-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
পরিবার: আব্বু ,আম্মু আর আমরা ২বোন। বড় আপুর বিয়ে হইছে। ৪/৫ আগে প্রথম ছেলে হইছে। আমাদের ঘরে সব কিছু আম্মুর কথা মতো হয়। ছোট থেকে দেখে আসছি। আগে থেকেই আমাদের ঘরে যে কোনো সিদ্ধান্তে আমার আব্বু নিরব দর্শক। আগে কেন নিরব দর্শক ছিলো জানিনা এখন নিরব দর্শক কারন এখন না আছে তার টাকা জোর না আছে শারীরিক জোর।
প্রথম দেখে বলেছি আম্মু আমার ছেলে পছন্দ না। ছেলে দ্বীনদ্বার না। অন্য কোনো দ্বীনদ্বান ছেলে দেখ। আমি রাজি। আম্মু কসম কাটে বলে যে, আমার জন্য অন্য কোনো ছেলে দেখবো না। দুই বছর ধরে আমার মা আমাকে এক বেদ্বীন ছেলে সাথে বিয়ে দেওয়া জন্য জোর করছিল।
রাজি না হওয়ায় কারন, ইসলামে বলা হয়েছে ছেলে মেয়ে একে অপরকে দেখে পছন্দ হলে বিয়ে দাও। প্রথম দিন দেখেই ছেলে কে আমার পছন্দ হয়নি, ছেলে কে আমার আব্বু,বড় আপুর ও পছন্দ হয়নি। ছেলে কোনো পড়া লেখা নাই। বাংলা ও পড়তে পারে না। কুরআন পড়তে জানে না। ছেলে বয়স ৩৫ বছর। আমার থেকে ১৫ বছরের বড়। দ্বীন-দ্বারীতা থাকলে সৌন্দর্য,পড়া লেখা না জানা ,বয়সে বড় তাও সব মেনে নিতাম। কিন্তু দ্বীন-দ্বারীতা নাই ,জুম্মার নামাজ ও ঠিক মতো পরে না। দেখে মনে হয় জন্ম গত মুসলিম , পর্দার গুরুত্ব জানে না। ইসলাম সম্পর্কে কোনো ধারণা নাই। আমাদের ছেলের ব্যবহার ও ভালো লাগে নাই।
আম্মুর পছন্দ কারন ছেলে ২৫/৩০ হাজার টাকা বেতন পায়, জোর আমাদের কোনো ভাই নাই ছেলে বলেছে আম্মু আব্বু কে সারাজীবন দেখবো।
প্রথম দিকে আমি রাজি না দেখে হিন্দু বাড়ি থেকে তাবিজ আর পানি পরা আনতো। সেই পানি আমাকে খাওয়াই তো আর গোসল করাই তো । আমি জানি তাবিজ ব্যবহার ইসলামে জায়েজ নাই আর হিন্দু বাড়ি থেকে আনা তা তো হারাম। আমি পানি পরা খেতে চাইতাম না আমাকে জোর করে খাওয়াত আমার সামনে বসে থাকতো যে আমি পানি পরা খাই না ফেলে দেই। সেই পানি দিয়ে নিজের আমাকে গোসল করাইয়া দিতো।পরে আমার শরীরের নরমাল পানি ইউজ করলে জ্বলতও। এর পর রাজি না হওয়ায় আমাকে ৪ দিন ঘর থেকে বের হতে দেয় নাই, আমার ফোন নিয়ে নিচ্ছিলো। তাবিজ কবজ যা করবো মানবো বলায় আমাকে বের হতে দিছে। গনকের কাছে জোর আমার হাত দেখাইলো। তাবিজ কবজ কাজ হয় না দেখে বলে আমার মনে দোষ। তার পর রাগ করে ঘর ছেড়ে চলে যায়।৯ মাস বাসায় আসে নাই। তার পর রাজি না হওয়ায় ২০২২ কোরবানির ঈদে নিজে বাসায় আসে। ঈদের আগ পর্যন্ত আর অনেক কাহিনী করে, ফোন দিলে বলতো তোর বাপের ডিভোর্স দিমু , আমার জিনিস পত্র আমি নিয়া জামু ইত্যাদি।
