আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
554 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (10 points)
edited by
১। উস্তায এক তালাকে বায়েন হলে যে স্ত্রীর সাথে কোনো রকম অন্তরঙ্গতা এবং নির্জনাবাস হয়নি তার জন্য কি এই বায়েন তালাকের ইদ্দতকাল থাকবে?
বায়েন তালাকের ইদ্দতকাল থাকলে কত হবে উস্তায? থাকলে এই ইদ্দতকালের মধ্যে স্পষ্টত আরও তালাক দিলে তা কি প্রযোজ্য হবে? এক তালাকে বায়েন হয়েছিলো মুযাকারে প্রেক্ষাপটে কেনায়া বাক্য দ্বারা। স্বামীর তালাকের কোনো নিয়ত ছিলো না। ইত্তিলা করেছিলো। মেসেজের মাধ্যমে স্ত্রীকে জানায় "আমাদের এখন সম্পর্ক নেই যেহেতু তুমি চেয়েছিলে।" পরের বাক্যে আলাদা করে স্ত্রীকে লেখেন "শুধু মেসেজ করো।" স্বামী মেসেজ দুটো করেন স্ত্রীর মেসেজের রিপ্লাইতে। স্ত্রী আলাদা আলাদা আলদা  বাক্যে মেসেজ করেছিলেন "গ্রামের বাড়িতে আছি। এখানে ঘন্টায় ঘন্টায় সবাই আমাকে জিজ্ঞেস করছে। আমি বিবাহিত নাকি ডিভোর্সি আমি না বুঝতে পারছি না। আপনার সাথে জরুরি কিছু বিষয়ে কথা ছিলো। আপনি সময় দিলে কল করতাম। আমরা আজই চলে যাব।" স্ত্রীর মনে নিয়ত ছিলো স্বামীর আজ কথা বলার সুযোগ দিলে তালাকের আবেদন করবেন না। স্ত্রীর মন নমনীয় ছিলো। কিন্তু স্বামীর রিপ্লাইটা নেগেটিভলি আসে। পূর্বে স্বামী অনেক কথা বলতে চাইলে স্ত্রী কল রিসিভ করতেন না। এড়িয়ে যেতেন৷ স্বামী অনেকভাবে কনভিন্স করতেন। কিন্তু স্ত্রী অনঢ ছিলেন। আর মেসেজ আদান প্রদানের সময় অনলাইন অফলাইন উভয় প্রেক্ষাপট মুযাকারা ছিলো। পরিবারের সবাই জানতেন স্ত্রী চাইছে বলে বাধ্য হয়ে স্বামী ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে আর অনলাইন প্রেক্ষাপটটাতো আগে থেকেই মুযাকারা প্রেক্ষাপট হয়ে আছে যেহেতু স্ত্রী আগে থেকেই ডিভোর্স চেয়ে আসছে। স্বামী স্ত্রীর বহুদিন ফোনে কথা না হলেও প্রায় মেসেজ কনভারসেশনে স্ত্রীর তালাকের আবেদন স্পষ্টত ফুটে উঠত। স্বামী কাবিননামার শর্ত ভঙ্গ করেননি স্ত্রী তাও তালাক চেয়ে আসছিলেন।

২। মুযাকারা প্রেক্ষাপটে কেনায়া বাক্যে এক তালাকে বায়েন হলে এরপর এক মাস না হতেই স্বামী রেজয়ী  তালাকের নোটিশ এবং স্বামী একা নিজে সম্পূর্ণ মৌখিকভাবে স্পষ্টত তিন তালাক দিলে এবং স্ত্রীকে তা মেসেজে লিখে দেয়। স্বামী স্ত্রীর কোনো রকম অন্তরঙ্গতা বা নির্জনাবাস হয়নি। স্বামী স্ত্রী কি পুনরায় বিয়ে করতে পারবেন হালালা ব্যতীত?

৩। আর উস্তায এক্ষেত্রে কি তাকদীমূল ঈ'কা হয়েছে? তাকদীমূল ঈ'কা হলে কী স্বামী স্ত্রী হিশেবে থাকতে পারবেন আবার  বিয়ে করে? তাকদীমূল ঈ'কা টা বিস্তারিত জানতে চাচ্ছিলাম উস্তায?

