আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
67 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (21 points)
আসসালামু আলাইকুম,
আমি সগীরা গুনাহ কি কি আছে সে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছি কিন্তু তেমন কিছুই জানতে পারিনি সংজ্ঞা আর এর পরিণাম ছাড়া, তাই যদি কোন কোন গুনাহ গুলিকে সগীরা গুনাহ বলে সে সম্পর্কে একটি লিস্ট বলতেন উপকার হতো।কারণ একটা বিষয় গুনাহ সেটা জানার পর আমি গুনাহের কাজ করছি কমপক্ষে সেই অনুভূতি তো আসে জোক তা সগীরা গুনাহ,তখন ইস্তিগফারের একটা সুযোগ ও তা না করার প্রবণতা তৈরি হয়।

1 Answer

0 votes
by (686,200 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


যে গুনাহর জন্য পার্থিব জীবনে হদ বা শাস্তি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, যেমন,নিরপরাধ মানুষ হত্যা, ব্যভিচার, চুরি ইত্যাদি। কিংবা যে পাপের জন্য পরকালে জাহান্নাম বা আল্লাহর ক্রোধ কিংবা অভিসম্পাতের কারণ বলে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে, যেমন,সুদ খাওয়া, মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া ইত্যাদি। এগুলো কবিরা গুনাহ। 

আর যেসব পাপের ব্যাপারে শরীয়তে কোনো শাস্তি, আল্লাহর ক্রোধ বা অভিশাপের কথা বলা হয়নি; বরং শুধুই শরীয়তে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, সেসব হলো সগিরা গুনাহ। 

তবে সেসব গুনাহও কবিরা গুনাহর অন্তর্ভুক্ত হবে, যার অনিষ্ট ও পরিণতি কোনো কবিরা গুনাহর অনুরূপ কিংবা তার চেয়েও অধিক।

আবার যেসব ছোট গুনাহ নির্ভয়ে করা হয় কিংবা নিয়মিতভাবে করা হয়, সেগুলোও কবিরা গুনাহর অন্তর্ভুক্ত হবে।

আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:

«إِنْ تَجْتَنِبُوْا كَبَائِرَ مَا تُنْهَوْنَ عَنْهُ نُكَفِّرْ عَنْكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ، وَنُدْخِلْكُمْ مُّدْخَلًا كَرِيْمًا»

‘‘তোমরা যদি সকল মহাপাপ থেকে বিরত থাকো যা হতে তোমাদেরকে (কঠিনভাবে) বারণ করা হয়েছে তাহলে আমি তোমাদের সকল ছোট পাপ ক্ষমা করে দেবো এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবো খুব সম্মানজনক স্থানে’’। (নিসা’ : ৩১)

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

اِجْتَنِبُوْا السَّبْعَ الْـمُوْبِقَاتِ، قَالُوْا: يَا رَسُوْلَ اللهِ! وَمَا هُنَّ؟ قَالَ: الشِّرْكُ بِاللهِ، وَالسِّحْرُ، وَقَتْلُ النَّفْسِ الَّتِيْ حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْـحَقِّ، وَأَكْلُ الرِّبَا، وَأَكْلُ مَالِ الْيَتِيْمِ، وَالتَّوَلِّيْ يَوْمَ الزَّحْفِ، وَقَذْفُ الْـمُحْصَنَاتِ الْـمُؤْمِنَاتِ الْغَافِلَاتِ.

‘‘তোমরা বিধ্বংসী সাতটি গুনাহ্ থেকে বিরত থাকো। সাহাবারা বললেন: হে আলাহ্’র রাসূল! ওগুলো কি? তিনি বলেন: আলাহ্ তা‘আলার সাথে কাউকে অংশীদার করা, যাদু আদান-প্রদান, অবৈধভাবে কাউকে হত্যা করা, সুদ খাওয়া, ইয়াতীম-অনাথের সম্পদ ভক্ষণ, সম্মুখযুদ্ধ থেকে পলায়ন এবং সতী-সাধ্বী মু’মিন মহিলাদের ব্যাপারে কুৎসা রটানো’’। (বুখারী ২৭৬৬, ৬৮৫৭; মুসলিম ৮৯)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
https://ifatwa.info/8971/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 

যে সব গুনাহ কবিরা বা বড় গুনাহ নয় সেগুলোকেই সগীরা বা ছোট গুনাহ বলা হয়। সগীরা গুনাহ সম্পর্কে জানতে হলে কবীরগুনাহগুলো জানতে হবে। অর্থাৎ যে সকল গুনাহ কবীর পর্যায়ের নয় সেগুলোই সগীরা।
এর কোন সীমা সংখ্যা নাই। 
*কতিপয় সগীরা বা ছোটগুনাহ*
কোন পর নারীর দিকে অনিচ্ছাকৃত দৃষ্টিপাত করা, 
জুমার ২য় আযানের সময় বেচাকেনা করা, 
নামাযরত অবস্থায় এদিক ওদিকে দৃষ্টিপাত করা, 
নামায অবস্থায় কাপড়, দাড়ি, বা শরীরের কোন অঙ্গ নিয়ে খেলা করা, 
বিয়ের প্রস্তাবের উপর তার চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে অন্যজন প্রস্তাব করা, 
বেচাকেনার ক্ষেত্রে কেউ দরদাম করছে এমতবস্থায় তার শেষ হওয়ার আগে আরেকজন এসে দরদাম শুরু করা, 
স্ত্রীকে এক বৈঠকে একাধিক তালাক দেয়া, 
ঋতু চলাকালীন সময়ে তালাক দেয়া
অতিরিক্ত ঝগড়া-ঝাটি করা, 
গীবত শুনে চুপ থাকা, 
পাপী লোকদের সাথে (দাওয়াত দেয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া) উঠাবসা করা, 
খোলা স্থানে কিবলার দিকে মুখ করে বা কেবলাকে পেছনে করে পেশাব-পায়খানা করা, 
বিনা প্রয়োজনে উপকারহীন কথাবার্তা বলা ইত্যাদি।
*তবে মনে রাখা প্রয়োজন*
বিজ্ঞ আলিমগণ বলেছেন:
_কোন ছোট গুনাহকে যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বারবার করে বা তুচ্ছ মনে করে করে তখন তা আর ছোট থাকে না বরং তা বড় গুনাহে পরিণত হয়।(সংগৃহিত)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...