বাসায় এসে আবার তাবিজ কবজ করে। কবরের মাঝে তাবিজ গালে।প্রতিদিন রাতে চুলায় তাবিজ পুরে। আমার ক্ষতি করার ভয় দেখাই তো।বলতো তাবিজ করতে করতে আমাকে পাগল বানাইয়া ফেলবো
এমন ও বলতো রাস্তা থেকে আমাকে উঠিয়ে নিয়ে যাইবো ৬মাস আটকিয়ে রাখবো ঐ ছেলে। সবকিছু করতে ওই ছেলে সাথে পরামিশ করে।
ছেলে কথা বার্তায় কাজে মনে হইতো ছেলে আমাকে না আমার আম্মুকে পছন্দ করে। মাঝ রাত 2/1 ঘন্টা ফোনে কথা বলতো ।আমরা জানি না শুনি তার জন্য আম্মু রান্না ঘরে গিয়ে কথা বলতো। ইমুতে রেকর্ড কথা বললে সাথে সাথে ডিলেট করে ফেলতো যাতে আমরা না শুনতে পারি।( এখানে আমি আমার মায়ের সম্পর্কে নেগেটিভ ধারনা করছি না) যা দেখেছি তা বলছি। আমার আম্মুর ছেলে নাই ছেলে অনেক শখ তাই হয়তো কথা বলে।
একবার ঐই ছেলে ফোনে বলছিলো যে আমার তো আন্টিকে ও পছন্দ হতে পারে। কি বললেন জিঙ্গেস করায় কথা ঘুরিয়ে ফেলছে। রাস্তায় আমার আম্মুর কাঁধে হাত রেখে দাঁড়িয়ে কথা বলতো। আমার আম্মুকে তুমি করে বলতো( তুমি খাইছো, তুমি কি করো ইত্যাদি), আমি বাসায় না থাকলে তখন বাসায় আসতো।
আন্টি (আম্মুর খালাতো বোনের) : বলেছে আম্মু মেশিন কাজ করছিলো ওই ছেলে বাসায় এসে আম্মু গাঁ ঘেঁষে বসে কথা বলছিলো।
২৩-০৩-২০২৩ (শুক্রবার) আমার বড় আপুর ছেলে হওয়া খুশি তে আম্মু অনুষ্ঠান করে ১৫০ মানুষের। আব্বু না করছি অনুষ্ঠান করতে। ওই ছেলে দিয়ে অনুষ্ঠানে আয়োজন করায়। এই অনুষ্ঠানে মেন উদ্দেশ্য হলো আত্মীয় স্বজন সবাই কে আনবে আমাকে জোর করে বিয়ে দিবে।
শুক্রবার রাতে চাচাদের দিয়ে আমাকে বুঝায় । চাচাদের সব বলছি,পরে চাচারা বলে আমরা কেউ রাজি না শুধু মেয়ের মায় রাজি। পরে যখন মা'র সাথে কথা বলে তার কথার সাথে নে পেরে আমাকে বুঝায় রাজি হয়েযা । আমি বলছি আমি রাজি না আপনার যদি মনে করেন দিলে ভালো হবে দেন,আমি রাজি না।
সারাদিন আমি কান্না করি ,,, শনিবার সকালে ফুফুরা চলে যায় তাদের বাসায় আমাকে বলে যায় রাজি হবি না। আম্মু কে বলার সাহস পায় না তাই আমাকে বলছে। বড় আপু আমার পক্ষে কথা বলায় আপুকে অনেক কথা শুনায় ,এক পর্যায়ে আপু আর সহ্য করতে না পেরে ছোট বাবু নিয়ে বিকালে শশুড় বাড়ি চলে যায়। আমি বার বার চাচাদের আমি রাজি না,এমন ও বলছি আমাকে এখানে বিয়ে দিলে আমি মরে যাব। এমন ও বলছি অন্য কোন ছেলে দেখেন আমি রাজি।