বিস্তারিত প্রেক্ষাপটটা আগে যে প্রশ্ন করা হয়েছিলো এই লিংকে
https://ifatwa.info/71637/?show=71695#a71695

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نَکَحۡتُمُ الۡمُؤۡمِنٰتِ ثُمَّ طَلَّقۡتُمُوۡہُنَّ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ تَمَسُّوۡہُنَّ فَمَا لَکُمۡ عَلَیۡہِنَّ مِنۡ عِدَّۃٍ تَعۡتَدُّوۡنَہَا ۚ فَمَتِّعُوۡہُنَّ وَ سَرِّحُوۡہُنَّ سَرَاحًا جَمِیۡلًا ﴿۴۹﴾ 

হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা মুমিন নারীদেরকে বিয়ে করবে, তারপর তাদেরকে স্পর্শ করার আগে তালাক দিবে, তখন তোমাদের জন্য তাদের পালনীয় কোন ইদ্দত নেই যা তোমরা গুণবে। সুতরাং তোমরা তাদেরকে কিছু সামগ্ৰী দেবে এবং সৌজন্যের সাথে তাদেরকে বিদায় করবে।
(সুরা আহযাব ৪৯)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
যে স্ত্রীর সাথে কোনো রকম অন্তরঙ্গতা এবং নির্জনবাস হয়নি,তাকে এক তালাকে বায়েন দেয়া হলে তার জন্য এই বায়েন তালাকের ইদ্দতকাল থাকবেনা।

যেহেতু তাদের মাঝে খালওয়াতে সহীহাহ হয়নি,তাই এই তালাকের পর আরও তালাক দিলে তা প্রযোজ্য হবেনা।

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
এক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী শরয়ী হালালাহ ব্যাতিত পুনরায় বিয়ে করতে পারবে।

ফাতওয়ায়ে শামীতে আছেঃ-

قوله: وكذا في وقوع طلاق بائن آخر إلخ) في البزازية: والمختار أنه يقع عليها طلاق آخر في عدة الخلوة، وقيل: لا اهـ وفي الذخيرة: وأما وقوع طلاق آخر في هذه العدة، فقدقيل: لايقع، وقيل: يقع، وهو أقرب إلى الصواب؛ لأن الأحكام لما اختلفت يجب القول بالوقوع احتياطاً، ثم هذا الطلاق يكون رجعياً أو بائناً ذكر شيخ الإسلام أنه يكون بائناً اهـ ومثله في الوهبانية وشرحها".
সারমর্মঃ
খালওয়াতে সহীহাহ এর পর ইদ্দতের মধ্যে আরেকটি তালাক প্রদান করলে সেটি পতিত হবে কিনা,সেই ব্যাপারে মতবিরোধ রয়েছে। 
কেহ কেহ বলেছেন যে এই তালাক পতিত হবেনা।
কেহ কেহ বলেছেন যে তালাক পতিত হবে।       
এটিই সঠিকতার বেশি নিকটতম মত।
কেননা শরয়ী আহকাম সংক্রান্ত যদি মতবিরোধ হয়,সেক্ষেত্রে সতর্কতামূলক পতিত হওয়ার হুকুমই ওয়াজিব হয়। 
ফাতাওয়ায়ে শামী ৩/১১৯

বিস্তারিত জানতে উপরের লিংক দ্রষ্টব্য।

(০৩)

এ বিষয়ে রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত রয়েছে,

"(قَوْلُهُ: وَهِيَ حَالَةُ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ) أَشَارَ بِهِ إلَى مَا فِي النَّهْرِ مِنْ أَنَّ دَلَالَةَ الْحَالِ تَعُمُّ دَلَالَةَ الْمَقَالِ قَالَ: وَعَلَى هَذَا فَتُفَسَّرُ الْمُذَاكَرَةُ بِسُؤَالِ الطَّلَاقِ أَوْ تَقْدِيمِ الْإِيقَاعِ كَمَا فِي اعْتَدِّي ثَلَاثًا وَقَالَ قَبْلَهُ الْمُذَاكَرَةُ أَنْ تَسْأَلَهُ هِيَ أَوْ أَجْنَبِيٌّ الطَّلَاقَ".

