বিবিধ প্রশ্ন:
১। স্ত্রীর জন্য স্বামীর আনুগত্য ফরজ। এখন স্বামীর আদেশ সাপেক্ষে ঘরের কাজ করা / শ্বশুর শ্বাশুড়ির খেদমত করা কি ফরজ নাকি ওয়াজিব?
২। স্ত্রী জানে যে, স্বামীর আনুগত্য ফরজ। যদি শরীয়তে বৈধ এমন ব্যাপারে স্ত্রী স্বামীর আনুগত্য না করে তবে কি স্ত্রী কাফির হয়ে যাবে এবং বিয়ে নবায়ন করতে হবে? উদাহরণ: স্বামী স্ত্রী কে রান্নার আদেশ দিল অথচ স্ত্রী বলল সে রান্না করতে পারবেনা। আবার স্ত্রী সুস্থ থাকাবস্থায় স্বামীর সাথে সহবাসে আপত্তি জানাল।
৩। কেউ ফরজ বিধান জানে অথচ পালন করেনা অথবা মনে মনে বিরক্ত হয়। সে কি কাফির হয়ে যাবে? যদিও বা সে ফরজ কে ফরজ ই মানে
৪। নিম্নোক্ত পোস্টকারী কি সহিহ হাদিস বিকৃত করায় কাফির বলে গণ্য হবে? উল্লেখ্য, এই পোস্টের কমেন্টে তাকে সহিহ হাদিসের রেফারেন্স দেয়া হয়েছে তবুও সে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করেনি।
হাদীস বিকৃতকারী মিজানুর রহমান আজহারী, আহমাদুল্লাহ, আবরারুল আসিফ!
মূল হাদীস: তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে তার পরিবারের নিকট উত্তম।
5x বিকৃত করার পর: তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম।
10x বিকৃত করার পর: "স্ত্রীর সার্টিফিকেট ছাড়া কোনো পুরুষ আল্লাহর জান্নাতে প্রবেশ করবে না।" "আপনার স্ত্রী যদি আপনাকে F দেয়, তাহলে আল্লাহ দিবেন F. আপনার স্ত্রী যদি আপনাকে ১ দেয় তাহলে আল্লাহ দিবেন ১"
তারপর আছে "মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত "
তাহলে কয়জন নারীর উপাসনা করা লাগবে দোযখ ঠেকাইতে?
এরা indirectly বলতে চায় যে, "ইসলামে মূর্তিপূজা হারাম - নারীপূজা করা ফরজ" ।
আজ বুঝলাম কেন ডক্টর মুফতি এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী হাফিজাহুল্লাহ্ আজহারীকে কাফির ফতোয়া দিয়েছিলেন ভুল বক্তব্যের জন্য। (ঐ বক্তব্য টা অবশ্য ভিন্ন প্রসঙ্গে ছিল)
আল্লাহ তাআলা আমাদের এসব শায়েখদের ফিৎনা থেকে রক্ষা করুন।
৫। আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কুরান/হাদিস/ফতোয়ার আলোকে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন মন্তব্য করে থাকি। হতে পারে, সেই পরিস্থিতিতে সেই কথাটা ভুল। আবার এটাও হতে পারে আমরা ভুলভাবে ব্যখ্যা করেছি। আবার হতে পারে আমরা যে রেফারেন্স এর ভিত্তিতে কথা বলছি তা প্রাসঙ্গিক নয়।
কিন্তু হা, আমরা যা বলি তার পক্ষে কোন না কোন রেফারেন্স আছে যার ওপর ভিত্তি করে আমরা বলি। এগুলো কি জায়েজ আছে? (উল্লেখ্য, আমাদের মনে হয় ওই পরিস্থিতিতে অমুক ফতোয়ার ভিত্তিতে কথা বলা উচিত)
৬। ৪ নং প্রশ্নে একটি পোস্ট তুলে ধরা হয়েছে। সেই পোস্টের আলোকে প্রশ্ন-
i) আমি পোস্টকারী আর পোস্ট যে গ্রুপে করা হয়েছে সেই গ্রুপের এডমিনকে দুর্বল ঈমানের বলেছি। এর কারণ হচ্ছে, পোস্টকারী একটা সহিহ হাদিস " তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তি উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম" কে বিকৃত বলেছে (জেনে বলেছে নাকি না জেনে বলেছে সেটা আল্লাহ ভাল জানে) এবং আমি কমেন্টে সহিহ হাদিসের রেফারেন্স দিয়েছি যাকে সে বিকৃত বলেছে। আর গ্রুপের এডমিন এই ধর্মীয় বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট এপ্রুভ করেছে। এখন আমার এ মন্তব্য কি অনুচিত হয়েছে? আমি মূলত হাদিসের প্রতি আবেগ থেকে বলেছি। আমার মন্তব্য ছিল -
"কি পরিমাণ আহাম্মক হইলে হাদিসের কমেন্টে হাহা দেয়। আল্লাহর রাসুল (সা) এর হাদিস নিয়ে মশকরা করে। আবার এডমিন এই আহাম্মক রে গ্রুপেও রাখসে।
ঈমান এত দুর্বল হইলে তো সমস্যা"
এই কমেন্টের পূর্বে আমি আরেকটি কমেন্ট করেছিলাম:
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে ঈমানে পরিপূর্ণ মুসলমান হচ্ছে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তি। যেসব লোক নিজেদের স্ত্রীদের নিকট উত্তম তারাই তোমাদের মধ্যে অতি উত্তম।
হাসান সহীহ্, সহীহা (২৮৪)
ফুটনোটঃ
আইশা ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্।
জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ১১৬২
হাদিসের মান: হাসান সহিহ
Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD
হাদিস বিকৃত করা হয়নাই৷ আর লিংক থেকে যা বুঝলাম বাড়িয়ে বাড়িয়ে ও বলেনাই। হাদিসের আলোকেই বলেছে।
হুদাই পোস্টের রিচ বাড়ানোর ধান্দা
ii) উপরে যে সহিহ হাদিসের রেফারেন্স দিয়ে কমেন্ট করলাম তাতে অনেকে হাহা দিয়েছে। এভাবে, সহিহ হাদিস বা ফতোয়ার কমেন্টে যারা হাহা দেয়,কটাক্ষ করে তারা কি ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে? আর আমি এদের কাফির বলে গালি দিয়ে ফেললে কি গুনাহ হবে? মূলত, আমার মনে হয় তারা হাদিসকে ঠাট্টা করছে আর আমি তা মেনে নিতে পারিনা বলে গালি দিয়ে ফেলি।
৭। স্বামী তালাক দিয়ে দেয়ার পর কি সাথে সাথেই স্ত্রী কে স্বামীর সাথে পর্দা করতে হবে? বা প্রাক্তন স্বামীর সাথে পর্দার হুকুম কি।