*** আমাকে জোর করে রাজি করায়,আমি রাজি না হলে মায় বাসায় আবার চলে যাইবো, রাজি না হলে আমার আব্বু কে ডিভোর্স দিয়ে দিবো। এক পর্যায়ে বলে আমি রাজি না হলে মায় নিজেকে শেষ করে দিবো।
শনিবার রাতে হঠাৎ করে ছেলে কে তার পরিবারের ১০/১২ লোক আসে। আমাকে জোর করে কবুল বলায়। কবুল বলার আগে পর্যন্ত আমি চাচীদের হাতে ধরে বড় বলি আমি রাজি না। আমি মুখে কবুল বললে ও আমি মনে মনে আল্লাহকে বলছি আল্লাহ আমি রাজি না শুধু মা জন্য কবুল বলতাছি। কবুল না বলে পারি নাই, আমি কবুল না বললে মায় নিজেকে শেষ করে দিবো ।
বিয়ের আগে দেড় বছর না ছেলে সাথে দেখা না কথা হয়।সব সময় মায় সাথে কথা বলতো। ২মাস আগে ও আমি ছেলে বোন কে ফোন দিয়ে বলি। আমি রাজি না তাও আমার মা'র সাথে আপনার ভাই কথা বলে কেন। বিয়ে আগ ছেলে, ছেলের মা বা পরিবারের কেউ আমাকে জিজ্ঞাস করে নাই আমি বিয়েতে রাজি কি না। মেয়ে ২বছর ধরে রাজি না এখন সত্যি রাজি কি না তা কেউ এসে জিজ্ঞাস করে নাই।
১নং প্রশ্ন - এই বিয়ে বৈধ হবে কি না ?
২৪-১২-২০২২ ( শনিবার) রাতে বিয়ে দেয়। জোর করে বিয়ে দিছে ছেলেদের বাসায় গিয়ে যদি কোনো ঝামেলা করি তাই ছেলে আর তার আত্মীয় স্বজনরা তাদের বাসায় চলে যায় আমি আমাদের বাসায় থাকি। রবিবার সকালে আমি পাগলের মত করি, বলি আমি এই বিয়ে মানি না। ছেলেদের বাসায় যাবো না। আমাকে বুঝানোর জন্য রবিবার সন্ধ্যায় আমাকে যে চাচার বাসায় নিয়ে যায়। চাচা আমাকে বলে, তোকে এখানে বিয়ে না দিলে তোর মা তাবিজ কবজ করে মেরে ফেলতো। অন্য কোনো জায়গায় তোকে বিয়ে দিবো না। আমরা অন্য কোনো ছেলে সাথে তোর বিয়ে দিলে তোর মায় সমস্যা করবো। বরিবার রাত চাচার বাসায় থাকি। সোমবার সকালে বাসায় আসি। সোমবার দুপুরে টিউশনির টাকা আনার কথা বলে বাসায় থেকে বের হয়ে যাই। পরিচিত এক আপু বাসায় যাই। আমি কোথায় আছি।সব আমার বড় আপু জানে। ৭ দিন পর আমার খালাতো বোন আমাকে ফোন দিয়ে বলে বাসায় তোর ভেজাল ভেঙ্গে দিবো তুই বাসায় আয়। আমার ঐই চাচায়,চাচি,বড় আপু, খালাতো বোন সবাই আমাদের বাসায় আসে পরে আমি বাসায় যাই। আমি বাসায় গেলে, আম্মু আমার ফোন নিয়ে ভেঙ্গে ফেলে, বড় আপু আর খালাতো বোন কে লাথি মারে বলে তারা আমাকে বাসায় থাকে সরাইছে। আমাকে মারতে আসে। সবাই সবার বাসায় চলে যায় এক পর্যায়ে আমাকে রুমে তালা মেরে রাখে। ১মাস আমাকে আটকে রাখে, ,কার সাথে যোগাযোগ করতে দেয় না, তারা ভাবতো এক সময় না এক সময় আমি এই বিয়ে মেনে নিবো।, আম্মু বাসায় না থাকলে আব্বুর ফোন দিয়ে বড় আপুর সাথে কথা বলতাম। এই মাসে আমার নানায় ইসতিমায় আসে নানায় আমার সাপোর্ট করায় নানা কে আম্মু অনেক বাজে কথা শুনায়। আমাকে ২দিন মারে, ১দিন গলায় পারা দিয়ে ধরে।এই ছেলে সামনেই মারে এই ছেলে বসে বসে দেখে।
