনা। তারপর, তার বাবা কাবিননামা আনতে পারেননি।

মনোমালিন্যের জের ধরে সে আমার সাথে বেয়াদবি করছিল। যাবার সময় ও অনুমতি চায়নি। জিনিসপত্র যা ছিল সব নিয়ে গেছে।
এরপরেও জোর করে তার বাবা তাকে নিয়ে যায়। মুরুব্বি বলে আমি বাধা দিতে পারিনি৷ অনিচ্ছা সত্ত্বেও যেতে দিয়েছি।
এ নিয়ে তার বাবার সাথে আমার প্রচন্ড রাগারাগি হয়। যদিও আমি সামলে নিই। রাগারাগির কারণ ছিল বাবা মেয়ে মিলে আমার পরিবারের সামনে আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছিল। আমি ঠান্ডাভাবে বোঝালেও তারা শুনছিল না। যদিও শেষ মুহূর্তে সরি বলেছি বিনীত ভাবে।
আমি স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কবে আসবে? সে উত্তর দেয়নি। তার বাবা বলেছে, দুই তিন দিন পর গিয়ে নিয়ে আসতে।

এখন আমার স্ত্রীর প্রতি প্রচন্ড রাগ। আমি সবার সামনেই বলে ফেলি - তোমার উপর আমি অসন্তুষ্ট। আল্লাহ যদি তোমাকে জান্নাত দেন তবে যেন আমার সন্তুষ্টি ব্যতীতই দেন। আর তোমাকে যাতে জান্নাতে আমার সাথী না করেন।

আমার স্ত্রী আমাকে বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত করে যা তুলে ধরছি -

১। আমি নাকি নামাজ পড়িনা। যদিও বা বর্তমানে রমজান থেকে নিয়মিত নামাজ জামাতে পড়ি,তারাবিও পড়ি। তবে হা, মাঝে মাঝে মিস যায় এবং কাজা পড়ি।

২। আমি নাকি পড়াশুনা করিনা চাকুরির জন্য। সারাদিন মোবাইল টিপি। সত্যটা হল, আমি চকুরির পড়া পড়ি যদিও আপ টু দা মার্ক না, এবং পরীক্ষা ও দিই অনলাইনে। যদিও মাঝে মাঝে গ্যাপ যায়।

৩। আমার সিগারেট খাবার কথাও তার বাবাকে বলে দিয়েছে।
৪। আমি নাকি চাকুরির চেস্টা করিনা। অথচ আমি জবে এপ্লাই করি কিন্তু ইন্টারভিউ কল আসিনা। যদিও প্রতিদিন এপ্লাই করি তা নয়।
এমতাবস্থায়, ইসলামের বিধান কি?

১. আমার ওপর অপবাদ আরোপ হয়েছে কিনা? আমি যদি এজন্য তাকে বা তার পরিবার কে মন থেকে ক্ষমা না করতে পারি তবে কি কিয়ামতে এর বিচার পাব?

২. আমার স্ত্রীর পিতা কাজটি ঠিক করেছেন? আমার আপত্তি সত্ত্বেও মেয়েকে জোর করে নিয়ে গেছেন। যদিও তাকে আল্লাহর বিধান সম্পর্কে জানানো হয়েছিল।

৩. আমি আমার হক থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আমার স্ত্রীকে আমার চোখের সামনে দেখতে ভাল লাগে যতই বা রাগ করি। আমি এ হকের দাবি ছাড়তে চাইনা। এক্ষেত্রে, তার পিতা এবং আমার স্ত্রী কি আমার হক থেকে বঞ্চিত করছেন?

৪. অপবাদ আর স্ত্রীর অবাধ্যতা সহ্য করতে না পেরে শ্বশুরের সামনে আমি রাগান্বিত হয়ে চিল্লাপাল্লা করায় কি বেয়াদবি করেছি? যদিও খারাপ কথা বলিনি। ভাল কথাই বলেছি। এবং পরবর্তী তে মাফ চেয়ে নিয়েছি।  আমার স্ত্রী তার বাবার সামনেই আমার সাথে বেয়াদবি করছিল। তার বাবা তাকে শাসন না করে উল্টো আমাকে দোষারোপ করছিল।

৫. উপরোক্ত পরিস্থিতিতে কি স্ত্রী কুফরি করেছে? তাকে আল্লাহর বিধান সম্পর্কে জানানোর পরেও জোর করে আমার অনুমতি ছাড়াই বাবার বাড়ি গেছে। এক্ষেত্রে, কি বিয়ে নবায়ন করতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (588,060 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
وَإِنْ خِفْتُمْ شِقَاقَ بَيْنِهِمَا فَابْعَثُوا حَكَمًا مِّنْ أَهْلِهِ وَحَكَمًا مِّنْ أَهْلِهَا إِن يُرِيدَا إِصْلَاحًا يُوَفِّقِ اللَّهُ بَيْنَهُمَا ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا خَبِيرًا
যদি তাদের মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হওয়ার মত পরিস্থিতিরই আশঙ্কা কর, তবে স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিস নিযুক্ত করবে। তারা উভয়ের মীমাংসা চাইলে আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছু অবহিত।(সূরা নিসা-৩৫)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি আপনার স্ত্রীর সাথে সুন্দর ভাবে কথা বলবেন।আপনার স্ত্রীর উচিৎ ছিল যে, সে আপনার অনুমতি নিয়েই তার বাবার বাড়ি যাবে। আপনার সাথে সম্মানজনক কথা বলবে।

আপনি আপনার পরিবারের পক্ষ্য থেকে একজন এবং আপনার স্ত্রীর পরিবারের পক্ষ্য থেকে একজন লোককে সালিশ নিযুক্ত করবেন।তারাই আপনাদের মধ্যে সুষ্ট সমাধানের চেষ্টা করবেন। কার কি ভুল হবে? তারাই নির্ধারণ করে সমাধানের চেষ্টা করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (2 points)
উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...