( كتاب الطلاق، بَابُ الْكِنَايَاتِ، ٣ / ٢٩٧)

মুযাকারায়ে তালাকের অর্থ হল, স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন করা ,অথবা তৃতীয় কোনো ব্যক্তির পক্ষ থেকে স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন এবং তামান্না করা। এই উভয় প্রকারকে 'মুতালাবায়ে তালাক' নামে অভিহিত করা হয়।তাছাড়া স্বামী যদি ইতিপূর্বে স্ত্রীকে এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকে,তাহলে এদ্বারাও মুযাকারায়ে তালাক প্রমাণিত হবে।এই তৃতীয় প্রকারকে তাকদীমূল ঈ'কা বলা হয়ে থাকে।(রদ্দুল মুহতার-৩/২৯৭)

★স্বামী যদি পূর্বেও স্ত্রীকে তালাক দিয়ে থাকে,এবং এখন কেনায়া বাক্য বলেছে, সেক্ষেত্রে পরবর্তী তালাকের ক্ষেত্রে যদি স্ত্রী তালাকের আবেদন করে,আর স্বামী কেনায়া তালাকের বাক্য বলে,সেক্ষেত্রে তালাক পতিত হবে। 
এটিকেই তাকদীমূল ঈ'কা বলা হয়ে থাকে।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তাকদীমূল ঈ'কা হয়নি।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
edited
উস্তায বিয়ের পর আবদ্ধ নয় খোলামেলা পরিবেশে কিছু সময় ঘন্টা খানেক স্বামী স্ত্রী স্বাভাবিক কথা বার্তা বলেন। স্বামী স্ত্রী সুলভ কথা বার্তা নয়। স্বামী স্ত্রীকে স্পর্শ পর্যন্ত করেননি। এরপর স্বামী বিদেশ চলে যান। অনলাইনেও তাদের মাঝে স্বামী স্ত্রী সুলভ কোনো কথা বা আচরণ ছিলো না। স্বামী স্ত্রীকে কখনও সতর উন্মুক্ত অবস্থাতেও দেখেননি৷ এমনকি ছবিতেও না। এক্ষেত্রেও কি খালওয়াতে সহীহা প্রযোজ্য হবে? বিয়ের ছয় মাসে এই ডিভোর্সের ঘটনাগুলো ঘটে। বিয়ের পর দু মাস মাঝে মাঝে তাদের সামান্য ফোনে কথা হত তাও স্বামী স্ত্রী সুলভ নয়। তাদের মধ্যে কখনও ভিডিও কলেও কোনো কথা হয়নি। মেসেজ অডিওতে প্রায় কনভারসেশন হলেও তাতে স্ত্রীর তালাকের আবেদন থাকত। পারিবারিক পারিপার্শ্বিক মনোমালিন্যতা থাকত। এরপর দীর্ঘ দিন কনভারসেশন বন্ধ থাকলে মাঝে মাঝে যখনই মেসেজ হত তাতে মনোমালিন্যতা আর তালাকের আবেদন ফুটে উঠত। তারা স্বামী স্ত্রী সুলভ সময় পার করেননি অনলাইনেও না। অফলাইনে তো সম্ভবই ছিলো না। কথাও তেমন হতো না ফোনে।
by
উস্তায ইদ্দতকাল যদি না থাকে তাহলে স্পষ্টত আরও তালাক দিলে তা প্রযোজ্য হবে?
এক বায়েন তালাকের পর যেহেতু সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তখন বিবাহ করা ব্যাতিত আর কোনো তালাক নাকি পতিত হয় না? 
by (10 points)
edited by
খোলামেলা বলতে স্ত্রীর বাসার একটা ঘর যার দরজা খোলা ছিলো। স্বামী স্ত্রী কথা বলার মাঝে প্রায়ই স্ত্রীর মা বাবা, বোন এবং স্বামীর মা প্রয়োজনে আশা যাওয়া করেছিলেন নাস্তা দিতে নিতে কথা বলতে। তবে স্ত্রী সাজগোজহীন হিজাব এবং সতরসহ সাধারণ স্বাভাবিক পোশাকে ছিলেন। ওনাদের উত্তেজনা মূলক কোনো কথা বার্তা কিছু হয়নি। কারো আচরণেও প্রকাশ পায়নি। সাধারণ স্বাভাবিক সব কিছুটা প্রয়োজনে নন মাহরামদের সাথে যেমন কথা বলা যেতে পারে  তেমন। স্ত্রীর মা স্বামীকে আকদের আংটিটা পরিয়ে দিতে বললে স্বামী স্ত্রীর হাত না ধরেই শুধু আংটিটা আঙ্গুলে পরিয়ে দেন। 
by (565,890 points)
প্রশ্নের বিবরণ মতে খালওয়াতে সহীহাহ হয়নি।
by
reshown
উস্তায অনুগ্রহপূর্বক যদি দেখতেন 
https://ifatwa.info/72718/

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...