এক দিন আমার আম্মুর এই ছেলে মার সাথে ফোনে কথা বলছিলো আর কিছু দিন দেখবো আমি নিজে ইচ্ছা রাজি হই কি না। রাজি না হলে এই ছেলে কে দিয়ে আমার ক্ষতি করবো( ১সপ্তাহ জন্য আমাকে এই ছেলের সাথে এক রুমে আটকাই রাখবো ) ,,,এই প্ল্যান করে এই ছেলে, আমার আম্মু আর ছেলে মায় মিলে। আমি ছেলে কে বলি ডিভোর্স দিয়ে দিতে,, ছেলে বলে এখন দেওয়া যাবে না অনেক সমস্যা আছে।আর ঐদিকে মার সাথে এই সব প্ল্যান করে। নিয়ত ডিভোর্স দিবো না।
এই কথা আমি শুনে ফেলছি তা আম্মূ জানে না।
এটা শুনে আমি অনেক ভয় পেয়ে যাই,এই কথা আব্বু আর বড় আপুকে জানাই।
৩০-০১-২০২৩ , আম্মু বাহিরে গেছিলো। আব্বু সাহায্য আমি আবার বাসা থেকে বের হয়ে যাই। শুধু নিজের বোরখা আর নানা চলে যাওয়ার সময় আমি ১০হাজার টাকা দিয়ে যায়(টাকা দিয়ে যাতে আমি নিজে ডিভোর্স দিয়ে দিতে পারি)তা নিয়ে বের হয়ে যাই।
আমি বড় আপু সাহায্য আমি আমার বান্ধবীর মার বাসায় গাজীপুর চলে আসি। ১৫/১৬ পর আব্বু আর বড় আপুর সাথে যোগাযোগ করে আবার ঢাকায় কোর্টে গিয়ে আব্বু আর বড় আপুকে সাক্ষী রেখে কোর্টে গিয়ে ডিভোর্স দিয়ে দেই। ৪/৫ দিন পর ডিভোর্সের কাগজ ছেলে বাসায় চলে যায়।
ছেলে জানে ছেলে দ্বীনদ্বার না দেখে আমার পছন্দ না।।এই ছেলে যদি সত্যিই আমার জন্য পাগল থাকতো তাহলে এই ২বছরে সে একটু হলেও দ্বীনের পথে আসতো , দাঁড়ি রাখতো, নামাজ পড়তো, কুরআন পড়া শিক্ষতো। ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ-২: আমার এই ডিভোর্স ইসলামের দৃষ্টিতে হয়েছে কি না?
শুধু মাত্র দ্বীনদ্বার জীবনসঙ্গী জন্য সবার সাথে লড়ে চলছি।দ্বীনদ্বার জীবনসঙ্গী ছাড়া একটা মেয়ে জন্য বর্তমান সময় দ্বীন পালন করা প্রায় অসম্ভব। নবী(স:) বলেছে বিয়ে ক্ষেত্রে দ্বীনদ্বারী তা প্রাধান্য দিবে। আমি তো দুনিয়ার অর্থ সম্পদ চাইনি, শুধু মাত্র দ্বীন পালনের জন্য একজন দ্বীনদ্বার জীবনসঙ্গী চেয়েছি।
পরিবার থেকে দূরে আছি। আমার আব্বু,আপু আর নানা ছাড়া কেউ আমার খবর নেয় না। বর্তমানে আমার রব ছাড়া আমার আর কেউ নেই।
আফওয়ান, লেখা গুলো অনেক বেশি হয়ে গেছে। আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ আমার দ্বীনের পথে চলার সহজ করে দেয়।